ঝালকাঠিতে বিষমুক্ত কুল চাষে আগ্রহ, দামে খুশি চাষি

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২২, ০৬: ৫২
আপডেট : ০৫ মার্চ ২০২২, ১০: ৪৯

ঝালকাঠিতে বিষমুক্ত কুল চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের। পর্যাপ্ত ফলন ও প্রত্যাশিত দাম পাওয়ায় খুশি চাষিরা। সফলতা পাওয়ায় ভবিষ্যতে জেলায় কুল চাষের পরিমাণ আরও বাড়বে বলে মনে করে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

জানা গেছে, জমির আলে পরীক্ষামূলকভাবে কুলের চারা রোপণ করেন সদর উপজেলার কেওড়া ইউনিয়নের সংগ্রামনীল গ্রামের বিজান মণ্ডল। প্রাথমিকভাবে ফলন ভালো হওয়ায় তিন বছর আগে বাণিজ্যিকভাবে কুলের চাষ শুরু করেন তিনি। সফলতাও পেয়েছেন দারুণ। বিজান মণ্ডল বলেন, ‘অন্যের কাছ থেকে তিন বছর আগে এক বিঘা জমি ইজারা নিই। ওই জমি কুল চাষের জন্য উপযোগী। চাষের জন্য সাতক্ষীরা থেকে বাউকুল, আপেল কুল, নারকেল কুল এবং বলসুন্দরী কুলের চারা এনে রোপণ করি। মাত্র এক বছরেই বাগানে বাম্পার ফলন ধরে। চলতি মৌসুমে কুলের ভারে নুয়ে পড়েছে গাছ। আকারে বড় ও সুস্বাদু হওয়ায় এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে বরই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।’

নারকেল ও আপেল কুল কেজিপ্রতি পাইকারি ৯০ ও খুচরা ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাউকুল পাইকারি ৬০, খুচরা ৮০ টাকা।

বিজান মণ্ডল বলেন, ‘কৃষি কর্মকর্তারা মোগো দিকে যদি তাহাইতো, হেলে ফলন আরও বেশি পাইতাম। মোরা মালিক আর শ্রমিকেরা ভালোভাবে বাঁচতে পারতাম। এই বাগানে জমি তৈরিসহ আনুষঙ্গিক খরচ বাবদ ১৩৪টি কুলের গাছ রোপণ করতে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে দ্বিগুণ লাভ হবে বলেও আশা করছি।’

বাগান পরিচর্যাকারী নিতাই মণ্ডল বলেন, ‘বরই চাষ অত্যন্ত লাভজনক। কম খরচে অধিক লাভ যায়। তা ছাড়া বরই চাষে তেমন কোনো ঝুঁকিও নেই।’

বরই চাষে বিজানের সফলতা দেখে জেলার অনেক তরুণেরা আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে জানান স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খান।

এলাকার আরেক বাগানমালিক মোহাম্মদ আবিয়ান হাসান বলেন, ‘স্থানীয়দের বিষমুক্ত ফল খাওয়ানোর লক্ষ্যে বরই চাষ শুরু করেছি। কৃষি বিভাগ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পেলে ভবিষ্যতে ব্যাপকভাবে বরই চাষ করব। গত দুই বছর করোনা ও লকডাউন থাকায় ফলন অনুযায়ী বিক্রি কম হয়েছে। আশা করি এ বছর ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারব।’

ঝালকাঠি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এখানকার মাটি বরই চাষের উপযোগী। এ ফল চাষে কৃষি বিভাগ থেকে চাষিদের সহযোগিতা করা হচ্ছে। ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় দিন দিন এর চাষ আরও সম্প্রসারিত হচ্ছে। বেকার যুবকেরা কুল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত