কুষ্টিয়ার চালের মোকাম: প্রতি কেজি ৬২ টাকা নির্ধারণ, খুচরায় সময় চান মিলমালিকেরা

দেবাশীষ দত্ত, কুষ্টিয়া
প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০৮: ৩৫
আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০৮: ৪৭

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসন গত রোববার খাজানগরের চালকলমালিকদের সঙ্গে বৈঠক করে সরু চালের পাইকারি দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। নতুন দর অনুযায়ী, মিলগেটে প্রতি কেজি সরু মিনিকেট চাল ৬২ টাকা দরে এবং খুচরায় ৬৪ টাকা দরে বিক্রি করতে হবে। গতকাল সোমবার নতুন দাম কার্যকর করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু খুচরায় এই দাম কার্যকর হলেও মিলমালিকেরা আগের দামেই চলছেন। তাঁদের ভাষ্য, বিভিন্ন ফড়িয়া ও ব্যবসায়ী আগের দামে তাঁদের কাছ থেকে চাল কিনে রেখেছেন। সেগুলো শেষ হলে নতুন দাম কার্যকর করা যাবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, নানা অজুহাতে গত বছরের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে বেড়েছিল ৩ টাকা পর্যন্ত। মাত্র দুই মাস পর কয়েক দিন ধরে খুচরা বাজারে আবারও সব ধরনের চাল কেজিতে ৪ টাকা পর্যন্ত বেড়ে যায়। চলতি আমন মৌসুম শেষে এ নিয়ে তিন দফায় কুষ্টিয়ায় চালের দাম বাড়ে। চালকলমালিকেরা বলছেন, নতুন দরে চাল বিক্রি করতে তাঁরা রাজি আছেন। তবে সে জন্য আরও দুই থেকে তিন দিন সময় লাগবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে রোববার বিকেলে অনুষ্ঠিত বৈঠকে জেলা প্রশাসক এহতেশাম রেজা কুষ্টিয়ার মোকামে চালের দাম নির্ধারণের জন্য সবার মতামত চাইলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. বাবুল হোসেন বলেন, হঠাৎ দাম বাড়ার আগে খাজানগর মোকামে মিলগেটে মিনিকেটের দাম ছিল ৬০ টাকা কেজি। তিনি সেই দাম বলবৎ রাখার প্রস্তাব করেন। তবে এর বিরোধিতা করেন চালকলমালিকেরা। পরে জেলা প্রশাসক মিলগেটে প্রতি কেজি মিনিকেটের দাম ৬২ টাকা এবং খুচরায় ৬৪ টাকা নির্ধারণ করেন। তবে এতেও রাজি হননি চালকলমালিকেরা। তাঁরা জানান, ৬২ টাকার কমে মিনিকেট চাল সরবরাহ করতে পারবেন না তাঁরা।

সভায় মিলমালিকদের মধ্যে কেউ কেউ দাবি করেন, বাজারে ধানের দাম চড়া হাওয়ায় চালের দাম বেড়ে গেছে। কেউ কেউ পরস্পরবিরোধী বক্তব্যও দেন। সভায় উপস্থিত বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিলমালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, কুষ্টিয়ার খাজানগর মোকামের কোনো চালকলমালিক সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত নয়। উত্তরবঙ্গ বিশেষ করে নওগাঁর কিছু চালকলমালিক বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য দায়ী।

এদিকে গতকাল কুষ্টিয়া পৌর বাজার ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই খুচরায় মিনিকেট চাল ৬৪ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কাজললতা চাল আগের ৬০ টাকা কেজি দরেই রয়েছে। মোটা চাল কেজিতে ২ টাকা কমে বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকায়।

পৌর বাজারের চাল বিক্রেতা মেসার্স মা ট্রেডার্সের মালিক আহম্মেদ মঞ্জুরুল হক রিপন বলেন, ‘বেশি দামে মোকাম থেকে চাল কিনেও জেলা প্রশাসকের বেঁধে দেওয়া দামে বিক্রি শুরু করেছি। এখন মিলগেট থেকে যদি বেঁধে দেওয়া দামে চাল সরবরাহ না করে, তাহলে আমাদের কিছু করার নেই। এর দায় মিলমালিকদের নিতে হবে।’

জানতে চাইলে বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিলমালিক সমিতি কুষ্টিয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, হঠাৎ নতুন দামে চাল বিক্রি করতে গেলে তাদের লোকসান হবে। বিভিন্ন ফড়িয়া ও ব্যবসায়ীরা আগের দামে তাঁদের কাছ থেকে চাল কিনে রেখেছেন। সেগুলো শেষ হলে চালকলমালিকেরা সরকার-নির্ধারিত দামে চাল বিক্রি করতে পারবেন। এর জন্য আরও দুই থেকে তিন দিন সময় লাগবে।

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার সহকারী পরিচালক সুচন্দন মণ্ডল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় চালকলমালিকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এই দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। সোমবার সকালে বিভিন্ন বাজারে অভিযান চালানো হয়েছে। খুচরা বিক্রেতারা প্রায় সবাই বেঁধে দেওয়া দামেই চাল বিক্রয় করছেন। দু-চারজন ব্যবসায়ী যাঁরা মানছেন না, তাঁদের সতর্ক করা হয়েছে। সোমবার মিলগেট থেকে কোনো চাল সরবরাহ করা হয়নি। নজরদারিতে রাখা হয়েছে। যদি কেউ না মানেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত