আজকের পত্রিকা: বুয়েটকে রাজনীতিমুক্ত রাখার দাবিটি আপনি কীভাবে দেখেন?
আব্দুল হাসিব চৌধুরী: এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আমাকে একটু সময় দিতে হবে। আমি বরং প্রশ্নটিকে এভাবে করব, ছাত্ররা বুয়েটকে রাজনীতিমুক্ত রাখতে চাইছে কেন? এটা তারা চাইছে তাদের অভিজ্ঞতা থেকে। এ দাবিটি জোরালোভাবে উঠেছে ২০১৯ সালে, আবরার ফাহাদকে হত্যার পর।
দুই যুগে বুয়েট ক্যাম্পাসে তিনজন ছাত্র হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। ২০০২ সালে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত হয় সাবেকুন নাহার সনি। ২০১৩ সালে ধর্মীয় উগ্রবাদী এক ছাত্র দ্বারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় আরিফ রায়হান দীপ। ছুরিকাঘাতে তাকে হত্যা করা হয়েছিল। সর্বশেষ, ২০১৯ সালে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দ্বারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় আবরার ফাহাদ। পিটিয়ে হত্যা করা হয় তাকে।
সনি হত্যার পর বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি উঠেছিল। কিন্তু সেটি তত জোরালো ছিল না। কিন্তু আবরার হত্যার পর ছাত্ররা এ দাবিটি অত্যন্ত জোরালোভাবে সামনে নিয়ে আসে। কেন এটা হলো? এর পেছনে তিনটি কারণ রয়েছে বলে আমার মনে হয়।
প্রথমত, অতীতে বুয়েটে একাধিক সক্রিয় ছাত্রসংগঠন ছিল। ছাত্রদের নানা আন্দোলনে তারাই ভূমিকা পালন করত। ২০১৯ সালে এসে দেখা গেল, একটি মাত্র ছাত্রসংগঠন এখানে দৃশ্যমানভাবে সক্রিয়। অন্যদের অস্তিত্ব কেউ টের পাচ্ছে না। আবরার হত্যার প্রতিবাদে ছাত্রদের আন্দোলনটি ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। রাজনীতি বন্ধের দাবি জোরালো হওয়াটা এই পরিস্থিতিতে সৃষ্টি। এই দাবির সঙ্গে দ্বিমত করার মতো ছাত্র ছিল নগণ্য।
দ্বিতীয়ত, তিনটি হত্যাকাণ্ডের বিচার শেষে আদালত যে রায় দিয়েছেন, তার দিকে তাকালে। পত্রিকার তথ্য অনুসারে, সনি হত্যার জন্য তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দীপ হত্যার জন্য একজনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।আবরার হত্যার জন্য বুয়েটের ২০ শিক্ষার্থীর মৃত্যুদণ্ড এবং আরও ৫ শিক্ষার্থীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
লিশের তৈরি চার্জশিট, বিভিন্ন নথিপত্র ও সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আদালত এসব রায় দিয়েছেন। আবরার হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে নরহত্যা, হত্যার পূর্ব-পরিকল্পনা এবং হত্যায় অংশগ্রহণের অভিযোগ গঠন করা হয়। ফেনী নদীর পানিবণ্টন চুক্তির সমালোচনা করায় আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। একটি অপরাধকর্মের জন্য একই ছাত্রসংগঠনের এতজন নেতা-কর্মীর এভাবে শাস্তি পাওয়া নজিরবিহীন। ছাত্ররা দেখেছে যে রাজনীতির কারণেই আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। সুতরাং তারা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে ছাত্ররাজনীতি পরিত্যাজ্য।
তৃতীয়ত, বুয়েটের হলগুলোতে জঘন্য র্যাগিং চলে। এই বর্বরতা কোন পর্যায়ে পৌঁছেছিল তা নিয়ে ভুক্তভোগীরা বিভিন্ন সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছে। বুয়েট কর্তৃপক্ষ র্যাগিং বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছিল। ২০১৯ সালে ছাত্রদের আন্দোলনের পরই তা বন্ধ হয়। র্যাগিং প্রথম শুরু হয়েছিল মজা বা একধরনের ফুর্তি হিসেবে। পরবর্তীকালে এটি পরিণত হয় কিছু ছাত্রের হলে ক্ষমতা প্রদর্শন ও প্রতিষ্ঠার উপায় হিসেবে। একপর্যায়ে তা রাজনৈতিক ক্ষমতার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। হলের ছাত্রদের নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ারে পরিণত হয় র্যাগিং। সাধারণ ছাত্ররা র্যাগিংকে ছাত্ররাজনীতির ফলাফল হিসেবে দেখতে শুরু করে। ছাত্ররাজনীতির বিরোধিতার এটি একটি অন্যতম কারণ।
সুতরাং বুয়েটের অধিকাংশ ছাত্রের ক্যাম্পাসে রাজনীতির বিরোধিতা করার একটি পরিপ্রেক্ষিত রয়েছে। এটি অজ্ঞানতা, মূর্খতা, চক্রান্ত বা ছাত্রদের রাজনীতিকীকরণের ফলাফল নয়। বাস্তব পরিস্থিতি তাদের এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে। ভবিষ্যতে ভিন্ন পরিস্থিতিতে ছাত্ররা অন্য রকম সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
আজকের পত্রিকা: রাজনীতি করা ও সংগঠন করা সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক অধিকার। জোর করে এই অধিকার হরণ করা যায়?
হাসিব চৌধুরী: বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান তার আইনকানুনের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। সামরিক বাহিনী, পুলিশ বাহিনী বা সরকারি প্রশাসনে থেকে আপনি রাজনীতি করতে পারবেন না। কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্যপদ গ্রহণ করতে পারবেন না। তাই বলে নির্বাচনে ভোট দিতে কিন্তু আপনার বাধা নেই। তার মানে আপনার রাজনৈতিক পছন্দ থাকতে পারে, কিন্তু প্রত্যক্ষ রাজনীতি আপনি করতে পারবেন না।
কেউ তো বলছে না যে এতে করে সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘিত হলো। তারপর ধরুন, ক্যাডেট কলেজ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস বা মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে আপনি ছাত্রসংগঠন করতে পারবেন না। সেখানেও কি সংবিধানের লঙ্ঘন হচ্ছে? ছাত্রদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বুয়েট কর্তৃপক্ষ ২০১৯ সালে যে নির্দেশ জারি করেছিল তা হচ্ছে, বুয়েটে কেউ কোনো রাজনৈতিক তৎপরতা চালাতে পারবে না। বুয়েটে কোনো সাংগঠনিক কমিটি গঠন করতে পারবে না। ছাত্ররা ব্যক্তিগতভাবে কোনো ছাত্রসংগঠন বা রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে পারবে না তা কিন্তু বলা হয়নি। এটি জোর করে চাপিয়ে দেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না। প্রায় সব শিক্ষার্থী এটা চেয়েছিল। এর মাধ্যমে ছাত্রদের রাজনীতি করার অধিকার হরণ করা হয়নি, সীমিত করা হয়েছে মাত্র।
কেউ যদি মনে করেন যে এতে করে বুয়েটের মঙ্গল হলেও দেশের অমঙ্গল হচ্ছে, তাহলে তা নিয়ে সিরিয়াস আলোচনা হতে পারে। বুয়েট তো দেশের ঊর্ধ্বে নয়। এ নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা করতে হবে ছাত্রদের। একই সঙ্গে কিসে দেশ ও জনগণের মঙ্গল, জাতীয় স্বার্থ কীভাবে রক্ষা করা যাবে—এসব বিষয়েও ছাত্রদের খোলামেলা ও স্বাধীনভাবে আলোচনায় উৎসাহিত করতে হবে। তাদের সেই সুযোগ করে দিতে হবে।
আজকের পত্রিকা: মেধাবীরা রাজনীতি করবে না, শুধু বই পড়বে—এটা কোনো যুক্তির কথা হতে পারে? রাজনীতি কি তাহলে মেধাশূন্যদের চর্চার বিষয়?
হাসিব চৌধুরী: নিঃসন্দেহে এটা কোনো যুক্তির কথা নয়। কিন্তু বুয়েটের কেউ কি এমন কথা কোথাও সরাসরি বা ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে বলেছেন বা তাঁদের কোনো তৎপরতার ফলাফল হিসেবে বাংলাদেশে মেধাবীরা রাজনীতিতে আসছেন না বলে কেউ মনে করছেন? এককথায় এর উত্তর হলো, না। আপনার প্রশ্ন থেকে ধারণা করি, আপনি মনে করেন বাংলাদেশে রাজনীতিতে মেধাবীরা আসছেন না এবং আপনার এমন আকাঙ্ক্ষা রয়েছে যে বুয়েটের মেধাবী ছাত্ররা রাজনীতিতে আসুক। এটা সৎ ভাবনা, ভালো আকাঙ্ক্ষা।
এ জন্য আমাদের গভীরভাবে খুঁজে দেখা প্রয়োজন অতীতের মতো মেধাবী ও চিন্তাশীল ব্যক্তিরা কেন রাজনীতিতে আসছেন না। এটা তো বাংলাদেশের সমস্যা—এখানকার জাতীয় রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, সমাজব্যবস্থা কীভাবে সংগঠিত হয়েছে, তার সঙ্গে সম্পর্কিত। তবে সাধারণভাবে এটা সত্য যে বুয়েট থেকে রাজনীতিবিদ তৈরি হয়েছেন খুবই কম। এর পরিবর্তন হলে দেশের জন্য মঙ্গল বৈ অমঙ্গল হবে না।
আজকের পত্রিকা: রাজনীতিমুক্ত শিক্ষাঙ্গন, নাকি সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদমুক্ত শিক্ষাঙ্গন চাই?
হাসিব চৌধুরী: এ প্রশ্নটায় একটু গোলমাল আছে। এখানে ধরেই নেওয়া হয়েছে শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতি না থাকলে সন্ত্রাস থাকবে, জঙ্গিবাদ থাকবে বা উল্টো করে বললে রাজনীতি থাকলে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ থাকবে না। সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্নে আমি পরে আসছি। এই যে পূর্বধারণা, এটা কি সঠিক? আমাদের অভিজ্ঞতা কী বলে?
স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে দেড়-দুই শ ছাত্র সন্ত্রাসী ঘটনায় নিহত হয়েছে বা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে, সেখানে তো প্রবলভাবে রাজনীতি ছিল। তাই বলে কি আমরা এই সিদ্ধান্ত টানব যে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সন্ত্রাসী উৎপাদনের কারখানা?
বুয়েটে তো সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদ শিক্ষা দেওয়া হয় না। তাহলে প্রতিষ্ঠান হিসেবে বুয়েটকে দোষারোপ করার মানে কী? জঙ্গিবাদী কেউ যদি থেকে থাকে, তাদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া মস্ত কঠিন কোনো কাজ নয়। বুয়েট নিয়ে এ-সম্পর্কিত নেতিবাচক প্রচারণা দীর্ঘ দিন ধরেই চলছে। দু-একটি পত্রিকা তো মনে হয় একেবারে নীতি হিসেবে এটা গ্রহণ করেছে।
এ ধরনের প্রচারণার একটি মারাত্মক ক্ষতিকর দিক রয়েছে। বুয়েট আন্তর্জাতিকভাবে যথেষ্ট পরিচিত। এখানকার গ্র্যাজুয়েটরা তাই তুলনামূলকভাবে সহজে বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ পান। বুয়েট গ্র্যাজুয়েটদের একটি বিরাট অংশ যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ নানা দেশে কর্মরত। অনেকেই তাঁরা বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছেন এবং প্রকৌশল ও কারিগরি গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। এখন যদি ক্রমাগতভাবে এ কথা বলা হতে থাকে যে বুয়েট হলো সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদীদের ঘাঁটি, তাহলে দীর্ঘ মেয়াদে আন্তর্জাতিকভাবে বুয়েটের সুনাম ও মর্যাদা নিম্নগামী হবে। ফলে বুয়েট গ্র্যাজুয়েটদের শিক্ষা, গবেষণা ও কর্মক্ষেত্র সংকুচিত হবে, তাঁদের জন্য বহু ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হবে।
এ থেকে বাংলাদেশে কারা লাভবান হবে? এ ধরনের প্রচারণা থেকে অন্য কোনো দেশ কি লাভবান হবে? এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা জরুরি। এ তো গেল আন্তর্জাতিক দিক। জাতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে বুয়েট দেশের প্রকৌশল ও কারিগরি ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বুয়েট গ্র্যাজুয়েটরাও সমভাবে ভূমিকা পালন করে চলেছেন। ২০২০ সালে বুয়েট গ্র্যাজুয়েট প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন তাঁর সততার জন্য, দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানের জন্য খুন হয়েছেন। এসব কথা বরং উদাহরণ হিসেবে সামনে নিয়ে আসা দরকার।
সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে দু-একটি কথা বলা প্রয়োজন মনে করছি। বাংলাদেশে কি গোটা সমাজে সাম্প্রদায়িকতা, মানে মুসলমান-হিন্দু ধর্মীয় দ্বন্দ্ব আছে? এটা তো অবাক করা এক গুরুতর বিষয়! তাহলে তো এর ভিত্তিতে রাজনৈতিক দল আছে, যারা মুসলমান ভিন্ন অন্য ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে কর্মসূচি দেয়, আইন প্রণয়ন করতে চায়। তারা কারা?
বাস্তবতা হলো এই, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার জের রয়ে গেছে সামাজিক-সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে। এসব ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন হয় অনেক ধীর গতিতে এবং বিষয়টি গোটা সমাজের ব্যাপার। এসব ক্ষেত্রে বুয়েটের করণীয় সামান্যই।
আজকের পত্রিকা: গত শতকের ষাট ও সত্তরের দশকে ইউকসু নির্বাচনে ছাত্র ইউনিয়নের প্রাধান্য লক্ষ করা যেত। এখন ধর্মীয় চিন্তার প্রাধান্য। এই পরিবর্তন আপনি কীভাবে দেখেন?
হাসিব চৌধুরী: কিসের ভিত্তিতে এ কথা বলছেন, তা আমি জানি না। এসব ধারণাভিত্তিক মন্তব্য না করে বরং প্রতিবছর ইউকসু নির্বাচনের আয়োজন করা হোক। কোনো দলীয় পরিচয় থাকবে না। কোনো পোস্টার, লিফলেট, মিছিল থাকবে না। বুয়েট প্রশাসন হল সংসদ ও কেন্দ্রীয় সংসদের প্রার্থীদের পরিচয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে, প্রার্থীরা পাঁচ মিনিট সময় পাবে নিজের কথা বলার জন্য। এভাবে তিন বছর চলুক, তারপর আপনার এই প্রশ্নে ফিরে আসা যাবে।
আজকের পত্রিকা: আমাদের সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
হাসিব চৌধুরী: আপনাকে ধন্যবাদ।
আজকের পত্রিকা: বুয়েটকে রাজনীতিমুক্ত রাখার দাবিটি আপনি কীভাবে দেখেন?
আব্দুল হাসিব চৌধুরী: এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আমাকে একটু সময় দিতে হবে। আমি বরং প্রশ্নটিকে এভাবে করব, ছাত্ররা বুয়েটকে রাজনীতিমুক্ত রাখতে চাইছে কেন? এটা তারা চাইছে তাদের অভিজ্ঞতা থেকে। এ দাবিটি জোরালোভাবে উঠেছে ২০১৯ সালে, আবরার ফাহাদকে হত্যার পর।
দুই যুগে বুয়েট ক্যাম্পাসে তিনজন ছাত্র হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। ২০০২ সালে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত হয় সাবেকুন নাহার সনি। ২০১৩ সালে ধর্মীয় উগ্রবাদী এক ছাত্র দ্বারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় আরিফ রায়হান দীপ। ছুরিকাঘাতে তাকে হত্যা করা হয়েছিল। সর্বশেষ, ২০১৯ সালে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দ্বারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় আবরার ফাহাদ। পিটিয়ে হত্যা করা হয় তাকে।
সনি হত্যার পর বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি উঠেছিল। কিন্তু সেটি তত জোরালো ছিল না। কিন্তু আবরার হত্যার পর ছাত্ররা এ দাবিটি অত্যন্ত জোরালোভাবে সামনে নিয়ে আসে। কেন এটা হলো? এর পেছনে তিনটি কারণ রয়েছে বলে আমার মনে হয়।
প্রথমত, অতীতে বুয়েটে একাধিক সক্রিয় ছাত্রসংগঠন ছিল। ছাত্রদের নানা আন্দোলনে তারাই ভূমিকা পালন করত। ২০১৯ সালে এসে দেখা গেল, একটি মাত্র ছাত্রসংগঠন এখানে দৃশ্যমানভাবে সক্রিয়। অন্যদের অস্তিত্ব কেউ টের পাচ্ছে না। আবরার হত্যার প্রতিবাদে ছাত্রদের আন্দোলনটি ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। রাজনীতি বন্ধের দাবি জোরালো হওয়াটা এই পরিস্থিতিতে সৃষ্টি। এই দাবির সঙ্গে দ্বিমত করার মতো ছাত্র ছিল নগণ্য।
দ্বিতীয়ত, তিনটি হত্যাকাণ্ডের বিচার শেষে আদালত যে রায় দিয়েছেন, তার দিকে তাকালে। পত্রিকার তথ্য অনুসারে, সনি হত্যার জন্য তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দীপ হত্যার জন্য একজনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।আবরার হত্যার জন্য বুয়েটের ২০ শিক্ষার্থীর মৃত্যুদণ্ড এবং আরও ৫ শিক্ষার্থীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
লিশের তৈরি চার্জশিট, বিভিন্ন নথিপত্র ও সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আদালত এসব রায় দিয়েছেন। আবরার হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে নরহত্যা, হত্যার পূর্ব-পরিকল্পনা এবং হত্যায় অংশগ্রহণের অভিযোগ গঠন করা হয়। ফেনী নদীর পানিবণ্টন চুক্তির সমালোচনা করায় আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। একটি অপরাধকর্মের জন্য একই ছাত্রসংগঠনের এতজন নেতা-কর্মীর এভাবে শাস্তি পাওয়া নজিরবিহীন। ছাত্ররা দেখেছে যে রাজনীতির কারণেই আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। সুতরাং তারা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে ছাত্ররাজনীতি পরিত্যাজ্য।
তৃতীয়ত, বুয়েটের হলগুলোতে জঘন্য র্যাগিং চলে। এই বর্বরতা কোন পর্যায়ে পৌঁছেছিল তা নিয়ে ভুক্তভোগীরা বিভিন্ন সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছে। বুয়েট কর্তৃপক্ষ র্যাগিং বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছিল। ২০১৯ সালে ছাত্রদের আন্দোলনের পরই তা বন্ধ হয়। র্যাগিং প্রথম শুরু হয়েছিল মজা বা একধরনের ফুর্তি হিসেবে। পরবর্তীকালে এটি পরিণত হয় কিছু ছাত্রের হলে ক্ষমতা প্রদর্শন ও প্রতিষ্ঠার উপায় হিসেবে। একপর্যায়ে তা রাজনৈতিক ক্ষমতার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। হলের ছাত্রদের নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ারে পরিণত হয় র্যাগিং। সাধারণ ছাত্ররা র্যাগিংকে ছাত্ররাজনীতির ফলাফল হিসেবে দেখতে শুরু করে। ছাত্ররাজনীতির বিরোধিতার এটি একটি অন্যতম কারণ।
সুতরাং বুয়েটের অধিকাংশ ছাত্রের ক্যাম্পাসে রাজনীতির বিরোধিতা করার একটি পরিপ্রেক্ষিত রয়েছে। এটি অজ্ঞানতা, মূর্খতা, চক্রান্ত বা ছাত্রদের রাজনীতিকীকরণের ফলাফল নয়। বাস্তব পরিস্থিতি তাদের এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে। ভবিষ্যতে ভিন্ন পরিস্থিতিতে ছাত্ররা অন্য রকম সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
আজকের পত্রিকা: রাজনীতি করা ও সংগঠন করা সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক অধিকার। জোর করে এই অধিকার হরণ করা যায়?
হাসিব চৌধুরী: বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান তার আইনকানুনের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। সামরিক বাহিনী, পুলিশ বাহিনী বা সরকারি প্রশাসনে থেকে আপনি রাজনীতি করতে পারবেন না। কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্যপদ গ্রহণ করতে পারবেন না। তাই বলে নির্বাচনে ভোট দিতে কিন্তু আপনার বাধা নেই। তার মানে আপনার রাজনৈতিক পছন্দ থাকতে পারে, কিন্তু প্রত্যক্ষ রাজনীতি আপনি করতে পারবেন না।
কেউ তো বলছে না যে এতে করে সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘিত হলো। তারপর ধরুন, ক্যাডেট কলেজ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস বা মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে আপনি ছাত্রসংগঠন করতে পারবেন না। সেখানেও কি সংবিধানের লঙ্ঘন হচ্ছে? ছাত্রদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বুয়েট কর্তৃপক্ষ ২০১৯ সালে যে নির্দেশ জারি করেছিল তা হচ্ছে, বুয়েটে কেউ কোনো রাজনৈতিক তৎপরতা চালাতে পারবে না। বুয়েটে কোনো সাংগঠনিক কমিটি গঠন করতে পারবে না। ছাত্ররা ব্যক্তিগতভাবে কোনো ছাত্রসংগঠন বা রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে পারবে না তা কিন্তু বলা হয়নি। এটি জোর করে চাপিয়ে দেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না। প্রায় সব শিক্ষার্থী এটা চেয়েছিল। এর মাধ্যমে ছাত্রদের রাজনীতি করার অধিকার হরণ করা হয়নি, সীমিত করা হয়েছে মাত্র।
কেউ যদি মনে করেন যে এতে করে বুয়েটের মঙ্গল হলেও দেশের অমঙ্গল হচ্ছে, তাহলে তা নিয়ে সিরিয়াস আলোচনা হতে পারে। বুয়েট তো দেশের ঊর্ধ্বে নয়। এ নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা করতে হবে ছাত্রদের। একই সঙ্গে কিসে দেশ ও জনগণের মঙ্গল, জাতীয় স্বার্থ কীভাবে রক্ষা করা যাবে—এসব বিষয়েও ছাত্রদের খোলামেলা ও স্বাধীনভাবে আলোচনায় উৎসাহিত করতে হবে। তাদের সেই সুযোগ করে দিতে হবে।
আজকের পত্রিকা: মেধাবীরা রাজনীতি করবে না, শুধু বই পড়বে—এটা কোনো যুক্তির কথা হতে পারে? রাজনীতি কি তাহলে মেধাশূন্যদের চর্চার বিষয়?
হাসিব চৌধুরী: নিঃসন্দেহে এটা কোনো যুক্তির কথা নয়। কিন্তু বুয়েটের কেউ কি এমন কথা কোথাও সরাসরি বা ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে বলেছেন বা তাঁদের কোনো তৎপরতার ফলাফল হিসেবে বাংলাদেশে মেধাবীরা রাজনীতিতে আসছেন না বলে কেউ মনে করছেন? এককথায় এর উত্তর হলো, না। আপনার প্রশ্ন থেকে ধারণা করি, আপনি মনে করেন বাংলাদেশে রাজনীতিতে মেধাবীরা আসছেন না এবং আপনার এমন আকাঙ্ক্ষা রয়েছে যে বুয়েটের মেধাবী ছাত্ররা রাজনীতিতে আসুক। এটা সৎ ভাবনা, ভালো আকাঙ্ক্ষা।
এ জন্য আমাদের গভীরভাবে খুঁজে দেখা প্রয়োজন অতীতের মতো মেধাবী ও চিন্তাশীল ব্যক্তিরা কেন রাজনীতিতে আসছেন না। এটা তো বাংলাদেশের সমস্যা—এখানকার জাতীয় রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, সমাজব্যবস্থা কীভাবে সংগঠিত হয়েছে, তার সঙ্গে সম্পর্কিত। তবে সাধারণভাবে এটা সত্য যে বুয়েট থেকে রাজনীতিবিদ তৈরি হয়েছেন খুবই কম। এর পরিবর্তন হলে দেশের জন্য মঙ্গল বৈ অমঙ্গল হবে না।
আজকের পত্রিকা: রাজনীতিমুক্ত শিক্ষাঙ্গন, নাকি সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদমুক্ত শিক্ষাঙ্গন চাই?
হাসিব চৌধুরী: এ প্রশ্নটায় একটু গোলমাল আছে। এখানে ধরেই নেওয়া হয়েছে শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতি না থাকলে সন্ত্রাস থাকবে, জঙ্গিবাদ থাকবে বা উল্টো করে বললে রাজনীতি থাকলে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ থাকবে না। সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্নে আমি পরে আসছি। এই যে পূর্বধারণা, এটা কি সঠিক? আমাদের অভিজ্ঞতা কী বলে?
স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে দেড়-দুই শ ছাত্র সন্ত্রাসী ঘটনায় নিহত হয়েছে বা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে, সেখানে তো প্রবলভাবে রাজনীতি ছিল। তাই বলে কি আমরা এই সিদ্ধান্ত টানব যে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সন্ত্রাসী উৎপাদনের কারখানা?
বুয়েটে তো সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদ শিক্ষা দেওয়া হয় না। তাহলে প্রতিষ্ঠান হিসেবে বুয়েটকে দোষারোপ করার মানে কী? জঙ্গিবাদী কেউ যদি থেকে থাকে, তাদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া মস্ত কঠিন কোনো কাজ নয়। বুয়েট নিয়ে এ-সম্পর্কিত নেতিবাচক প্রচারণা দীর্ঘ দিন ধরেই চলছে। দু-একটি পত্রিকা তো মনে হয় একেবারে নীতি হিসেবে এটা গ্রহণ করেছে।
এ ধরনের প্রচারণার একটি মারাত্মক ক্ষতিকর দিক রয়েছে। বুয়েট আন্তর্জাতিকভাবে যথেষ্ট পরিচিত। এখানকার গ্র্যাজুয়েটরা তাই তুলনামূলকভাবে সহজে বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ পান। বুয়েট গ্র্যাজুয়েটদের একটি বিরাট অংশ যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ নানা দেশে কর্মরত। অনেকেই তাঁরা বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছেন এবং প্রকৌশল ও কারিগরি গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। এখন যদি ক্রমাগতভাবে এ কথা বলা হতে থাকে যে বুয়েট হলো সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদীদের ঘাঁটি, তাহলে দীর্ঘ মেয়াদে আন্তর্জাতিকভাবে বুয়েটের সুনাম ও মর্যাদা নিম্নগামী হবে। ফলে বুয়েট গ্র্যাজুয়েটদের শিক্ষা, গবেষণা ও কর্মক্ষেত্র সংকুচিত হবে, তাঁদের জন্য বহু ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হবে।
এ থেকে বাংলাদেশে কারা লাভবান হবে? এ ধরনের প্রচারণা থেকে অন্য কোনো দেশ কি লাভবান হবে? এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা জরুরি। এ তো গেল আন্তর্জাতিক দিক। জাতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে বুয়েট দেশের প্রকৌশল ও কারিগরি ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বুয়েট গ্র্যাজুয়েটরাও সমভাবে ভূমিকা পালন করে চলেছেন। ২০২০ সালে বুয়েট গ্র্যাজুয়েট প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন তাঁর সততার জন্য, দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানের জন্য খুন হয়েছেন। এসব কথা বরং উদাহরণ হিসেবে সামনে নিয়ে আসা দরকার।
সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে দু-একটি কথা বলা প্রয়োজন মনে করছি। বাংলাদেশে কি গোটা সমাজে সাম্প্রদায়িকতা, মানে মুসলমান-হিন্দু ধর্মীয় দ্বন্দ্ব আছে? এটা তো অবাক করা এক গুরুতর বিষয়! তাহলে তো এর ভিত্তিতে রাজনৈতিক দল আছে, যারা মুসলমান ভিন্ন অন্য ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে কর্মসূচি দেয়, আইন প্রণয়ন করতে চায়। তারা কারা?
বাস্তবতা হলো এই, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার জের রয়ে গেছে সামাজিক-সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে। এসব ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন হয় অনেক ধীর গতিতে এবং বিষয়টি গোটা সমাজের ব্যাপার। এসব ক্ষেত্রে বুয়েটের করণীয় সামান্যই।
আজকের পত্রিকা: গত শতকের ষাট ও সত্তরের দশকে ইউকসু নির্বাচনে ছাত্র ইউনিয়নের প্রাধান্য লক্ষ করা যেত। এখন ধর্মীয় চিন্তার প্রাধান্য। এই পরিবর্তন আপনি কীভাবে দেখেন?
হাসিব চৌধুরী: কিসের ভিত্তিতে এ কথা বলছেন, তা আমি জানি না। এসব ধারণাভিত্তিক মন্তব্য না করে বরং প্রতিবছর ইউকসু নির্বাচনের আয়োজন করা হোক। কোনো দলীয় পরিচয় থাকবে না। কোনো পোস্টার, লিফলেট, মিছিল থাকবে না। বুয়েট প্রশাসন হল সংসদ ও কেন্দ্রীয় সংসদের প্রার্থীদের পরিচয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে, প্রার্থীরা পাঁচ মিনিট সময় পাবে নিজের কথা বলার জন্য। এভাবে তিন বছর চলুক, তারপর আপনার এই প্রশ্নে ফিরে আসা যাবে।
আজকের পত্রিকা: আমাদের সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
হাসিব চৌধুরী: আপনাকে ধন্যবাদ।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে