অবশেষে প্রশাসনের টনক নড়েছে। বান্দরবানের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে জেলা প্রশাসন সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড লাগিয়েছে।

জানা গেছে, সম্প্রতি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা বইমেলার প্রস্তুতি সভায় সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে পর্যটন এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড লাগানোর কথা বলা হয়। সভায় জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি পর্যটনকেন্দ্রগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড লাগানোর জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) নির্দেশ দেন। এরপর জেলার ৭ ইউএনও নিজ নিজ উপজেলার পর্যটনকেন্দ্রে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড লাগিয়েছেন।

জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের গঠনমূলক পরামর্শকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, বান্দরবানের পর্যটনের বিকাশে সাংবাদিকদের অবদান রয়েছে। এবারও পরামর্শ দিয়ে তাঁরা সঠিক দায়িত্ব পালন করেছেন।

বান্দরবান প্রেসক্লাবের সভাপতি মনিরুল ইসলাম মনু আজকের পত্রিকাকে বলেন, সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা বইমেলা আয়োজন উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের সভায় বিষয়টি সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে প্রশাসনের নজরে আনা হয়। ইউএনওদের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক। এরপর বান্দরবানের শৈলপ্রপাত, সাঙ্গু নদী, দেবতাখুম, নাফাখুম, সাদাপাথর, বগা লেক, নীলাচল, মেঘলাসহ পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড প্রশাসনের পক্ষ থেকে লাগানো হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার মো. কায়েসুর রহমান বলেন, বান্দরবানে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসক সব সময় সতর্ক। পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি প্রশাসন অগ্রাধিকার দেয়।

বান্দরবানে বেড়াতে আসা পর্যটক নুরুল ইসলাম বলেন, বান্দরবানে আগেও কয়েকবার বেড়াতে এসেছিলেন তিনি। তখন পর্যটনকেন্দ্র ও সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকে কোনো সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড ছিল না। এবার এসে এ ধরনের সাইনবোর্ড দেখে তাঁর ভালো লেগেছে। এতে নতুন আগত পর্যটকেরা বেড়ানোর সময় সতর্ক থাকবেন।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২২ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে ১০ জনের একটি পর্যটক দল বান্দরবানে আসে। তাঁরা ২৪ ডিসেম্বর বান্দরবানের সাঙ্গু নদীতে নৌকায় করে ভ্রমণে বের হন। সাঙ্গু নদীর বেতছড়া বাদুর ঝরনা এলাকায় গিয়ে পানিতে গোসল করতে নামেন। সেখানকার পানির কুমে (কুণ্ডলী) একজন পড়ে যান। তাঁকে উদ্ধার করতে যান অন্যরা। কিন্তু পানির স্রোতে তিনজন নিখোঁজ হন। ওই দিন বেলা তিনটার দিকে মারিয়া ইসলাম নামের একজনকে উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিখোঁজ থাকেন আহনাফ আদনীন ও মারিয়াম আকিব নামে ভাই-বোন। দমকল বাহিনী, সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা তাঁদের উদ্ধারে তল্লাশি চালায়। এক দিন পর ২৫ ডিসেম্বর নিখোঁজ আদনীন ও আকিবের লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনজনের মৃত্যুর ঘটনা সবাইকে ভাবিয়ে তোলে। এর আগে অক্টোবরে বান্দরবানের রোয়াংছড়ির পর্যটনকেন্দ্র দেবতুখুমে এক যুবক পানিতে পড়ে মারা যান।