দেশে ভিটামিন ‘এ’র ঘাটতিতে ভুগছে বেশি ছেলেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ২২: ৪৬
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৩: ১৫

বাংলাদেশে ৪৩ দশমিক ৭০ শতাংশ শিশু স্বল্পমাত্রায় ভিটামিন ‘এ’-এর ঘাটতিতে (মাইল্ড ডেফিশিয়েন্সি) ভুগছে। তবে শিশুদের মধ্যে গুরুতর মাত্রায় ভিটামিন ‘এ’-এর ঘাটতি নেই বললেই চলে। এর অভাবে ভোগা শিশুদের মধ্যে ছেলের সংখ্যা মেয়েদের তুলনায় বেশি।

আজ সোমবার (১১ ডিসেম্বর) ঢাকার সিভিল সার্জন অফিসের সম্মেলনকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের’ বিষয়ে অবহিত করতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামীকাল মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) ঢাকা জেলার ৫ উপজেলা ও ১ পৌরসভায় ৫ লাখের বেশি শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। পাশাপাশি পুষ্টিবার্তাও প্রচার করা হবে। ১ হাজার ৭৪৩টি কেন্দ্রে এই কার্যক্রম চলবে। এতে নিয়োজিত থাকবেন ৩ হাজার ৪৮৬ জন স্বেচ্ছাসেবক। এ ছাড়া পর্যাপ্ত ডাক্তার, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা এ কাজে সরাসরি অংশ নেবেন।

সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার রেজওয়ানা পারভীন। জাতীয় অনুপুষ্টি কণা জরিপ (২০১৯-২০২০) এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ভিটামিন ‘এ’-এর অভাব মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের মধ্যে ৮ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। দেশে ভিটামিন ‘এ’-এর অভাবে ভোগা শিশুর হার সবচেয়ে বেশি সিলেট জেলায়, ৬৬ দশমিক ২ শতাংশ। আর সবচেয়ে কম ময়মনসিংহ জেলায়, ৩৬ দশমিক ৮ শতাংশ।

সিভিল সার্জন অফিসের সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ মহসিন মিয়ার সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন ইয়াসমিন নাহার, ডা. ওমর ফারুক, জেলা তথ্য অফিসের পরিচালক কাজী গোলাম আহাদ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, শিশুর সুস্থভাবে বেঁচে থাকা, স্বাভাবিক বৃদ্ধি, দৃষ্টিশক্তি ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন ‘এ’ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন ‘এ’ মানবদেহে তৈরি হয় না। তাই খাদ্য বা সম্পূরক মাধ্যমে এই ভিটামিন গ্রহণ করা আবশ্যক। এ লক্ষ্যে প্রতিবছর দুবার ভিটামিন ‘এ’ ক্যাম্পেইন আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মঙ্গলবার দিনব্যাপী ঢাকা জেলার ৫টি উপজেলা ধামরাই, দোহার, কেরানীগঞ্জ, নবাবগঞ্জ, সাভার ও সাভার পৌরসভা এলাকায় ভিটামিন ‘এ’ ক্যাম্পেইন চলবে। এদিন ৬-১১ মাস বয়সী ৭৪ হাজার ৮২ জন শিশুকে নীল রঙের এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী ৪ লাখ ৫২ হাজার ১৫৮ জন শিশুকে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। পাশাপাশি জন্মের পরপর নবজাতককে শালদুধ খাওয়ানো, ৬ মাস পর্যন্ত শিশুকে শুধু মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো; শিশুর ৬ মাস পূর্ণ হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি পরিমাণমতো ঘরে তৈরি সুষম খাবার খাওয়ানোর বার্তাও প্রচার করা হবে।

বক্তারা জানান, ভিটামিন এ প্লাস ক্যাপসুল শিশুদের শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। ডায়রিয়া-নিউমোনিয়ার প্রকোপ কমায়, অন্ধত্ব দূর করে। এ জন্য শিশুদের বাড়ির পাশের কেন্দ্রে গিয়ে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে। তবে অসুস্থ শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না। কেউ অসুস্থ হলে কেন্দ্রে চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত