লোকদেখানো কোরবানি কাম্য নয়

ইজাজুল হক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২২, ০৬: ২৫
আপডেট : ০৬ জুলাই ২০২২, ১৫: ৫৪

ইসলামে ইখলাস ও নিষ্ঠার গুরুত্ব অপরিসীম। কোনো ইবাদত শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে সম্পাদন করাই ইখলাস। ইখলাসের বিপরীত হলো রিয়া। রিয়ার অর্থ লৌকিকতা। একে হাদিসে ছোট শিরক বলা হয়েছে। রিয়ার পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ। কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। সুতরাং কোরবানির ক্ষেত্রেও লৌকিকতার মানসিকতা পরিত্যাজ্য।

ইবাদত একমাত্র আল্লাহর জন্যই করতে হয়। লক্ষ্যহীন ইবাদত কিংবা লোকদেখানোর জন্য ইবাদত করলে সেই ইবাদতে কোনো সওয়াব নেই। বরং তা গুনাহের কারণ। মহানবী (সা.) বলেন, ‘আমি তোমাদের ব্যাপারে ছোট শিরক থেকে খুব ভয় করি।’ সাহাবিরা বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, ছোট শিরক কী?’ তিনি বলেন, ‘তা হলো রিয়া বা লোকদেখানো ইবাদত। যেদিন আল্লাহ তাআলা বান্দাদের আমলের প্রতিদান দেবেন, সেদিন লৌকিকতাকারীদের বলবেন—দুনিয়াতে যাদের দেখাতে আমল করেছ, তাদের কাছে যাও। দেখো তাদের থেকে কোনো প্রতিদান পাও কি না।’ (মুসনাদে আহমদ)

কেয়ামতের দিন ইখলাসহীন লৌকিকতাপ্রিয় কোরবানিদাতার অবস্থা হবে ভয়াবহ। তাকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘লোকের মধ্যে কেয়ামতের দিন প্রথম (দিকে) যাদের বিচার করা হবে তারা হবে তিন শ্রেণির লোক। প্রথমত, সে ব্যক্তি যে শহীদ হয়েছে। তাকে আনা হবে। আল্লাহ তাআলা তাকে তার নেয়ামতসমূহ স্মরণ করাবেন। সে তা স্বীকার করবে। এরপর আল্লাহ তাকে বলবেন, এসব নেয়ামত ভোগ করে তুমি কী আমল করেছ? সে বলবে, আমি আপনার সন্তুষ্টির জন্য যুদ্ধ করে শহীদ হয়েছি। আল্লাহ বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ; বরং তুমি যুদ্ধ করেছিলে এই জন্য—যেন বলা হয় অমুক ব্যক্তি বাহাদুর। তা বলা হয়েছে। তার সম্পর্কে আদেশ করা হবে, তাকে অধোমুখ করে হেঁচড়িয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে...।’ (নাসায়ি) একই আচরণ করা হবে ইখলাসবিহীন অন্য আমলকারীর সঙ্গে।

তবে লৌকিকতার মানসিকতা থাকলে ইবাদত ত্যাগ করা যাবে না। বরং রিয়া ত্যাগ করে একনিষ্ঠ হয়ে আল্লাহর ইবাদত করার সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত