কাদার মণ্ডে গুড়ের মটকা

পীরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০২ জানুয়ারি ২০২২, ০৫: ২৮
আপডেট : ০২ জানুয়ারি ২০২২, ১৫: ০৬

পীরগঞ্জে গুড় সংরক্ষণের জন্য মাটির মটকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। তাঁরা কাদা দিয়ে মণ্ড তৈরি এবং নিপুণ হাতে মটকায় রূপ দিতে দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের মৃৎশিল্পীরা কয়েক পুরুষ ধরে সংসারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মাটি দিয়ে তৈরি করে যাচ্ছেন।

কুমেদপুর ইউনিয়নের চণ্ডীপুর গ্রামের সুশীল চন্দ্র পাল প্রতিবছরের মতো এবারও রায়পুর ইউনিয়নের ফলিরবিল বাজারে মটকা তৈরির কারখানা চালু করেছেন।

সুশীল বলেন, ‘জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এই শিল্পকে আঁকড়ে ধরেই বেঁচে থাকতে চাই। কারণ এটি বাপ-দাদার পেশা। এটিতে লজ্জা নেই। তবে বর্তমানে প্লাস্টিক, টিন ও স্টিলের পণ্যসামগ্রী তৈরি হওয়ায় মানুষ মাটির জিনিসপত্র কিনতে চান না। তারপরও প্রতিবছর আখের গুড় সংরক্ষণের জন্য মটকা তৈরি করে থাকি।’

স্থানীয় আখচাষিদের গুড় সংরক্ষণে পাত্রের চাহিদা পূরণে সুশীলের কারখানার ছয়জন কারিগর প্রতি বছর পৌষ থেকে শুরু করে চৈত্র মাস পর্যন্ত মটকা তৈরি করেন। তবে সুশীল বলেন, ‘কোনো কোনো বছর লাখ টাকাও ভর্তুকি দিতে হয় এই কারখানায়। পূর্বের তুলনায় মাটির দাম ও কারিগরের মজুরি অনেক বেড়েছে। তারপরও এই শিল্পের হাল ছাড়িনি।’

চণ্ডীপুর গ্রামের সুবাস চন্দ্র, বকুল, প্রসন্ন, সুশীল, প্রফুল্ল ও বিনয় চন্দ্র উপজেলার খালাশপীর হাট, ফলিরবিল বাজার ও মদনখালী ইউনিয়নের মাগুরা গ্রামে মটকা তৈরির কারখানায় কাজ করেন। মৃৎশিল্পের এই কারিগরেরা দাবি করেন, তাঁদের রুগ্ণ শিল্পকে বাঁচাতে সরকারের কোনো ধরনের সহযোগিতা পাননি। সহযোগিতা পেলে পরিবেশবান্ধব মৃৎশিল্পীকে আরও অনেক দূর এগিয়ে নিতে পারবেন।

কুমেদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘মৃৎশিল্পীদের দুর্দশার কথা শুনেছি। তাঁদের মাটির জিনিসপত্র গ্রামীণ জনপদে খুবই দরকারি। মৃৎশিল্প টিকিয়ে রাখতে যদি প্রকল্প নেওয়া যায় তাহলে প্রকল্প নিয়ে কুমার সম্প্রদায়ের জীবিকার পথকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করব।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত