সখীপুরে দা, কোদাল হাতে একদল নারী শ্রমিক গ্রামীণ সড়ক পরিষ্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করছেন। তাঁরা প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কাজ করেন। সড়ক ঝাড়ু দেওয়ার পাশাপাশি মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজও করছেন তাঁরা।

উপজেলার প্রতি ইউনিয়নে ১০ জন নারীর একটি দল সপ্তাহের ৬ দিন এ কাজ করেন। এলজিইডির আওতাভুক্ত গ্রামীণ সড়কের দায়িত্ব তাঁদের হাতে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে আনুমানিক ১২০ জন নারী এ কাজ করেন।

উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, সড়কের কার্পেটিংয়ের ওপর ঘাস জমে থাকলে সেগুলো তুলে ফেলা, সড়কের পাশে গর্তে পানি জমে থাকলে নিষ্কাশনের জন্য নালা কেটে দেওয়া, গর্ত ভরাট করা, সড়কের মাটি সরে গেলে সেখানে মাটি দেওয়া এবং সড়কের পাশের ঝোপঝাড় কেটে দেওয়ার কাজ করেন নারী কর্মীরা।

উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের নারী কর্মী মলি আক্তার ও হাছনা বেগম, গজারিয়া ইউনিয়নের লাইলী বেগম ও বিউটি আক্তার বলেন, মাসিক ৭ হাজার ৫০০ টাকা বেতনে এই চাকরি করেন তাঁরা। এর মধ্যে মাসে ২ হাজার ৪০০ টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সঞ্চয় হিসেবে জমা রাখা হয়। এই কাজ পাওয়ায় তাঁদের পরিবারে বাড়তি আয়ের সুযোগ হয়েছে। এতে সন্তানকে লেখাপড়া করাতে পারছেন তাঁরা। পরিবারেও স্বচ্ছলতা ফিরেছে।

এসব নারী পল্লী কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচি-৩ (আরইআরএমপি-৩) এর আওতায় কাজ করেন। অন্যদিকে উপজেলার চারটি সড়কে চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক দল কর্মসূচির আওতায় চারজন সুপারভাইজার (পুরুষ) ও ৪০ জন নারী কর্মী কাজ করছেন। তাঁরা মাসিক ৯ হাজার টাকা বেতনে কাজ করেন। তাঁরাও মাসিক ৩ হাজার টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করেন।

স্থানীয় অটোরিকশাচালক খোরশেদ আলম বলেন, কয়েক বছর ধরে নারীদের সড়কে কাজ করতে দেখছেন তিনি। এতে সড়কে মাটি ও ঘাস জমছে না বলেও জানান তিনি।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী এস এম হাসান ইবনে মিজান বলেন, প্রতিদিনের কাজ প্রতিদিন মনিটরিং করা হয়। এ জন্য উপজেলা প্রকৌশলী, উপসহকারী প্রকৌশলী ও সুপারভাইজারের সমন্বয়ে একটি ফেসবুক গ্রুপ খোলা হয়েছে।

উপজেলা প্রকৌশলী আরও বলেন, নারী কর্মীদের মাধ্যমে সড়ক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা হচ্ছে। গ্রামীণ পাকা সড়কের শোল্ডার, সড়কের স্লোপ, রেইনকাট মেরামত, বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচলের ফলে সৃষ্ট গর্ত ভরাট, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামত ও ঝোপঝাড় পরিষ্কারের কাজ করছেন নারী শ্রমিকেরা।