ভাঙ্গা-পায়রা রেললাইনে বিনিয়োগে আগ্রহী যুক্তরাজ্য

তৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা
প্রকাশ : ২২ নভেম্বর ২০২১, ০৮: ০৪
আপডেট : ২২ নভেম্বর ২০২১, ০৯: ৪৫

ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে পটুয়াখালীর পায়রা ও কুয়াকাটা পর্যন্ত প্রায় ২১৫ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই, নকশা ও ডিপিপির কাজ শেষ হয়েছে। এ প্রকল্পে প্রায় ৪০ হাজার ৯৩০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। বিনিয়োগেও আগ্রহী অনেক দেশ। তার মধ্যে যুক্তরাজ্যের বিদ্যুৎ ও অবকাঠামো খাতের প্রতিষ্ঠান আইএম পাওয়ার এ প্রকল্পে এবং বৈদ্যুতিক রেললাইনে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে। এসব বিষয়ে কথা বলতে গতকাল রোববার রাতে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে রওনা হয়েছে রেলমন্ত্রীসহ মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধিদল।

রেল মন্ত্রণালয় সূত্র বলেছে, আইএম পাওয়ারের একটি প্রতিনিধিদল গত বছরের নভেম্বরে বাংলাদেশে এসেছিল। সে সময় তারা বিনিয়োগের বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের সঙ্গে কথা বলেছে। এবার আলোচনা এগিয়ে নিতে যুক্তরাজ্য গেল বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল। এই সফরের সময় প্রতিনিধিদলটি যুক্তরাজ্যের রেলব্যবস্থাসহ অন্যান্য বিষয় পর্যবেক্ষণ করবে। বাংলাদেশে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থায় যাতে ট্রেন চালু করা যায়, সে বিষয়েও প্রতিনিধিদলটি আইএম পাওয়ারের সঙ্গে আলোচনা করতে পারে।

জানতে চাইলে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন গত শনিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ভাঙ্গা-পায়রা রেললাইনের বিষয়ে আগে থেকেই আইএম পাওয়ারের সঙ্গে কথাবার্তা হচ্ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের যুক্তরাজ্য সফরের সময়ও তিনি এ বিষয়ে কথা বলে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা চাইব এ প্রকল্পে আইএম পাওয়ার বিনিয়োগ ও নির্মাণকাজ করুক। কিন্তু ইউরোপ তো এখন টাকাপয়সা দিয়ে বিনিয়োগ করতে চায় না। সে ক্ষেত্রে এমন হতে পারে যে, বাংলাদেশ কিছু টাকা দেবে, তাদেরও কিছু বিনিয়োগ থাকবে।’

বৈদ্যুতিক রেলব্যবস্থায় বিনিয়োগের বিষয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘আইএম পাওয়ার বৈদ্যুতিক রেললাইনের বিষয়েও আগ্রহী। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলে দেখব, তারা কী ধরনের সুবিধা দিতে পারে। অন্যান্য দেশের তুলনায় খরচ কেমন হবে। বৈদ্যুতিক রেললাইনের জন্য চীন, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়াও আগ্রহ দেখিয়েছে। আরও অনেক দেশ আমাদের প্রস্তাব দিচ্ছে। তবে সরকারের নীতি হচ্ছে—নির্দিষ্ট কোনো দেশ নয়, যে দেশ বেশি সুবিধা দেবে, তাদের সহযোগিতা নেবে।’

নদ-নদীবেষ্টিত দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের বহুদিনের চাওয়া রেলপথ। ২০১৬ সালে ভাঙ্গা থেকে পায়রা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই, নকশা প্রণয়ন ও দরপত্র প্রস্তুতসহ একটি প্রকল্প হাতে নেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে। ২১৫ কিলোমিটার পথের পুরোটাই সিঙ্গেল ব্রডগেজ হবে। প্রকল্প সূত্র বলেছে, প্রকল্পের আওতায় ১৯টি রেলস্টেশন নির্মাণ করা হবে। থাকবে ৪৬টি বড় রেলসেতু ও ৪৫০টি কালভার্ট। প্রায় ২৫ কিলোমিটারের মতো উড়াল রেলপথও থাকবে। এ প্রকল্পে মোট ৫ হাজার ৩৬ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, রেলপথটি চালু হলে বড় ধরনের অর্থনৈতিক প্রভাব পড়বে দক্ষিণাঞ্চলে।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিনিয়োগ চুক্তি হওয়ার পর থেকেই যেন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়, সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। দেখা যায় চুক্তি হয়েছে, কিন্তু কাজ শুরু হতে দেরি হয়। এর ফলে প্রকল্পের দীর্ঘসূত্রতা এবং ঋণের বোঝা বাড়ে। ঋণের ফাঁদে পড়ে যেন নিম্নমানের উপকরণ ও সরঞ্জাম না আসে, সে বিষয়টিতে নজর রাখতে হবে। আর বৈদ্যুতিক ট্রেনের সূচনা ইউরোপে আগে হয়েছে। সুতরাং অন্যান্য দেশের তুলনায় তাদের থেকে সহযোগিতা নেওয়া যেতে পারে। তবে তার আগে বাংলাদেশে বৈদ্যুতিক ট্রেনের সম্ভাব্যতা ভালোভাবে যাচাই করতে হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রামে নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে গুজব

ববির ট্রেজারার সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে যোগদানে বাধা

বিগত সরকারে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের ক্ষতিপূরণ দিতেই যাবে শতকোটি টাকা

দুই দিনে ৭ ব্যাংককে ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দিল বাংলাদেশ ব্যাংক

কোনো পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেননি রয়টার্সের প্রতিবেদক: সিএমপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত