বিশ্বের বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত এবং বিশ্বজুড়ে আলোচিত দক্ষিণ এশিয়ার এমন ১০ ছবির তালিকা করেছেন মীনাক্ষী সিদ্দে। বিশ্বখ্যাত এই চলচ্চিত্র সমালোচক বর্তমানে বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে দক্ষিণ এশিয়ার উপদেষ্টা। সমালোচক হিসেবে ভারতের জাতীয় পুরস্কার পাওয়া মীনাক্ষী বিশ্বের বিভিন্ন উৎসবে তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক হিসেবে লেখালেখি করেন ভ্যারাইটি, স্ক্রিন ডেইলি, ফোর্বস, মিড ডে, সিএনএনসহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে।

১৯ ডিসেম্বর ভারতীয় গণমাধ্যম মিড ডে’তে প্রকাশিত মীনাক্ষীর এই তালিকার শীর্ষ তিন ছবিই বাংলাদেশের। এ ছাড়া তালিকার সপ্তম স্থানটিও বাংলাদেশের দখলেই রেখেছেন তিনি। ছবিগুলো এই বছর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় লড়েছে। সেই ভিত্তিতেই বাছাই করা হয়েছে এসব ছবি।

প্রথম স্থানে রয়েছে আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ পরিচালিত বাংলাদেশের ছবি ‘রেহানা মরিয়ম নূর’। এটি কান চলচ্চিত্র উৎসবের অফিশিয়াল সিলেকশনে আন সার্টেন রিগার্ড ক্যাটাগরিতে প্রথম বাংলাদেশি ছবি হিসেবে অংশ নেয়। ছবিতে আজমেরী হক বাঁধন মেডিকেল কলেজের একজন অধ্যাপকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। নারী নির্যাতন এবং তার প্রতিরোধ গড়ে তোলার বিষয়টি এই ছবিতে ফুটে উঠেছে। বাংলাদেশ, সিঙ্গাপুর ও কাতারের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত হয়েছে এই ছবি।

দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’। ধর্ম, গোত্র ও জাতীয়তাবাদের ওপর ভিত্তি করে যে বৈষম্য ও অপরাধ সংঘটিত হয়, ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’ ছবিতে তা-ই নিয়ে কাজ করেছেন নির্মাতা। এ ছবির সংগীত পরিচালনা করেছেন এ আর রহমান। পাশাপাশি তিনি ছবিটির সহপ্রযোজক হিসেবেও যুক্ত হয়েছেন। অভিনয় করেছেন তাহসান খান, অস্ট্রেলিয়ার মেগান মিশেল, ভারতের নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী, ঈশা চোপড়া, বিক্রম কোচার, কিরণ খোজে প্রমুখ। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে ছবিটি।

তরুণ নির্মাতা মোহাম্মদ রাব্বি মৃধার প্রথম চলচ্চিত্র ‘পায়ের তলায় মাটি নাই’। এই ছবিটি তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে। ইতিমধ্যেই ছবিটি বেশ কয়েকটি বিদেশি চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে। ছবির মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোস্তফা মনোয়ার, প্রিয়াম অর্চি, দীপান্বিতা মার্টিন প্রমুখ।

কামার আহমেদ সাইমনের ‘অন্যদিন’ আছে তালিকার সপ্তম স্থানে। এ ছাড়া চতুর্থ স্থানে রয়েছে শ্রীলঙ্কার ছবি ‘আলবোরাদা: দ্য ডনিং অব দ্য ডে’। ছবিটি পরিচালনা করেছেন অশোকা হান্দাগামা। চিলির কবি পাবলো নেরুদার জীবনের একটি অংশ নিয়ে এই ছবি তৈরি হয়েছে।

পঞ্চম স্থানে রয়েছে পাকিস্তানি ‘মোলাকাত’। ছবিটি পরিচালনা করেছেন সিমাব গুল। যুক্তরাজ্য, পাকিস্তান, আর্জেন্টিনা—তিনটি দেশের কলাকুশলীরা কাজ করেছেন এই ছবিতে।

পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান পরিচালক আনাম আব্বাসের পরিচালনায় ‘দাগ দাগ উজালা’ ছবিটি আছে এই তালিকার ষষ্ঠ স্থানে।

অষ্টম স্থানে আছে সানজীওয়া পুষ্পাকুমারার পরিচালনায় শ্রীলঙ্কার ‘আসু’, নবম স্থানে হামজা বাংগাস পরিচালিত পাকিস্তানের ‘ভাই’ এবং দশম স্থানে কেলজাং দর্জি পরিচালিত ভুটানের ছবি ‘হোয়াই ইজ দ্য ডার্ক অ্যাট নাইট’।