আশুতোষ
আহা, কী এক মশকরা! যে ব্যক্তির দুর্নীতির পাঁকব্যবস্থা পরিষ্কারের কথা ছিল তিনি কিনা এখন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হেফাজতে, তা-ও দুর্নীতির অভিযোগে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে মদ কেলেঙ্কারির ঘটনায় ইডি গ্রেপ্তার করেছে।
কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তার, নির্বাচনপ্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরে এবং আপ ও কংগ্রেসকে দিল্লিতে একসঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত দেখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার একটি হিসেবি ঝুঁকি নিয়েছে। ইডির পদক্ষেপে অন্তত দিল্লিতে বিজেপির জন্য বুমেরাং হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু মনে হচ্ছে, এই গ্রেপ্তার মোদির গেম প্ল্যানের একটি অংশ। তিনি নিজেকে একজন ত্রাতা হিসেবে তুলে ধরতে চান, যিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে মোদি সচেতনভাবে নিজের এই ভাবমূর্তি তৈরি করেছেন যে তিনি এমন একজন, যিনি নিজে দুর্নীতিতে জড়ান না বা অন্য কাউকে তা করতে দেন না। তিনি আপসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো গলা পর্যন্ত দুর্নীতিতে নিমজ্জিত–এই অভিযোগ সেঁটে দিতে কোনো কসরতই বাকি রাখেননি। নির্বাচনের এত কাছাকাছি দুই মুখ্যমন্ত্রী ঝাড়খন্ডের হেমন্ত সরেন ও দিল্লিতে কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তার প্রমাণ করে, মোদি দুর্নীতিকে একটি বড় নির্বাচনী ইস্যু করতে চান। এই কৌশল সফল হোক বা না হোক, কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তার অবশ্যই আপের জন্য অস্তিত্বের সংকট তৈরি করার আশঙ্কা রয়েছে।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন থেকে আপের জন্ম। রাজনৈতিক দল গঠনের আগে এর নেতাদের সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতো আপের কাছে ঘুরে দাঁড়ানোর কোনো প্রাতিষ্ঠানিক স্মৃতি নেই এবং এই বিরাট সংকটের মুখোমুখি হওয়ার প্রাতিষ্ঠানিক দৃঢ়তাও নেই। যদিও এ ধরনের সংকট দলের অন্য নেতাদের উঠে আসার সুযোগ করে দেয়। কিন্তু আপের জন্য অসম্ভাব্য বলে মনে হচ্ছে। মনীশ শিশোদিয়া ও সঞ্জয় সিং—যাঁরা কেজরিওয়ালের অনুপস্থিতিতে তাঁর শূন্যতা পূরণ করতে পারতেন, তাঁরা ইতিমধ্যে কারাগারে বন্দী। তিনজনের অনুপস্থিতিতে দলের সব নেতা, বিধায়ক, সংসদ সদস্য, পদাধিকারী ও কর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্য কেউ নেই। দ্বিতীয় সারির নেতাদের উঠতে না দেওয়া দলটির সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা। এটা সুপরিচিত, কেজরিওয়ালকে ঘিরে দল হিসেবে আপ এতটাই কেন্দ্রীভূত যে কাউকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো সুযোগই রাখা হয়নি।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আপের দ্বন্দ্বই ছিল কেজরিওয়ালের ব্যক্তিত্বের প্রতিফলন। ভারতীয় রাজনীতিতে তিনিই একজন নেতা, যিনি সংকটের মধ্যে আনন্দ করেন। নরেন্দ্র মোদির মতোই মেরুকরণ করছেন। অবশ্য তাঁকে পছন্দ বা ঘৃণা করা যায়, কিন্তু কখনো উপেক্ষা করা যায় না। তাঁর প্রতিভা একক লক্ষ্য অর্জনের মধ্যে নিহিত রয়েছে এবং ফিনিক্স পাখির মতো ছাই থেকে উঠে আসার বিরল ক্ষমতা তাঁর রয়েছে। তিনি ছিলেন আন্না হাজারেকে ঘিরে গড়ে ওঠা আন্দোলনের স্থপতি, যা গোটা রাজনৈতিক কাঠামোকে নাড়া দিয়েছিল। ফলে কংগ্রেস পার্টির পতন ঘটে। কংগ্রেস যদি আজ আইসিইউতে থাকে, তা কেজরিওয়ালের কারণে। মোদি ও বিজেপি চতুরতার সঙ্গে কেজরিওয়ালের সৃষ্ট পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে কেন্দ্রে সরকার গঠন করেছে।
২০১৪ সালে কেজরিওয়াল যখন ৪৯ দিন পর মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন, তখন তাঁর রাজনৈতিক কর্মজীবনের জন্য বেশ কিছু শোকগাথা লেখা হয়েছিল। ওই বছর দলটি লোকসভা নির্বাচনে দিল্লিতে সাতটি আসনেই হেরে যায়। এই সময় দলটির নেতারাও ২০১৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনে নিজেদের জয়ের আশা হারিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু আশ্চর্য, আপ ৭০টির মধ্যে ৬৭ আসনে জিতে এক অভূতপূর্ব ম্যান্ডেট নিয়ে ফিরে আসে। এটা সম্ভব হয়েছিল, কারণ কেজরিওয়াল পার্টিকে শক্তিশালী করতে এবং জনগণের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পেরেছিলেন। কিন্তু আজ যখন দল গভীর সংকটে, তখন তিনি নেতৃত্ব দিতে পারবেন না। প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্টের (পিএমএলএ) যে বিধানগুলোতে তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, তাতে জামিন পাওয়া সহজ হবে না। তাঁকে কয়েক মাস জেলেও থাকতে হতে পারে।
পার্টির সামনে প্রথম ও সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো দিল্লিতে নিজেদের সরকার বাঁচানো। যদিও আপ বলছে, কেজরিওয়াল জেল থেকে সরকার চালাবেন। এ কথাটি মেঠো বক্তৃতার জন্য ভালো হলেও এর পেছনে আইনি যুক্তি শক্ত নয়। এটি দলের অন্তর্নিহিত দুর্বলতাকেই প্রকাশ করে। যা দেখে মনে হয়, কেজরিওয়াল তাঁর সহকর্মীদের কাউকে বিশ্বাস করেন না বা তিনি সাংবিধানিক কাঠামোর সঙ্গে ভালোভাবে পরিচিত নন। একজন মুখ্যমন্ত্রী হলেন সরকারের প্রধান এবং তিনি যদি কারাগারে থাকেন, তাহলে বাস্তবিক অর্থে তিনি প্রশাসন পরিচালনা করতে পারেন না। এই অবস্থান নেওয়ার জন্য তাঁদের বিজেপি ও মোদি সরকারের হাতে খেলতে হবে। কারণ এটি একটি সাংবিধানিক ভাঙনের দিকে নিয়ে যাবে, যা দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির জন্য ৩৫৬ ধারা জারি করতে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে উপযুক্ত কারণ হয়ে উঠবে। যথাযথ হলো, কেজরিওয়ালের পদত্যাগ করে দলের একজন নতুন নেতা নির্বাচন করা উচিত ছিল, যিনি তাঁর অনুপস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন। যেমন লালু প্রসাদ যাদব ও জয়ললিতা গ্রেপ্তার হওয়ার সময় করেছিলেন। এমনকি হেমন্ত সরেন গ্রেপ্তার হওয়ার আগে, চম্পাই সরেনের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার পথ প্রশস্ত করেছিলেন।
আপের বর্তমান কৌশলটি হিতে বিপরীত হতে পারে। এমনকি এমন পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যেতে পারে, যেখানে দিল্লি রাজ্যের মর্যাদা প্রত্যাহার করে ১৯৯৩-এর আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই সময় দিল্লিতে কোনো নির্বাচিত সরকার বা বিধানসভা ছিল না। এটি হলে তা হবে আপের জন্য একটি বিপর্যয়।
আপের উত্থান ছিল একটি আশার আলোর মতো, যা ভারতীয় রাজনীতিতে আদর্শবাদ ফিরিয়ে আনার জন্য স্বীকৃত ছিল। এই দলটির বিজেপি ও কংগ্রেসের জাতীয় বিকল্প হিসেবে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা ছিল। পুরোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে প্রত্যাখ্যান করে, ধ্বংস করে একটি নতুন রাজনৈতিক কাঠামো গড়ে তোলার সদিচ্ছা নিয়ে আপ উঠে এসেছিল। কিন্তু আফসোস, দলের নেতাদের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়ার অভাব এবং একটি জাতি পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় দৃষ্টিভঙ্গির অনুপস্থিতি দলটিকে আজ হতাশার দিকে নিয়ে গেছে।
আশুতোষ, আপের সাবেক সদস্য ও সত্যহিন্দির সম্পাদক
(দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনূদিত)
আহা, কী এক মশকরা! যে ব্যক্তির দুর্নীতির পাঁকব্যবস্থা পরিষ্কারের কথা ছিল তিনি কিনা এখন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হেফাজতে, তা-ও দুর্নীতির অভিযোগে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে মদ কেলেঙ্কারির ঘটনায় ইডি গ্রেপ্তার করেছে।
কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তার, নির্বাচনপ্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরে এবং আপ ও কংগ্রেসকে দিল্লিতে একসঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত দেখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার একটি হিসেবি ঝুঁকি নিয়েছে। ইডির পদক্ষেপে অন্তত দিল্লিতে বিজেপির জন্য বুমেরাং হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু মনে হচ্ছে, এই গ্রেপ্তার মোদির গেম প্ল্যানের একটি অংশ। তিনি নিজেকে একজন ত্রাতা হিসেবে তুলে ধরতে চান, যিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে মোদি সচেতনভাবে নিজের এই ভাবমূর্তি তৈরি করেছেন যে তিনি এমন একজন, যিনি নিজে দুর্নীতিতে জড়ান না বা অন্য কাউকে তা করতে দেন না। তিনি আপসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো গলা পর্যন্ত দুর্নীতিতে নিমজ্জিত–এই অভিযোগ সেঁটে দিতে কোনো কসরতই বাকি রাখেননি। নির্বাচনের এত কাছাকাছি দুই মুখ্যমন্ত্রী ঝাড়খন্ডের হেমন্ত সরেন ও দিল্লিতে কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তার প্রমাণ করে, মোদি দুর্নীতিকে একটি বড় নির্বাচনী ইস্যু করতে চান। এই কৌশল সফল হোক বা না হোক, কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তার অবশ্যই আপের জন্য অস্তিত্বের সংকট তৈরি করার আশঙ্কা রয়েছে।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন থেকে আপের জন্ম। রাজনৈতিক দল গঠনের আগে এর নেতাদের সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতো আপের কাছে ঘুরে দাঁড়ানোর কোনো প্রাতিষ্ঠানিক স্মৃতি নেই এবং এই বিরাট সংকটের মুখোমুখি হওয়ার প্রাতিষ্ঠানিক দৃঢ়তাও নেই। যদিও এ ধরনের সংকট দলের অন্য নেতাদের উঠে আসার সুযোগ করে দেয়। কিন্তু আপের জন্য অসম্ভাব্য বলে মনে হচ্ছে। মনীশ শিশোদিয়া ও সঞ্জয় সিং—যাঁরা কেজরিওয়ালের অনুপস্থিতিতে তাঁর শূন্যতা পূরণ করতে পারতেন, তাঁরা ইতিমধ্যে কারাগারে বন্দী। তিনজনের অনুপস্থিতিতে দলের সব নেতা, বিধায়ক, সংসদ সদস্য, পদাধিকারী ও কর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্য কেউ নেই। দ্বিতীয় সারির নেতাদের উঠতে না দেওয়া দলটির সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা। এটা সুপরিচিত, কেজরিওয়ালকে ঘিরে দল হিসেবে আপ এতটাই কেন্দ্রীভূত যে কাউকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো সুযোগই রাখা হয়নি।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আপের দ্বন্দ্বই ছিল কেজরিওয়ালের ব্যক্তিত্বের প্রতিফলন। ভারতীয় রাজনীতিতে তিনিই একজন নেতা, যিনি সংকটের মধ্যে আনন্দ করেন। নরেন্দ্র মোদির মতোই মেরুকরণ করছেন। অবশ্য তাঁকে পছন্দ বা ঘৃণা করা যায়, কিন্তু কখনো উপেক্ষা করা যায় না। তাঁর প্রতিভা একক লক্ষ্য অর্জনের মধ্যে নিহিত রয়েছে এবং ফিনিক্স পাখির মতো ছাই থেকে উঠে আসার বিরল ক্ষমতা তাঁর রয়েছে। তিনি ছিলেন আন্না হাজারেকে ঘিরে গড়ে ওঠা আন্দোলনের স্থপতি, যা গোটা রাজনৈতিক কাঠামোকে নাড়া দিয়েছিল। ফলে কংগ্রেস পার্টির পতন ঘটে। কংগ্রেস যদি আজ আইসিইউতে থাকে, তা কেজরিওয়ালের কারণে। মোদি ও বিজেপি চতুরতার সঙ্গে কেজরিওয়ালের সৃষ্ট পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে কেন্দ্রে সরকার গঠন করেছে।
২০১৪ সালে কেজরিওয়াল যখন ৪৯ দিন পর মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন, তখন তাঁর রাজনৈতিক কর্মজীবনের জন্য বেশ কিছু শোকগাথা লেখা হয়েছিল। ওই বছর দলটি লোকসভা নির্বাচনে দিল্লিতে সাতটি আসনেই হেরে যায়। এই সময় দলটির নেতারাও ২০১৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনে নিজেদের জয়ের আশা হারিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু আশ্চর্য, আপ ৭০টির মধ্যে ৬৭ আসনে জিতে এক অভূতপূর্ব ম্যান্ডেট নিয়ে ফিরে আসে। এটা সম্ভব হয়েছিল, কারণ কেজরিওয়াল পার্টিকে শক্তিশালী করতে এবং জনগণের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পেরেছিলেন। কিন্তু আজ যখন দল গভীর সংকটে, তখন তিনি নেতৃত্ব দিতে পারবেন না। প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্টের (পিএমএলএ) যে বিধানগুলোতে তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, তাতে জামিন পাওয়া সহজ হবে না। তাঁকে কয়েক মাস জেলেও থাকতে হতে পারে।
পার্টির সামনে প্রথম ও সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো দিল্লিতে নিজেদের সরকার বাঁচানো। যদিও আপ বলছে, কেজরিওয়াল জেল থেকে সরকার চালাবেন। এ কথাটি মেঠো বক্তৃতার জন্য ভালো হলেও এর পেছনে আইনি যুক্তি শক্ত নয়। এটি দলের অন্তর্নিহিত দুর্বলতাকেই প্রকাশ করে। যা দেখে মনে হয়, কেজরিওয়াল তাঁর সহকর্মীদের কাউকে বিশ্বাস করেন না বা তিনি সাংবিধানিক কাঠামোর সঙ্গে ভালোভাবে পরিচিত নন। একজন মুখ্যমন্ত্রী হলেন সরকারের প্রধান এবং তিনি যদি কারাগারে থাকেন, তাহলে বাস্তবিক অর্থে তিনি প্রশাসন পরিচালনা করতে পারেন না। এই অবস্থান নেওয়ার জন্য তাঁদের বিজেপি ও মোদি সরকারের হাতে খেলতে হবে। কারণ এটি একটি সাংবিধানিক ভাঙনের দিকে নিয়ে যাবে, যা দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির জন্য ৩৫৬ ধারা জারি করতে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে উপযুক্ত কারণ হয়ে উঠবে। যথাযথ হলো, কেজরিওয়ালের পদত্যাগ করে দলের একজন নতুন নেতা নির্বাচন করা উচিত ছিল, যিনি তাঁর অনুপস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন। যেমন লালু প্রসাদ যাদব ও জয়ললিতা গ্রেপ্তার হওয়ার সময় করেছিলেন। এমনকি হেমন্ত সরেন গ্রেপ্তার হওয়ার আগে, চম্পাই সরেনের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার পথ প্রশস্ত করেছিলেন।
আপের বর্তমান কৌশলটি হিতে বিপরীত হতে পারে। এমনকি এমন পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যেতে পারে, যেখানে দিল্লি রাজ্যের মর্যাদা প্রত্যাহার করে ১৯৯৩-এর আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই সময় দিল্লিতে কোনো নির্বাচিত সরকার বা বিধানসভা ছিল না। এটি হলে তা হবে আপের জন্য একটি বিপর্যয়।
আপের উত্থান ছিল একটি আশার আলোর মতো, যা ভারতীয় রাজনীতিতে আদর্শবাদ ফিরিয়ে আনার জন্য স্বীকৃত ছিল। এই দলটির বিজেপি ও কংগ্রেসের জাতীয় বিকল্প হিসেবে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা ছিল। পুরোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে প্রত্যাখ্যান করে, ধ্বংস করে একটি নতুন রাজনৈতিক কাঠামো গড়ে তোলার সদিচ্ছা নিয়ে আপ উঠে এসেছিল। কিন্তু আফসোস, দলের নেতাদের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়ার অভাব এবং একটি জাতি পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় দৃষ্টিভঙ্গির অনুপস্থিতি দলটিকে আজ হতাশার দিকে নিয়ে গেছে।
আশুতোষ, আপের সাবেক সদস্য ও সত্যহিন্দির সম্পাদক
(দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনূদিত)
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
৫ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৯ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৯ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৯ দিন আগে