ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
ভারী বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢল; তার সঙ্গে যোগ হয়েছে ভারতের উজান থেকে ছুটে আসা পানির তোড়। সব মিলিয়ে দেশের পূর্বাঞ্চলের সিংহভাগ এলাকা এখন পানির নিচে। কোথাও কোমরপানি, কোথাও ঘরের চালা ছুঁই ছুঁই; তলিয়েছে সড়ক–মহাসড়ক, রেলপথও। ডুবেছে ফসলের মাঠ, ভেসে গেছে চাষের মাছ। গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) পর্যন্ত দেশের অন্তত ৯ জেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লা, নোয়াখালী ও ফেনীর বাসিন্দারা আকস্মিক বন্যায় পড়েছে চরম দুর্ভোগে। এমন পরিস্থিতিতে চলমান বন্যা পরিস্থিতির অবস্থা দাবি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন অপ্রাসঙ্গিক, পুরোনো ভিডিও, ছবি। এসব ছবি, ভিডিওর কোনো কোনোটি দেখা হয়েছে লাখের ওপরে, শেয়ার হয়েছে হাজারের বেশি। আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিংয়ে এমন সাতটি দাবি চিহ্নিত করেছে।
চলমান বন্যায় ভারতীয় চলচ্চিত্র বাহুবলির বাস্তব দৃশ্য দেখা যাওয়ার দাবিতে ছড়াল পুরোনো ছবি
বিস্তীর্ণ জল, অদূরেই দেখা যাচ্ছে নৌকা। এক শিশুকে পানির নিচ থেকে ওপরে তুলে রেখেছে দুটি হাত–এমন দৃশ্যের একটি ছবি গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ‘কমলাকান্তের দপ্তর’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে পোস্ট করা হয়। পোস্টটির ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘এটা বাহুবলির কোনো দৃশ্য নয়।’ ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নোটিশ বোর্ড (National University Notice board)’ নামের ৯ লাখ সদস্যের একটি ফেসবুক গ্রুপে একই ছবি পোস্ট করে লেখা হয়, ‘এটা “বাহুবলি ২” মুভিতে দেখেছিলাম। বাস্তবে দেখব তা কখনো ভাবিনি।’
আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ছবিটির সঙ্গে চলমান বন্যা পরিস্থিতির কোনো সম্পর্কই নেই। এটি ২০১৭ সালে নাফিস ইমতিয়াজ নামে একজন চিত্রগ্রাহকের তোলা। তিনি আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগকে বলেন, ‘ছবিটি আমার তোলা ২০১৭ সালে। এটি কোনো বন্যার ছবি নয়। মুন্সিগঞ্জের ধলেশ্বরী নদী থেকে তোলা, শিশুটি তার ভাইয়ের সঙ্গে খেলা করছিল মাত্র।’
ফেনীতে বন্যায় ভেসে যাচ্ছে গরু–ছাগল, পশু–পাখি, ভাইরাল ভিডিওটি মেক্সিকোর
‘রং pencil’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে গত বুধবার (২২ আগস্ট) দিবাগত রাতে ১৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হয়, ‘ফেনীতে বন্যায় ভেসে যাচ্ছে গরু–ছাগল, পশু–পাখি।’ ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, পানির তীব্র স্রোতে গবাদিপশু ভেসে যাচ্ছে। ভিডিওটি আজ শুক্রবার বেলা দেড়টা পর্যন্ত তিন হাজার শেয়ার হয়েছে। দেখা হয়েছে ৬ লাখ ৩৫ হাজার বার।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, পানির তীব্র স্রোতে গবাদিপশু ভেসে যাওয়ার ভাইরাল ভিডিওটি মেক্সিকোর। রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধানে ‘এফ্রেন গ্র্যান্ডে টেপিক’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিওটি পাওয়া যায়। ২০২০ সালের ২৮ জুলাই চ্যানেলটিতে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। ভিডিওটি সম্পর্কে জানা যায়, এটি মেক্সিকোর লাস ভারাস, কম্পোস্টেলা থেকে ধারণ করা। ওই সময় দেশটিতে হান্না নামের একটি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। এর ফলে দেশটিতে তীব্র বন্যার ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশে বন্যাকবলিত মানুষের অসহায় অবস্থা দাবিতে ছড়াল পাকিস্তানের ভিডিও
‘চারদিকে ঘোলা পানি, হাজারের মতো মানুষ সে পানিতে ভাসছেন’—১২ সেকেন্ডের এমন একটি ভিডিও গতকাল বৃহস্পতিবার ‘সালমান আহমেদ’ নামের একটি ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘একটু মাটির খুঁজে পানিতে দাঁড়িয়ে মানুষ...।’ ভিডিওটি আজ শুক্রবার বেলা দেড়টা পর্যন্ত ৭২ লাখ বার দেখা হয়েছে। শেয়ার হয়েছে ৪৬ হাজার।
ভাইরাল ভিডিওটি নিয়ে অনুসন্ধানে ‘ওয়েদার আপডেটস করাচি’ নামের একটি ফেসবুক পেজে ভিডিওটি পাওয়া যায়। গত ১৬ জুলাই ভিডিওটি পেজে পোস্ট করা হয়। ভিডিওটির ক্যাপশন ছিল, ‘করাচির সমুদ্রসৈকতে নিষেধাজ্ঞার পর কালরি লেকে ভিড় করছেন মানুষ।’ ইউটিউবেও একই স্থানের একাধিক ভিডিও পাওয়া যায়। অর্থাৎ ভিডিওটির সঙ্গে বাংলাদেশে চলমান বন্যার কোনো সম্পর্ক নেই।
আবেগঘন ক্যাপশনে ফেনীর বন্যার দৃশ্য দাবিতে ছড়াল চার মাসের পুরোনো ভিডিও
‘গুরুজী’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে গত রাতে ২৩ সেকেন্ডের একটি পোস্ট করে আবেগঘন ক্যাপশনে ইংরেজি ভাষায় লেখা হয়, ‘এটি টাইটানিক চলচ্চিত্রের কোনো দৃশ্য নেই। এটি ফেনী।’ ভাইরাল ভিডিওটিতে দেখা যায়, একটি বদ্ধ কামরার সিঁড়িতে প্রবল ঢেউ এসে বারবার আছড়ে পড়ছে। ভিডিওটি আজ শুক্রবার বেলা দেড়টা পর্যন্ত ৭ লাখ ৪৭ হাজার বার দেখা হয়েছে। শেয়ার হয়েছে প্রায় ৪ হাজার।
ভিডিওটি নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, এটির সঙ্গে চলমান বন্যা বা ফেনীর কোনো সম্পর্ক নেই। রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধানে ইনস্টাগ্রামে ভিডিওটি পাওয়া যায়। গত ১৮ মে ভিডিওটি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা হয়। ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, এটি ২০২২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বরের ভিডিও। ‘ইয়ান’ নামের একটি ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগরের ঢেউ সিঁড়িতে আছড়ে পড়ছিল।
পাকিস্তানের বাঁধের ভিডিওকে ভারতের দাবিতে প্রচার
বাংলাদেশের চলমান বন্যা পরিস্থিতির জন্য দায়ী করা হচ্ছে ভারতের বাঁধ খুলে দেওয়াকে। বলা হচ্ছে, ত্রিপুরার ডাম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়ায় এ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যদিও নয়াদিল্লি এ দাবি ঠিক নয় বলে জানিয়েছে। এমন আলোচনার মধ্যে একটি বাঁধ থেকে পানি ছেড়ে দেওয়ার ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, এটি ভারতের বাঁধ। ‘ভ্লগ ভিলা’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে গত বুধবার (২১ আগস্ট) এমন একটি বাঁধের ভিডিও পোস্ট করা হয়। ভিডিওটি আজ শুক্রবার বেলা দেড়টা পর্যন্ত প্রায় ৬৯ লাখ বার দেখা হয়েছে। শেয়ার হয়েছে সাড়ে ৬৪ হাজার।
ভিডিওটি নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ৫ আগস্ট ‘হামিদ ৯৫’ নামের একটি টিকটক অ্যাকাউন্টে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। পোস্টটি থেকে জানা যায়, বাঁধটি ভারতের নয়। এটি পাকিস্তানের টারবেলা বাঁধ। গুগল ম্যাপ থেকেও স্থানটি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়।
গলা অবধি পানিতে ডুবে আছে শিশু, চোখে করুণ চাহনি; কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি ছবি ভাইরাল
বন্যার জলে গলা অবধি পানিতে ডুবে আছে শিশু, দুই চোখে তার করুণ চাহনি–এমন একটি ছবি গত বুধবার (২২ আগস্ট) দিবাগত রাতে ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে পোস্ট দেন অভিনেত্রী চিত্র নায়িকা পরীমনি। পোস্টের ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘আল্লাহ! কি করবো আমি! বুকের ভিতর দুমড়ে–মুচড়ে যাচ্ছে। এই চোখের দিকে তাকিয়ে কি করে ঘুমাব!’ তাঁর পোস্ট ছাড়াও ছবিটি ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে।
আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগের অনুসন্ধানে দেখা যায়, গলা অবধি পানিতে ডুবে থাকা ভাইরাল শিশুর ছবিটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি ছবি শনাক্তকারী অন্তত দুটি ওয়েবসাইটের বিশ্লেষণের ফলাফলে ছবিটি এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি বলে প্রতীয়মান হয়। এ ছাড়া ছবিটিতে অন্তত দুটি অসংগতি দেখা যায়।
অসংগতিগুলো হলো—
১. শিশুটির কপালের অস্বাভাবিক ভাঁজ। এ ধরনের ভাঁজ সাধারণত কপালের মাঝ বরাবর থাকে। ভাইরাল ছবিটিতে এটি চোখের ওপর দেখা যাচ্ছে।
২. শিশুটির মুখাবয়বে নাক, ঠোঁটের অবস্থানও সাধারণ মানুষের তুলনায় কিছুটা অস্বাভাবিক। এসব অসংগতি ছবিটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরির দাবিকে আরও পাকাপোক্ত করে।
দিগন্ত বিস্তৃত পানি, গাছ আঁকড়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা, দুই বছরের পুরোনো ভিডিও ভাইরাল
দিগন্ত বিস্তৃত পানি, আশপাশে কোথাও মাটির চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না। এর মধ্যেই একটি নারিকেল সদৃশ গাছে ওঠে বেশ কয়েকজন মানুষ বাঁচার চেষ্টা করছেন। মুহাম্মদ আরমান হোসাইন নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ১১ সেকেন্ডের এমন এক ভিডিও চলমান বন্যার দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় পোস্ট করা হয়। ভিডিওটি আজ শুক্রবার বেলা দেড়টা পর্যন্ত প্রায় ৯২ হাজার বার দেখা হয়েছে।
ভিডিওটি নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, একই ভিডিও ইতিপূর্বে পাকিস্তান, আরব আমিরাত, মিয়ানমারের ঘটনা দাবিতে বিভিন্ন সময়ে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটির সবচেয়ে পুরোনো সংস্করণ পাওয়া যায় ২০২২ সালের ১৮ জুলাইয়ে ‘লাক্সারি কার ভিডিওজ’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে।
ভারী বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢল; তার সঙ্গে যোগ হয়েছে ভারতের উজান থেকে ছুটে আসা পানির তোড়। সব মিলিয়ে দেশের পূর্বাঞ্চলের সিংহভাগ এলাকা এখন পানির নিচে। কোথাও কোমরপানি, কোথাও ঘরের চালা ছুঁই ছুঁই; তলিয়েছে সড়ক–মহাসড়ক, রেলপথও। ডুবেছে ফসলের মাঠ, ভেসে গেছে চাষের মাছ। গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) পর্যন্ত দেশের অন্তত ৯ জেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লা, নোয়াখালী ও ফেনীর বাসিন্দারা আকস্মিক বন্যায় পড়েছে চরম দুর্ভোগে। এমন পরিস্থিতিতে চলমান বন্যা পরিস্থিতির অবস্থা দাবি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন অপ্রাসঙ্গিক, পুরোনো ভিডিও, ছবি। এসব ছবি, ভিডিওর কোনো কোনোটি দেখা হয়েছে লাখের ওপরে, শেয়ার হয়েছে হাজারের বেশি। আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিংয়ে এমন সাতটি দাবি চিহ্নিত করেছে।
চলমান বন্যায় ভারতীয় চলচ্চিত্র বাহুবলির বাস্তব দৃশ্য দেখা যাওয়ার দাবিতে ছড়াল পুরোনো ছবি
বিস্তীর্ণ জল, অদূরেই দেখা যাচ্ছে নৌকা। এক শিশুকে পানির নিচ থেকে ওপরে তুলে রেখেছে দুটি হাত–এমন দৃশ্যের একটি ছবি গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ‘কমলাকান্তের দপ্তর’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে পোস্ট করা হয়। পোস্টটির ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘এটা বাহুবলির কোনো দৃশ্য নয়।’ ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নোটিশ বোর্ড (National University Notice board)’ নামের ৯ লাখ সদস্যের একটি ফেসবুক গ্রুপে একই ছবি পোস্ট করে লেখা হয়, ‘এটা “বাহুবলি ২” মুভিতে দেখেছিলাম। বাস্তবে দেখব তা কখনো ভাবিনি।’
আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ছবিটির সঙ্গে চলমান বন্যা পরিস্থিতির কোনো সম্পর্কই নেই। এটি ২০১৭ সালে নাফিস ইমতিয়াজ নামে একজন চিত্রগ্রাহকের তোলা। তিনি আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগকে বলেন, ‘ছবিটি আমার তোলা ২০১৭ সালে। এটি কোনো বন্যার ছবি নয়। মুন্সিগঞ্জের ধলেশ্বরী নদী থেকে তোলা, শিশুটি তার ভাইয়ের সঙ্গে খেলা করছিল মাত্র।’
ফেনীতে বন্যায় ভেসে যাচ্ছে গরু–ছাগল, পশু–পাখি, ভাইরাল ভিডিওটি মেক্সিকোর
‘রং pencil’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে গত বুধবার (২২ আগস্ট) দিবাগত রাতে ১৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হয়, ‘ফেনীতে বন্যায় ভেসে যাচ্ছে গরু–ছাগল, পশু–পাখি।’ ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, পানির তীব্র স্রোতে গবাদিপশু ভেসে যাচ্ছে। ভিডিওটি আজ শুক্রবার বেলা দেড়টা পর্যন্ত তিন হাজার শেয়ার হয়েছে। দেখা হয়েছে ৬ লাখ ৩৫ হাজার বার।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, পানির তীব্র স্রোতে গবাদিপশু ভেসে যাওয়ার ভাইরাল ভিডিওটি মেক্সিকোর। রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধানে ‘এফ্রেন গ্র্যান্ডে টেপিক’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিওটি পাওয়া যায়। ২০২০ সালের ২৮ জুলাই চ্যানেলটিতে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। ভিডিওটি সম্পর্কে জানা যায়, এটি মেক্সিকোর লাস ভারাস, কম্পোস্টেলা থেকে ধারণ করা। ওই সময় দেশটিতে হান্না নামের একটি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। এর ফলে দেশটিতে তীব্র বন্যার ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশে বন্যাকবলিত মানুষের অসহায় অবস্থা দাবিতে ছড়াল পাকিস্তানের ভিডিও
‘চারদিকে ঘোলা পানি, হাজারের মতো মানুষ সে পানিতে ভাসছেন’—১২ সেকেন্ডের এমন একটি ভিডিও গতকাল বৃহস্পতিবার ‘সালমান আহমেদ’ নামের একটি ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘একটু মাটির খুঁজে পানিতে দাঁড়িয়ে মানুষ...।’ ভিডিওটি আজ শুক্রবার বেলা দেড়টা পর্যন্ত ৭২ লাখ বার দেখা হয়েছে। শেয়ার হয়েছে ৪৬ হাজার।
ভাইরাল ভিডিওটি নিয়ে অনুসন্ধানে ‘ওয়েদার আপডেটস করাচি’ নামের একটি ফেসবুক পেজে ভিডিওটি পাওয়া যায়। গত ১৬ জুলাই ভিডিওটি পেজে পোস্ট করা হয়। ভিডিওটির ক্যাপশন ছিল, ‘করাচির সমুদ্রসৈকতে নিষেধাজ্ঞার পর কালরি লেকে ভিড় করছেন মানুষ।’ ইউটিউবেও একই স্থানের একাধিক ভিডিও পাওয়া যায়। অর্থাৎ ভিডিওটির সঙ্গে বাংলাদেশে চলমান বন্যার কোনো সম্পর্ক নেই।
আবেগঘন ক্যাপশনে ফেনীর বন্যার দৃশ্য দাবিতে ছড়াল চার মাসের পুরোনো ভিডিও
‘গুরুজী’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে গত রাতে ২৩ সেকেন্ডের একটি পোস্ট করে আবেগঘন ক্যাপশনে ইংরেজি ভাষায় লেখা হয়, ‘এটি টাইটানিক চলচ্চিত্রের কোনো দৃশ্য নেই। এটি ফেনী।’ ভাইরাল ভিডিওটিতে দেখা যায়, একটি বদ্ধ কামরার সিঁড়িতে প্রবল ঢেউ এসে বারবার আছড়ে পড়ছে। ভিডিওটি আজ শুক্রবার বেলা দেড়টা পর্যন্ত ৭ লাখ ৪৭ হাজার বার দেখা হয়েছে। শেয়ার হয়েছে প্রায় ৪ হাজার।
ভিডিওটি নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, এটির সঙ্গে চলমান বন্যা বা ফেনীর কোনো সম্পর্ক নেই। রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধানে ইনস্টাগ্রামে ভিডিওটি পাওয়া যায়। গত ১৮ মে ভিডিওটি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা হয়। ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, এটি ২০২২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বরের ভিডিও। ‘ইয়ান’ নামের একটি ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগরের ঢেউ সিঁড়িতে আছড়ে পড়ছিল।
পাকিস্তানের বাঁধের ভিডিওকে ভারতের দাবিতে প্রচার
বাংলাদেশের চলমান বন্যা পরিস্থিতির জন্য দায়ী করা হচ্ছে ভারতের বাঁধ খুলে দেওয়াকে। বলা হচ্ছে, ত্রিপুরার ডাম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়ায় এ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যদিও নয়াদিল্লি এ দাবি ঠিক নয় বলে জানিয়েছে। এমন আলোচনার মধ্যে একটি বাঁধ থেকে পানি ছেড়ে দেওয়ার ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, এটি ভারতের বাঁধ। ‘ভ্লগ ভিলা’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে গত বুধবার (২১ আগস্ট) এমন একটি বাঁধের ভিডিও পোস্ট করা হয়। ভিডিওটি আজ শুক্রবার বেলা দেড়টা পর্যন্ত প্রায় ৬৯ লাখ বার দেখা হয়েছে। শেয়ার হয়েছে সাড়ে ৬৪ হাজার।
ভিডিওটি নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ৫ আগস্ট ‘হামিদ ৯৫’ নামের একটি টিকটক অ্যাকাউন্টে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। পোস্টটি থেকে জানা যায়, বাঁধটি ভারতের নয়। এটি পাকিস্তানের টারবেলা বাঁধ। গুগল ম্যাপ থেকেও স্থানটি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়।
গলা অবধি পানিতে ডুবে আছে শিশু, চোখে করুণ চাহনি; কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি ছবি ভাইরাল
বন্যার জলে গলা অবধি পানিতে ডুবে আছে শিশু, দুই চোখে তার করুণ চাহনি–এমন একটি ছবি গত বুধবার (২২ আগস্ট) দিবাগত রাতে ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে পোস্ট দেন অভিনেত্রী চিত্র নায়িকা পরীমনি। পোস্টের ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘আল্লাহ! কি করবো আমি! বুকের ভিতর দুমড়ে–মুচড়ে যাচ্ছে। এই চোখের দিকে তাকিয়ে কি করে ঘুমাব!’ তাঁর পোস্ট ছাড়াও ছবিটি ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে।
আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগের অনুসন্ধানে দেখা যায়, গলা অবধি পানিতে ডুবে থাকা ভাইরাল শিশুর ছবিটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি ছবি শনাক্তকারী অন্তত দুটি ওয়েবসাইটের বিশ্লেষণের ফলাফলে ছবিটি এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি বলে প্রতীয়মান হয়। এ ছাড়া ছবিটিতে অন্তত দুটি অসংগতি দেখা যায়।
অসংগতিগুলো হলো—
১. শিশুটির কপালের অস্বাভাবিক ভাঁজ। এ ধরনের ভাঁজ সাধারণত কপালের মাঝ বরাবর থাকে। ভাইরাল ছবিটিতে এটি চোখের ওপর দেখা যাচ্ছে।
২. শিশুটির মুখাবয়বে নাক, ঠোঁটের অবস্থানও সাধারণ মানুষের তুলনায় কিছুটা অস্বাভাবিক। এসব অসংগতি ছবিটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরির দাবিকে আরও পাকাপোক্ত করে।
দিগন্ত বিস্তৃত পানি, গাছ আঁকড়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা, দুই বছরের পুরোনো ভিডিও ভাইরাল
দিগন্ত বিস্তৃত পানি, আশপাশে কোথাও মাটির চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না। এর মধ্যেই একটি নারিকেল সদৃশ গাছে ওঠে বেশ কয়েকজন মানুষ বাঁচার চেষ্টা করছেন। মুহাম্মদ আরমান হোসাইন নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ১১ সেকেন্ডের এমন এক ভিডিও চলমান বন্যার দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় পোস্ট করা হয়। ভিডিওটি আজ শুক্রবার বেলা দেড়টা পর্যন্ত প্রায় ৯২ হাজার বার দেখা হয়েছে।
ভিডিওটি নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, একই ভিডিও ইতিপূর্বে পাকিস্তান, আরব আমিরাত, মিয়ানমারের ঘটনা দাবিতে বিভিন্ন সময়ে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটির সবচেয়ে পুরোনো সংস্করণ পাওয়া যায় ২০২২ সালের ১৮ জুলাইয়ে ‘লাক্সারি কার ভিডিওজ’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে।
ভোলার বোরহানউদ্দিনে এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচি চলাকালে অর্ধশত স্কুলছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, এ শিক্ষার্থীদের দেওয়া টিকাগুলো ‘বিষাক্ত’ ছিল। এর প্রভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা।
৪ ঘণ্টা আগেদাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ভয়েস অব আমেরিকার ওয়েবসাইটে গত শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) ‘ক্ষমতাচ্যুত বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রী হাসিনার দল বিক্ষোভের পরিকল্পনা করছে’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
১ দিন আগেসোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল একটি মন্তব্যে দাবি করা হচ্ছে, সেনাপ্রধান ওয়াকার–উজ–জামান এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, শেখ হাসিনা জনগণের লাশের বন্যা ও মৃত্যু চাননি। তাই তিনি পদত্যাগ না করেই ভারতে চলে যান।
৩ দিন আগেবিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রায় ১ মিনিটের একটি বক্তব্যের ভিডিও দীর্ঘদিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার হয়ে আসছে। গতকাল শনিবার একই ভিডিও মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্স–এ মিহাদ আহমেদ নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে ‘স্টেপ ডাউন ইউনূস’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে টুইট করা হয়। ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন সময় ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায়
৩ দিন আগে