অজয় দাশগুপ্ত
এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ঘুমের কারণে তাসকিনের টিম বাস ধরতে না পারার একটি খবর চোখে পড়ে। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, দেরিতে মাঠে আসার কারণেই সেদিন একাদশে রাখা হয়নি দলের সহ-অধিনায়ককে। তবে তিনি নিজে এ খবর উড়িয়ে দিলেন: ‘যারা আমাকে চেনেন, তাঁরা জানেন আমি আমাদের দেশকে কতটা ভালোবাসি এবং বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য কতটা নিবেদিত, উৎসাহী এবং গর্বিত।
আমি জানি, আমি সময়মতো টিমের বাসে না ওঠার একটি অনিচ্ছাকৃত ভুল করেছি, কিন্তু আমি টসের আগেই স্টেডিয়ামে ছিলাম। আমার চূড়ান্ত দলে নির্বাচিত না হওয়াটা টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত ছিল। যা সঠিক টিম কম্বিনেশন পাওয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত এবং এটি আমার টিম বাসে না ওঠার ব্যর্থতার সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল না।’
মাঠে আসার সময় এবং একাদশ নিয়ে তাসকিনের এমন দাবির সঙ্গে সাকিব আল হাসানের বক্তব্যের একটু ফাঁক আছে। মেজর লিগ ক্রিকেটে খেলতে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার আগে বিমানবন্দরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সাকিব বলেছিলেন, ‘যখন তাসকিন আসলে মাঠে পৌঁছেছিল, টস হওয়ার ৫-১০ মিনিট আগে সম্ভবত। (ম্যাচ শুরুর) খুবই কাছাকাছি সময়ে আসলে। স্বাভাবিকভাবে ওই সময়ে ওকে দলে নেওয়া টিম ম্যানেজমেন্টের জন্য কঠিন ছিল। এ রকম পরিস্থিতিতে একজন ক্রিকেটার কোন অবস্থায় থাকে, তার জন্যও একটু কঠিন।’ সাকিবের কথায় পরিষ্কার ছিল, দেরিতে মাঠে যাওয়ার কারণেই তাসকিনকে একাদশে বিবেচনা করা হয়নি।
তাসকিন ব্যাখ্যা দিয়েছেন: ‘আমি সকাল ৮টা ৩৭-এ উঠেছিলাম এবং ৮টা ৪৩-এ লবিতে গিয়েছিলাম এবং আমার রাইড প্রস্তুত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি সকাল ৯টায় হোটেল ছেড়েছি। আমি সকাল ৯টা ৪০-এ স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেছি, টসের ২০ মিনিট আগে সকাল ১০টায়। আমরা সকাল সোয়া ১০টায় জাতীয় সংগীত গেয়েছিলাম এবং ম্যাচটি সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হয়েছিল।’
একজন দর্শক বা দেশের সাপোর্টার হিসেবে আপনার কী মনে হয়? কোনো খেলোয়াড়ের এ ধরনের ব্যাখ্যা দেওয়ার আদৌ দরকার পড়ে? আমরা ঘটনাটি একটু ভালো করে ভাবি। উত্তেজনার শেষ নেই, এমন একটি ম্যাচ। তার ওপরে প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত। টগবগ করে ফুটছিল মানুষের হৃদয়। উভয় দেশের সাপোর্টাররা আগের দিন রাতে ঠিকমতো ঘুমাননি। শুধু কি নির্ঘুম রাত পার? সময়ের আগেই তাঁরা পৌঁছে গিয়েছিলেন স্টেডিয়ামে। নিজ নিজ দেশের জয় কামনায় নিবেদিত দর্শক যেখানে ঘুমহীন, সেখানে দেশের একজন নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড় যে কিনা সহ-অধিনায়ক, তিনি নিজে আসতে পারলেন না? এ তো রূপকথার গল্পকেও হার মানায়।
সাধারণত কী ঘটার কথা? তাসকিন সবার আগে দলকে নিয়ে ছুটবেন মাঠের দিকে। অধিনায়কের পর তাঁর দায়িত্ব দল ও দলের খেলোয়াড়দের চাঙা রাখা, নিজের কর্তব্য সাধন করা। সে জায়গায় তিনি তো সময়মতো যেতেই পারেননি; বরং এখন শিশুর মতো ব্যাখ্যা দিচ্ছেন!
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বড় ভয়ংকর। সেখানে আজব-গুজব-সত্য মিলেমিশে একাকার। গুজবের ডালপালা বাতাসে ছড়ায়। সে গুজবে আমরা দেখছি অন্য কোনো পানীয়ের গল্প। একটি খবরে লিখেছে, তাসকিনের মুখে অন্য এক পানীয়ের গন্ধ ছিল, যা পান করলে ‘হ্যাঙ ওভার’ হয়, মাথা ঝিমঝিম করে। মানুষ সময়মতো ঘুম থেকে উঠতে পারে না। সত্য-মিথ্যা আমরা জানি না। কিন্তু খবর বেরিয়ে গেছে। তাসকিন যদি সময়মতো পৌঁছাতে পারতেন, এমন কিছু খবর হতে পারত না। আমার চোখে পানীয়-অপানীয় এখানে বিবেচ্য নয়, বিবেচনার বিষয় দায়িত্বহীনতা। বিবেচনা করা উচিত অমার্জনীয় বিলম্বের ত্রুটি। তাসকিন খেললেই ভারত হারত, এমনটি নয়। ফলাফল যা ছিল তা-ই থাকত হয়তো। কিন্তু দেশের বাইরে আন্তর্জাতিক মানের একটি বিশ্বকাপে এমন অখেলোয়াড়সুলভ আচরণের কারণ কী?
এর ভেতরে অনেক প্রশ্ন লুকিয়ে আছে। দল ও দলের শৃঙ্খলা নিয়ে আলোচনার অন্ত নেই। বড়, ছোট, ধর্ম, অধর্ম বহু বিষয়ে আমাদের ঝগড়াঝাঁটি থামছেই না। তার ভেতর এ আরেক নতুন ইন্ধন। একজন নিয়মিত, ভরসা রাখার মতো ক্রিকেটারের এমন আচরণ নিয়ে আমাদের ক্রিকেট বোর্ডের ভাষ্য কী? তারা কি এ নিয়ে খোলামেলা কথা বলবে? আমাদের জানাবে আসলে কী হয়েছিল? এটা জানার অধিকার তো জনগণের আছে।
অবিশ্বাস, সন্দেহ, আচরণগত ত্রুটি—সব মিলিয়ে কী একটা লেজেগোবরে অবস্থা! বাংলাদেশের ক্রিকেট তো এমন ছিল না। আমরা শুরু থেকে দেখছি, একটা সময়, বিশেষ করে মাশরাফির অধিনায়কত্বের সময় যে নিয়ম আর শৃঙ্খলা ছিল, তা এখন উধাও। দু-চার দিন পরপর নতুন গুজব ছাড়া আর কিছুই উপহার দিতে পারছেন না এখনকার সেলিব্রেটি ক্রিকেটাররা। তাসকিন মূলত সেই অপপ্রক্রিয়ার আরেকটি শিকার মাত্র।
উপমহাদেশের দিকে তাকালে আমরা দেখি ভারতের জয়জয়কার। ভারত বিরোধিতার ১০১টি কারণ থাকলেও ক্রিকেটের বেলায় আমাদের অন্ধ না হওয়াই মঙ্গলের হবে। এই যে তারা অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, খেলার দিকে তাকালে বা আচরণের দিকে মনোযোগ দিলে দেখতে পাই, ভারত অতীতের দুর্বলতা কাটিয়ে সংহত একটি দলে পরিণত হয়ে গেছে। একদা পাকিস্তানের কাছে এমন প্রত্যাশা ছিল আমাদের। ইমরান খানের জমানায় পাকিস্তান ক্রিকেট ছিল ভ্রাতৃত্ব আর দেশপ্রেমের ক্রিকেট। তখনো তাঁরা আমাদের মতো এত উগ্র আর অন্ধ ছিল না। এখনো না। আপনি আমাদের মাঠের দিকে বা ড্রেসিংরুমের দিকে, যেদিকেই তাকান না কেন, দেখবেন খেলা গৌণ। মূল হয়ে আছে অন্য কিছু। যার নাম আচরণ, যার নাম শৃঙ্খলাহীনতা। তাসকিন তারই এক জ্বলন্ত উদাহরণ।
আসল কথায় আসি। বুঝলাম বোর্ডের কর্তারা নানা কারণে হয়তো দীর্ঘ সময় দায়িত্বে থাকেন বা থাকতে হয় তাঁদের। কিন্তু খেলোয়াড়েরা? এবারের বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স দেখার পর সুবিখ্যাত বোদ্ধা ক্রিকেটাররা বলেছেন কাকে কাকে বাদ দেওয়া উচিত। কাদের এখন যাওয়ার পালা, সে কথা জানিয়ে দিতেও কসুর করেননি তাঁরা।
নাক উঁচু নামে পরিচিত অস্ট্রেলিয়ার লিজেন্ড খেলোয়াড় অ্যাডাম গিলক্রিস্টও কথা বলেছেন এ বিষয়ে। যার মানে, আমাদের খেলা ও টিমের ওপর নজর আছে তাঁদের। দুনিয়া এখন গ্লোবাল ভিলেজ। এই ভিলেজে সবাই সবার খবর রাখে। সে দৃষ্টিকোণে এটা সহজেই অনুমেয়, তাসকিনের বিষয়টিও সবার দৃষ্টিগোচর হয়েছে, যা আমাদের ভাবমূর্তিকে ছোট করে।
সব সময় দৃষ্টি সামনে রাখা উচিত। যা ঘটেছে বা ঘটে গেছে, তার পুনরাবৃত্তি বন্ধ করতে হলে এসব সমস্যার গোড়ায় হাত দিতে হবে। দরকার হলে জায়গামতো কঠোর হতে হবে। কারণ এর সঙ্গে আগামী প্রজন্মও জড়িত। তারা কী দেখছে, কী শিখছে? তাদের আইডল নামে পরিচিত খেলোয়াড়েরা যদি এমন করে তো তারা কী করবে?
বিষয়টা গম্ভীর। এর সমাধান না হলে বা এই সব প্রক্রিয়া বন্ধ না হলে আমরা কোনো দিনও এগোতে পারব না।
লেখক: অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী কলামিস্ট
এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ঘুমের কারণে তাসকিনের টিম বাস ধরতে না পারার একটি খবর চোখে পড়ে। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, দেরিতে মাঠে আসার কারণেই সেদিন একাদশে রাখা হয়নি দলের সহ-অধিনায়ককে। তবে তিনি নিজে এ খবর উড়িয়ে দিলেন: ‘যারা আমাকে চেনেন, তাঁরা জানেন আমি আমাদের দেশকে কতটা ভালোবাসি এবং বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য কতটা নিবেদিত, উৎসাহী এবং গর্বিত।
আমি জানি, আমি সময়মতো টিমের বাসে না ওঠার একটি অনিচ্ছাকৃত ভুল করেছি, কিন্তু আমি টসের আগেই স্টেডিয়ামে ছিলাম। আমার চূড়ান্ত দলে নির্বাচিত না হওয়াটা টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত ছিল। যা সঠিক টিম কম্বিনেশন পাওয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত এবং এটি আমার টিম বাসে না ওঠার ব্যর্থতার সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল না।’
মাঠে আসার সময় এবং একাদশ নিয়ে তাসকিনের এমন দাবির সঙ্গে সাকিব আল হাসানের বক্তব্যের একটু ফাঁক আছে। মেজর লিগ ক্রিকেটে খেলতে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার আগে বিমানবন্দরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সাকিব বলেছিলেন, ‘যখন তাসকিন আসলে মাঠে পৌঁছেছিল, টস হওয়ার ৫-১০ মিনিট আগে সম্ভবত। (ম্যাচ শুরুর) খুবই কাছাকাছি সময়ে আসলে। স্বাভাবিকভাবে ওই সময়ে ওকে দলে নেওয়া টিম ম্যানেজমেন্টের জন্য কঠিন ছিল। এ রকম পরিস্থিতিতে একজন ক্রিকেটার কোন অবস্থায় থাকে, তার জন্যও একটু কঠিন।’ সাকিবের কথায় পরিষ্কার ছিল, দেরিতে মাঠে যাওয়ার কারণেই তাসকিনকে একাদশে বিবেচনা করা হয়নি।
তাসকিন ব্যাখ্যা দিয়েছেন: ‘আমি সকাল ৮টা ৩৭-এ উঠেছিলাম এবং ৮টা ৪৩-এ লবিতে গিয়েছিলাম এবং আমার রাইড প্রস্তুত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি সকাল ৯টায় হোটেল ছেড়েছি। আমি সকাল ৯টা ৪০-এ স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেছি, টসের ২০ মিনিট আগে সকাল ১০টায়। আমরা সকাল সোয়া ১০টায় জাতীয় সংগীত গেয়েছিলাম এবং ম্যাচটি সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হয়েছিল।’
একজন দর্শক বা দেশের সাপোর্টার হিসেবে আপনার কী মনে হয়? কোনো খেলোয়াড়ের এ ধরনের ব্যাখ্যা দেওয়ার আদৌ দরকার পড়ে? আমরা ঘটনাটি একটু ভালো করে ভাবি। উত্তেজনার শেষ নেই, এমন একটি ম্যাচ। তার ওপরে প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত। টগবগ করে ফুটছিল মানুষের হৃদয়। উভয় দেশের সাপোর্টাররা আগের দিন রাতে ঠিকমতো ঘুমাননি। শুধু কি নির্ঘুম রাত পার? সময়ের আগেই তাঁরা পৌঁছে গিয়েছিলেন স্টেডিয়ামে। নিজ নিজ দেশের জয় কামনায় নিবেদিত দর্শক যেখানে ঘুমহীন, সেখানে দেশের একজন নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড় যে কিনা সহ-অধিনায়ক, তিনি নিজে আসতে পারলেন না? এ তো রূপকথার গল্পকেও হার মানায়।
সাধারণত কী ঘটার কথা? তাসকিন সবার আগে দলকে নিয়ে ছুটবেন মাঠের দিকে। অধিনায়কের পর তাঁর দায়িত্ব দল ও দলের খেলোয়াড়দের চাঙা রাখা, নিজের কর্তব্য সাধন করা। সে জায়গায় তিনি তো সময়মতো যেতেই পারেননি; বরং এখন শিশুর মতো ব্যাখ্যা দিচ্ছেন!
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বড় ভয়ংকর। সেখানে আজব-গুজব-সত্য মিলেমিশে একাকার। গুজবের ডালপালা বাতাসে ছড়ায়। সে গুজবে আমরা দেখছি অন্য কোনো পানীয়ের গল্প। একটি খবরে লিখেছে, তাসকিনের মুখে অন্য এক পানীয়ের গন্ধ ছিল, যা পান করলে ‘হ্যাঙ ওভার’ হয়, মাথা ঝিমঝিম করে। মানুষ সময়মতো ঘুম থেকে উঠতে পারে না। সত্য-মিথ্যা আমরা জানি না। কিন্তু খবর বেরিয়ে গেছে। তাসকিন যদি সময়মতো পৌঁছাতে পারতেন, এমন কিছু খবর হতে পারত না। আমার চোখে পানীয়-অপানীয় এখানে বিবেচ্য নয়, বিবেচনার বিষয় দায়িত্বহীনতা। বিবেচনা করা উচিত অমার্জনীয় বিলম্বের ত্রুটি। তাসকিন খেললেই ভারত হারত, এমনটি নয়। ফলাফল যা ছিল তা-ই থাকত হয়তো। কিন্তু দেশের বাইরে আন্তর্জাতিক মানের একটি বিশ্বকাপে এমন অখেলোয়াড়সুলভ আচরণের কারণ কী?
এর ভেতরে অনেক প্রশ্ন লুকিয়ে আছে। দল ও দলের শৃঙ্খলা নিয়ে আলোচনার অন্ত নেই। বড়, ছোট, ধর্ম, অধর্ম বহু বিষয়ে আমাদের ঝগড়াঝাঁটি থামছেই না। তার ভেতর এ আরেক নতুন ইন্ধন। একজন নিয়মিত, ভরসা রাখার মতো ক্রিকেটারের এমন আচরণ নিয়ে আমাদের ক্রিকেট বোর্ডের ভাষ্য কী? তারা কি এ নিয়ে খোলামেলা কথা বলবে? আমাদের জানাবে আসলে কী হয়েছিল? এটা জানার অধিকার তো জনগণের আছে।
অবিশ্বাস, সন্দেহ, আচরণগত ত্রুটি—সব মিলিয়ে কী একটা লেজেগোবরে অবস্থা! বাংলাদেশের ক্রিকেট তো এমন ছিল না। আমরা শুরু থেকে দেখছি, একটা সময়, বিশেষ করে মাশরাফির অধিনায়কত্বের সময় যে নিয়ম আর শৃঙ্খলা ছিল, তা এখন উধাও। দু-চার দিন পরপর নতুন গুজব ছাড়া আর কিছুই উপহার দিতে পারছেন না এখনকার সেলিব্রেটি ক্রিকেটাররা। তাসকিন মূলত সেই অপপ্রক্রিয়ার আরেকটি শিকার মাত্র।
উপমহাদেশের দিকে তাকালে আমরা দেখি ভারতের জয়জয়কার। ভারত বিরোধিতার ১০১টি কারণ থাকলেও ক্রিকেটের বেলায় আমাদের অন্ধ না হওয়াই মঙ্গলের হবে। এই যে তারা অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, খেলার দিকে তাকালে বা আচরণের দিকে মনোযোগ দিলে দেখতে পাই, ভারত অতীতের দুর্বলতা কাটিয়ে সংহত একটি দলে পরিণত হয়ে গেছে। একদা পাকিস্তানের কাছে এমন প্রত্যাশা ছিল আমাদের। ইমরান খানের জমানায় পাকিস্তান ক্রিকেট ছিল ভ্রাতৃত্ব আর দেশপ্রেমের ক্রিকেট। তখনো তাঁরা আমাদের মতো এত উগ্র আর অন্ধ ছিল না। এখনো না। আপনি আমাদের মাঠের দিকে বা ড্রেসিংরুমের দিকে, যেদিকেই তাকান না কেন, দেখবেন খেলা গৌণ। মূল হয়ে আছে অন্য কিছু। যার নাম আচরণ, যার নাম শৃঙ্খলাহীনতা। তাসকিন তারই এক জ্বলন্ত উদাহরণ।
আসল কথায় আসি। বুঝলাম বোর্ডের কর্তারা নানা কারণে হয়তো দীর্ঘ সময় দায়িত্বে থাকেন বা থাকতে হয় তাঁদের। কিন্তু খেলোয়াড়েরা? এবারের বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স দেখার পর সুবিখ্যাত বোদ্ধা ক্রিকেটাররা বলেছেন কাকে কাকে বাদ দেওয়া উচিত। কাদের এখন যাওয়ার পালা, সে কথা জানিয়ে দিতেও কসুর করেননি তাঁরা।
নাক উঁচু নামে পরিচিত অস্ট্রেলিয়ার লিজেন্ড খেলোয়াড় অ্যাডাম গিলক্রিস্টও কথা বলেছেন এ বিষয়ে। যার মানে, আমাদের খেলা ও টিমের ওপর নজর আছে তাঁদের। দুনিয়া এখন গ্লোবাল ভিলেজ। এই ভিলেজে সবাই সবার খবর রাখে। সে দৃষ্টিকোণে এটা সহজেই অনুমেয়, তাসকিনের বিষয়টিও সবার দৃষ্টিগোচর হয়েছে, যা আমাদের ভাবমূর্তিকে ছোট করে।
সব সময় দৃষ্টি সামনে রাখা উচিত। যা ঘটেছে বা ঘটে গেছে, তার পুনরাবৃত্তি বন্ধ করতে হলে এসব সমস্যার গোড়ায় হাত দিতে হবে। দরকার হলে জায়গামতো কঠোর হতে হবে। কারণ এর সঙ্গে আগামী প্রজন্মও জড়িত। তারা কী দেখছে, কী শিখছে? তাদের আইডল নামে পরিচিত খেলোয়াড়েরা যদি এমন করে তো তারা কী করবে?
বিষয়টা গম্ভীর। এর সমাধান না হলে বা এই সব প্রক্রিয়া বন্ধ না হলে আমরা কোনো দিনও এগোতে পারব না।
লেখক: অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী কলামিস্ট
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
৪ ঘণ্টা আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৪ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৪ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৪ দিন আগে