ঈদে বাংলাদেশের স্বপ্ন ‘সেমিফাইনাল’ উপহারের

নাজিম আল শমষের,বেঙ্গালুরু থেকে
Thumbnail image

‘আগামীকাল ঈদ। বাংলাদেশ দল কি এবার দেশকে ঈদ উপহার দিতে পারবে?’ প্রশ্নটা শুনে বেশ চমকেই গেলেন জাতীয় দলের সহকারী কোচ হাসান আল মামুন। চমক সামলে পরমুহূর্তেই বললেন, ‘সত্যি বলতে এতটা ব্যস্ত সময় পার করছি যে ঈদের কথা মাথাতেও ছিল না। যদি আমরা সাফের সেমিফাইনালে যেতে পারি, তাহলে সেটাই হবে আমাদের ঈদ। তখন মাঠেই আমরা ঈদ উদ্‌যাপন করব।’

বাংলাদেশে মানুষ এখন কেউ ছুটছেন নাড়ির টানে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে, কেউ ব্যস্ত কোরবানির পশু বাছাইয়ে। ভীষণ ব্যস্ত ভারতে থাকা ফুটবলার ও কর্মকর্তারাও। চিন্তা-চেতনায় এখন কেবলই ফুটবল। ঈদের চিন্তা বাদ দিয়ে সবাই ভুটান ম্যাচের পরিকল্পনায় বুঁদ। ভুটানকে হারাতে পারলেই ২০০৯ সালের পর সাফের শেষ চারে খেলবে বাংলাদেশ। বিদেশের মাটিতে প্রিয়জনদের ছাড়া ঈদ উৎসব হবে রঙিন।

পরিবারকে ছাড়া এর আগেও ঈদ করেছেন জাতীয় দলের তরুণ তারকা শেখ মোরসালিন। ২০১৬ সালে এই ভারতেই অনূর্ধ্ব-১৪ সুব্রত কাপ খেলতে এসে পরিবারের সঙ্গে ঈদ আনন্দ হাতছাড়া করেছেন মালদ্বীপের বিপক্ষে জাতীয় দলে প্রথম গোল করা অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। পরিবারকে ছাড়া মোরসালিনের দ্বিতীয় ঈদ এবারও সেই ভারতে। পেয়েছেন নতুন এক পরিবারের দেখা। জাতীয় দলের সঙ্গে এবারের ঈদ স্মরণীয় করতে রাখতে চান মোরসালিন, ‘এই অনুভূতি বলার মতো নয়। মনেই হচ্ছে না ঈদ করতে হবে। এখন সব মনোযোগ সাফের দিকে। আশা আছে দেশ আর পরিবারকে ঈদ উপহার হিসেবে সাফের ট্রফি দিতে পারব। দেশের সমর্থনটা আমাদের খুব দরকার।’

ভারতে ঈদ কেমন হবে, কীভাবে হবে, সেটা নিয়ে একদমই ভাবনা-চিন্তার মধ্যে যেতে চান না মালদ্বীপ ম্যাচে বাংলাদেশকে সমতায় ফেরানো গোলদাতা রাকিব হোসেন। আজ ভুটানকে হারিয়ে দেশকে ‘ডাবল’ ঈদ উপহার দিতে চান এই উইঙ্গার, ‘আমরা দেশকে ডাবল ঈদ উপহার দিতে চাই। দেশকে জয় আর সেমিফাইনাল উপহার দেব আমরা। ভুটান ম্যাচটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এই ম্যাচ নিয়ে খুবই চিহ্নিত। সেমিফাইনালে যেতে পারলে দেশের ফুটবলপাগল মানুষদের জন্য এটা খুব ভালো ঈদ উপহার হবে।’

আজ ভুটানের সঙ্গে ম্যাচটা ঠিক করে দেবে বেঙ্গালুরুতে কেমন যাবে বাংলাদেশ দলের ঈদ। পরিবারকে ছাড়া ঈদ করতে মন খানিকটা কেমন কেমন করলেও আজকের ম্যাচ নিয়ে বেশ রোমাঞ্চিত গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো, ‘ঈদ খারাপ হতো যদি আমরা মালদ্বীপের কাছে হেরে যেতাম। সেমিফাইনালে খেলতে না পারলে মন খারাপ থাকবে। আর ঈদ আনন্দের হবে যদি আমরা ভুটানকে হারাই। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে পারছি না, এটা ব্যাপার না।’

খেলা নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও সময়-সুযোগ বুঝে সবাই যোগাযোগ রাখছেন পরিবারের সঙ্গে। প্রথমবারের মতো হাটে গিয়ে কোরবানির পশু কেনা হচ্ছে না হাসান আল মামুনের। মোরসালিনেরও যাওয়া হচ্ছে না হাটে। তাতে কোনো আক্ষেপ নেই বাংলাদেশি ফুটবলারদের। নেই কোনো অভিযোগ। সব ফুটবলারের চাওয়া—তাঁদের সাফল্যে ঈদের দিনেও বাংলাদেশে উঠুক ফুটবলের জোয়ার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত