বিশ্বকাপ ফুটবল শুরু হতে এখন পাঁচ মাসের অপেক্ষা। ক্লাব ফুটবলের মৌসুম শেষে উয়েফা নেশনস লিগ ও প্রীতি ফুটবল দিয়ে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শুরু করেছে ফেবারিট দলগুলো। আন্তর্জাতিক বিরতির এই ম্যাচগুলো দিয়ে শক্তি ও দুর্বলতার জায়গাগুলো পরখ করে নেওয়ার সুযোগও পেয়েছে তারা। তবে প্রস্তুতির প্রথম পর্বে যে ফল এসেছে, সেটা ইউরোপীয় পরাশক্তিগুলোর জন্য মোটেই স্বস্তির কিছু নয়।

ইউরোপীয়দের অস্বস্তিই আবার লাতিনদের আত্মবিশ্বাসের পালে বাড়তি হাওয়া দিতে পারে। ইউরোপীয় ফেবারিটদের বিপরীতে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা দুই দলই আছে দারুণ ছন্দে। এটাই ২০ বছর পর আবার লাতিন দেশে বিশ্বকাপ যাওয়ার স্বপ্নও দেখাচ্ছে।

ক্লাব ফুটবল শেষে সবার চোখ ছিল ইউরো চ্যাম্পিয়ন ইতালি ও কোপা আমেরিকা বিজয়ী আর্জেন্টিনার ম্যাচ ‘ফাইনালিসিমা’র দিকে। সেই লড়াইয়ে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনার সামনে পাত্তাই পায়নি ইতালি। ৩-০ গোলে ইতালিকে উড়িয়ে বিশ্বকাপের আগে বড় বার্তাও দিয়ে রেখেছে ‘আলবিসেলেস্তা’রা। এরপর প্রীতি ম্যাচে একাই ৫ গোল দিয়ে ফের মেসি জানিয়ে দেন, এবার সহজেই পথ ছাড়ছেন না তাঁরা। আর্জেন্টিনার মতো ব্রাজিলও আছে দারুণ ছন্দে। সেলেসাওদের খেলার ধরন সমর্থকদের মন ভরাতে না পারলেও ফল পেতে সেটা অবশ্য বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে না। প্রীতি ম্যাচগুলোয় দলে অনেক পরিবর্তন এনেও ইতিবাচক ফল পেয়েছে ব্রাজিলও।

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ঠিক উল্টো ছবি ইউরোপের শক্তিশালী দলগুলোর। নেশনস লিগে ‘এ’ গ্রুপের লিগ-১-এর কথাই ধরা যাক। ৪ ম্যাচ শেষে এই গ্রুপে শীর্ষে থাকা দলটির নাম ডেনমার্ক। দুইয়ে আছে ক্রোয়েশিয়া এবং তিনে অস্ট্রিয়া। আসল চমক পাবেন চার নম্বর দলের নামটি দেখলে। এই গ্রুপে সবার নিচে থাকা দল হলো বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স; যারা আবার নেশনস লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়নও বটে।

‘এ’ গ্রুপের লিগ ২-এ শীর্ষে আছে স্পেন, দুইয়ে পর্তুগাল। তবে দুই দলের অবস্থান মোটেই বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। ৪ ম্যাচের ২টিতে জিতেছে এবং অন্য দুটি ড্র করেছে স্প্যানিশরা। লুইস এনরিকের দলের খেলাও সেভাবে মন কাড়তে পারেনি। যেমন পারেনি দুইয়ে থাকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল। পর্তুগিজদের মাথাব্যথা বাড়াতে পারে অতিরিক্ত রোনালদো-নির্ভরশীলতা। এটিই বিশ্বমঞ্চে বিপদে ফেলতে পারে পর্তুগালকে।

একই গ্রুপের লিগ-৩ থেকেও ভিন্ন দৃশ্য দেখা যাচ্ছে না, বরং এই গ্রুপের ছবি আরও অবাক করে দেওয়ার মতো। এই গ্রুপে তলানিতে আছে ২০১৮ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালিস্ট ইংল্যান্ড; যারা হাঙ্গেরির কাছেই খেয়েছে ৪ গোল। তিনে থাকা ইতালি তো বিশ্বকাপেই নেই। আর দুইয়ে থাকা জার্মানিও ৪ ম্যাচের মাত্র ১টিতে জয়ের দেখা পেয়েছে। বাকি তিন ম্যাচে ড্র করেছে।

তুলনামূলক আশা দেখিয়েছে নেদারল্যান্ডস। চার ম্যাচের তিনটিতেই জিতেছে তারা। একটিতে বেলজিয়ামকে উড়িয়ে দিয়েছে ৪-১ গোলে। বিপরীতে আশা জাগানোর মতো কিছু করে দেখাতে পারেনি বেলজিয়াম। ইউরোপীয় দলগুলোর এমন দুর্দশা কিছুটা হলেও আশাবাদী করতে পারে লাতিন সমর্থকদের।