সাহিদুল ইসলাম চৌধুরী, ঢাকা
চলতি বছরের মার্চের মধ্যে পাঁচ লাখ বিদেশি কর্মী দরকার মালয়েশিয়ার। দেশটির নিয়োগকর্তারা দ্রুত কর্মী নিতে চান। এ জন্য প্রয়োজনে বাংলাদেশের সঙ্গে বছরখানেক আগে সই হওয়া চুক্তিও সংশোধন করে কর্মী নেওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করতে চান দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।
বাংলাদেশের অন্যতম বড় শ্রমবাজার মালয়েশিয়া। বায়রার তথ্য অনুযায়ী, অন্তত ২০ লাখ তরুণ কাজের জন্য দেশটিতে যেতে আগ্রহী। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বড় বাধা দুই দেশে গড়ে ওঠা বৈধ ও অবৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির কয়েক ডজন চক্র। এই চক্রগুলো নিয়োগপত্র কিনে নেয়। গতকাল শুক্রবারও কাজভেদে কুয়ালালামপুরে একেকটি নিয়োগপত্র বিক্রি হয়েছে গড়ে তিন হাজার মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত দরে। বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ৫১ হাজার টাকা। এই নিয়োগপত্র কয়েক দফায় এজেন্সিগুলোর মধ্যে হাতবদল হয়। যার মাশুল দিতে হয় কর্মীকে। এই নিয়োগপত্র কিনে একজন কর্মীকে দেশটিতে যেতে উড়োজাহাজ ভাড়াসহ সব মিলিয়ে খরচ করতে হয় প্রায় আট গুণ অর্থ। প্রায় ৪ লাখ টাকা। মাসের পর মাস ঘুরে, কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া বাড়তি খরচ বহন করেই সেখানে যাচ্ছেন অধিকাংশ কর্মী।
কৃষিকাজের ভিসা নিয়ে সম্প্রতি দেশটিতে গেছেন চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার আব্দুল কাদের। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ছয় মাস অপেক্ষার পর ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা খরচ করে তিনি যেতে পেরেছেন। বেতন মাসে দেড় হাজার রিঙ্গিত। ওভারটাইম হবে কি না, জানেন না। পরিবারের চাষের জমি বিক্রি করে গেছেন। এজেন্ট বলেছে, আগামী সপ্তাহে কাজে যোগ দিতে পারবেন। কত দিনে টাকা উঠবে, জানেন না।
কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশের হাইকমিশনার গোলাম সারওয়ার গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত ২ লাখ ২০ হাজার বাংলাদেশি কর্মীর চাহিদা এসেছে। এর মধ্যে প্রায় ৮০ হাজার কর্মী মালয়েশিয়া পৌঁছে গেছেন। কর্মী যাওয়ার খরচ ও ঝুঁকি কমাতে এবং প্রক্রিয়াটি গতিশীল করতে হাইকমিশন মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে বলে তিনি জানান।
মালয়েশিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমকে উদ্ধৃত করে মালয়েশিয়ান এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি সাইয়িদ হুসেইন সাইয়িদ হাসমান বলেন, নেপাল থেকে প্রতি কর্মীর মালয়েশিয়া যেতে খরচ হয় ৩ হাজার ৭০০ রিঙ্গিত। আর তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়া থেকে প্রতি কর্মীর যেতে খরচ হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার রিঙ্গিত।
ফেডারেশন ৯ ফেব্রুয়ারি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, আনোয়ার ইব্রাহিম চান কর্মী আনার চড়া খরচ কমাতে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিয়োগের ক্ষেত্রে এজেন্ট ব্যবহার বন্ধ করুক।
সাইয়িদ হুসেইন বলেন, নিয়োগকর্তা ও কর্মী উভয়ের স্বার্থ রক্ষায় কর্মীদের যাওয়ার পুরো প্রক্রিয়াটি দুই দেশের সরকারের মাধ্যমে (গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট) সম্পন্ন হওয়া দরকার।
তবে বাংলাদেশ থেকে কর্মী পাঠানোর একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লি. (বোয়েসেল)-এর বিভিন্ন দেশে লাখ লাখ কর্মী পাঠানোর সক্ষমতা আছে কি না, সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন সরকারের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। এককভাবে বোয়েসেল কিংবা রিক্রুটিং এজেন্টদের ওপর নির্ভর না করে সরকারি ও বেসরকারি উভয় চ্যানেল কাজে লাগিয়ে কর্মী যাওয়া সহজ করা যেতে পারে বলে মত দেন তিনি।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে পুত্রাজায়ায় গত জানুয়ারির শুরুর দিকে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) সাবেক সভাপতি নূর আলী ও সাবেক মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান।
সাক্ষাতে কী কথা হয়েছে, জানতে চাইলে নোমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, মালয়েশিয়ায় চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে পাঁচ লাখ লোক দরকার। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জানতে চেয়েছেন, কেন বাংলাদেশ থেকে কর্মী যাচ্ছে না। তাঁকে ধারণা দেওয়া হয়েছে, কর্মী না যাওয়ার সমস্যার মূল বাংলাদেশে। প্রতিনিধিদলটির পক্ষ থেকে আনোয়ার ইব্রাহিমকে বলা হয়েছে, সমস্যার একটি বড় অংশ মালয়েশিয়ায়। তখন তিনি দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিষয়টির সুরাহা করতে বলেন। দেশটির আগের সরকার বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে ২০২১ সালে যে সমঝোতা স্মারক সই করেছে, কর্মী নেওয়া সহজ করতে প্রয়োজনে তার কিছু ধারা বদলাতে হলে তা-ও করতে নির্দেশ দেন তিনি।
কর্মী যাওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে, সমঝোতা স্মারকে এমন বিধানে যেখানে নেপালসহ অনেক দেশ রাজি হয় না, সেখানে বাংলাদেশ কেন রাজি হলো, তা নিয়ে আনোয়ার ইব্রাহিম বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বলে নোমানের দাবি।
মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজার কবজা করতে ২০১৬ সালে ১০ রিক্রুটিং এজেন্সির সিন্ডিকেট গড়ে ওঠে। এদের তৎপরতার মুখে দেশটি ২০১৮ সালে কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেয়। ২০২১ সালে সই হওয়া সমঝোতা স্মারকে দুই সরকারের মাধ্যমে কর্মী যাওয়া-আসার প্রক্রিয়া বাদ দেওয়া হয়। যুক্ত করা হয় মালয়েশিয়ার রিক্রুটিং এজেন্সি। বর্তমানে এই সিন্ডিকেটের সদস্য শতাধিক রিক্রুটিং এজেন্সি। এসব এজেন্সির সঙ্গে সম্প্রতি আরও প্রায় চার শ সাব-এজেন্ট প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত হয়েছে। কিন্তু এতে কর্মী যাওয়ার সমস্যাগুলোর সুরাহা হয়নি।
২০২১ সালের চুক্তি অনুযায়ী, কর্মীকে মালয়েশিয়ায় নেওয়া, তাঁদের আবাসন, কাজে নিয়োজিত করা এবং কর্মীকে দেশে ফেরত পাঠানোর খরচ নিয়োগকর্তা বহন করবেন। এর বাইরে নিয়োগকর্তা কর্মীর বিমা, চিকিৎসা ও কল্যাণ নিশ্চিত করবেন।
মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পর বাংলাদেশি কর্মীর ইমিগ্রেশন ফি, ভিসা ফি, স্বাস্থ্য পরীক্ষার খরচ, ইনস্যুরেন্স-সংক্রান্ত খরচ, করোনা পরীক্ষার খরচ, কোয়ারেন্টিন-সংক্রান্ত খরচসহ সব ব্যয় নিয়োগকর্তা বা কোম্পানির বহন করার কথা।
বায়রার সাবেক মহাসচিব নোমান বলেন, বায়রার অধিকাংশ সদস্য চায় বাংলাদেশ থেকে বিদেশে কর্মী পাঠানোর বিষয়গুলো কোনো ব্যক্তি বা সিন্ডিকেটের কবজায় না রেখে সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকুক। কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ সবকিছু সরকারের সরাসরি তত্ত্বাবধানে হওয়া দরকার।
কর্মী যাওয়া সহজ করার বিষয়টি আলোচনা করতে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুসন বিন ইসমাইল চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ঢাকা ঘুরে গেছেন। তাঁর সফরের ধারাবাহিকতায় আগামী মার্চের শুরুর দিকে এ বিষয়ে দুই দেশের যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক চেয়েছে বাংলাদেশ, এমনটা জানিয়ে হাইকমিশনার সারওয়ার আশা প্রকাশ করেন, কর্মী যাওয়ার সমস্যা নিরসনে ওই বৈঠক সহায়ক হতে পারে।
কাজের চাহিদাপত্র সত্যায়নের ধীরগতির অভিযোগ প্রসঙ্গে হাইকমিশনের এক কর্মকর্তা বলেন, দুই দেশের মধ্যে স্থাপিত ইলেকট্রনিক চ্যানেলে চাহিদাপত্র ইস্যু থেকে শুরু করে যথার্থতা যাচাই ও সত্যায়নের কাজগুলো হয়। চাহিদাপত্রের যথার্থতা যাচাইয়ের মূল দায়িত্ব মালয়েশিয়া সরকারের। তারপরও অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশে হাইকমিশনের কর্মকর্তারা প্রয়োজনে কারখানা বা নিয়োগকর্তার দপ্তরে গিয়ে তারপর সত্যায়ন করে থাকেন। এ ক্ষেত্রে কিছুটা সময় লেগে যায়।
বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল কুয়ালালামপুরে বসবাসকারী এক বাংলাদেশি বলেন, যেসব নিয়োগকর্তা নিয়ম মেনে ব্যবসা করেন (কমপ্লায়েন্ট), কর্মী যাওয়ার খরচ নিজেরাই বহন করতে চান, তাঁরা এজেন্টদের মাধ্যমে ‘চড়া খরচে’ যাওয়া কর্মী নিয়োগ দিতে চান না। কারণ, এতে তাঁদের ব্যবসার খরচ বেড়ে যায়।
চলতি বছরের মার্চের মধ্যে পাঁচ লাখ বিদেশি কর্মী দরকার মালয়েশিয়ার। দেশটির নিয়োগকর্তারা দ্রুত কর্মী নিতে চান। এ জন্য প্রয়োজনে বাংলাদেশের সঙ্গে বছরখানেক আগে সই হওয়া চুক্তিও সংশোধন করে কর্মী নেওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করতে চান দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।
বাংলাদেশের অন্যতম বড় শ্রমবাজার মালয়েশিয়া। বায়রার তথ্য অনুযায়ী, অন্তত ২০ লাখ তরুণ কাজের জন্য দেশটিতে যেতে আগ্রহী। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বড় বাধা দুই দেশে গড়ে ওঠা বৈধ ও অবৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির কয়েক ডজন চক্র। এই চক্রগুলো নিয়োগপত্র কিনে নেয়। গতকাল শুক্রবারও কাজভেদে কুয়ালালামপুরে একেকটি নিয়োগপত্র বিক্রি হয়েছে গড়ে তিন হাজার মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত দরে। বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ৫১ হাজার টাকা। এই নিয়োগপত্র কয়েক দফায় এজেন্সিগুলোর মধ্যে হাতবদল হয়। যার মাশুল দিতে হয় কর্মীকে। এই নিয়োগপত্র কিনে একজন কর্মীকে দেশটিতে যেতে উড়োজাহাজ ভাড়াসহ সব মিলিয়ে খরচ করতে হয় প্রায় আট গুণ অর্থ। প্রায় ৪ লাখ টাকা। মাসের পর মাস ঘুরে, কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া বাড়তি খরচ বহন করেই সেখানে যাচ্ছেন অধিকাংশ কর্মী।
কৃষিকাজের ভিসা নিয়ে সম্প্রতি দেশটিতে গেছেন চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার আব্দুল কাদের। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ছয় মাস অপেক্ষার পর ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা খরচ করে তিনি যেতে পেরেছেন। বেতন মাসে দেড় হাজার রিঙ্গিত। ওভারটাইম হবে কি না, জানেন না। পরিবারের চাষের জমি বিক্রি করে গেছেন। এজেন্ট বলেছে, আগামী সপ্তাহে কাজে যোগ দিতে পারবেন। কত দিনে টাকা উঠবে, জানেন না।
কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশের হাইকমিশনার গোলাম সারওয়ার গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত ২ লাখ ২০ হাজার বাংলাদেশি কর্মীর চাহিদা এসেছে। এর মধ্যে প্রায় ৮০ হাজার কর্মী মালয়েশিয়া পৌঁছে গেছেন। কর্মী যাওয়ার খরচ ও ঝুঁকি কমাতে এবং প্রক্রিয়াটি গতিশীল করতে হাইকমিশন মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে বলে তিনি জানান।
মালয়েশিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমকে উদ্ধৃত করে মালয়েশিয়ান এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি সাইয়িদ হুসেইন সাইয়িদ হাসমান বলেন, নেপাল থেকে প্রতি কর্মীর মালয়েশিয়া যেতে খরচ হয় ৩ হাজার ৭০০ রিঙ্গিত। আর তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়া থেকে প্রতি কর্মীর যেতে খরচ হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার রিঙ্গিত।
ফেডারেশন ৯ ফেব্রুয়ারি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, আনোয়ার ইব্রাহিম চান কর্মী আনার চড়া খরচ কমাতে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিয়োগের ক্ষেত্রে এজেন্ট ব্যবহার বন্ধ করুক।
সাইয়িদ হুসেইন বলেন, নিয়োগকর্তা ও কর্মী উভয়ের স্বার্থ রক্ষায় কর্মীদের যাওয়ার পুরো প্রক্রিয়াটি দুই দেশের সরকারের মাধ্যমে (গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট) সম্পন্ন হওয়া দরকার।
তবে বাংলাদেশ থেকে কর্মী পাঠানোর একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লি. (বোয়েসেল)-এর বিভিন্ন দেশে লাখ লাখ কর্মী পাঠানোর সক্ষমতা আছে কি না, সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন সরকারের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। এককভাবে বোয়েসেল কিংবা রিক্রুটিং এজেন্টদের ওপর নির্ভর না করে সরকারি ও বেসরকারি উভয় চ্যানেল কাজে লাগিয়ে কর্মী যাওয়া সহজ করা যেতে পারে বলে মত দেন তিনি।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে পুত্রাজায়ায় গত জানুয়ারির শুরুর দিকে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) সাবেক সভাপতি নূর আলী ও সাবেক মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান।
সাক্ষাতে কী কথা হয়েছে, জানতে চাইলে নোমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, মালয়েশিয়ায় চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে পাঁচ লাখ লোক দরকার। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জানতে চেয়েছেন, কেন বাংলাদেশ থেকে কর্মী যাচ্ছে না। তাঁকে ধারণা দেওয়া হয়েছে, কর্মী না যাওয়ার সমস্যার মূল বাংলাদেশে। প্রতিনিধিদলটির পক্ষ থেকে আনোয়ার ইব্রাহিমকে বলা হয়েছে, সমস্যার একটি বড় অংশ মালয়েশিয়ায়। তখন তিনি দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিষয়টির সুরাহা করতে বলেন। দেশটির আগের সরকার বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে ২০২১ সালে যে সমঝোতা স্মারক সই করেছে, কর্মী নেওয়া সহজ করতে প্রয়োজনে তার কিছু ধারা বদলাতে হলে তা-ও করতে নির্দেশ দেন তিনি।
কর্মী যাওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে, সমঝোতা স্মারকে এমন বিধানে যেখানে নেপালসহ অনেক দেশ রাজি হয় না, সেখানে বাংলাদেশ কেন রাজি হলো, তা নিয়ে আনোয়ার ইব্রাহিম বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বলে নোমানের দাবি।
মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজার কবজা করতে ২০১৬ সালে ১০ রিক্রুটিং এজেন্সির সিন্ডিকেট গড়ে ওঠে। এদের তৎপরতার মুখে দেশটি ২০১৮ সালে কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেয়। ২০২১ সালে সই হওয়া সমঝোতা স্মারকে দুই সরকারের মাধ্যমে কর্মী যাওয়া-আসার প্রক্রিয়া বাদ দেওয়া হয়। যুক্ত করা হয় মালয়েশিয়ার রিক্রুটিং এজেন্সি। বর্তমানে এই সিন্ডিকেটের সদস্য শতাধিক রিক্রুটিং এজেন্সি। এসব এজেন্সির সঙ্গে সম্প্রতি আরও প্রায় চার শ সাব-এজেন্ট প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত হয়েছে। কিন্তু এতে কর্মী যাওয়ার সমস্যাগুলোর সুরাহা হয়নি।
২০২১ সালের চুক্তি অনুযায়ী, কর্মীকে মালয়েশিয়ায় নেওয়া, তাঁদের আবাসন, কাজে নিয়োজিত করা এবং কর্মীকে দেশে ফেরত পাঠানোর খরচ নিয়োগকর্তা বহন করবেন। এর বাইরে নিয়োগকর্তা কর্মীর বিমা, চিকিৎসা ও কল্যাণ নিশ্চিত করবেন।
মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পর বাংলাদেশি কর্মীর ইমিগ্রেশন ফি, ভিসা ফি, স্বাস্থ্য পরীক্ষার খরচ, ইনস্যুরেন্স-সংক্রান্ত খরচ, করোনা পরীক্ষার খরচ, কোয়ারেন্টিন-সংক্রান্ত খরচসহ সব ব্যয় নিয়োগকর্তা বা কোম্পানির বহন করার কথা।
বায়রার সাবেক মহাসচিব নোমান বলেন, বায়রার অধিকাংশ সদস্য চায় বাংলাদেশ থেকে বিদেশে কর্মী পাঠানোর বিষয়গুলো কোনো ব্যক্তি বা সিন্ডিকেটের কবজায় না রেখে সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকুক। কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ সবকিছু সরকারের সরাসরি তত্ত্বাবধানে হওয়া দরকার।
কর্মী যাওয়া সহজ করার বিষয়টি আলোচনা করতে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুসন বিন ইসমাইল চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ঢাকা ঘুরে গেছেন। তাঁর সফরের ধারাবাহিকতায় আগামী মার্চের শুরুর দিকে এ বিষয়ে দুই দেশের যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক চেয়েছে বাংলাদেশ, এমনটা জানিয়ে হাইকমিশনার সারওয়ার আশা প্রকাশ করেন, কর্মী যাওয়ার সমস্যা নিরসনে ওই বৈঠক সহায়ক হতে পারে।
কাজের চাহিদাপত্র সত্যায়নের ধীরগতির অভিযোগ প্রসঙ্গে হাইকমিশনের এক কর্মকর্তা বলেন, দুই দেশের মধ্যে স্থাপিত ইলেকট্রনিক চ্যানেলে চাহিদাপত্র ইস্যু থেকে শুরু করে যথার্থতা যাচাই ও সত্যায়নের কাজগুলো হয়। চাহিদাপত্রের যথার্থতা যাচাইয়ের মূল দায়িত্ব মালয়েশিয়া সরকারের। তারপরও অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশে হাইকমিশনের কর্মকর্তারা প্রয়োজনে কারখানা বা নিয়োগকর্তার দপ্তরে গিয়ে তারপর সত্যায়ন করে থাকেন। এ ক্ষেত্রে কিছুটা সময় লেগে যায়।
বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল কুয়ালালামপুরে বসবাসকারী এক বাংলাদেশি বলেন, যেসব নিয়োগকর্তা নিয়ম মেনে ব্যবসা করেন (কমপ্লায়েন্ট), কর্মী যাওয়ার খরচ নিজেরাই বহন করতে চান, তাঁরা এজেন্টদের মাধ্যমে ‘চড়া খরচে’ যাওয়া কর্মী নিয়োগ দিতে চান না। কারণ, এতে তাঁদের ব্যবসার খরচ বেড়ে যায়।
পর্দার নায়িকারা নিজেদের বয়স আড়ালে রাখা পছন্দ করেন। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আজমেরী হক বাঁধন। প্রতিবছর নিজের জন্মদিনে জানান দেন তাঁর বয়স। গতকাল ছিল বাঁধনের ৪১তম জন্মদিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই জানালেন এই তথ্য।
২ দিন আগে১০ বছরের বেশি সময় ধরে শোবিজে কাজ করছেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। নাটকের পাশাপাশি ওটিটিতে দেখা গেছে তাঁকে। সরকারি অনুদানের ‘দেবী’ নামের একটি সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। প্রশংসিত হলেও সিনেমায় আর দেখা মেলেনি তাঁর। ছোট পর্দাতেও অনেক দিন ধরে অনিয়মিত তিনি। এবার শবনম ফারিয়া হাজির হচ্ছেন নতুন পরিচয়ে। কমেডি রিয়েলিটি
২ দিন আগেআমাদের লোকসংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য যাত্রাপালা। গণমানুষের সংস্কৃতি হিসেবে বিবেচিত এই যাত্রাপালা নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করছে ‘যাত্রা উৎসব-২০২৪’। আগামী ১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে শুরু হবে ৭ দিনব্যাপী এই উৎসব।
২ দিন আগে‘বঙ্গবন্ধু’ পদবি বিলীন হবে না। হতে পারে না। যেমনটি ‘দেশবন্ধু’ চিত্তরঞ্জন দাশের পদবি বিলীন হয়নি। ইতিহাসে এসব পদবি অম্লান ও অক্ষয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিত্ব ছিল অনন্যসাধারণ। আপনজনকে তো অবশ্যই, শত্রুপক্ষের লোকেরাও ব্যক্তিগত পর্যায়ে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হতেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর উচ্চপদের
২ দিন আগে