Ajker Patrika

ঋতুকালীন অসুখ: হাম হলে

ডা. কাকলী হালদার
আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৩, ১০: ০৩
ঋতুকালীন অসুখ: হাম হলে

হাম অত্যন্ত ছোঁয়াচে একটি রোগ, যা মিজল্স নামের ভাইরাসের সংক্রমণে হয়। এটি সাধারণত শিশুদের বেশি হয়। শুধু মানুষের শরীরেই এ রোগ হতে পারে। হাঁচি ও কাশির মাধ্যমে ভাইরাসটি প্রথমে শ্বাসনালিতে সংক্রমিত হয়। এরপর রক্তের মাধ্যমে দেহের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। এর জীবাণু বাতাসে প্রায় দুই ঘণ্টা ভেসে থাকতে পারে এবং কোনো কিছুর সঙ্গে বা কাপড়ে লেগে থাকতে পারে। 

উপসর্গ
সংক্রমিত হওয়ার ১০ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে হামের উপসর্গগুলো দেখা যায়।

  • সাধারণত তীব্র জ্বর থাকে। সঙ্গে হাঁচি-কাশি, নাক দিয়ে পানি পড়া এবং চোখ লাল হয়ে জ্বালা করা, যা আলো পড়লে অসহনীয় লাগে।
  • প্রথম উপসর্গ দেখা দেওয়ার দুই থেকে তিন দিন পর মুখের ভেতরের দিকে লাল রঙের স্পটের মাঝে সাদা ডটের মতো দেখা দেয়। এদের কোপলিক স্পট বলে।
  • এর কয়েক দিন পরে প্রথমে মুখ ও ঘাড় এবং ধীরে ধীরে দেহের নিচের অংশের ত্বকসহ হাত-পায়ের তালুতেও বিন্দু বিন্দু লাল ফুসকুড়িতে ছেয়ে যায়, যা ৫ থেকে ৭ দিন পরে বাদামি রঙের হয়ে মিলিয়ে যায়। 

জটিলতা
সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করা হলে রোগী নানান গুরুতর জটিলতা, যেমন এনকেফালাইটিস, কান পাকা, নিউমোনিয়া, মানসিক সমস্যা, অন্ধত্ব, খিঁচুনি, ডায়রিয়া এমনকি মৃত্যুঝুঁকিতেও পড়তে পারে। গর্ভবতীদের হাম হলে গর্ভপাত, মৃত শিশু প্রসব এবং বিভিন্ন জন্মগত সমস্যা নিয়ে শিশু জন্মগ্রহণ করতে পারে।

কম রোগ প্রতিরোধসম্পন্ন শিশু, ৫ বছরের কম বয়সী টিকাহীন শিশু, টিকাহীন ৩০ বছরের বেশি ব্যক্তি, টিকাহীন গর্ভবতী নারী, দুর্বল রোগ প্রতিরোধসম্পন্ন ব্যক্তি ও ভিটামিন ‘এ’-এর অভাবে এই রোগ তীব্র হওয়ার এবং জটিলতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।

চিকিৎসা
হামের ভাইরাসবিরোধী সুনির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই। সাধারণত ১০ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে হাম আপনাআপনি সেরে যায়। বেশি বেশি তরলজাতীয় ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, ভিটামিন এ-জাতীয় খাবার খাওয়া এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। এ ছাড়া চিকিৎসক রোগের লক্ষণ বুঝে সেই অনুযায়ী চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।
প্রতিরোধ

শিশুমৃত্যুর অন্যতম কারণ হাম। এটি ঠেকাতে দুই ডোজ ভ্যাকসিন নিলে ৯৭ শতাংশ পর্য়ন্ত কার্যকর প্রতিরোধব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়। একবার সংক্রমণ হলে বা দুই ডোজ টিকা নিলে সারা জীবনের জন্য শরীরে হাম প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। বাংলাদেশে হাম-রুবেলা টিকা শিশুর ৯ ও ১৫ মাস বয়সে দেওয়া হয়। এ ছাড়া হাম-রুবেলা টিকাদান কর্মসূচিতে ৯ মাস থেকে ১০ বছর বয়সী শিশুদের ১ ডোজ টিকা দেওয়া হয়।

ডা. কাকলী হালদার, সহকারী অধ্যাপক, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

‘মবের হাত থেকে বাঁচাতে’ পলকের বাড়ি হয়ে গেল অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত