ফয়সাল শাহরিয়ার
শরীরে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে ধীরে ধীরে জ্ঞান ফিরে পেলেন তরুণ মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ারুল ইসলাম মঞ্জু। ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে এক সম্মুখযুদ্ধে বন্দী হওয়ার পরে ঠিক কত সময় অতিক্রান্ত হয়েছে, তা বুঝে উঠতে পারছিলেন না মঞ্জু। অবর্ণনীয় অত্যাচারে ইতিমধ্যে তাঁর দিবারাত্রি ভেদজ্ঞান লোপ পেয়েছে। হাত বাঁধা অবস্থায় বহু কষ্টে পাশ ফিরে দেখতে পেলেন তাঁর সঙ্গে বন্দী হওয়া অপর দুই আহত মুক্তিযোদ্ধাও পেছনে হাত বাঁধা অবস্থায় মেঝেতে শুয়ে আছেন।
মঞ্জু কোনো কথা বলার আগেই স্বল্পপরিসরে কক্ষের দরজা খুলে গেল। ঘরে প্রবেশ করল ময়মনসিংহ অঞ্চলের এক কুখ্যাত আলবদর কমান্ডারসহ তিন-চারজন। খোলা দরজা দিয়ে মঞ্জু বাইরে এক ফালি রাতের আকাশ দেখতে পেলেন। দুজন আলবদর সদস্য মঞ্জুর এক আহত সহযোদ্ধাকে মেঝের সঙ্গে চেপে ধরল। আলবদরের নেতা একটি দীর্ঘ ফলাবিশিষ্ট ড্যাগার বের করে আহত মুক্তিযোদ্ধার দিকে এগিয়ে গেল। ‘অরে ভালা কইরা চাইপা ধর,’ সে আদেশ জারি করল। ‘...পুত, জয় বাংলা কও? আইজকা তরে জয় বাংলা শিখাইবাম’, প্রচণ্ড হুংকার দিয়ে আলবদর নেতা তার ড্যাগারের ফলা ওই আহত মুক্তিযোদ্ধার ডান চোখে প্রবেশ করিয়ে এক মোচড়ে তাঁর চোখ উপড়ে ফেলল। আহত মুক্তিযোদ্ধার তীব্র আর্তনাদে শিহরিত হলেন মঞ্জু। তিনি বুঝতে পারলেন তাঁর জন্যও একই পরিণতি অপেক্ষা করছে।
আনোয়ারুল ইসলাম মঞ্জু ১৯৫০ সালে সরকারি চাকরিরত পিতার কর্মস্থল নেত্রকোনায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতার বদলির চাকরির কারণে তাঁর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেশ কয়েকবার পরিবর্তিত হয়। অবশেষে মঞ্জু ১৯৬৭ সালে জামালপুর হাইস্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এ সময় মঞ্জু প্রায় অনিবার্যভাবেই শেষ-ষাটের দশকের তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের উত্তাল ছাত্ররাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার সময় আনোয়ারুল ইসলাম মঞ্জু নেত্রকোনার গৌরীপুর কলেজে উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। তত দিনে মঞ্জু ছাত্ররাজনীতিতে গভীরভাবে জড়িয়ে পড়েছেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ নিরস্ত্র বাঙালির ওপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আগ্রাসী অভিযান শুরু হওয়ার স্বল্পকাল পরে এপ্রিল মাসে আনোয়ারুল ইসলাম মঞ্জু সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের উদ্দেশ্যে স্থানীয় কতিপয় তরুণসহ হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে প্রতিবেশী দেশে যান। প্রশিক্ষণ শেষে তাঁরা মুজিব বাহিনীর সদস্য হিসেবে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলায় (বর্তমানের বৃহত্তর ময়মনসিংহ) পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার কাদেরের অধীন ৯৩ ব্রিগেড নিয়োজিত ছিল। ওই ব্রিগেডের সদর দপ্তর ছিল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ৯৩ ব্রিগেডের আওতাধীন দুটি পদাতিক ব্যাটালিয়নের মধ্যে ৩১ বালুচ রেজিমেন্ট মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসই জামালপুর অঞ্চলে নিয়োজিত ছিল। অপর ব্যাটালিয়নটি, অর্থাৎ ৩৩ পাঞ্জাব রেজিমেন্ট প্রধানত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করলেও নেত্রকোনা-কিশোরগঞ্জ অঞ্চলের দায়িত্বও তাদের ওপরে ন্যস্ত ছিল। ফলে প্রায়ই ৩৩ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের এক অথবা একাধিক কোম্পানিকে নেত্রকোনা অথবা কিশোরগঞ্জ অঞ্চলে নিয়োজিত করা হতো। স্বাভাবিকভাবেই ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ সড়ক মুক্তিবাহিনীর জন্য ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি লক্ষ্যবস্তু।
১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অংশ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কবলমুক্ত হয়েছিল। ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছিল যে চূড়ান্ত যুদ্ধ সমাগত প্রায়। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে নেত্রকোনার গৌরীপুর এবং ঈশ্বরগঞ্জের সীমান্তবর্তী পলাশকান্দা গ্রামে মুজিব বাহিনীর ৪০ জন যোদ্ধা সমবেত হন। তাঁদের লক্ষ্য ছিল ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াত করা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কনভয় আক্রমণ করা।
কিন্তু স্থানীয় এক রাজাকার পলাশকান্দা গ্রামে মুজিব বাহিনীর যোদ্ধাদের অবস্থানের খবর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থানরত পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ৩৩ রেজিমেন্টে জানিয়ে দেয়। ফলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও আলবদরদের যৌথ বাহিনী মুজিব বাহিনীর যোদ্ধাদের অবস্থানকে তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলে গুলিবর্ষণ শুরু করে। প্রচণ্ড সম্মুখযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা জসিমউদ্দিন শাহাদাতবরণ করেন।
আনোয়ারুল ইসলাম মঞ্জুসহ তিনজন মুক্তিযোদ্ধা আহত অবস্থায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে বন্দী হন। আহত তিন মুক্তিযোদ্ধাকে ময়মনসিংহ শহরে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত জেলা বোর্ডের ডাকবাংলোয় অবস্থিত আলবদর বাহিনীর নির্যাতন কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে দুদিন অবর্ণনীয় নির্যাতনের পরে তিন আহত মুক্তিযোদ্ধার চোখ উপড়ে ফেলা হয়। পরে তাঁদের ব্রহ্মপুত্র নদের চরে নিয়ে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যার পরে মাটিচাপা দেওয়া হয়। চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হওয়ার মাত্র কয়েক দিন আগে ওই তিনজন বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাতবরণ করলেও তাঁদের ত্যাগের ফসল স্বাধীন বাংলাদেশ আজ ক্রমান্বয়ে অগ্রগতি অর্জন করছে।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালে ময়মনসিংহ শহরের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত জেলা বোর্ডের ডাকবাংলো ছিল ওই অঞ্চলে আলবদর বাহিনীর প্রধান নির্যাতন কেন্দ্র। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে অসংখ্য মুক্তিকামী মানুষকে আলবদর বাহিনীর ওই নির্যাতন কেন্দ্রে প্রচণ্ড নির্যাতনের পরে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে হত্যার পরে মাটিচাপা দেওয়া হয়। হত্যার আগে অধিকাংশ বন্দীর চোখ উপড়ে ফেলা হতো।
৯ ডিসেম্বর রাতে ময়মনসিংহ শহর শত্রুমুক্ত হওয়ার পরে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে মাটিচাপা অবস্থায় অসংখ্য মুক্তিকামী মানুষের গলিত-অর্ধগলিত লাশের দেখা পাওয়া যায়।
কিন্তু অর্ধশতাব্দী কাল উত্তীর্ণ হলেও ময়মনসিংহ শহরের জেলা বোর্ডের ডাকবাংলোয় কোনো স্মৃতিসৌধ স্থাপিত হয়নি। ওই শহীদদের স্মৃতির সম্মানে ময়মনসিংহ জেলা বোর্ডের ডাকবাংলোয় একটি স্মৃতিসৌধ স্থাপনের বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করতে পারে।
লেখক: মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক
শরীরে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে ধীরে ধীরে জ্ঞান ফিরে পেলেন তরুণ মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ারুল ইসলাম মঞ্জু। ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে এক সম্মুখযুদ্ধে বন্দী হওয়ার পরে ঠিক কত সময় অতিক্রান্ত হয়েছে, তা বুঝে উঠতে পারছিলেন না মঞ্জু। অবর্ণনীয় অত্যাচারে ইতিমধ্যে তাঁর দিবারাত্রি ভেদজ্ঞান লোপ পেয়েছে। হাত বাঁধা অবস্থায় বহু কষ্টে পাশ ফিরে দেখতে পেলেন তাঁর সঙ্গে বন্দী হওয়া অপর দুই আহত মুক্তিযোদ্ধাও পেছনে হাত বাঁধা অবস্থায় মেঝেতে শুয়ে আছেন।
মঞ্জু কোনো কথা বলার আগেই স্বল্পপরিসরে কক্ষের দরজা খুলে গেল। ঘরে প্রবেশ করল ময়মনসিংহ অঞ্চলের এক কুখ্যাত আলবদর কমান্ডারসহ তিন-চারজন। খোলা দরজা দিয়ে মঞ্জু বাইরে এক ফালি রাতের আকাশ দেখতে পেলেন। দুজন আলবদর সদস্য মঞ্জুর এক আহত সহযোদ্ধাকে মেঝের সঙ্গে চেপে ধরল। আলবদরের নেতা একটি দীর্ঘ ফলাবিশিষ্ট ড্যাগার বের করে আহত মুক্তিযোদ্ধার দিকে এগিয়ে গেল। ‘অরে ভালা কইরা চাইপা ধর,’ সে আদেশ জারি করল। ‘...পুত, জয় বাংলা কও? আইজকা তরে জয় বাংলা শিখাইবাম’, প্রচণ্ড হুংকার দিয়ে আলবদর নেতা তার ড্যাগারের ফলা ওই আহত মুক্তিযোদ্ধার ডান চোখে প্রবেশ করিয়ে এক মোচড়ে তাঁর চোখ উপড়ে ফেলল। আহত মুক্তিযোদ্ধার তীব্র আর্তনাদে শিহরিত হলেন মঞ্জু। তিনি বুঝতে পারলেন তাঁর জন্যও একই পরিণতি অপেক্ষা করছে।
আনোয়ারুল ইসলাম মঞ্জু ১৯৫০ সালে সরকারি চাকরিরত পিতার কর্মস্থল নেত্রকোনায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতার বদলির চাকরির কারণে তাঁর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেশ কয়েকবার পরিবর্তিত হয়। অবশেষে মঞ্জু ১৯৬৭ সালে জামালপুর হাইস্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এ সময় মঞ্জু প্রায় অনিবার্যভাবেই শেষ-ষাটের দশকের তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের উত্তাল ছাত্ররাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার সময় আনোয়ারুল ইসলাম মঞ্জু নেত্রকোনার গৌরীপুর কলেজে উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। তত দিনে মঞ্জু ছাত্ররাজনীতিতে গভীরভাবে জড়িয়ে পড়েছেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ নিরস্ত্র বাঙালির ওপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আগ্রাসী অভিযান শুরু হওয়ার স্বল্পকাল পরে এপ্রিল মাসে আনোয়ারুল ইসলাম মঞ্জু সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের উদ্দেশ্যে স্থানীয় কতিপয় তরুণসহ হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে প্রতিবেশী দেশে যান। প্রশিক্ষণ শেষে তাঁরা মুজিব বাহিনীর সদস্য হিসেবে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলায় (বর্তমানের বৃহত্তর ময়মনসিংহ) পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার কাদেরের অধীন ৯৩ ব্রিগেড নিয়োজিত ছিল। ওই ব্রিগেডের সদর দপ্তর ছিল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ৯৩ ব্রিগেডের আওতাধীন দুটি পদাতিক ব্যাটালিয়নের মধ্যে ৩১ বালুচ রেজিমেন্ট মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসই জামালপুর অঞ্চলে নিয়োজিত ছিল। অপর ব্যাটালিয়নটি, অর্থাৎ ৩৩ পাঞ্জাব রেজিমেন্ট প্রধানত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করলেও নেত্রকোনা-কিশোরগঞ্জ অঞ্চলের দায়িত্বও তাদের ওপরে ন্যস্ত ছিল। ফলে প্রায়ই ৩৩ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের এক অথবা একাধিক কোম্পানিকে নেত্রকোনা অথবা কিশোরগঞ্জ অঞ্চলে নিয়োজিত করা হতো। স্বাভাবিকভাবেই ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ সড়ক মুক্তিবাহিনীর জন্য ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি লক্ষ্যবস্তু।
১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অংশ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কবলমুক্ত হয়েছিল। ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছিল যে চূড়ান্ত যুদ্ধ সমাগত প্রায়। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে নেত্রকোনার গৌরীপুর এবং ঈশ্বরগঞ্জের সীমান্তবর্তী পলাশকান্দা গ্রামে মুজিব বাহিনীর ৪০ জন যোদ্ধা সমবেত হন। তাঁদের লক্ষ্য ছিল ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াত করা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কনভয় আক্রমণ করা।
কিন্তু স্থানীয় এক রাজাকার পলাশকান্দা গ্রামে মুজিব বাহিনীর যোদ্ধাদের অবস্থানের খবর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থানরত পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ৩৩ রেজিমেন্টে জানিয়ে দেয়। ফলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও আলবদরদের যৌথ বাহিনী মুজিব বাহিনীর যোদ্ধাদের অবস্থানকে তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলে গুলিবর্ষণ শুরু করে। প্রচণ্ড সম্মুখযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা জসিমউদ্দিন শাহাদাতবরণ করেন।
আনোয়ারুল ইসলাম মঞ্জুসহ তিনজন মুক্তিযোদ্ধা আহত অবস্থায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে বন্দী হন। আহত তিন মুক্তিযোদ্ধাকে ময়মনসিংহ শহরে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত জেলা বোর্ডের ডাকবাংলোয় অবস্থিত আলবদর বাহিনীর নির্যাতন কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে দুদিন অবর্ণনীয় নির্যাতনের পরে তিন আহত মুক্তিযোদ্ধার চোখ উপড়ে ফেলা হয়। পরে তাঁদের ব্রহ্মপুত্র নদের চরে নিয়ে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যার পরে মাটিচাপা দেওয়া হয়। চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হওয়ার মাত্র কয়েক দিন আগে ওই তিনজন বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাতবরণ করলেও তাঁদের ত্যাগের ফসল স্বাধীন বাংলাদেশ আজ ক্রমান্বয়ে অগ্রগতি অর্জন করছে।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালে ময়মনসিংহ শহরের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত জেলা বোর্ডের ডাকবাংলো ছিল ওই অঞ্চলে আলবদর বাহিনীর প্রধান নির্যাতন কেন্দ্র। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে অসংখ্য মুক্তিকামী মানুষকে আলবদর বাহিনীর ওই নির্যাতন কেন্দ্রে প্রচণ্ড নির্যাতনের পরে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে হত্যার পরে মাটিচাপা দেওয়া হয়। হত্যার আগে অধিকাংশ বন্দীর চোখ উপড়ে ফেলা হতো।
৯ ডিসেম্বর রাতে ময়মনসিংহ শহর শত্রুমুক্ত হওয়ার পরে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে মাটিচাপা অবস্থায় অসংখ্য মুক্তিকামী মানুষের গলিত-অর্ধগলিত লাশের দেখা পাওয়া যায়।
কিন্তু অর্ধশতাব্দী কাল উত্তীর্ণ হলেও ময়মনসিংহ শহরের জেলা বোর্ডের ডাকবাংলোয় কোনো স্মৃতিসৌধ স্থাপিত হয়নি। ওই শহীদদের স্মৃতির সম্মানে ময়মনসিংহ জেলা বোর্ডের ডাকবাংলোয় একটি স্মৃতিসৌধ স্থাপনের বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করতে পারে।
লেখক: মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
১২ ঘণ্টা আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৪ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৪ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৪ দিন আগে