Ajker Patrika

শ্রাবণ মাসেও চলনবিলে পানির জন্য হাহাকার

শাহীন রহমান, পাবনা 
আপডেট : ২৩ জুলাই ২০২২, ১৪: ১০
শ্রাবণ মাসেও চলনবিলে পানির জন্য হাহাকার

শ্রাবণ মাসের কয়েক দিন পেরিয়ে গেলেও পাবনায় তেমন বৃষ্টি হয়নি। দিনের মধ্যভাগে তাপমাত্রা থাকছে ৩৬ ডিগ্রির কাছাকাছি। ফলে ঠা ঠা রোদের তেজে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। খালবিলে পানি না থাকায় বিঘ্নিত হচ্ছে কৃষিকাজ। পানির অভাবে হাহাকার করছেন কৃষক।

চাটমোহর কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৬ হাজার ৫০০ হেক্টর। এর মধ্যে মাত্র ২০৬ হেক্টরে আবাদ করা হয়েছে। এ ছাড়া চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৮ হাজার ৮৯০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। তবে এখনো অনেক জমির পাট কাটা হয়নি। সেসব জমিতে আমনের আবাদ করা হবে। সব মিলিয়ে পানির অভাবে পাট কাটা দেরি হচ্ছে।

স্থানীয় কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্ষা মৌসুমে এই এলাকার অন্যতম প্রধান ফসল ধান ও পাট। কিছুদিন আগে নদ-নদীর পানি বাড়ায় চাটমোহরের নিম্নাঞ্চলের নিমাইচড়া, হান্ডিয়াল, ছাইকোলা ও বিলচলন ইউনিয়নের আংশিক এলাকার ধান-পাট প্রথম দফায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু অপর সাতটি ইউনিয়নে পানি না আসায় এবং পরিমিত বৃষ্টি না হওয়ায় সেখানকার কৃষক বিপাকে পড়েছেন। তাঁরা পাট কাটছেন কিন্তু পানির অভাবে জাগ দিতে পারছেন না।

এ দিকে চাটমোহরের যেসব জাতের আমন ধানের চাষ হয় এর জন্য পানি অপরিহার্য। কিন্তু ধানের জমিতে পানি না থাকায় চারাগুলো বিবর্ণ হয়ে মরার উপক্রম হয়েছে। এ ছাড়া বৃষ্টি না হওয়ায় অনেক কৃষক রোপা আমনের চাষ করতে পারছেন না। যাঁরা ইতিমধ্যে সেচ দিয়ে আমন চাষ করেছেন, সেসব জমি ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে।

উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের সুইগ্রামের কৃষক আব্দুস সামাদ বলেন, এ এলাকার বিলগুলোতে এখনো বর্ষার পানি প্রবেশ করেনি। বোরো ধান কাটার পর কিছু কৃষক আমন ধানের চারা রোপণ করলেও তাপপ্রবাহে তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি বৃষ্টি না হওয়ায় রোপা আমন ধান রোপণ করতে পারছেন না এ এলাকার কৃষক।

উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের চরসেনগ্রামের কৃষক সুরুজ হোসেন জানান, কয়েক দিন আগে পাট কেটে পানিতে জাগ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বিলের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় জাগ ভালোভাবে দেওয়া যায়নি। পাটের আঁশ যেন ভালো থাকে সে জন্য বাধ্য হয়ে অগভীর নলকূপের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করে পাট জাগ দিয়েছেন তিনি।

দোদারিয়া গ্রামের সাজেদুর রহমান বলেন, এবার ১০ কাঠা জমিতে পাট চাষ করেন তিনি। কিন্তু জাগ দেওয়ার পানি না থাকায় ভ্যানে করে দূরের খালে নিয়ে যান তিনি।

চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ এ মাসুম বিল্লাহ জানান, পাটের দাম ও ফলন বেশ ভালো রয়েছে। পাট পচিয়ে আঁশ ছড়ানোর জন্য যে পরিমাণ পানির দরকার, তা নেই। বেশ কিছুদিন অনাবৃষ্টি ও খালবিলসহ অন্য জলাশয়ের পানি কমে যাওয়ায় চাষিরা সমস্যায় পড়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত