Ajker Patrika

পেট ভালো রাখতে মেনে চলুন আইবিএস ডায়েট

আলমগীর আলম
পেট ভালো রাখতে মেনে চলুন আইবিএস ডায়েট

আপনি জেনে হয়তো অবাক হবেন, ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (আইবিএস) আমাদের দেশে ২১ শতাংশ মানুষের আছে। এই মানুষেরা এখন আইবিএসের কোনো না কোনো রূপের সঙ্গে লড়াই করছে।

আপনি যদি ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, ফোলাভাব, গ্যাসসহ হজমের লক্ষণগুলো কাটিয়ে উঠতে চান, তবে আইবিএস ডায়েট অনুসরণ করার চিন্তা করতে পারেন। কারণ, অনেক ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে পাওয়া গেছে, খাদ্যতালিকাগত, জীবনধারা, চিকিৎসা ও আচরণগত হস্তক্ষেপ আইবিএস থেকে মুক্তি পেতে খুব কার্যকর হতে পারে।

আইবিএস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের পায়খানা শক্ত কিংবা পাতলা হতে পারে। কখন পেটে চাপ দেবে, যার কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। অনেকের খাওয়ার পরপরই পেটে চাপ দেবে, একেবারে পেট পরিষ্কার হবে না, মলের চেয়ে গ্যাস বেশি থাকবে, মল আঠালো হবে, সেই সঙ্গে পেটে ব্যথা থাকবে। আইবিএস খুব সাধারণ রোগ, যা হজমপ্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে। এটি একক কোনো রোগ নয় বরং বিভিন্ন উপসর্গের ক্লাস্টার। 

লক্ষণ 
» পেট ফোলাভাব ও গ্যাস
» ক্র্যাম্পিং ও পেটে ব্যথা
» ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য বা উভয়ই
» রক্তাক্ত মল
» মলের মধ্যে শ্লেষ্মা থাকাসহ মলের রঙের পরিবর্তন।

খাবারের ঝামেলা থেকে মানসিক চাপসহ বিভিন্ন কারণে আইবিএস হতে পারে। আইবিএসের বিকাশে যে কারণগুলো ভূমিকা রাখে, সেগুলোর মধ্যে আছে অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমের পরিবর্তন, ফুটো অন্ত্রের সিনড্রোম, অন্ত্রের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা, অন্ত্র ও মস্তিষ্কের মিথস্ক্রিয়া এবং মনস্তাত্ত্বিক ব্যাঘাত।

যে কারণে আইবিএস হয়
» উচ্চ প্রক্রিয়াজাত ও কম আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া
» খাদ্যে অ্যালার্জি বা সংবেদনশীলতা
» মানসিক চাপ
» প্রদাহ 
» অন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর ফ্রি র‍্যাডিক্যাল
» পুষ্টির ঘাটতি
» ছিদ্রময় অন্ত্র
» ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
» ধূমপান, উচ্চ ক্যাফেইন, অ্যালকোহল পান ও মাদক সেবন
» গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস বা পাচনতন্ত্রের সংক্রমণ
» হরমোনের পরিবর্তন
» পানিশূন্যতা

একটি আইবিএস খাদ্যতালিকায় বিভিন্ন ধরনের অপ্রক্রিয়াজাত খাবার রাখুন; যেগুলো আঁশ, ভিটামিন ও খনিজ সরবরাহ করে। যেমন শাকসবজি, ফল, প্রোটিন ও হাড়ের ঝোল বা সরুয়া। প্রদাহজনক ও অলিগোস্যাকারাইডস, ডিস্যাকারাইডস, মনোস্যাকারাইডস ও পলিওলস বা এফওডিএমপি খাবার এড়িয়ে চলুন। এর বদলে নির্দিষ্ট পরিপূরক ব্যবহার করুন। নিয়মিত ব্যায়াম করুন এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন। এগুলো আইবিএস চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

আইবিএসের ডায়েট প্ল্যান
» ঘরে তৈরি হাড়ের ঝোল: হাড়ের ঝোল আপনার শরীরকে প্রোলিন ও গ্লাইসিন সরবরাহ করবে। এগুলো কোলাজেন। এটি অন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা সারাতে সহায়তা করতে পারে।
» কাঁচা দুগ্ধজাত খাবার: কেফির, টক দইয়ের মতো প্রোবায়োটিক খাবার অন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা সারিয়ে তুলতে পারে। এগুলো মাইক্রোফ্লোরার ভারসাম্য রাখতে সাহায্য করতে পারে। 
» টাটকা সবজির রস: সবজির রস শরীরে গুরুত্বপূর্ণ ইলেকট্রোলাইট সরবরাহ করতে সাহায্য করে।
» ভাপানো শাকসবজি: স্টার্চবিহীন ভাপানো শাকসবজি হজম করা সহজ। এ ধরনের খাবার আইবিএস ডায়েটের অপরিহার্য অংশ।
» বাঁধাকপির জুস: সকালে খালি পেটে এক 
মাস সেবন করুন। এতে পেটের প্রোবায়োটিক বৃদ্ধি পাবে।

পর্যাপ্ত পানি পানকে অগ্রাধিকার দিন। পাচনতন্ত্রকে তৈলাক্ত ও সুস্থ রাখার জন্য পানির ভারসাম্য রাখা গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি দুই ঘণ্টায় এক গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করুন। অত্যধিক ক্যাফেইন থাকা পানীয় এড়িয়ে চলুন।

আলমগীর আলম, খাদ্যপথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলার আহ্বান ত্রিপুরার রাজপরিবার প্রধানের

বাংলাদেশে-ভারত সম্পর্কের অবনতিতে দায়ী মোদি সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতা: কংগ্রেস

তখন অন্য একটা সংগঠন করতাম, এখন বলতে লজ্জা হয়: জামায়াতের আমির

কুতুবদিয়ায় ছাত্রলীগ নেতার ছুরিকাঘাতে ২ ছাত্রদল নেতা আহত

আইসিসির শাস্তি নিয়ে খেলতে নামা পাকিস্তানকে হেসেখেলে হারাল নিউজিল্যান্ড

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত