স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চারপাশে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ

শিপুল ইসলাম, তারাগঞ্জ
প্রকাশ : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৬: ৫৮
আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১: ৫১

মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় হাজীর বাজার কমিউনিটি ক্লিনিক। তারাগঞ্জের সয়ার ইউনিয়নের হাজীরহাট এলাকার প্রায় ছয় হাজার মানুষ এখান থেকে সেবা পান। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি নিজেই পড়েছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কবলে।

চিকিৎসাসেবা নিতে প্রতিদিন শতাধিক রোগী এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হাজির হন। এখানে চকচকে পরিপাটি পাকা ভবন থাকলেও আশপাশে জমে আছে ময়লা-আবর্জনা আর পচা পানি। সেখান থেকে সৃষ্ট দুর্গন্ধের কারণে চিকিৎসা নিতে আসা লোকজনের টিকে থাকাই দায়।

সম্প্রতি সরেজমিন দেখা গেছে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির সামনে বড় বড় গর্ত। সামনের প্রাচীর ঘেঁষে বাজারের প্রস্রাবখানা। নিয়মিত পানি যাওয়ায় প্রাচীর দেবে গেছে। ভবনের পূর্ব দিকে হাটের ময়লার বিশাল স্তূপ জমে আছে। বাজারের খাবারের দোকানগুলোর ময়লা পানি জমে আছে কেন্দ্রের মাঠে। চিকিৎসাসেবা নিতে আসা এলাকার লোকজন দুর্গন্ধে নাকেমুখে কাপড় গুঁজে চলাচল করছেন।

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর ভবনের পশ্চিম ও দক্ষিণ দিকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রাচীর নির্মাণ করে দেওয়া হয়। বন্যার পানি ও প্রস্রাবখানার পানি প্রাচীর ঘেঁষে ক্লিনিকের পাশের খালে যাওয়ায় দক্ষিণের প্রাচীরটি ধসে গেছে। আর পূর্ব পাশে প্রাচীর না থাকায় সেখানে ময়লার ভাগাড় করা হয়েছে। ময়লা ও পচা পানির উৎকট দুর্গন্ধ স্বাস্থ্য সেবা ব্যাহত হচ্ছে।

কেন্দ্রের সামনে নাকেমুখে কাপড় গুঁজে থাকা হাজীরহাট গ্রামের গৃহবধূ মৌসুমি বেগমের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘এটে আসি হামরা রোগের চিকিৎসা নিবার, কিন্তু ক্লিনিকের যে অবস্থা, দাঁড়ে থাকলে বমি আইসে। পচা পানির দুর্গন্ধ সহ্য করা যায়ছে না। ক্লিনিকের বিল্ডিং, ভেতর সউগ চকচকা। বাইরোত দুনিয়ার আবর্জনাতে ভর্তি। চিকিৎসা নিবার আসি হামরা এটে অসুস্থ হয়া যাই।’

প্রতিষ্ঠানের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) শাহাজাদী বেগম জানান, এখানে প্রতিদিন শতাধিক লোক চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। দুর্গন্ধের কারণে অনেকে ফিরে যান। কর্মীরাও নাকমুখ চেপে সেবা দিচ্ছেন। দুর্গন্ধে অনেক সময় বমি এসে যায়। মাঠের গর্ত ভরাট না হওয়ায় রোগীদের দাঁড়াতে সমস্যা হচ্ছে। বিষয়গুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও ব্যবস্থাপনা কমিটিকে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সয়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল ইবাদত হোসেন পাইলট বলেন, ‘আমার এলাকার প্রতিটি ক্লিনিক আমি দুই-এক দিনের মধ্যে সরেজমিনে দেখব। যেখানে প্রাচীর নেই, গর্ত আছে, সেগুলো প্রয়োজনে নিজ তহবিল থেকে করার চেষ্টা করব। স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ স্থান। যেখানে যা সমস্যা আছে তা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।’

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নীল রতন দেব বলেন, ‘ক্লিনিকগুলো আমি সরেজমিনে দেখেছি। হাজীর বাজার ক্লিনিকের বেহাল অবস্থার কথা আমার জানা আছে। সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য উপজেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটিতে আলোচনা করেছি। ক্লিনিকগুলোর দেখভাল করার জন্য জনপ্রতিনিধিদেরও আহ্বান করেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষেও লিখিতভাবে জানিয়েছি।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত