আব্দুর রাজ্জাক
গত বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী সংসদে বাজেট পেশ করেছেন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের আকার ৭ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকার ওপরে। বর্তমানে যে বাজেট প্রণয়ন করা হয়, সেই বাজেটের অর্থের জোগান দেওয়া হয় অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে। মোটাদাগে বলতে গেলে বাজেটের ৯০ শতাংশ অর্থ আসে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে। প্রতিবছরই বাজেটে ঘাটতি থাকে। গত বছর যে বাজেট প্রাক্কলন করা হয়েছিল, সেটা পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি থাকার আশঙ্কা আছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওপর ন্যস্ত ছিল ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকার টার্গেট। যেহেতু জুন মাস চলমান, এখনো প্রায় এক মাস সময় আছে সামনে। সবকিছু হিসাব করে দেখা গেছে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার মতো রাজস্ব আদায়ের সম্ভাবনা আছে।
তারপরও রাজস্ব আহরণ আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে নতুন বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে। যেহেতু ৮০ শতাংশের ওপরে রাজস্ব আদায় করতে হয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে, তাই সবার দৃষ্টি থাকে রাজস্ব বোর্ডের দিকে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে রাজস্ব আহরণ ধরা হয়েছে ৪ লাখ কোটি টাকার ওপরে। এখন জনমনে প্রশ্ন, গত অর্থবছরে যেহেতু রাজস্ব ঘাটতি থাকবে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা, সামনের দিনগুলোতে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে, তা এখনো বোধগম্য নয়। বৈশ্বিক পরিস্থিতি, আন্তর্জাতিক মন্দা, অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সমস্যা থাকা সত্ত্বেও বর্তমান বাজেটে যে সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে, সেখানে পৌঁছানো যাবে কি?
তবে আন্তরিকতার সঙ্গে যেসব জায়গায় মনোযোগ দিতে হবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে, সে-সম্পর্কে কিছু কথা বলতে চাই। রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে যদি কোনো রকম কোনো অসামঞ্জস্যতা থেকে যায়, তাহলে লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়।
এখানে একটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। খেজুরের রস আহরণের জন্য খেজুরগাছ কেটে বিকেলবেলা একটি হাঁড়ি বসানো হয়, যদি এই হাঁড়িতে কোনো ছিদ্র না থাকে তাহলে সকালবেলা আপনার প্রাপ্তি শতভাগ। আর যদি এই হাঁড়িতে কোনো সামান্য ছিদ্র থাকে, সকালবেলা আপনার ‘অ্যাচিভমেন্ট’ শূন্যের কোঠায় থাকবে। সে রকম রাজস্ব আহরণে যদি কোনো কোনো ক্ষেত্রে অবহেলা অথবা অজানা কোনো ‘লিকেজ’ থেকে যায়, তাহলে শতভাগ লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব নয়; অন্তত রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অনেক আধুনিকায়ন করা হয়েছে বিভিন্ন খাত অনুযায়ী। কিন্তু এই আধুনিকায়ন, অর্থাৎ অনলাইন প্রযুক্তি ব্যবহার করে সঠিকভাবে পণ্যের মূল্যায়ন ও শুল্কায়ন হচ্ছে কি না, সে ব্যাপারে তাদের তদারকি বাড়াতে হবে। একই ধরনের পণ্য বিভিন্ন শুল্ক স্টেশন থেকে বিভিন্ন এইচএস কোড ব্যবহার করে, বিভিন্ন হারে শুল্ক দিয়ে খালাস করতে হয়, যেটা আদৌ হওয়ার কথা নয়। আবার একই দেশ থেকে আমদানি করা একই পণ্য, যেগুলো সমমানের, একই কাজে ব্যবহৃত হয়, কিন্তু বিভিন্ন কাস্টমস স্টেশনে এসব পণ্যের মূল্যায়ন হয় বিভিন্ন রকমের। যেসব কাস্টমস স্টেশনে একটু দুর্বল কর্মকর্তা থাকেন, সেই সব স্টেশন থেকে সুচতুর আমদানিকারকেরা কম মূল্য দেখিয়ে, কম শুল্কহারের এইচএস কোড ব্যবহার করে পণ্য খালাস করে নিয়ে যান। বর্তমান উন্নত তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থায় এটা হওয়া আদৌ বাঞ্ছনীয় নয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অধীনে ভ্যালুয়েশন কমিশনারেট নামে একটি কমিশনারেট আছে। বাংলাদেশে যেসব পণ্য আমদানি হয় কান্ট্রি অব অরিজিন মোতাবেক, যদি এই কমিশনারেট সেগুলোর প্রতিটি পণ্যের সঠিক এইচএস কোড নির্ধারণ করে, তিন মাস অন্তর অন্তর আমদানি করা পণ্যের মূল্য আপডেট করে, তাহলে পণ্যের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে যে অসামঞ্জস্যতা বিভিন্ন স্টেশনে রয়েছে, তা দূর করা যায়।
কোনো পণ্যের হালনাগাদ মূল্য কত তা ভ্যালুয়েশন কমিশনারেটের সার্ভারে সংরক্ষিত থাকবে। এই সার্ভারের সঙ্গে প্রতিটি শুল্ক স্টেশনের অনলাইন কানেকশন থাকবে, ওই শুল্ক স্টেশন থেকে যে পণ্যই আসুক না কেন, পণ্যের নাম ও এইচএস কোড দিয়ে ভ্যালুয়েশন কমিশনারেটের সার্ভারের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে সঠিক পণ্যের সঠিক মূল্যায়ন ও শুল্কায়ন করা উচিত। এ ক্ষেত্রে এই কমিশনারেটের কমিশনারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাকে অধিক তৎপর হতে হবে। বর্তমানে এই ভ্যালুয়েশনের ক্ষেত্রে শুল্ক স্টেশনভেদে তারতম্য রয়ে গেছে।
একটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। ফুচকা বানানোর কাঁচামাল ভারত থেকে আমদানি হয়, একই দেশের একই পণ্য শুল্ক স্টেশনভেদে ভ্যালুয়েশন হয় ৫০ সেন্ট থেকে ২ ডলার পর্যন্ত। আবার এই একই পণ্যের বিভিন্ন শুল্ক স্টেশনে বিভিন্ন এইচএস কোড ব্যবহার করা হয়। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সবাই যদি ভ্যালুয়েশন কমিশনারেটের সঠিক তথ্য পেত, তাহলে এই অসামঞ্জস্যতা দূর করা যেত।
ভ্যাট আদায়ের ক্ষেত্রেও একই রকম ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব। কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান যে পণ্য উৎপাদন করে, সেই সব পণ্যের একটি উৎপাদিত মূল্য ভ্যাট কমিশনারেটে ঘোষণা দিতে হয়। এখন দেখার বিষয়, যদি বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান একই পণ্য উৎপাদন করে, প্রায় সমমানের পণ্য, একই কাজে ব্যবহৃত হয়, সেই সব পণ্যের উৎপাদিত মূল্য কাছাকাছি থাকার কথা। এই উৎপাদিত মূল্যের ওপরেই ভ্যাট নির্ধারণ করা হয়। তাই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের একটি সমন্বিত সার্ভার থাকা দরকার, যেখান থেকে প্রতিটি ভ্যাট কমিশনারেট নির্দিষ্ট পণ্যের ঘোষিত মূল্য যাচাই করতে পারে।
সর্বোপরি কথা হচ্ছে, আমাদের রাজস্ব আহরণ করতে হবে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য, আর্থিকভাবে দেশকে স্বাবলম্বী করার জন্য। আর দেশজ সম্পদ দিয়েই দেশকে স্বাবলম্বী করতে হবে। স্বাবলম্বী করতে হলে দরকার অর্থ। এই অর্থ আদায় করতে হবে আমাদের দেশেরই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে। তবে এই রাজস্ব আদায় করতে গিয়ে যেন অসামঞ্জস্যতা না থাকে, কারও ওপর যেন জুলুম না করা হয়। সবাই যেন সমান বিচার পায়, অর্থাৎ নির্দিষ্ট পণ্যের জন্য নির্দিষ্ট হারে শুল্ক ও ভ্যাট দিতে পারে, সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।
আরেকটি কথা হচ্ছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাদের সততার সঙ্গে অধিক মনোযোগী হয়ে, কারও প্রতি অনুরাগ ও বিরাগের বশবর্তী না হয়ে, সবার প্রতি সমান দৃষ্টি রেখে এই কাজ পরিচালনা করতে হবে। যদি কোনো কর্মকর্তা তাঁর ক্ষমতা অধিক প্রয়োগ করে মানুষকে হয়রানি করেন, তাঁকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে, আবার যে কর্মকর্তা চৌকস-সৎ, নিজের কাজটি সঠিকভাবে করেন, তাঁকে পুরস্কৃত করতে হবে। অবশ্য এই সবকিছু করতে হবে আইনের মাধ্যমে, কঠিন নজরদারির মাধ্যমে। রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে কোনো নমনীয়তা দেখানো চলবে না। আবার রাগের বশবর্তী হয়ে অন্যায় করাও চলবে না। একমাত্র প্রতিদিন কঠোর নজরদারির মাধ্যমে আইনকে সঠিক প্রয়োগ করে বাস্তবায়ন করতে হবে বার্ষিক রাজস্ব আদায়।
লেখক: প্রকৌশলী
গত বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী সংসদে বাজেট পেশ করেছেন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের আকার ৭ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকার ওপরে। বর্তমানে যে বাজেট প্রণয়ন করা হয়, সেই বাজেটের অর্থের জোগান দেওয়া হয় অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে। মোটাদাগে বলতে গেলে বাজেটের ৯০ শতাংশ অর্থ আসে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে। প্রতিবছরই বাজেটে ঘাটতি থাকে। গত বছর যে বাজেট প্রাক্কলন করা হয়েছিল, সেটা পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি থাকার আশঙ্কা আছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওপর ন্যস্ত ছিল ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকার টার্গেট। যেহেতু জুন মাস চলমান, এখনো প্রায় এক মাস সময় আছে সামনে। সবকিছু হিসাব করে দেখা গেছে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার মতো রাজস্ব আদায়ের সম্ভাবনা আছে।
তারপরও রাজস্ব আহরণ আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে নতুন বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে। যেহেতু ৮০ শতাংশের ওপরে রাজস্ব আদায় করতে হয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে, তাই সবার দৃষ্টি থাকে রাজস্ব বোর্ডের দিকে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে রাজস্ব আহরণ ধরা হয়েছে ৪ লাখ কোটি টাকার ওপরে। এখন জনমনে প্রশ্ন, গত অর্থবছরে যেহেতু রাজস্ব ঘাটতি থাকবে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা, সামনের দিনগুলোতে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে, তা এখনো বোধগম্য নয়। বৈশ্বিক পরিস্থিতি, আন্তর্জাতিক মন্দা, অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সমস্যা থাকা সত্ত্বেও বর্তমান বাজেটে যে সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে, সেখানে পৌঁছানো যাবে কি?
তবে আন্তরিকতার সঙ্গে যেসব জায়গায় মনোযোগ দিতে হবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে, সে-সম্পর্কে কিছু কথা বলতে চাই। রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে যদি কোনো রকম কোনো অসামঞ্জস্যতা থেকে যায়, তাহলে লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়।
এখানে একটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। খেজুরের রস আহরণের জন্য খেজুরগাছ কেটে বিকেলবেলা একটি হাঁড়ি বসানো হয়, যদি এই হাঁড়িতে কোনো ছিদ্র না থাকে তাহলে সকালবেলা আপনার প্রাপ্তি শতভাগ। আর যদি এই হাঁড়িতে কোনো সামান্য ছিদ্র থাকে, সকালবেলা আপনার ‘অ্যাচিভমেন্ট’ শূন্যের কোঠায় থাকবে। সে রকম রাজস্ব আহরণে যদি কোনো কোনো ক্ষেত্রে অবহেলা অথবা অজানা কোনো ‘লিকেজ’ থেকে যায়, তাহলে শতভাগ লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব নয়; অন্তত রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অনেক আধুনিকায়ন করা হয়েছে বিভিন্ন খাত অনুযায়ী। কিন্তু এই আধুনিকায়ন, অর্থাৎ অনলাইন প্রযুক্তি ব্যবহার করে সঠিকভাবে পণ্যের মূল্যায়ন ও শুল্কায়ন হচ্ছে কি না, সে ব্যাপারে তাদের তদারকি বাড়াতে হবে। একই ধরনের পণ্য বিভিন্ন শুল্ক স্টেশন থেকে বিভিন্ন এইচএস কোড ব্যবহার করে, বিভিন্ন হারে শুল্ক দিয়ে খালাস করতে হয়, যেটা আদৌ হওয়ার কথা নয়। আবার একই দেশ থেকে আমদানি করা একই পণ্য, যেগুলো সমমানের, একই কাজে ব্যবহৃত হয়, কিন্তু বিভিন্ন কাস্টমস স্টেশনে এসব পণ্যের মূল্যায়ন হয় বিভিন্ন রকমের। যেসব কাস্টমস স্টেশনে একটু দুর্বল কর্মকর্তা থাকেন, সেই সব স্টেশন থেকে সুচতুর আমদানিকারকেরা কম মূল্য দেখিয়ে, কম শুল্কহারের এইচএস কোড ব্যবহার করে পণ্য খালাস করে নিয়ে যান। বর্তমান উন্নত তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থায় এটা হওয়া আদৌ বাঞ্ছনীয় নয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অধীনে ভ্যালুয়েশন কমিশনারেট নামে একটি কমিশনারেট আছে। বাংলাদেশে যেসব পণ্য আমদানি হয় কান্ট্রি অব অরিজিন মোতাবেক, যদি এই কমিশনারেট সেগুলোর প্রতিটি পণ্যের সঠিক এইচএস কোড নির্ধারণ করে, তিন মাস অন্তর অন্তর আমদানি করা পণ্যের মূল্য আপডেট করে, তাহলে পণ্যের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে যে অসামঞ্জস্যতা বিভিন্ন স্টেশনে রয়েছে, তা দূর করা যায়।
কোনো পণ্যের হালনাগাদ মূল্য কত তা ভ্যালুয়েশন কমিশনারেটের সার্ভারে সংরক্ষিত থাকবে। এই সার্ভারের সঙ্গে প্রতিটি শুল্ক স্টেশনের অনলাইন কানেকশন থাকবে, ওই শুল্ক স্টেশন থেকে যে পণ্যই আসুক না কেন, পণ্যের নাম ও এইচএস কোড দিয়ে ভ্যালুয়েশন কমিশনারেটের সার্ভারের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে সঠিক পণ্যের সঠিক মূল্যায়ন ও শুল্কায়ন করা উচিত। এ ক্ষেত্রে এই কমিশনারেটের কমিশনারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাকে অধিক তৎপর হতে হবে। বর্তমানে এই ভ্যালুয়েশনের ক্ষেত্রে শুল্ক স্টেশনভেদে তারতম্য রয়ে গেছে।
একটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। ফুচকা বানানোর কাঁচামাল ভারত থেকে আমদানি হয়, একই দেশের একই পণ্য শুল্ক স্টেশনভেদে ভ্যালুয়েশন হয় ৫০ সেন্ট থেকে ২ ডলার পর্যন্ত। আবার এই একই পণ্যের বিভিন্ন শুল্ক স্টেশনে বিভিন্ন এইচএস কোড ব্যবহার করা হয়। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সবাই যদি ভ্যালুয়েশন কমিশনারেটের সঠিক তথ্য পেত, তাহলে এই অসামঞ্জস্যতা দূর করা যেত।
ভ্যাট আদায়ের ক্ষেত্রেও একই রকম ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব। কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান যে পণ্য উৎপাদন করে, সেই সব পণ্যের একটি উৎপাদিত মূল্য ভ্যাট কমিশনারেটে ঘোষণা দিতে হয়। এখন দেখার বিষয়, যদি বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান একই পণ্য উৎপাদন করে, প্রায় সমমানের পণ্য, একই কাজে ব্যবহৃত হয়, সেই সব পণ্যের উৎপাদিত মূল্য কাছাকাছি থাকার কথা। এই উৎপাদিত মূল্যের ওপরেই ভ্যাট নির্ধারণ করা হয়। তাই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের একটি সমন্বিত সার্ভার থাকা দরকার, যেখান থেকে প্রতিটি ভ্যাট কমিশনারেট নির্দিষ্ট পণ্যের ঘোষিত মূল্য যাচাই করতে পারে।
সর্বোপরি কথা হচ্ছে, আমাদের রাজস্ব আহরণ করতে হবে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য, আর্থিকভাবে দেশকে স্বাবলম্বী করার জন্য। আর দেশজ সম্পদ দিয়েই দেশকে স্বাবলম্বী করতে হবে। স্বাবলম্বী করতে হলে দরকার অর্থ। এই অর্থ আদায় করতে হবে আমাদের দেশেরই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে। তবে এই রাজস্ব আদায় করতে গিয়ে যেন অসামঞ্জস্যতা না থাকে, কারও ওপর যেন জুলুম না করা হয়। সবাই যেন সমান বিচার পায়, অর্থাৎ নির্দিষ্ট পণ্যের জন্য নির্দিষ্ট হারে শুল্ক ও ভ্যাট দিতে পারে, সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।
আরেকটি কথা হচ্ছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাদের সততার সঙ্গে অধিক মনোযোগী হয়ে, কারও প্রতি অনুরাগ ও বিরাগের বশবর্তী না হয়ে, সবার প্রতি সমান দৃষ্টি রেখে এই কাজ পরিচালনা করতে হবে। যদি কোনো কর্মকর্তা তাঁর ক্ষমতা অধিক প্রয়োগ করে মানুষকে হয়রানি করেন, তাঁকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে, আবার যে কর্মকর্তা চৌকস-সৎ, নিজের কাজটি সঠিকভাবে করেন, তাঁকে পুরস্কৃত করতে হবে। অবশ্য এই সবকিছু করতে হবে আইনের মাধ্যমে, কঠিন নজরদারির মাধ্যমে। রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে কোনো নমনীয়তা দেখানো চলবে না। আবার রাগের বশবর্তী হয়ে অন্যায় করাও চলবে না। একমাত্র প্রতিদিন কঠোর নজরদারির মাধ্যমে আইনকে সঠিক প্রয়োগ করে বাস্তবায়ন করতে হবে বার্ষিক রাজস্ব আদায়।
লেখক: প্রকৌশলী
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
২ দিন আগে