দুর্ঘটনা বাড়ছে চকরিয়ায়

বাপ্পী শাহরিয়ার, চকরিয়া (কক্সবাজার)
প্রকাশ : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৬: ৫০
আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১০: ১১

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক চকরিয়া উপজেলা অংশে পড়েছে ৩৯ কিলোমিটার। এই ৩৯ কিলোমিটারে রয়েছে ৩০টি বাঁক। এর মধ্যে ১০টি অতিঝুঁকিপূর্ণ। তাই মহাসড়কটি দিন দিন দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে উঠছে।

২৭ জানুয়ারি থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১৫ দিনে মহাসড়কের চকরিয়ার ৯ স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩ জন প্রাণ হারিয়েছে। আহত হয়েছে কমপক্ষে ৩৫ জন।

নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) চকরিয়া উপজেলা শাখাসহ বিভিন্ন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। তবে হাইওয়ে পুলিশের কাছে নিহত ও আহতদের সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি।

হাইওয়ে পুলিশ বলছে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়া অংশের আজিজনগর-হারবাং থেকে খুটাখালী-নতুন অফিস পর্যন্ত ৩৯ কিলোমিটার অংশের ১৪ কিলোমিটার সড়ক দুর্ঘটনাপ্রবণ। এই সড়কে প্রায় সময় বড়-ছোট দুর্ঘটনা ঘটে। সড়কের চকরিয়া অংশের ১০টি স্থানকে অতিঝুঁকিপূর্ণ বাঁক হিসেবে চিহ্নিত করেছে হাইওয়ে পুলিশ।

স্থানগুলো হলো চকরিয়ার হারবাং অংশের জাইল্যারাঢালা, ভাণ্ডারীর ডেবা, ইনানী, বরইতলী, বানিয়ারছড়া, ইসলামনগর, জিদ্দাবাজার, ভাঙারমুখ-ভেন্ডিবাজার, ফাঁশিয়াখালীর রিংভং, ছগিরশাহকাটা, মালুমঘাট ও খুটাখালীর মেধাকচ্ছপিয়া ঢালা।

হাইওয়ে পুলিশ জানায়, সড়কে সতর্কতাসংবলিত সাইনবোর্ড বসানো হয়েছে। তবে তা কোনো কাজে আসছে না। পিচঢালা সড়কের পাশ থেকে মাটি সরে গেছে। এ ছাড়া অনেক স্থানের সর্তকতামূলক সাইনবোর্ড চুরি হয়ে গেছে।

জানা গেছে, সর্বশেষ ৮ ফেব্রুয়ারি ভোরে ডুলাহাজারার মালুমঘাট বাজারের অদূরে নার্সারি গেট এলাকায় সাত ভাই ও দুই বোন সড়কের ধারে দাঁড়িয়েছিল। বেপরোয়া গতির একটি তরকারিবোঝাই পিকআপ তাঁদের চাপা দিয়ে চলে যায়। ঘটনাস্থলেই নিহত হয় চার ভাই। আহত হয় দুই ভাই ও এক বোন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই দিন বিকেলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও এক ভাই মারা যায়।

এর এক দিন আগে ৭ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত ১২টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়া উপজেলার খুটাখালীর মেধাকচ্ছপিয়া ঢালা এলাকায় বাস-ট্রাক ও লেগুনার ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে তিনজন নিহত হন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজন মারা যান। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৩ গাড়ির ১৫ যাত্রী।

বাসচালক কামাল হোসেন বলেন, মহাসড়কের চকরিয়া অংশের প্রতি কিলোমিটারেই বড়-ছোট অসংখ্য বাঁক রয়েছে। কিছু এলাকায় এমন কিছু বাঁক আছে, সেখানে বিপরীত দিক থেকে কোনো যানবাহন দেখা যায় না। এতে বাঁকে দুর্ঘটনা বাড়ছে।

নিসচা চকরিয়া উপজেলা শাখার সভাপতি সোহেল মাহমুদ বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে বেপরোয়া ও অদক্ষ ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চলাচলের কারণে বেশির ভাগ দুর্ঘটনা ঘটে। বলতে গেলে এখন সড়কে শৃঙ্খলা নেই। বেশির ভাগই দুর্ঘটনা ঘটে মহাসড়কে। গত ১৫ দিনে চকরিয়ায় মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়কে দুর্ঘটনায় ১৩ জন নিহত হয়েছেন।

চিরিংগা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ও পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সড়কে দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থানগুলো চিহ্নিত করা হলেও যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া যাচ্ছে না। জনসচেতনতার অভাবে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। কারণ দুই লেনের সড়কে গাড়ি চলাচল করাই ঝুঁকিপূর্ণ। এ ছাড়া সড়কের পিচঢালার পাশে অনেক জায়গায় মাটি সরে গেছে। এতে দুর্ঘটনা বেশি ঘটছে।

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময় দুর্ঘটনার বিষয়ে অবগত আছি। সড়কে যেসব জায়গায় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক আছে, সেখানে সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড ছিল। কিন্তু অনেক সময় গাড়ির ধাক্কা ও রং নষ্ট হওয়ায় কিছু সাইনবোর্ড অকেজো হয়ে গেছে। দ্রুত সাইনবোর্ড ও বাঁকের বিষয়ে কাজ শুরু করা হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রামে নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে গুজব

ববির ট্রেজারার সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে যোগদানে বাধা

বিগত সরকারে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের ক্ষতিপূরণ দিতেই যাবে শতকোটি টাকা

দুই দিনে ৭ ব্যাংককে ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দিল বাংলাদেশ ব্যাংক

কোনো পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেননি রয়টার্সের প্রতিবেদক: সিএমপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত