জামালপুরের সার পাচার হচ্ছে কুড়িগ্রাম জেলায়

মহসিন রেজা, দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) 
Thumbnail image

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সানন্দবাড়ী বাজার থেকে অবাধে সার পাচার হচ্ছে কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলায়। এক জেলা থেকে অন্য জেলায় সার বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছেন না সানন্দবাড়ী বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী। তাঁরা বেশি লাভের আশায় অবাধে খুচরা ও পাইকারিতে সার বিক্রি করছেন পাশের রাজিবপুর উপজেলার নয়ারচর বাজারসহ গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার চরাঞ্চলগুলোতে। এতে সারের সংকট দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয় কৃষকেরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় ১৮ হাজার ৮৩৮ হেক্টর আবাদি জমি রয়েছে। এর জন্য গত ২০২১-২২ অর্থবছরে সারের প্রয়োজন ছিল ১১ হাজার ৪৩৫ টন ইউরিয়া, ৩ হাজার ৯৭০ টন টিএসপি, ৪ হাজার ৯৬৩ টন এমওপি, ৪ হাজার ২৬৮ টন ডিএপি। কিন্তু বরাদ্দ দেওয়া হয় ৬ হাজার ৮৪২ টন ইউরিয়া, ২ হাজার ২৯৯ টন টিএসপি, ২ হাজার ১৬ টন এমওপি, ৩ হাজার ১৯১ টন ডিএপি। ২০২২-২৩ অর্থবছরেও আনুপাতিক হারে প্রায় সমান পরিমাণ সার বরাদ্দ দেওয়া হবে। প্রাপ্ত সার বেচা-কেনার জন্য উপজেলায় বিসিআইসির অনুমোদিত ২১ জন ডিলার রয়েছেন।

ডিলাররা জানান, বর্তমানে উপজেলায় সারের সংকট না থাকলেও আবাদি জমি ও ফসলের পরিমাণের আনুপাতিক হারে নির্দিষ্ট পরিমাণ সার পাচ্ছেন না তাঁরা। প্রাপ্ত সার কৃষকদের জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুলিপিতে সংশ্লিষ্ট উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার স্বাক্ষরসহ লিখিত অনুমতি সাপেক্ষে বিক্রি করেন তাঁরা। কিন্তু নিয়মের ফাঁকফোকর দিয়ে খোলাবাজারের ব্যবসায়ীদের কাছে সার যাওয়ায় বাধাহীনভাবে এক জেলার সার অন্য জেলায় বিক্রি হচ্ছে। তাই এ উপজেলায় সারের জোগান কমছে এবং বাড়ছে সারের চাহিদা।

অন্যদিকে চাহিদার তুলনায় সারের বরাদ্দ কম হলেও ঘাটতি নেই বলে দাবি কৃষি বিভাগের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কৃষক বলেন, এক বস্তা সার কেনার জন্য চর আম খাওয়া ইউনিয়নের এক ডিলারের বিক্রয় কেন্দ্রে গেলে তাঁকে সার না দিয়ে ফেরত দেওয়া হয়। অথচ ওই ডিলার ফুলছড়ির জিগাবাড়ী, মোল্লারচরের কৃষকদের কাছে সার বিক্রি করেছেন। উপজেলার কৃষক হয়েও তাঁকে সার দেওয়া হয়নি বলে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। সানন্দবাড়ী বাজার থেকে প্রতিনিয়ত গাইবান্ধার ফুলছড়ির চরাঞ্চলের গ্রামগুলোতে সার যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আতিকুর রহমান জানান, সার বিতরণে দুর্নীতি এড়াতে কৃষকদের জাতীয় পরিচয়পত্রে তিনি স্বাক্ষরসহ লিখিত সুপারিশ করলে তবেই ডিলাররা ওই কৃষককে নির্দিষ্ট পরিমাণ সার দেন। নিয়মের ফাঁকফোকর দিয়ে খোলাবাজারের ব্যবসায়ীদের কাছে সার যাওয়ায় এমন অনিয়ম তৈরি হতে পারে। তবে বিসিআইসির অনুমোদিত ডিলাররা নিয়মানুযায়ী কৃষকদের মধ্যে সার বিতরণ করছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর আজাদ জানান, সার পাচারের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ পাচার বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত