ভোটার, প্রার্থী ও সমর্থকদের ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় শেষ হলো জেলা পরিষদ নির্বাচন। গতকাল সোমবার সকাল থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ শেষে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে চেয়ারম্যান পদে খুলনা বিভাগের ১০ জেলার ৯টিতেই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই দ্বিতীয় মেয়াদে, কেউ কেউ তৃতীয় মেয়াদেও পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন।

নির্বাচিত ব্যক্তিরা হলেন খুলনার শেখ হারুনুর রশীদ, যশোরের সাইফুজ্জামান পিকুল, সাতক্ষীরার নজরুল ইসলাম, নড়াইলের সুবাস চন্দ্র বোস, মাগুরার পঙ্কজ কুমার কুন্ডু, মেহেরপুরের আব্দুস সালাম, চুয়াডাঙ্গার মাহফুজুর রহমান মন্জু ও কুষ্টিয়ার সদর উদ্দিন খান। ঝিনাইদহে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হারুন অর রশিদ। এ ছাড়া বাগেরহাটে আওয়ামী লীগের বীর মুক্তিযোদ্ধা কামরুজ্জামান টুকু আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর

খুলনা: খুলনায় পুনরায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী শেখ হারুনুর রশীদ। তিনি মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৫৩৬ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম এম মোর্ত্তজা রশিদী দারা চশমা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৪০৩ ভোট। আর ডা. শেখ বাহারুল আলম আনারস প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৩৭ ভোট। নির্বাচনে মোট ৯৭৮ জন ভোটের মধ্যে ৯৭৬ জন ভোট দিয়েছেন।

সাতক্ষীরা: আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে ৬০৮ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ব্যবসায়ী খলিলুল্লাহ ঝড়ু চিংড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ৪৪৭ ভোট। নজরুল ইসলাম তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে ১৬১ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এ নিয়ে বিজয়ী নজরুল ইসলাম টানা দ্বিতীয়বারের মতো জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন।

বাগেরহাট: আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কামরুজ্জামান টুকু আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এই নিয়ে তিনি পরপর তিনবার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন।

কুষ্টিয়া: আলহাজ সদর উদ্দিন খান আনারস প্রতীকে ৭৩২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাসদ সভাপতি আলহাজ গোলাম মহসিন মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ১৮৪ ভোট।  কুষ্টিয়ার ৬টি উপজেলার ৬টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ইভিএমে ভোট দেন উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের ৯৪০ জন ভোটার

মাগুরা: নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী পংকজ কুমার কুন্ডু ৩৬১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শরিয়ত উল্লাহ হোসেন মিয়া পেয়েছেন ১২৪ ভোট।

নড়াইল (লোহাগড়া): নড়াইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী সুবাস চন্দ্র বোস বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ২৬০ ভোট পেয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটু মোটরসাইকেল প্রতীকে ১৭৮ ভোট পেয়েছেন।

যশোর: নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাইফুজ্জামান পিকুল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ঘোড়া প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৯৫৭। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মারুফ হাসান কাজল আনারস প্রতীকে ৩৪৪ ভোট পেয়েছেন।

ঝিনাইদহ: জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী হারুন অর রশিদ বিজয়ী হয়েছেন। নির্বাচনে হারুন অর রশিদ আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৪৭৮ ভোট। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী কনক কান্তি দাস চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ৪৬৩ ভোট। বিজয়ী হারুন অর রশিদ ২০০৩ সালের পর তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপির মাধ্যমে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ২০১২ সালে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে প্রথমে আহবায়ক, জেলা সভাপতি ও পরে খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পদ হন। পরে ২০১৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।

মেহেরপুর: আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম বিজয়ী হয়েছেন। তিনি বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম রসুলকে ৬১ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। আব্দুল সালাম (কাপ-পিরিচ) প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ১৭৬। তাঁর একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম রসুল (আনারস) পেয়েছেন ১১৫ ভোট।

চুয়াডাঙ্গা: আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাহফুজুর রহমান মন্জু বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৩১২ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী আরেফিন আলম রন্জু ঘোড়া প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৪৯ ভোট। আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী আব্দুস সালাম চশমা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২ ভোট।