Ajker Patrika

শয্যাসংখ্যার দুই গুণ রোগী

পিরোজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২২, ১১: ২১
শয্যাসংখ্যার দুই গুণ রোগী

প্রচণ্ড দাবদাহে সারা দেশের মতো পিরোজপুরেও বেড়েছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। ধারণক্ষমতার দ্বিগুণের বেশি রোগী ভর্তি হাওয়ায় সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ৫৩ জন।

এদিকে জেলা হাসপাতালে বেড রয়েছে মাত্র ২৪টি। মেঝেতে বসে চিকিৎসা নিচ্ছে ২০-২৫ জন রোগী। হাসপাতালের অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ আর সেবা কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

জানা গেছে, বছরের শুরু থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত জেলা হাসপাতালে ৬২৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছিল। এদিকে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ার কারণে শুধু এপ্রিল মাসের শুরু থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত ভর্তি হয়েছে ১৬৩ জন রোগী। ১০০ শয্যার জেলা হাসপাতালে এখন ভর্তি রোগীর সংখ্যা প্রায় ১৭৫ জন।

রোগীর স্বজনেরা জানান, জেলা হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের অবস্থা খুবই খারাপ। পুরো ডায়রিয়া ওয়ার্ড রোগীতে কানায় কানায় পূর্ণ। অনেক রোগী বেড না পেয়ে মেঝেতে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। ছোট ওয়ার্ডে অনেক বেশি রোগী হওয়ায় হাসপাতালে অপরিচ্ছন্ন অবস্থা বিরাজমান। সব মিলিয়ে শিশু ও বয়স্ক রোগীদের নিয়ে স্বজনেরা অনেক ভোগান্তিতে আছেন। সামান্য বিষয়েও রোগীকে খুলনা বা বরিশালে পাঠানো হয়। গরমের সঙ্গে সঙ্গে ডায়রিয়া ওয়ার্ডের রোগীদের ভোগান্তিও বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্বিগুণ হারে।

রোগীর স্বজন সালমা আক্তার বলেন, ‘আমার ছেলের বয়স আড়াই বছর। তিন দিন ধরে অসুস্থ। রোগী একটু পরপর আসছে, কিন্তু সিট নেই। সিট থাকলেও রেক্সিন ভালো নেই। নোংরা পরিবেশ। পরিষ্কার করতে আসেন না কেউ। নিজেরাই যতটুকু পরিচ্ছন্ন করা যায়, করে আছি।’

রোগীদের সঙ্গে নার্সরা দুর্ব্যবহার করছেন অভিযোগ তুলে আরেক স্বজন আফসার আলী বলেন, ‘পরামর্শ চাইতে গেলেও রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে। ফ্যান ঘোরে না, মশারি নেই, কোনো কথাই বলা যায় না। একটি সিরিঞ্জ, তা-ও বাইরে থেকে কিনে আনতে হচ্ছে।’

এদিকে অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নার্স মিরা বড়াল জানান, হাসপাতালে শয্যা রয়েছে ২৪টি। সেখানে রোগী ভর্তি অনেক বেশি। ওয়ার্ডে নার্স মাত্র তিনজন। ফলে রোগীদের চাহিদা অনুযায়ী যেভাবে সেবা দেওয়া দরকার, তা তাঁরা দিতে পারছেন না। আর ওয়ার্ড পরিষ্কার করার জন্য হাসপাতালে মাত্র একজন সুইপার আছেন। যিনি পুরো হাসপাতাল পরিষ্কার করার দায়িত্বে আছেন। চাইলেও রোগীদের কাঙ্ক্ষিত সেবা দেওয়া যাচ্ছে না।

পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগীদের চাপ আছে। আমরা চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছি। ফ্লোরে রোগীর সংখ্যা বেশি থাকায় কিছুটা সমস্যা হলেও আমাদের পর্যাপ্ত ওষুধ রয়েছে। রোগীর সংখ্যা বাড়লেও আমরা তাঁদের সেবা দিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত আছি।’

জেলা সিভিল সার্জন হাসনাত ইউসুফ জাকী এ বিষয়ে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শুষ্ক মৌসুমে ডায়রিয়া রোগী বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে আমাদের প্রস্তুতি যথেষ্ট। ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে পিরোজপুরে মোট ৬৭টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের জন্য আইভি স্যালাইন মজুত আছে ১০০০ সিসির ১৩ হাজার ৪১৮টি এবং ৫০০ সিসির ৫ হাজার ৩৩১টি। ’

তিনি আরও বলেন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটও যথেষ্ট পরিমাণ মজুত আছে। চাইলে সংগ্রহ করতে পারবেন। বিশুদ্ধ পানি পানের কোনো বিকল্প নেই। একই সঙ্গে ডায়রিয়া হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মুসলিম থেকে খ্রিষ্টান হওয়া ইরানি নারী এখন পানামার জঙ্গলে

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত