ঢাকার পর এবার চট্টগ্রামের গণপরিবহনেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্ধেক ভাড়া নেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন চট্টগ্রামে বাসমালিকেরা। গত বৃহস্পতিবার রাতে বাস মালিকদের এক বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার বিষয়টি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন বাস মালিক সমিতির সভাপতি বেলায়েত হোসেন বেলাল। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে আমরা বৈঠক করেছি। বৈঠকে সবাই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্ধেক ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছেন। তবে কবে থেকে এই ভাড়া কার্যকর হবে সেটি এখনো ঠিক হয়নি। এ বিষয়ে আগামী রোববার সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হবে।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর বিআরটিএ কার্যালয়ের বৈঠকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন বাস মালিক সমিতি, জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ও আন্তজেলা পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা অংশ নেন।

বেলায়েত হোসেন বেলাল বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে শুধু অর্ধেক ভাড়া নিয়েই আলোচনা হয়নি। বৈঠকে ট্যাক্স বাড়িয়ে দেওয়া নিয়েও আলোচনা হয়েছে। করোনাকালীন সময়ে গাড়ি বন্ধ রাখায় বাস মালিকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এরপরও আমরা ইনকাম ট্যাক্স দিয়েছি। বাস মালিকদের ট্যাক্স দ্বিগুণ করে করা হয়েছে। এই বাড়তি ট্যাক্স কমিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাব।’

তবে পরিবহন মালিকদের এই সিদ্ধান্তে খুব একটা আশ্বস্ত হননি শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহসিন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাইমুন উদ্দিন মামুন বলেন, ‘আমরা ২০১৩ সাল থেকে অর্ধেক ভাড়ার দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। বাসমালিকেরা আগেও আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁরা সেটি কার্যকর করেননি। আমরা আশ্বাস চাই না, অর্ধেক ভাড়া কার্যকর চাই।’

মহানগর ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি রায়হান উদ্দিন বলেন, ‘বাসমালিকেরা অর্ধেক ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছেন, ভালো সংবাদ। কিন্তু আমাদের দাবি, বাসমালিকদের কাছে ছিল না। আমরা নাগরিক হিসেবে সরকারের কাছে সারা দেশে শিক্ষার্থীদের অর্ধেক ভাড়া চালুর দাবি জানিয়ে আসছি। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সরকার রাজধানী ঢাকায় সেটি কার্যকর করেছে। কিন্তু এখনো চট্টগ্রামে সেটি কার্যকর হয়নি। এভাবে বিক্ষিপ্তভাবে অর্ধেক ভাড়া কার্যকর করা হোক—সেটি আমরা চাই না। আমরা চাই একযোগে সারা দেশের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্ধেক ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করুক।’

বেশ কিছুদিন ধরে সারা দেশের মতো চট্টগ্রামেও অর্ধেক ভাড়া নিশ্চিতে প্রজ্ঞাপন জারিসহ ৯ দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এসব দাবিতে গত বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে। এর আগে নিউমার্কেট থেকে মিছিল বের হয়।