সারা দেশের মতো চাঁদপুরেও আজ বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এ বছর জেলায় মোট অংশ নিচ্ছে ১৭ হাজার ৬৫২ জন পরীক্ষার্থী। ইতিমধ্যে জেলার অধিকাংশ শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনা হয়েছে।

তবে সম্প্রতি করোনার নতুন ধরন ‘ওমিক্রন’ শনাক্ত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের বাড়তি সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। গত মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে পরীক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন তিনি।

চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের শিক্ষা শাখার সূত্রমতে, জেলায় এইচএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৭ হাজার ৬৫২ জন। কেন্দ্র মোট ৩৪ টি। মাদ্রাসা বোর্ডের আলিম পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২ হাজার ৯০৪ এবং কেন্দ্র ১১ টি। ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ২৯১ জন ও কেন্দ্র ৬টি এবং ভকেশনাল পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৬১ জন ও কেন্দ্র ১ টি।

গত মঙ্গলবার বিকেলে হাইমচর উপজেলার নীলকমল চরে সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে বিদ্যুতায়নের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন শিক্ষামন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, এইচএসসি পরীক্ষা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে সকল প্রকার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। তবে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ‘ওমিক্রন’ শনাক্ত হওয়ায় কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। পরীক্ষার হলগুলোতে শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে সবাইকে। গত মঙ্গলবার বিকেলে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার নীলকমল চরে সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে বিদ্যুতায়নের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আফ্রিকা থেকে সম্প্রতি কয়েকজন দেশে এসেছেন। তাদের কোয়ারিন্টিনে রাখা হয়েছে। করোনা যত শক্তিশালীই হোক না কেন যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব। এতে করে জীবন বাঁচবে। করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে থাকলে সকল কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকবে। এতে পরে আমাদের রুজিরোজগার সঠিকভাবে চলবে।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, প্রান্তিক মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কাজ করছে প্রধানমন্ত্রী। প্রত্যন্ত চর, হাওর, পাহাড় যেখানেই মানুষ বসবাস করছে, তাদের উন্নত জীবনযাত্রা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা।

এ সময় তিনি আরও বলেন, আগে ডাঙ্গার জায়গায়ও বিদ্যুৎ ছিল না। অফগ্রিডের চরাঞ্চলে বিদ্যুতের কথা তো চিন্তাই করা যেত না। এখন দুর্গম চরেও ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিচ্ছে প্রধানমন্ত্রী। সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে নদীর তলদেশ দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুতের আওতায় ৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সাব-মেরিন কেবল নির্মাণ করা হয়েছে। হাইমচর উপজেলার নীলকমল, হাইমচর ও গাজীপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলগুলোতে ১৪৩ কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইন টানানো হয়েছে। এতে করে এসব ইউনিয়নের ৪৯টি চরের ৮ হাজার পরিবার বিদ্যুতের সুবিধা ভোগ করতে পারছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ, পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ, নৌ-পুলিশের এসপি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, হাইমচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটোয়ারি, ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম রোমান, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী ব্যাপারীসহ পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ।

এদিকে সরকারি দিকনির্দেশনা মেনে চলার জন্য জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের সভাপতিত্বে সম্প্রতি একটি সভা হয়। ওই সভায় জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ এইচএসসি, মাদ্রাসা বোর্ডের আলিম ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা ও ভকেশনাল পরীক্ষার্থীদের টিকা গ্রহণে সবদিক থেকে গুরুত্বারোপ করা হয়।