রাজশাহীর আতিথেয়তা সৌন্দর্যে মুগ্ধ অতিথিরা

রিমন রহমান, রাজশাহী
প্রকাশ : ০১ মার্চ ২০২২, ০৬: ৪৮
আপডেট : ০১ মার্চ ২০২২, ১৫: ০৭

রাজশাহীর আমের চেয়েও নাকি মিষ্টি এখানকার মানুষের ব্যবহার। এমনটিই বললেন ভারতের ত্রিপুরার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (কারা, অগ্নিনির্বাপণ ও জরুরি সেবা) রামপ্রসাদ পাল। তাঁর কথায়, ‘আমের মৌসুমে এলে আর আম খাওয়া লাগত না। রাজশাহীর মানুষের আচার-ব্যবহার আমের চেয়েও মিষ্টি। এই আতিথেয়তার স্বাদ নিয়ে গেলাম। যত দিন বাঁচব, মনে থাকবে।’

গতকাল সোমবার সকালে রাজশাহীর বিলাসবহুল হোটেলে বসে রাজশাহী সম্পর্কে এ প্রতিবেদকের কাছে এমন মন্তব্য করলেন ভারতের এই রাজনীতিক। বললেন, ‘আমাদের ভারতবর্ষে তো বহু সংস্কৃতি, বহু ভাষা, বহু রকম মানুষ। কিন্তু আমাদের ত্রিপুরা, যেখানে বেড়ে উঠেছি তার সঙ্গে বাংলাদেশের একটুও পার্থক্য নেই। পার্থক্য যদি বলি, তাহলে এখানকার আতিথেয়তার কথাই বলতে হয়। এটা অসাধারণ।’

‘বাংলাদেশকে তো বিদেশ মনে হয় না’ মন্তব্য করলেও প্রতিবেশী দেশটির এই মন্ত্রী বললেন, ‘আমাদের সঙ্গে এ দেশের ভাষা, সংস্কৃতিসহ নানা ক্ষেত্রে অনেক মিল রয়েছে। রাজশাহীতে আসার পর থেকে যে আতিথেয়তা ও আপ্যায়ন পেয়েছি, তা ভাষায় প্রকাশ করার নয়। সবকিছু মিলিয়ে আমি মুগ্ধ। রাজশাহী অনেক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর শহর।’

বাংলাদেশ-ভারত পঞ্চম সাংস্কৃতিক মিলনমেলায় ভারতীয় দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভারতীয় এ মন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে অতিথি হয়ে এসেছেন ভারতের দৈনিক আজকাল পত্রিকার সাংবাদিক ও আজকের পত্রিকার কলকাতা প্রতিনিধি তরুণ চট্টোপাধ্যায়। সোমবার সকালে মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন তিনি। বললেন, ‘রাজশাহী অনেক সুন্দর, শুধু খবরের কাগজেই পড়েছি। নিজের চোখে এবার দেখে গেলাম, এ শহর কতটা সাজানো-গোছানো আর সুন্দর।’

রাজশাহী এসে মুগ্ধতার কথা জানিয়েছেন কলকাতার অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশটাকেই আমি অনেক ভালোবাসি। রাজশাহী শহরে এসে তো আমি অভিভূত। এত আয়োজন! এত আতিথেয়তা সত্যিই অসাধারণ। এককথায় আমি সত্যিই মুগ্ধ।’

ভারতের কবি, লেখক ও সংগীতশিল্পী নবনীতা রায় চৌধুরী বললেন, ‘এই মিলনমেলায় এসে বুঝলাম, রাজশাহীতে সংস্কৃতির চর্চা হয়। এখানকার মানুষ সংস্কৃতিপ্রিয়। পুরোনো শহর বলেই হয়তো এখানকার মানুষ সংস্কৃতিপ্রিয়। সত্যি বলতে কি, কোনো কালচারাল অনুষ্ঠানে যে এত মানুষ হাজির হয়, তা এই প্রথম রাজশাহীতে দেখলাম।’

আর টেকনো ইন্ডিয়ার কর্মকর্তা তপন কুমার ঘোষ বলেন, ‘রাজশাহী শহরের মানুষের ব্যবহার অসাধারণ। গাড়ি থেকে যতটুকু দেখলাম, তাতে খুব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন একটা শহর মনে হলো। তিন দিন অসাধারণভাবে কেটে গেল। এখানকার লোকেরা এত ভালো, অতিথিপরায়ণ তা বুঝলাম। খুবই মধুর একটা স্মৃতি থেকে গেল জীবনে। এটা সব সময় মনে পড়বে।’

অনুষ্ঠানে এসে যে শুধু ভারতীয় অতিথিরাই মুগ্ধ হয়েছেন তা নয়। মুগ্ধ দেশের সংস্কৃতিকর্মী ও শিল্পীরা। গত রোববার রাতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চেই সে কথা বলে গেলেন চিরকুট ব্যান্ডের ভোকাল শারমিন সুলতানা সুমি। বললেন, ‘রাজশাহী এসে স্বল্প সময়েই এত আতিথেয়তা, ভালোবাসা পেলাম যে এ শহরটাকে “ভালোবাসার রাজধানী” ঘোষণা করা উচিত।’

অবশ্য অতিথিদের মনে জায়গা করে নিতে অনুষ্ঠানের জন্য রাজশাহীতে প্রস্তুতিও কম ছিল না। অনুষ্ঠান সফল করতে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন দিনরাত কাজ করেছেন। দফায় দফায় সভা করেছেন সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে। সিটি করপোরেশন শহরটাকে সাজিয়ে তোলা হয় বর্ণিল সাজে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত