ডা. ফারজানা ইসলাম বীথি
গর্ভধারণের ক্ষেত্রে জরায়ু যে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, সে কথা না বললেও চলে। নারীদের প্রজননক্ষম বয়সের বিভিন্ন পর্বে জরায়ুতে নানান ধরনের টিউমার দেখা দিতে পারে। এতে সবচেয়ে বেশি যে টিউমারটি হতে দেখা যায়, তা হলো ফাইব্রয়েড বা মায়োমা। জরায়ুর পেশির অতিরিক্ত ও অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে এই টিউমারের সৃষ্টি হয়। ৩০ বছরের বেশি বয়সী নারীদের মধ্যে এ সমস্যায় আক্রান্তের হার বেশি। ফাইব্রয়েড একধরনের নিরীহ টিউমার। সাধারণত এটি বড় ধরনের বিপত্তি ঘটায় না।
জরায়ুর টিউমার কেন হয়
জরায়ু মসৃণ পেশি কোষ দিয়ে তৈরি। এই মসৃণ কোষের অতিরিক্ত বৃদ্ধির কারণেই জরায়ুতে টিউমার বা ফাইব্রয়েড তৈরি হয়। ডিম্বাশয়ে উৎপন্ন সংবেদনশীল হরমোন ইস্ট্রোজেনের জন্য এটা হয়ে থাকে।
শরীরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে টিউমারের আকার বেড়ে যায়। সাধারণত গর্ভকালে ইস্ট্রোজেন বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। দেহে এর মাত্রা কমে গেলে টিউমারের আকারও সংকুচিত বা ছোট হয়। যেমন মেনোপজের পর ইস্ট্রোজেনের পরিমাণ কমে যায়। হরমোন প্রতিস্থাপন থেরাপির জন্য মেনোপজের পর ফাইব্রয়েডের আকার সংকুচিত হওয়া বিলম্বিত হতে পারে।
জরায়ুর টিউমারের লক্ষণ কী
এই টিউমার কোনো ধরনের লক্ষণ প্রকাশ ছাড়াও থাকতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অন্য কোনো সমস্যা নিয়ে আলট্রাসাউন্ড করতে গেলে এটি ধরা পড়ে। সাধারণত জরায়ুর টিউমারের যে লক্ষণগুলো দেখা যায়, সেগুলো হলো:
ঋতুস্রাবের সমস্যা: একজন নারীর ঋতুচক্র ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ৭ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত হতে পারে। জরায়ুতে টিউমার হলে রক্তপাতের পরিমাণ বেড়ে যায়। চাকা চাকা রক্তপাতও হতে পারে।
ব্যথাযুক্ত ও অতিরিক্ত রক্তস্রাব: টিউমারের কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিমাণে রক্তক্ষরণ হয়। কখনো কখনো অত্যধিক ব্যথা অনুভূত হয়। ফলে রক্তে আয়রনের পরিমাণ কমে গিয়ে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়।
বন্ধ্যত্ব বা গর্ভপাত: জরায়ুর অভ্যন্তরীণ অংশে ফাইব্রয়েড সৃষ্টি হলে তা ফেলোপিয়ান টিউবকে বন্ধ করে দেয়,
যা গর্ভধারণে বাধা সৃষ্টির মাধ্যমে বন্ধ্যত্বের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কখনো কখনো ফাইব্রয়েডের কারণে গর্ভপাত হতে দেখা যায়।
ঘন ঘন প্রস্রাব বা কোষ্ঠকাঠিন্য: কখনো কখনো ফাইব্রয়েড জরায়ুর সামনে অবস্থিত মূত্রথলিতে চাপ সৃষ্টির ফলে রোগীর ঘন ঘন প্রস্রাবের প্রয়োজন হয়। আবার কখনো ফাইব্রয়েড জরায়ুর পেছনে অবস্থিত অন্ত্রে চাপ সৃষ্টি করে। ফলে রোগীর কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়।
সহবাসকালীন ব্যথা অনুভব: জরায়ুমুখে টিউমার হলে সহবাসের সময় অস্বস্তি বা ব্যথা হতে পারে।
তলপেট ফুলে যাওয়া বা কোমরব্যথা: বড় আকারের টিউমারের ক্ষেত্রে অস্বস্তিসহ তলপেট ফুলে যেতে পারে। কোনো কোনো সময় ফাইব্রয়েডের জন্য কোমরব্যথাও হতে পারে।
জরায়ুর ক্যানসার সৃষ্টিতে টিউমারের ভূমিকা কী হতে পারে? এর উত্তর হলো, জরায়ুর টিউমার বিভিন্ন রূপে পরিবর্তন হতে পারে। প্রধানত ডিজেনারেটিভ, সংক্রমণ অথবা সারকোমেটাজ পরিবর্তন হয়ে থাকে। এর মধ্যে সারকোমেটাজ বা জরায়ু ক্যানসারের রূপ নেয় মাত্র শূন্য দশমিক ১ শতাংশ।
জরায়ুর ক্যানসারের লক্ষণ কী
চিকিৎসার পরে আবারও ফিরে আসা, খুব দ্রুত জরায়ুর টিউমার বড় হয়ে যাওয়া অথবা জরায়ুর টিউমারের সঙ্গে পোস্ট মেনোপজ ঋতুস্রাব পুনরায় শুরু হওয়া।
জরায়ুর টিউমার অতিদ্রুত বড় হতে থাকলে গাইনি ক্যানসার বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। এর চিকিৎসা মূলত অস্ত্রোপচার বা অপারেশন, যা মাল্টি ডিসিপ্লিনারি চিকিৎসাপদ্ধতিতে করা হয়ে থাকে।
ডা. ফারজানা ইসলাম বীথি, প্রসূতি, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ এবং গাইনি ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ও সার্জন, আলোক হেলথ কেয়ার লি.
গর্ভধারণের ক্ষেত্রে জরায়ু যে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, সে কথা না বললেও চলে। নারীদের প্রজননক্ষম বয়সের বিভিন্ন পর্বে জরায়ুতে নানান ধরনের টিউমার দেখা দিতে পারে। এতে সবচেয়ে বেশি যে টিউমারটি হতে দেখা যায়, তা হলো ফাইব্রয়েড বা মায়োমা। জরায়ুর পেশির অতিরিক্ত ও অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে এই টিউমারের সৃষ্টি হয়। ৩০ বছরের বেশি বয়সী নারীদের মধ্যে এ সমস্যায় আক্রান্তের হার বেশি। ফাইব্রয়েড একধরনের নিরীহ টিউমার। সাধারণত এটি বড় ধরনের বিপত্তি ঘটায় না।
জরায়ুর টিউমার কেন হয়
জরায়ু মসৃণ পেশি কোষ দিয়ে তৈরি। এই মসৃণ কোষের অতিরিক্ত বৃদ্ধির কারণেই জরায়ুতে টিউমার বা ফাইব্রয়েড তৈরি হয়। ডিম্বাশয়ে উৎপন্ন সংবেদনশীল হরমোন ইস্ট্রোজেনের জন্য এটা হয়ে থাকে।
শরীরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে টিউমারের আকার বেড়ে যায়। সাধারণত গর্ভকালে ইস্ট্রোজেন বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। দেহে এর মাত্রা কমে গেলে টিউমারের আকারও সংকুচিত বা ছোট হয়। যেমন মেনোপজের পর ইস্ট্রোজেনের পরিমাণ কমে যায়। হরমোন প্রতিস্থাপন থেরাপির জন্য মেনোপজের পর ফাইব্রয়েডের আকার সংকুচিত হওয়া বিলম্বিত হতে পারে।
জরায়ুর টিউমারের লক্ষণ কী
এই টিউমার কোনো ধরনের লক্ষণ প্রকাশ ছাড়াও থাকতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অন্য কোনো সমস্যা নিয়ে আলট্রাসাউন্ড করতে গেলে এটি ধরা পড়ে। সাধারণত জরায়ুর টিউমারের যে লক্ষণগুলো দেখা যায়, সেগুলো হলো:
ঋতুস্রাবের সমস্যা: একজন নারীর ঋতুচক্র ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ৭ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত হতে পারে। জরায়ুতে টিউমার হলে রক্তপাতের পরিমাণ বেড়ে যায়। চাকা চাকা রক্তপাতও হতে পারে।
ব্যথাযুক্ত ও অতিরিক্ত রক্তস্রাব: টিউমারের কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিমাণে রক্তক্ষরণ হয়। কখনো কখনো অত্যধিক ব্যথা অনুভূত হয়। ফলে রক্তে আয়রনের পরিমাণ কমে গিয়ে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়।
বন্ধ্যত্ব বা গর্ভপাত: জরায়ুর অভ্যন্তরীণ অংশে ফাইব্রয়েড সৃষ্টি হলে তা ফেলোপিয়ান টিউবকে বন্ধ করে দেয়,
যা গর্ভধারণে বাধা সৃষ্টির মাধ্যমে বন্ধ্যত্বের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কখনো কখনো ফাইব্রয়েডের কারণে গর্ভপাত হতে দেখা যায়।
ঘন ঘন প্রস্রাব বা কোষ্ঠকাঠিন্য: কখনো কখনো ফাইব্রয়েড জরায়ুর সামনে অবস্থিত মূত্রথলিতে চাপ সৃষ্টির ফলে রোগীর ঘন ঘন প্রস্রাবের প্রয়োজন হয়। আবার কখনো ফাইব্রয়েড জরায়ুর পেছনে অবস্থিত অন্ত্রে চাপ সৃষ্টি করে। ফলে রোগীর কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়।
সহবাসকালীন ব্যথা অনুভব: জরায়ুমুখে টিউমার হলে সহবাসের সময় অস্বস্তি বা ব্যথা হতে পারে।
তলপেট ফুলে যাওয়া বা কোমরব্যথা: বড় আকারের টিউমারের ক্ষেত্রে অস্বস্তিসহ তলপেট ফুলে যেতে পারে। কোনো কোনো সময় ফাইব্রয়েডের জন্য কোমরব্যথাও হতে পারে।
জরায়ুর ক্যানসার সৃষ্টিতে টিউমারের ভূমিকা কী হতে পারে? এর উত্তর হলো, জরায়ুর টিউমার বিভিন্ন রূপে পরিবর্তন হতে পারে। প্রধানত ডিজেনারেটিভ, সংক্রমণ অথবা সারকোমেটাজ পরিবর্তন হয়ে থাকে। এর মধ্যে সারকোমেটাজ বা জরায়ু ক্যানসারের রূপ নেয় মাত্র শূন্য দশমিক ১ শতাংশ।
জরায়ুর ক্যানসারের লক্ষণ কী
চিকিৎসার পরে আবারও ফিরে আসা, খুব দ্রুত জরায়ুর টিউমার বড় হয়ে যাওয়া অথবা জরায়ুর টিউমারের সঙ্গে পোস্ট মেনোপজ ঋতুস্রাব পুনরায় শুরু হওয়া।
জরায়ুর টিউমার অতিদ্রুত বড় হতে থাকলে গাইনি ক্যানসার বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। এর চিকিৎসা মূলত অস্ত্রোপচার বা অপারেশন, যা মাল্টি ডিসিপ্লিনারি চিকিৎসাপদ্ধতিতে করা হয়ে থাকে।
ডা. ফারজানা ইসলাম বীথি, প্রসূতি, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ এবং গাইনি ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ও সার্জন, আলোক হেলথ কেয়ার লি.
রোগে-শোকে মানুষকে প্রতিনিয়ত কিছু না কিছু ওষুধ খেতে হয়। নিত্যপণ্যের এই ঊর্ধ্বগতির বাজারে যেখানে সাধারণ মানুষের তিনবেলা আহারের জোগান দেওয়াই কষ্টকর, সেখানে জীবন রক্ষার জন্য দ্বিগুণ-তিনগুণ দামে ওধুষ কিনতে গিয়ে জীবন আরও ওষ্ঠাগত। দেশে এখন নিম্নআয়ের ৪০ শতাংশ মানুষের মোট আয়ের ২০ শতাংশ খরচ হচ্ছে ওষুধ কিনতেই।
৩ ঘণ্টা আগেদেশে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা না থাকায় ও ডাক্তারের ওপর আস্থা না থাকায় বিদেশে চিকিৎসা নিতে প্রতিবছর দেশের মানুষ ৪ বিলিয়ন ডলার খরচ করছে। স্বাস্থ্যেসেবার উন্নয়ন না হলে এর পরিমাণ দিন দিন আরও বাড়বে।
৪ ঘণ্টা আগেআমাদের দেশে শীত উপভোগ্য মৌসুম। কিন্তু অনেকের ঠান্ডা, কাশি, জ্বর, গলাব্যথা, অ্যালার্জির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা যাদের আছে, তাদের এই মৌসুমে কষ্ট বেড়ে যায়।
১৭ ঘণ্টা আগেত্বক অভ্যন্তরীণ অঙ্গের সংক্রমণ এবং যেকোনো ক্ষতি থেকে সুরক্ষা দেয়। তাই এর যত্নে বিশেষ মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। শীতকালে ত্বক শুষ্ক ও টানটান হলে দুশ্চিন্তা করবেন না। চুলকানি হলেও চিন্তার কোনো কারণ নেই। শীতের শুষ্ক আবহাওয়া ত্বকের প্রতিরক্ষামূলক তেল কমিয়ে দেয়।
১৭ ঘণ্টা আগে