জাহাঙ্গীর আলম

সি–সেকশন বা সিজারিয়ান অপারেশনসহ স্ত্রীরোগের চিকিৎসায় নানা উন্নতির ধারাবাহিকতায় গাইনিবিদ্যা আজ যে অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে তাতে পৃথিবীব্যাপী বহু মায়ের জীবন বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশের মতো কিছু দেশে শুধু ব্যবসায়িক লাভের জন্য অপ্রয়োজনীয় সিজার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেলেও এই অস্ত্রোপচার কৌশলটি কিন্তু চিকিৎসাবিদ্যায় একটি যুগান্তকারী ঘটনা। গর্ভজনিত জটিলতায় মা ও শিশুর জীবন বাঁচাতে এই অস্ত্রোপচারের বিকল্প নেই।
কিন্তু এই চিকিৎসা পদ্ধতির উদ্ভাবন ও উন্নয়নের পেছনে যে তিনজন নারী অমানুষিক নির্যাতন সহ্য করেছেন সেটি অনেকেরই অজানা। আজ ২৮ মে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবসে সেই নারীদের গল্পই বলা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলন শুরুর পরই কেবল তাঁরা আলোচনায় এসেছেন। দুঃখের বিষয় এর আগে খোদ গাইনিবিদ্যার সঙ্গে জড়িতরাও তাঁদের সম্পর্কে কিছুই জানতেন না!
অ্যানার্কা ওয়েস্টকোট, বেটসি এবং লুসি—এই তিন নিগ্রো নারী ছিলেন ক্রীতদাস। ১৮৪০–এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালাবামা অঙ্গরাজ্যের মন্টগোমেরির কাছে বিভিন্ন কৃষি খামারে কাজ করতেন তাঁরা। সন্তান প্রসব পরবর্তী জটিলতায় তাঁরা মূত্রাশয় এবং অন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন। এই অবস্থায় অন্য ক্রীতদাসীদের থেকে তাঁদের আলাদা করে রাখা হয়। কোনো চিকিৎসা না থাকায় তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল সারা জীবন এই যন্ত্রণা এবং লজ্জা বয়ে বেড়াতে হবে।
অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসিকে নিয়ে হতাশ ছিলেন তাঁদের শ্বেতাঙ্গ মালিক। কারণ তাঁদের দিয়ে কঠোর পরিশ্রম করানো যাচ্ছিল না, এতে উপার্জন কমে যাচ্ছিল। তাই একটা প্রতিকার খুঁজছিলেন মালিক। ১৮৪৪ সালে তিন ক্রীতদাসীকে চিকিৎসক জে. মেরিয়ন সিমসের কাছে পাঠানো হয়।
১৮০০–এর দশকে অন্য অনেক চিকিৎসকের মতো মেরিয়ন সিমস চিকিৎসা পদ্ধতির উন্নয়নে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় খুব আগ্রহী ছিলেন। তিনি দন্ত্যচিকিৎসা থেকে শুরু করে শিশুরোগ ও সাধারণ অস্ত্রোপচারসহ সব ধরনের চর্চাই করতেন। ১৮৩৫ সালে দুইজন রোগী মারা যাওয়ার পর তিনি দক্ষিণ ক্যারোলিনা থেকে অ্যালাবামায় চলে আসেন। অবশেষে মন্টগোমারি কাউন্টিতে বসতি স্থাপন করেন। সেখানেই অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসির মালিকের নজরে পড়েন।
সিমস ওই সময় অস্ত্রোপচারের একটি নতুন উপায় আবিষ্কার করেছেন। তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, ছয় মাসের মধ্যে অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসিকে সুস্থ করে তুলতে পারবেন। নতুন আবিষ্কৃত অস্ত্রোপচার কৌশলটি পরীক্ষা করার জন্য তিনি ওই তিন ক্রীতদাসীকে ভাড়া নেন। মালিককে টাকা দিয়ে ইজারা নেওয়ার কারণে তিন নারীর শরীরের ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পান তিনি। আর ওই সময়ের চর্চা অনুযায়ী এটা বলাবাহুল্য যে, এর জন্য তিন নারীর কাছ থেকে কোনো ধরনের সম্মতি নেওয়ার প্রয়োজন মনে করা হয়নি।
সিমসের অপারেশন টেবিলে যাওয়া প্রথম নারী ছিলেন লুসি। অপারেশনের কক্ষটিতে ছিল তখনকার উদীয়মান চিকিৎসকদের ভিড়। তাঁরা পুরো প্রক্রিয়াটি দেখতে চেয়েছিলেন। লুসিকে একবারও জিজ্ঞেস করা হয়নি এতগুলো পুরুষের চোখের সামনে অপারেশনের টেবিলে শুতে তিনি অস্বস্তিবোধ করছেন কি না। লুসিকে নগ্ন অবস্থায় অপারেশন কক্ষে আনা হয়। এরপর টেবিলের সঙ্গে শক্ত করে বাঁধা হয় যাতে অস্ত্রোপচারের সময় তাঁর অনিচ্ছাকৃত নড়াচড়ার কারণে কাজ ব্যাহত না হয়। অস্ত্রোপচারের আগে লুসিকে কোনো অ্যানেসথেসিয়া দেওয়া হয়নি। কারণ তখন শ্বেতাঙ্গ প্রভুদের ধারণা ছিল, কালো মেয়েরা ব্যথা অনুভব করে না, বা তাদের অনুভূতিগুলো ঠিক শ্বেতাঙ্গদের মতো কাজ করে না!
প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী লুসির শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়। এই পুরোটা সময় তিনি সচেতন ছিলেন। ছুরি কাঁচির প্রতিটি আঘাত চোখ বন্ধ করে সহ্য করেন।
অস্ত্রোপচারের পরে লুসির মূত্রাশয়ে একটি বিশেষ ডিভাইস স্থান করেন সিমস। সেখান থেকে ভয়ানক সংক্রমণ হয়। চরম যন্ত্রণার দিনগুলো লুসির কীভাবে কেটেছে তা বর্ণনা করার মতো নয়! ডাক্তার সিমস অবশ্য শেষ পর্যন্ত সংক্রমণ নিরাময় করতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু লুসির মূত্রাশয় সারানোর অপারেশনটি ব্যর্থ হয়েছে।
বেটসি ছিলেন সিমসের ছুরি কাঁচির নিচে পড়া দ্বিতীয় নারী। লুসির মতো, বেটসিকেও অনেকগুলো পুরুষের সামনে অপারেশন টেবিলে নগ্ন করে শোয়ানো হয়। কোনও অ্যানেসথেসিয়া দেওয়া হয়নি। সিমস মূত্রাশয়ের জন্য উদ্ভাবিত একটি যন্ত্র সেখানে স্থাপন করেন। বেটসি অবশ্য লুসির মতো অস্ত্রোপচার পরবর্তী সংক্রমণের সমস্যায় পড়েননি। কিন্তু বেটসির ক্ষত সারানো যায়নি। এই অপারেশনটিও ব্যর্থ হয়।
সবশেষে অস্ত্রোপচার কক্ষে আনা হয় অ্যানার্কা ওয়েস্টকোটকে। অ্যানার্কা তখন সবে কিশোরী। এর মধ্যে প্রথম সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এমন সময়ে তাঁকে সন্তানের কাছ থেকে আলাদা করে ডাক্তার সিমসের অস্ত্রোপচার কক্ষে পাঠানো হয়। কোনো ধরনের অ্যানেসথেসিয়া ছাড়াই তাঁকে লুসি ও বেটসির মতো একই অস্ত্রোপচার প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যেতে হয়।
তবে যখন অ্যানার্কার ওপর করা অস্ত্রোপচারের ফলাফল ব্যাপকভাবে জানাজানি হয়ে যায়, তখন স্থানীয় চিকিৎসকেরা বলেন, সিমস ব্যর্থ হয়েছেন। সিমসের পরীক্ষাগুলোকেও তাঁরা সমর্থন করা বন্ধ করে দেন। অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসি সিমসের নিয়ন্ত্রণেই থেকে যান। কারণ তাঁদের রোগ সারেনি, ফলে মালিকের কাছে তাঁরা তখনো অকেজো। তাঁরা বাধ্য হয়েই সিমসের পরিবারের জন্য কাজ করেন।
সিমস তখন তাঁর শ্বেতাঙ্গ পুরুষ সহকারীদের বাদ দিলেও পরীক্ষা–নিরীক্ষা চালিয়ে যান। অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসিকে আগেই সহকারীদের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। অপারেশনের আগে ও পরে কীভাবে যত্ন নিতে হয় তা তাঁদের শিখিয়ে দেন। অবশ্য সিমসকে সহযোগিতা করা ছাড়া তিন নারীর কাছে কোনো বিকল্পও ছিল না। ধীরে ধীরে তাঁরা দক্ষ চিকিৎসক হয়ে ওঠেন।
এর পরের পাঁচ বছর অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসির ওপর ধারাবাহিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যান ডাক্তার সিমস। পরীক্ষার জন্য আরও ক্রীতদাস নারীদেরও ভাড়ায় আনেন। ক্রীতদাস নারীরা গর্ভাবস্থায় সঠিক পরিচর্যা পান না, ফলে নানা জটিলতায় ভোগেন তাঁরা। সে কারণে সিমসেরও রোগীর অভাব হয়নি। সিমস মোট ১২ জন ক্রীতদাসীর ওপর তাঁর উদ্ভাবিত পদ্ধতি পরীক্ষা করেন। তবে তাঁর প্রকাশিত প্রতিবেদনে শুধু অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসির নাম রয়েছে।
১৮৪৯ সালের গ্রীষ্মে অ্যানার্কার ওপর ৩০ তম অস্ত্রোপচারটি সম্পন্ন করেন সিমস। গত চার বছরে যেসব নতুন সরঞ্জাম এবং কৌশল উদ্ভাবন করেছেন সেগুলো এবার প্রয়োগ করেন। অস্ত্রোপচার সফল হলো। অ্যানার্কার জখম সেরে গেল, তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলেন। নিজের উদ্ভাবিত কৌশল নিয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠার পর সিমস তাঁর হাসপাতালটি বন্ধ করে উত্তরের দিকে চলে যান। অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসি দীর্ঘ পাঁচ বছর ধারাবাহিক যন্ত্রণা সহ্য করার পর আবার ফিরে যান মূল মালিকের কাছে।
ডাক্তার সিমস তাঁর আত্মজীবনী ‘দ্য স্টোরি অব মাই লাইফ’–এ স্পষ্টভাবেই বর্ণনা করেছেন কীভাবে তিনি কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের গিনিপিগ হিসেবে ব্যবহার করেছেন।
সিমস লিখেছেন, ‘আমি নিগ্রোদের মালিকের কাছে প্রস্তাব দিয়েছিলাম: আপনি যদি আমাকে অ্যানার্কা এবং বেটসিকে দেন, আমি তাদের জীবন বিপন্ন করে এমন কোনো পরীক্ষা বা অস্ত্রোপচার করব না। এর জন্য একটি পয়সাও চার্জ করব না। কিন্তু আপনাকে অবশ্যই তাঁদের বিপরীতে ট্যাক্স এবং পোশাক–আশাক দিতে হবে।’ সিমস তাঁর স্মৃতিকথায় বড়াই করেছে লিখেছেন, ‘আমার রোগীরা তাদের জন্য আমি যা করছি তাতে সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট ছিল।’
১৮৫২ সালে সিমস একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি তাঁর উদ্ভাবিত পদ্ধতির রূপরেখা দেন। তবে সেখানে কখনোই উল্লেখ করেননি যেসব নারীর ওপর অস্ত্রোপচার চালিয়েছিলেন তাঁরা ছিলেন ক্রীতদাসী, বা টাকার বিনিময়ে তাঁদের শরীরের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ তিনি নিয়েছিলেন। নিবন্ধে যেসব ছবি রয়েছে, সেখানে তাঁকে একজন শ্বেতাঙ্গ নার্সের সাহায্যে শ্বেতাঙ্গ নারীর অস্ত্রোপচার করতে দেখা যায়। রোগীকেও কাপড় দিয়ে আচ্ছাদিত করা। রোগীর সম্মানের চিহ্ন সেখানে স্পষ্ট। অথচ অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসি কখনো ন্যূনতম সম্মান পাননি। বহু পুরুষের সামনে নগ্ন করে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।
সিমস পরে নারীদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল করেন। সেখানে শ্বেতাঙ্গ নারীদের অস্ত্রোপচার করা হতো যথেষ্ট সম্মানের সঙ্গে এবং অবশ্যই অ্যানেসথেসিয়া ব্যবহার করা হতো।
ডাক্তার সিমসের কাজ এবং নিবন্ধ স্ত্রীরোগের অস্ত্রোপচারে বিপ্লব ঘটিয়েছে। এই অবদানের জন্য তাঁকে ‘আধুনিক স্ত্রীরোগবিদ্যার জনক’ বলা হয়। কিন্তু এই অগ্রগতিগুলোর পেছনে যে ক্রীতদাস নারীদের দীর্ঘ যন্ত্রণা এবং শোষণের ইতিহাস আছে, তা ভুলে গেলে অন্যায় হবে। অ্যানার্কা, বেটসি, লুসিসহ ডাক্তার মেরিয়ন সিমসের আরও নাম না জানা কৃষ্ণাঙ্গ রোগীরা ‘আধুনিক স্ত্রীরোগবিদ্যার মা’ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য। তাঁদের শ্রম এবং অমানবিক যন্ত্রণা ছাড়া সিমসের এই ‘অর্জন’ সম্ভব হতো না।

সি–সেকশন বা সিজারিয়ান অপারেশনসহ স্ত্রীরোগের চিকিৎসায় নানা উন্নতির ধারাবাহিকতায় গাইনিবিদ্যা আজ যে অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে তাতে পৃথিবীব্যাপী বহু মায়ের জীবন বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশের মতো কিছু দেশে শুধু ব্যবসায়িক লাভের জন্য অপ্রয়োজনীয় সিজার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেলেও এই অস্ত্রোপচার কৌশলটি কিন্তু চিকিৎসাবিদ্যায় একটি যুগান্তকারী ঘটনা। গর্ভজনিত জটিলতায় মা ও শিশুর জীবন বাঁচাতে এই অস্ত্রোপচারের বিকল্প নেই।
কিন্তু এই চিকিৎসা পদ্ধতির উদ্ভাবন ও উন্নয়নের পেছনে যে তিনজন নারী অমানুষিক নির্যাতন সহ্য করেছেন সেটি অনেকেরই অজানা। আজ ২৮ মে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবসে সেই নারীদের গল্পই বলা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলন শুরুর পরই কেবল তাঁরা আলোচনায় এসেছেন। দুঃখের বিষয় এর আগে খোদ গাইনিবিদ্যার সঙ্গে জড়িতরাও তাঁদের সম্পর্কে কিছুই জানতেন না!
অ্যানার্কা ওয়েস্টকোট, বেটসি এবং লুসি—এই তিন নিগ্রো নারী ছিলেন ক্রীতদাস। ১৮৪০–এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালাবামা অঙ্গরাজ্যের মন্টগোমেরির কাছে বিভিন্ন কৃষি খামারে কাজ করতেন তাঁরা। সন্তান প্রসব পরবর্তী জটিলতায় তাঁরা মূত্রাশয় এবং অন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন। এই অবস্থায় অন্য ক্রীতদাসীদের থেকে তাঁদের আলাদা করে রাখা হয়। কোনো চিকিৎসা না থাকায় তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল সারা জীবন এই যন্ত্রণা এবং লজ্জা বয়ে বেড়াতে হবে।
অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসিকে নিয়ে হতাশ ছিলেন তাঁদের শ্বেতাঙ্গ মালিক। কারণ তাঁদের দিয়ে কঠোর পরিশ্রম করানো যাচ্ছিল না, এতে উপার্জন কমে যাচ্ছিল। তাই একটা প্রতিকার খুঁজছিলেন মালিক। ১৮৪৪ সালে তিন ক্রীতদাসীকে চিকিৎসক জে. মেরিয়ন সিমসের কাছে পাঠানো হয়।
১৮০০–এর দশকে অন্য অনেক চিকিৎসকের মতো মেরিয়ন সিমস চিকিৎসা পদ্ধতির উন্নয়নে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় খুব আগ্রহী ছিলেন। তিনি দন্ত্যচিকিৎসা থেকে শুরু করে শিশুরোগ ও সাধারণ অস্ত্রোপচারসহ সব ধরনের চর্চাই করতেন। ১৮৩৫ সালে দুইজন রোগী মারা যাওয়ার পর তিনি দক্ষিণ ক্যারোলিনা থেকে অ্যালাবামায় চলে আসেন। অবশেষে মন্টগোমারি কাউন্টিতে বসতি স্থাপন করেন। সেখানেই অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসির মালিকের নজরে পড়েন।
সিমস ওই সময় অস্ত্রোপচারের একটি নতুন উপায় আবিষ্কার করেছেন। তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, ছয় মাসের মধ্যে অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসিকে সুস্থ করে তুলতে পারবেন। নতুন আবিষ্কৃত অস্ত্রোপচার কৌশলটি পরীক্ষা করার জন্য তিনি ওই তিন ক্রীতদাসীকে ভাড়া নেন। মালিককে টাকা দিয়ে ইজারা নেওয়ার কারণে তিন নারীর শরীরের ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পান তিনি। আর ওই সময়ের চর্চা অনুযায়ী এটা বলাবাহুল্য যে, এর জন্য তিন নারীর কাছ থেকে কোনো ধরনের সম্মতি নেওয়ার প্রয়োজন মনে করা হয়নি।
সিমসের অপারেশন টেবিলে যাওয়া প্রথম নারী ছিলেন লুসি। অপারেশনের কক্ষটিতে ছিল তখনকার উদীয়মান চিকিৎসকদের ভিড়। তাঁরা পুরো প্রক্রিয়াটি দেখতে চেয়েছিলেন। লুসিকে একবারও জিজ্ঞেস করা হয়নি এতগুলো পুরুষের চোখের সামনে অপারেশনের টেবিলে শুতে তিনি অস্বস্তিবোধ করছেন কি না। লুসিকে নগ্ন অবস্থায় অপারেশন কক্ষে আনা হয়। এরপর টেবিলের সঙ্গে শক্ত করে বাঁধা হয় যাতে অস্ত্রোপচারের সময় তাঁর অনিচ্ছাকৃত নড়াচড়ার কারণে কাজ ব্যাহত না হয়। অস্ত্রোপচারের আগে লুসিকে কোনো অ্যানেসথেসিয়া দেওয়া হয়নি। কারণ তখন শ্বেতাঙ্গ প্রভুদের ধারণা ছিল, কালো মেয়েরা ব্যথা অনুভব করে না, বা তাদের অনুভূতিগুলো ঠিক শ্বেতাঙ্গদের মতো কাজ করে না!
প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী লুসির শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়। এই পুরোটা সময় তিনি সচেতন ছিলেন। ছুরি কাঁচির প্রতিটি আঘাত চোখ বন্ধ করে সহ্য করেন।
অস্ত্রোপচারের পরে লুসির মূত্রাশয়ে একটি বিশেষ ডিভাইস স্থান করেন সিমস। সেখান থেকে ভয়ানক সংক্রমণ হয়। চরম যন্ত্রণার দিনগুলো লুসির কীভাবে কেটেছে তা বর্ণনা করার মতো নয়! ডাক্তার সিমস অবশ্য শেষ পর্যন্ত সংক্রমণ নিরাময় করতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু লুসির মূত্রাশয় সারানোর অপারেশনটি ব্যর্থ হয়েছে।
বেটসি ছিলেন সিমসের ছুরি কাঁচির নিচে পড়া দ্বিতীয় নারী। লুসির মতো, বেটসিকেও অনেকগুলো পুরুষের সামনে অপারেশন টেবিলে নগ্ন করে শোয়ানো হয়। কোনও অ্যানেসথেসিয়া দেওয়া হয়নি। সিমস মূত্রাশয়ের জন্য উদ্ভাবিত একটি যন্ত্র সেখানে স্থাপন করেন। বেটসি অবশ্য লুসির মতো অস্ত্রোপচার পরবর্তী সংক্রমণের সমস্যায় পড়েননি। কিন্তু বেটসির ক্ষত সারানো যায়নি। এই অপারেশনটিও ব্যর্থ হয়।
সবশেষে অস্ত্রোপচার কক্ষে আনা হয় অ্যানার্কা ওয়েস্টকোটকে। অ্যানার্কা তখন সবে কিশোরী। এর মধ্যে প্রথম সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এমন সময়ে তাঁকে সন্তানের কাছ থেকে আলাদা করে ডাক্তার সিমসের অস্ত্রোপচার কক্ষে পাঠানো হয়। কোনো ধরনের অ্যানেসথেসিয়া ছাড়াই তাঁকে লুসি ও বেটসির মতো একই অস্ত্রোপচার প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যেতে হয়।
তবে যখন অ্যানার্কার ওপর করা অস্ত্রোপচারের ফলাফল ব্যাপকভাবে জানাজানি হয়ে যায়, তখন স্থানীয় চিকিৎসকেরা বলেন, সিমস ব্যর্থ হয়েছেন। সিমসের পরীক্ষাগুলোকেও তাঁরা সমর্থন করা বন্ধ করে দেন। অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসি সিমসের নিয়ন্ত্রণেই থেকে যান। কারণ তাঁদের রোগ সারেনি, ফলে মালিকের কাছে তাঁরা তখনো অকেজো। তাঁরা বাধ্য হয়েই সিমসের পরিবারের জন্য কাজ করেন।
সিমস তখন তাঁর শ্বেতাঙ্গ পুরুষ সহকারীদের বাদ দিলেও পরীক্ষা–নিরীক্ষা চালিয়ে যান। অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসিকে আগেই সহকারীদের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। অপারেশনের আগে ও পরে কীভাবে যত্ন নিতে হয় তা তাঁদের শিখিয়ে দেন। অবশ্য সিমসকে সহযোগিতা করা ছাড়া তিন নারীর কাছে কোনো বিকল্পও ছিল না। ধীরে ধীরে তাঁরা দক্ষ চিকিৎসক হয়ে ওঠেন।
এর পরের পাঁচ বছর অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসির ওপর ধারাবাহিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যান ডাক্তার সিমস। পরীক্ষার জন্য আরও ক্রীতদাস নারীদেরও ভাড়ায় আনেন। ক্রীতদাস নারীরা গর্ভাবস্থায় সঠিক পরিচর্যা পান না, ফলে নানা জটিলতায় ভোগেন তাঁরা। সে কারণে সিমসেরও রোগীর অভাব হয়নি। সিমস মোট ১২ জন ক্রীতদাসীর ওপর তাঁর উদ্ভাবিত পদ্ধতি পরীক্ষা করেন। তবে তাঁর প্রকাশিত প্রতিবেদনে শুধু অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসির নাম রয়েছে।
১৮৪৯ সালের গ্রীষ্মে অ্যানার্কার ওপর ৩০ তম অস্ত্রোপচারটি সম্পন্ন করেন সিমস। গত চার বছরে যেসব নতুন সরঞ্জাম এবং কৌশল উদ্ভাবন করেছেন সেগুলো এবার প্রয়োগ করেন। অস্ত্রোপচার সফল হলো। অ্যানার্কার জখম সেরে গেল, তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলেন। নিজের উদ্ভাবিত কৌশল নিয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠার পর সিমস তাঁর হাসপাতালটি বন্ধ করে উত্তরের দিকে চলে যান। অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসি দীর্ঘ পাঁচ বছর ধারাবাহিক যন্ত্রণা সহ্য করার পর আবার ফিরে যান মূল মালিকের কাছে।
ডাক্তার সিমস তাঁর আত্মজীবনী ‘দ্য স্টোরি অব মাই লাইফ’–এ স্পষ্টভাবেই বর্ণনা করেছেন কীভাবে তিনি কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের গিনিপিগ হিসেবে ব্যবহার করেছেন।
সিমস লিখেছেন, ‘আমি নিগ্রোদের মালিকের কাছে প্রস্তাব দিয়েছিলাম: আপনি যদি আমাকে অ্যানার্কা এবং বেটসিকে দেন, আমি তাদের জীবন বিপন্ন করে এমন কোনো পরীক্ষা বা অস্ত্রোপচার করব না। এর জন্য একটি পয়সাও চার্জ করব না। কিন্তু আপনাকে অবশ্যই তাঁদের বিপরীতে ট্যাক্স এবং পোশাক–আশাক দিতে হবে।’ সিমস তাঁর স্মৃতিকথায় বড়াই করেছে লিখেছেন, ‘আমার রোগীরা তাদের জন্য আমি যা করছি তাতে সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট ছিল।’
১৮৫২ সালে সিমস একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি তাঁর উদ্ভাবিত পদ্ধতির রূপরেখা দেন। তবে সেখানে কখনোই উল্লেখ করেননি যেসব নারীর ওপর অস্ত্রোপচার চালিয়েছিলেন তাঁরা ছিলেন ক্রীতদাসী, বা টাকার বিনিময়ে তাঁদের শরীরের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ তিনি নিয়েছিলেন। নিবন্ধে যেসব ছবি রয়েছে, সেখানে তাঁকে একজন শ্বেতাঙ্গ নার্সের সাহায্যে শ্বেতাঙ্গ নারীর অস্ত্রোপচার করতে দেখা যায়। রোগীকেও কাপড় দিয়ে আচ্ছাদিত করা। রোগীর সম্মানের চিহ্ন সেখানে স্পষ্ট। অথচ অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসি কখনো ন্যূনতম সম্মান পাননি। বহু পুরুষের সামনে নগ্ন করে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।
সিমস পরে নারীদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল করেন। সেখানে শ্বেতাঙ্গ নারীদের অস্ত্রোপচার করা হতো যথেষ্ট সম্মানের সঙ্গে এবং অবশ্যই অ্যানেসথেসিয়া ব্যবহার করা হতো।
ডাক্তার সিমসের কাজ এবং নিবন্ধ স্ত্রীরোগের অস্ত্রোপচারে বিপ্লব ঘটিয়েছে। এই অবদানের জন্য তাঁকে ‘আধুনিক স্ত্রীরোগবিদ্যার জনক’ বলা হয়। কিন্তু এই অগ্রগতিগুলোর পেছনে যে ক্রীতদাস নারীদের দীর্ঘ যন্ত্রণা এবং শোষণের ইতিহাস আছে, তা ভুলে গেলে অন্যায় হবে। অ্যানার্কা, বেটসি, লুসিসহ ডাক্তার মেরিয়ন সিমসের আরও নাম না জানা কৃষ্ণাঙ্গ রোগীরা ‘আধুনিক স্ত্রীরোগবিদ্যার মা’ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য। তাঁদের শ্রম এবং অমানবিক যন্ত্রণা ছাড়া সিমসের এই ‘অর্জন’ সম্ভব হতো না।
জাহাঙ্গীর আলম

সি–সেকশন বা সিজারিয়ান অপারেশনসহ স্ত্রীরোগের চিকিৎসায় নানা উন্নতির ধারাবাহিকতায় গাইনিবিদ্যা আজ যে অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে তাতে পৃথিবীব্যাপী বহু মায়ের জীবন বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশের মতো কিছু দেশে শুধু ব্যবসায়িক লাভের জন্য অপ্রয়োজনীয় সিজার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেলেও এই অস্ত্রোপচার কৌশলটি কিন্তু চিকিৎসাবিদ্যায় একটি যুগান্তকারী ঘটনা। গর্ভজনিত জটিলতায় মা ও শিশুর জীবন বাঁচাতে এই অস্ত্রোপচারের বিকল্প নেই।
কিন্তু এই চিকিৎসা পদ্ধতির উদ্ভাবন ও উন্নয়নের পেছনে যে তিনজন নারী অমানুষিক নির্যাতন সহ্য করেছেন সেটি অনেকেরই অজানা। আজ ২৮ মে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবসে সেই নারীদের গল্পই বলা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলন শুরুর পরই কেবল তাঁরা আলোচনায় এসেছেন। দুঃখের বিষয় এর আগে খোদ গাইনিবিদ্যার সঙ্গে জড়িতরাও তাঁদের সম্পর্কে কিছুই জানতেন না!
অ্যানার্কা ওয়েস্টকোট, বেটসি এবং লুসি—এই তিন নিগ্রো নারী ছিলেন ক্রীতদাস। ১৮৪০–এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালাবামা অঙ্গরাজ্যের মন্টগোমেরির কাছে বিভিন্ন কৃষি খামারে কাজ করতেন তাঁরা। সন্তান প্রসব পরবর্তী জটিলতায় তাঁরা মূত্রাশয় এবং অন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন। এই অবস্থায় অন্য ক্রীতদাসীদের থেকে তাঁদের আলাদা করে রাখা হয়। কোনো চিকিৎসা না থাকায় তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল সারা জীবন এই যন্ত্রণা এবং লজ্জা বয়ে বেড়াতে হবে।
অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসিকে নিয়ে হতাশ ছিলেন তাঁদের শ্বেতাঙ্গ মালিক। কারণ তাঁদের দিয়ে কঠোর পরিশ্রম করানো যাচ্ছিল না, এতে উপার্জন কমে যাচ্ছিল। তাই একটা প্রতিকার খুঁজছিলেন মালিক। ১৮৪৪ সালে তিন ক্রীতদাসীকে চিকিৎসক জে. মেরিয়ন সিমসের কাছে পাঠানো হয়।
১৮০০–এর দশকে অন্য অনেক চিকিৎসকের মতো মেরিয়ন সিমস চিকিৎসা পদ্ধতির উন্নয়নে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় খুব আগ্রহী ছিলেন। তিনি দন্ত্যচিকিৎসা থেকে শুরু করে শিশুরোগ ও সাধারণ অস্ত্রোপচারসহ সব ধরনের চর্চাই করতেন। ১৮৩৫ সালে দুইজন রোগী মারা যাওয়ার পর তিনি দক্ষিণ ক্যারোলিনা থেকে অ্যালাবামায় চলে আসেন। অবশেষে মন্টগোমারি কাউন্টিতে বসতি স্থাপন করেন। সেখানেই অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসির মালিকের নজরে পড়েন।
সিমস ওই সময় অস্ত্রোপচারের একটি নতুন উপায় আবিষ্কার করেছেন। তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, ছয় মাসের মধ্যে অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসিকে সুস্থ করে তুলতে পারবেন। নতুন আবিষ্কৃত অস্ত্রোপচার কৌশলটি পরীক্ষা করার জন্য তিনি ওই তিন ক্রীতদাসীকে ভাড়া নেন। মালিককে টাকা দিয়ে ইজারা নেওয়ার কারণে তিন নারীর শরীরের ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পান তিনি। আর ওই সময়ের চর্চা অনুযায়ী এটা বলাবাহুল্য যে, এর জন্য তিন নারীর কাছ থেকে কোনো ধরনের সম্মতি নেওয়ার প্রয়োজন মনে করা হয়নি।
সিমসের অপারেশন টেবিলে যাওয়া প্রথম নারী ছিলেন লুসি। অপারেশনের কক্ষটিতে ছিল তখনকার উদীয়মান চিকিৎসকদের ভিড়। তাঁরা পুরো প্রক্রিয়াটি দেখতে চেয়েছিলেন। লুসিকে একবারও জিজ্ঞেস করা হয়নি এতগুলো পুরুষের চোখের সামনে অপারেশনের টেবিলে শুতে তিনি অস্বস্তিবোধ করছেন কি না। লুসিকে নগ্ন অবস্থায় অপারেশন কক্ষে আনা হয়। এরপর টেবিলের সঙ্গে শক্ত করে বাঁধা হয় যাতে অস্ত্রোপচারের সময় তাঁর অনিচ্ছাকৃত নড়াচড়ার কারণে কাজ ব্যাহত না হয়। অস্ত্রোপচারের আগে লুসিকে কোনো অ্যানেসথেসিয়া দেওয়া হয়নি। কারণ তখন শ্বেতাঙ্গ প্রভুদের ধারণা ছিল, কালো মেয়েরা ব্যথা অনুভব করে না, বা তাদের অনুভূতিগুলো ঠিক শ্বেতাঙ্গদের মতো কাজ করে না!
প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী লুসির শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়। এই পুরোটা সময় তিনি সচেতন ছিলেন। ছুরি কাঁচির প্রতিটি আঘাত চোখ বন্ধ করে সহ্য করেন।
অস্ত্রোপচারের পরে লুসির মূত্রাশয়ে একটি বিশেষ ডিভাইস স্থান করেন সিমস। সেখান থেকে ভয়ানক সংক্রমণ হয়। চরম যন্ত্রণার দিনগুলো লুসির কীভাবে কেটেছে তা বর্ণনা করার মতো নয়! ডাক্তার সিমস অবশ্য শেষ পর্যন্ত সংক্রমণ নিরাময় করতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু লুসির মূত্রাশয় সারানোর অপারেশনটি ব্যর্থ হয়েছে।
বেটসি ছিলেন সিমসের ছুরি কাঁচির নিচে পড়া দ্বিতীয় নারী। লুসির মতো, বেটসিকেও অনেকগুলো পুরুষের সামনে অপারেশন টেবিলে নগ্ন করে শোয়ানো হয়। কোনও অ্যানেসথেসিয়া দেওয়া হয়নি। সিমস মূত্রাশয়ের জন্য উদ্ভাবিত একটি যন্ত্র সেখানে স্থাপন করেন। বেটসি অবশ্য লুসির মতো অস্ত্রোপচার পরবর্তী সংক্রমণের সমস্যায় পড়েননি। কিন্তু বেটসির ক্ষত সারানো যায়নি। এই অপারেশনটিও ব্যর্থ হয়।
সবশেষে অস্ত্রোপচার কক্ষে আনা হয় অ্যানার্কা ওয়েস্টকোটকে। অ্যানার্কা তখন সবে কিশোরী। এর মধ্যে প্রথম সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এমন সময়ে তাঁকে সন্তানের কাছ থেকে আলাদা করে ডাক্তার সিমসের অস্ত্রোপচার কক্ষে পাঠানো হয়। কোনো ধরনের অ্যানেসথেসিয়া ছাড়াই তাঁকে লুসি ও বেটসির মতো একই অস্ত্রোপচার প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যেতে হয়।
তবে যখন অ্যানার্কার ওপর করা অস্ত্রোপচারের ফলাফল ব্যাপকভাবে জানাজানি হয়ে যায়, তখন স্থানীয় চিকিৎসকেরা বলেন, সিমস ব্যর্থ হয়েছেন। সিমসের পরীক্ষাগুলোকেও তাঁরা সমর্থন করা বন্ধ করে দেন। অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসি সিমসের নিয়ন্ত্রণেই থেকে যান। কারণ তাঁদের রোগ সারেনি, ফলে মালিকের কাছে তাঁরা তখনো অকেজো। তাঁরা বাধ্য হয়েই সিমসের পরিবারের জন্য কাজ করেন।
সিমস তখন তাঁর শ্বেতাঙ্গ পুরুষ সহকারীদের বাদ দিলেও পরীক্ষা–নিরীক্ষা চালিয়ে যান। অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসিকে আগেই সহকারীদের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। অপারেশনের আগে ও পরে কীভাবে যত্ন নিতে হয় তা তাঁদের শিখিয়ে দেন। অবশ্য সিমসকে সহযোগিতা করা ছাড়া তিন নারীর কাছে কোনো বিকল্পও ছিল না। ধীরে ধীরে তাঁরা দক্ষ চিকিৎসক হয়ে ওঠেন।
এর পরের পাঁচ বছর অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসির ওপর ধারাবাহিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যান ডাক্তার সিমস। পরীক্ষার জন্য আরও ক্রীতদাস নারীদেরও ভাড়ায় আনেন। ক্রীতদাস নারীরা গর্ভাবস্থায় সঠিক পরিচর্যা পান না, ফলে নানা জটিলতায় ভোগেন তাঁরা। সে কারণে সিমসেরও রোগীর অভাব হয়নি। সিমস মোট ১২ জন ক্রীতদাসীর ওপর তাঁর উদ্ভাবিত পদ্ধতি পরীক্ষা করেন। তবে তাঁর প্রকাশিত প্রতিবেদনে শুধু অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসির নাম রয়েছে।
১৮৪৯ সালের গ্রীষ্মে অ্যানার্কার ওপর ৩০ তম অস্ত্রোপচারটি সম্পন্ন করেন সিমস। গত চার বছরে যেসব নতুন সরঞ্জাম এবং কৌশল উদ্ভাবন করেছেন সেগুলো এবার প্রয়োগ করেন। অস্ত্রোপচার সফল হলো। অ্যানার্কার জখম সেরে গেল, তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলেন। নিজের উদ্ভাবিত কৌশল নিয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠার পর সিমস তাঁর হাসপাতালটি বন্ধ করে উত্তরের দিকে চলে যান। অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসি দীর্ঘ পাঁচ বছর ধারাবাহিক যন্ত্রণা সহ্য করার পর আবার ফিরে যান মূল মালিকের কাছে।
ডাক্তার সিমস তাঁর আত্মজীবনী ‘দ্য স্টোরি অব মাই লাইফ’–এ স্পষ্টভাবেই বর্ণনা করেছেন কীভাবে তিনি কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের গিনিপিগ হিসেবে ব্যবহার করেছেন।
সিমস লিখেছেন, ‘আমি নিগ্রোদের মালিকের কাছে প্রস্তাব দিয়েছিলাম: আপনি যদি আমাকে অ্যানার্কা এবং বেটসিকে দেন, আমি তাদের জীবন বিপন্ন করে এমন কোনো পরীক্ষা বা অস্ত্রোপচার করব না। এর জন্য একটি পয়সাও চার্জ করব না। কিন্তু আপনাকে অবশ্যই তাঁদের বিপরীতে ট্যাক্স এবং পোশাক–আশাক দিতে হবে।’ সিমস তাঁর স্মৃতিকথায় বড়াই করেছে লিখেছেন, ‘আমার রোগীরা তাদের জন্য আমি যা করছি তাতে সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট ছিল।’
১৮৫২ সালে সিমস একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি তাঁর উদ্ভাবিত পদ্ধতির রূপরেখা দেন। তবে সেখানে কখনোই উল্লেখ করেননি যেসব নারীর ওপর অস্ত্রোপচার চালিয়েছিলেন তাঁরা ছিলেন ক্রীতদাসী, বা টাকার বিনিময়ে তাঁদের শরীরের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ তিনি নিয়েছিলেন। নিবন্ধে যেসব ছবি রয়েছে, সেখানে তাঁকে একজন শ্বেতাঙ্গ নার্সের সাহায্যে শ্বেতাঙ্গ নারীর অস্ত্রোপচার করতে দেখা যায়। রোগীকেও কাপড় দিয়ে আচ্ছাদিত করা। রোগীর সম্মানের চিহ্ন সেখানে স্পষ্ট। অথচ অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসি কখনো ন্যূনতম সম্মান পাননি। বহু পুরুষের সামনে নগ্ন করে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।
সিমস পরে নারীদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল করেন। সেখানে শ্বেতাঙ্গ নারীদের অস্ত্রোপচার করা হতো যথেষ্ট সম্মানের সঙ্গে এবং অবশ্যই অ্যানেসথেসিয়া ব্যবহার করা হতো।
ডাক্তার সিমসের কাজ এবং নিবন্ধ স্ত্রীরোগের অস্ত্রোপচারে বিপ্লব ঘটিয়েছে। এই অবদানের জন্য তাঁকে ‘আধুনিক স্ত্রীরোগবিদ্যার জনক’ বলা হয়। কিন্তু এই অগ্রগতিগুলোর পেছনে যে ক্রীতদাস নারীদের দীর্ঘ যন্ত্রণা এবং শোষণের ইতিহাস আছে, তা ভুলে গেলে অন্যায় হবে। অ্যানার্কা, বেটসি, লুসিসহ ডাক্তার মেরিয়ন সিমসের আরও নাম না জানা কৃষ্ণাঙ্গ রোগীরা ‘আধুনিক স্ত্রীরোগবিদ্যার মা’ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য। তাঁদের শ্রম এবং অমানবিক যন্ত্রণা ছাড়া সিমসের এই ‘অর্জন’ সম্ভব হতো না।

সি–সেকশন বা সিজারিয়ান অপারেশনসহ স্ত্রীরোগের চিকিৎসায় নানা উন্নতির ধারাবাহিকতায় গাইনিবিদ্যা আজ যে অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে তাতে পৃথিবীব্যাপী বহু মায়ের জীবন বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশের মতো কিছু দেশে শুধু ব্যবসায়িক লাভের জন্য অপ্রয়োজনীয় সিজার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেলেও এই অস্ত্রোপচার কৌশলটি কিন্তু চিকিৎসাবিদ্যায় একটি যুগান্তকারী ঘটনা। গর্ভজনিত জটিলতায় মা ও শিশুর জীবন বাঁচাতে এই অস্ত্রোপচারের বিকল্প নেই।
কিন্তু এই চিকিৎসা পদ্ধতির উদ্ভাবন ও উন্নয়নের পেছনে যে তিনজন নারী অমানুষিক নির্যাতন সহ্য করেছেন সেটি অনেকেরই অজানা। আজ ২৮ মে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবসে সেই নারীদের গল্পই বলা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলন শুরুর পরই কেবল তাঁরা আলোচনায় এসেছেন। দুঃখের বিষয় এর আগে খোদ গাইনিবিদ্যার সঙ্গে জড়িতরাও তাঁদের সম্পর্কে কিছুই জানতেন না!
অ্যানার্কা ওয়েস্টকোট, বেটসি এবং লুসি—এই তিন নিগ্রো নারী ছিলেন ক্রীতদাস। ১৮৪০–এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালাবামা অঙ্গরাজ্যের মন্টগোমেরির কাছে বিভিন্ন কৃষি খামারে কাজ করতেন তাঁরা। সন্তান প্রসব পরবর্তী জটিলতায় তাঁরা মূত্রাশয় এবং অন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন। এই অবস্থায় অন্য ক্রীতদাসীদের থেকে তাঁদের আলাদা করে রাখা হয়। কোনো চিকিৎসা না থাকায় তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল সারা জীবন এই যন্ত্রণা এবং লজ্জা বয়ে বেড়াতে হবে।
অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসিকে নিয়ে হতাশ ছিলেন তাঁদের শ্বেতাঙ্গ মালিক। কারণ তাঁদের দিয়ে কঠোর পরিশ্রম করানো যাচ্ছিল না, এতে উপার্জন কমে যাচ্ছিল। তাই একটা প্রতিকার খুঁজছিলেন মালিক। ১৮৪৪ সালে তিন ক্রীতদাসীকে চিকিৎসক জে. মেরিয়ন সিমসের কাছে পাঠানো হয়।
১৮০০–এর দশকে অন্য অনেক চিকিৎসকের মতো মেরিয়ন সিমস চিকিৎসা পদ্ধতির উন্নয়নে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় খুব আগ্রহী ছিলেন। তিনি দন্ত্যচিকিৎসা থেকে শুরু করে শিশুরোগ ও সাধারণ অস্ত্রোপচারসহ সব ধরনের চর্চাই করতেন। ১৮৩৫ সালে দুইজন রোগী মারা যাওয়ার পর তিনি দক্ষিণ ক্যারোলিনা থেকে অ্যালাবামায় চলে আসেন। অবশেষে মন্টগোমারি কাউন্টিতে বসতি স্থাপন করেন। সেখানেই অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসির মালিকের নজরে পড়েন।
সিমস ওই সময় অস্ত্রোপচারের একটি নতুন উপায় আবিষ্কার করেছেন। তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, ছয় মাসের মধ্যে অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসিকে সুস্থ করে তুলতে পারবেন। নতুন আবিষ্কৃত অস্ত্রোপচার কৌশলটি পরীক্ষা করার জন্য তিনি ওই তিন ক্রীতদাসীকে ভাড়া নেন। মালিককে টাকা দিয়ে ইজারা নেওয়ার কারণে তিন নারীর শরীরের ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পান তিনি। আর ওই সময়ের চর্চা অনুযায়ী এটা বলাবাহুল্য যে, এর জন্য তিন নারীর কাছ থেকে কোনো ধরনের সম্মতি নেওয়ার প্রয়োজন মনে করা হয়নি।
সিমসের অপারেশন টেবিলে যাওয়া প্রথম নারী ছিলেন লুসি। অপারেশনের কক্ষটিতে ছিল তখনকার উদীয়মান চিকিৎসকদের ভিড়। তাঁরা পুরো প্রক্রিয়াটি দেখতে চেয়েছিলেন। লুসিকে একবারও জিজ্ঞেস করা হয়নি এতগুলো পুরুষের চোখের সামনে অপারেশনের টেবিলে শুতে তিনি অস্বস্তিবোধ করছেন কি না। লুসিকে নগ্ন অবস্থায় অপারেশন কক্ষে আনা হয়। এরপর টেবিলের সঙ্গে শক্ত করে বাঁধা হয় যাতে অস্ত্রোপচারের সময় তাঁর অনিচ্ছাকৃত নড়াচড়ার কারণে কাজ ব্যাহত না হয়। অস্ত্রোপচারের আগে লুসিকে কোনো অ্যানেসথেসিয়া দেওয়া হয়নি। কারণ তখন শ্বেতাঙ্গ প্রভুদের ধারণা ছিল, কালো মেয়েরা ব্যথা অনুভব করে না, বা তাদের অনুভূতিগুলো ঠিক শ্বেতাঙ্গদের মতো কাজ করে না!
প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী লুসির শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়। এই পুরোটা সময় তিনি সচেতন ছিলেন। ছুরি কাঁচির প্রতিটি আঘাত চোখ বন্ধ করে সহ্য করেন।
অস্ত্রোপচারের পরে লুসির মূত্রাশয়ে একটি বিশেষ ডিভাইস স্থান করেন সিমস। সেখান থেকে ভয়ানক সংক্রমণ হয়। চরম যন্ত্রণার দিনগুলো লুসির কীভাবে কেটেছে তা বর্ণনা করার মতো নয়! ডাক্তার সিমস অবশ্য শেষ পর্যন্ত সংক্রমণ নিরাময় করতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু লুসির মূত্রাশয় সারানোর অপারেশনটি ব্যর্থ হয়েছে।
বেটসি ছিলেন সিমসের ছুরি কাঁচির নিচে পড়া দ্বিতীয় নারী। লুসির মতো, বেটসিকেও অনেকগুলো পুরুষের সামনে অপারেশন টেবিলে নগ্ন করে শোয়ানো হয়। কোনও অ্যানেসথেসিয়া দেওয়া হয়নি। সিমস মূত্রাশয়ের জন্য উদ্ভাবিত একটি যন্ত্র সেখানে স্থাপন করেন। বেটসি অবশ্য লুসির মতো অস্ত্রোপচার পরবর্তী সংক্রমণের সমস্যায় পড়েননি। কিন্তু বেটসির ক্ষত সারানো যায়নি। এই অপারেশনটিও ব্যর্থ হয়।
সবশেষে অস্ত্রোপচার কক্ষে আনা হয় অ্যানার্কা ওয়েস্টকোটকে। অ্যানার্কা তখন সবে কিশোরী। এর মধ্যে প্রথম সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এমন সময়ে তাঁকে সন্তানের কাছ থেকে আলাদা করে ডাক্তার সিমসের অস্ত্রোপচার কক্ষে পাঠানো হয়। কোনো ধরনের অ্যানেসথেসিয়া ছাড়াই তাঁকে লুসি ও বেটসির মতো একই অস্ত্রোপচার প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যেতে হয়।
তবে যখন অ্যানার্কার ওপর করা অস্ত্রোপচারের ফলাফল ব্যাপকভাবে জানাজানি হয়ে যায়, তখন স্থানীয় চিকিৎসকেরা বলেন, সিমস ব্যর্থ হয়েছেন। সিমসের পরীক্ষাগুলোকেও তাঁরা সমর্থন করা বন্ধ করে দেন। অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসি সিমসের নিয়ন্ত্রণেই থেকে যান। কারণ তাঁদের রোগ সারেনি, ফলে মালিকের কাছে তাঁরা তখনো অকেজো। তাঁরা বাধ্য হয়েই সিমসের পরিবারের জন্য কাজ করেন।
সিমস তখন তাঁর শ্বেতাঙ্গ পুরুষ সহকারীদের বাদ দিলেও পরীক্ষা–নিরীক্ষা চালিয়ে যান। অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসিকে আগেই সহকারীদের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। অপারেশনের আগে ও পরে কীভাবে যত্ন নিতে হয় তা তাঁদের শিখিয়ে দেন। অবশ্য সিমসকে সহযোগিতা করা ছাড়া তিন নারীর কাছে কোনো বিকল্পও ছিল না। ধীরে ধীরে তাঁরা দক্ষ চিকিৎসক হয়ে ওঠেন।
এর পরের পাঁচ বছর অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসির ওপর ধারাবাহিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যান ডাক্তার সিমস। পরীক্ষার জন্য আরও ক্রীতদাস নারীদেরও ভাড়ায় আনেন। ক্রীতদাস নারীরা গর্ভাবস্থায় সঠিক পরিচর্যা পান না, ফলে নানা জটিলতায় ভোগেন তাঁরা। সে কারণে সিমসেরও রোগীর অভাব হয়নি। সিমস মোট ১২ জন ক্রীতদাসীর ওপর তাঁর উদ্ভাবিত পদ্ধতি পরীক্ষা করেন। তবে তাঁর প্রকাশিত প্রতিবেদনে শুধু অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসির নাম রয়েছে।
১৮৪৯ সালের গ্রীষ্মে অ্যানার্কার ওপর ৩০ তম অস্ত্রোপচারটি সম্পন্ন করেন সিমস। গত চার বছরে যেসব নতুন সরঞ্জাম এবং কৌশল উদ্ভাবন করেছেন সেগুলো এবার প্রয়োগ করেন। অস্ত্রোপচার সফল হলো। অ্যানার্কার জখম সেরে গেল, তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলেন। নিজের উদ্ভাবিত কৌশল নিয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠার পর সিমস তাঁর হাসপাতালটি বন্ধ করে উত্তরের দিকে চলে যান। অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসি দীর্ঘ পাঁচ বছর ধারাবাহিক যন্ত্রণা সহ্য করার পর আবার ফিরে যান মূল মালিকের কাছে।
ডাক্তার সিমস তাঁর আত্মজীবনী ‘দ্য স্টোরি অব মাই লাইফ’–এ স্পষ্টভাবেই বর্ণনা করেছেন কীভাবে তিনি কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের গিনিপিগ হিসেবে ব্যবহার করেছেন।
সিমস লিখেছেন, ‘আমি নিগ্রোদের মালিকের কাছে প্রস্তাব দিয়েছিলাম: আপনি যদি আমাকে অ্যানার্কা এবং বেটসিকে দেন, আমি তাদের জীবন বিপন্ন করে এমন কোনো পরীক্ষা বা অস্ত্রোপচার করব না। এর জন্য একটি পয়সাও চার্জ করব না। কিন্তু আপনাকে অবশ্যই তাঁদের বিপরীতে ট্যাক্স এবং পোশাক–আশাক দিতে হবে।’ সিমস তাঁর স্মৃতিকথায় বড়াই করেছে লিখেছেন, ‘আমার রোগীরা তাদের জন্য আমি যা করছি তাতে সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট ছিল।’
১৮৫২ সালে সিমস একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি তাঁর উদ্ভাবিত পদ্ধতির রূপরেখা দেন। তবে সেখানে কখনোই উল্লেখ করেননি যেসব নারীর ওপর অস্ত্রোপচার চালিয়েছিলেন তাঁরা ছিলেন ক্রীতদাসী, বা টাকার বিনিময়ে তাঁদের শরীরের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ তিনি নিয়েছিলেন। নিবন্ধে যেসব ছবি রয়েছে, সেখানে তাঁকে একজন শ্বেতাঙ্গ নার্সের সাহায্যে শ্বেতাঙ্গ নারীর অস্ত্রোপচার করতে দেখা যায়। রোগীকেও কাপড় দিয়ে আচ্ছাদিত করা। রোগীর সম্মানের চিহ্ন সেখানে স্পষ্ট। অথচ অ্যানার্কা, বেটসি এবং লুসি কখনো ন্যূনতম সম্মান পাননি। বহু পুরুষের সামনে নগ্ন করে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।
সিমস পরে নারীদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল করেন। সেখানে শ্বেতাঙ্গ নারীদের অস্ত্রোপচার করা হতো যথেষ্ট সম্মানের সঙ্গে এবং অবশ্যই অ্যানেসথেসিয়া ব্যবহার করা হতো।
ডাক্তার সিমসের কাজ এবং নিবন্ধ স্ত্রীরোগের অস্ত্রোপচারে বিপ্লব ঘটিয়েছে। এই অবদানের জন্য তাঁকে ‘আধুনিক স্ত্রীরোগবিদ্যার জনক’ বলা হয়। কিন্তু এই অগ্রগতিগুলোর পেছনে যে ক্রীতদাস নারীদের দীর্ঘ যন্ত্রণা এবং শোষণের ইতিহাস আছে, তা ভুলে গেলে অন্যায় হবে। অ্যানার্কা, বেটসি, লুসিসহ ডাক্তার মেরিয়ন সিমসের আরও নাম না জানা কৃষ্ণাঙ্গ রোগীরা ‘আধুনিক স্ত্রীরোগবিদ্যার মা’ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য। তাঁদের শ্রম এবং অমানবিক যন্ত্রণা ছাড়া সিমসের এই ‘অর্জন’ সম্ভব হতো না।

প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।
২ দিন আগে
শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
৩ দিন আগে
তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
৩ দিন আগে
ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আফ্রিকায় ভেষজ চিকিৎসকেরা ক্ষত বা ব্যথা উপশমে গাছগাছড়া সংগ্রহ করছেন; চীনে আকুপাংচার বিশেষজ্ঞরা সুচ ব্যবহার করে মাইগ্রেন সারাচ্ছেন; আবার ভারতে যোগীরা ধ্যানচর্চা করছেন—এ ধরনের প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো ক্রমেই কার্যকর প্রমাণিত হচ্ছে এবং এগুলো আরও বেশি মনোযোগ ও গবেষণার দাবি রাখে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক কর্মকর্তা।
ডব্লিউএইচওর গ্লোবাল ট্র্যাডিশনাল মেডিসিন সেন্টারের প্রধান ডা. শ্যামা কুরুবিল্লার মতে, ঐতিহাসিকভাবে পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণের অভাবের কারণে যেসব প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতিকে অনেক সময় অবহেলা করা হয়েছে, আধুনিক প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ বাড়লে সেই ধারণা বদলাতে পারে।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের শুরুতে বিভিন্ন দেশ সম্মত হয়েছে যে আগামী এক দশকের জন্য ডব্লিউএইচও একটি নতুন বৈশ্বিক প্রথাগত চিকিৎসা কৌশল গ্রহণ করবে।
এই কৌশলের লক্ষ্য—প্রমাণভিত্তিকভাবে স্বাস্থ্য ও কল্যাণে প্রথাগত, পরিপূরক ও সমন্বিত চিকিৎসার সম্ভাবনাময় অবদানকে কাজে লাগানো।
এই কৌশলের আওতায় প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতির জন্য শক্তিশালী প্রমাণভিত্তি তৈরি, চিকিৎসা ও চিকিৎসকদের নিয়ন্ত্রণ কাঠামো গড়ে তোলা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী এসব পদ্ধতিকে আধুনিক জৈব-চিকিৎসাভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
কুরুবিল্লা বলেন, ‘এটা ভীষণ রোমাঞ্চকর। আমি বলছি না, আমরা এখনই জানি—কোনটা কাজ করে আর কোনটা করে না। তবে এ মুহূর্তে বিষয়টি জানার বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে।’
প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।
কুরুবিল্লা বলেন, শত শত বছর ধরে চলে আসা এসব পদ্ধতির মধ্যে অনেকগুলোরই বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, জিনোমিক্স ও মস্তিষ্ক স্ক্যানসহ আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে এখন সেগুলো নতুনভাবে অনুসন্ধান করা সম্ভব।
তাঁর মতে, প্রথাগত চিকিৎসা গ্রহণের ক্ষেত্রে থাইল্যান্ড ভালো উদাহরণ। দেশটিতে গবেষকেরা প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতি পর্যবেক্ষণ ও নথিবদ্ধ করছেন এবং ভেষজ চিকিৎসাকে প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন। গত মে মাসে থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পেশির ব্যথা ও কোষ্ঠকাঠিন্যসহ কিছু রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের আধুনিক ওষুধের বদলে প্রথাগত চিকিৎসা ব্যবহারের সুপারিশ করেছে।

আফ্রিকায় ভেষজ চিকিৎসকেরা ক্ষত বা ব্যথা উপশমে গাছগাছড়া সংগ্রহ করছেন; চীনে আকুপাংচার বিশেষজ্ঞরা সুচ ব্যবহার করে মাইগ্রেন সারাচ্ছেন; আবার ভারতে যোগীরা ধ্যানচর্চা করছেন—এ ধরনের প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো ক্রমেই কার্যকর প্রমাণিত হচ্ছে এবং এগুলো আরও বেশি মনোযোগ ও গবেষণার দাবি রাখে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক কর্মকর্তা।
ডব্লিউএইচওর গ্লোবাল ট্র্যাডিশনাল মেডিসিন সেন্টারের প্রধান ডা. শ্যামা কুরুবিল্লার মতে, ঐতিহাসিকভাবে পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণের অভাবের কারণে যেসব প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতিকে অনেক সময় অবহেলা করা হয়েছে, আধুনিক প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ বাড়লে সেই ধারণা বদলাতে পারে।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের শুরুতে বিভিন্ন দেশ সম্মত হয়েছে যে আগামী এক দশকের জন্য ডব্লিউএইচও একটি নতুন বৈশ্বিক প্রথাগত চিকিৎসা কৌশল গ্রহণ করবে।
এই কৌশলের লক্ষ্য—প্রমাণভিত্তিকভাবে স্বাস্থ্য ও কল্যাণে প্রথাগত, পরিপূরক ও সমন্বিত চিকিৎসার সম্ভাবনাময় অবদানকে কাজে লাগানো।
এই কৌশলের আওতায় প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতির জন্য শক্তিশালী প্রমাণভিত্তি তৈরি, চিকিৎসা ও চিকিৎসকদের নিয়ন্ত্রণ কাঠামো গড়ে তোলা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী এসব পদ্ধতিকে আধুনিক জৈব-চিকিৎসাভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
কুরুবিল্লা বলেন, ‘এটা ভীষণ রোমাঞ্চকর। আমি বলছি না, আমরা এখনই জানি—কোনটা কাজ করে আর কোনটা করে না। তবে এ মুহূর্তে বিষয়টি জানার বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে।’
প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।
কুরুবিল্লা বলেন, শত শত বছর ধরে চলে আসা এসব পদ্ধতির মধ্যে অনেকগুলোরই বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, জিনোমিক্স ও মস্তিষ্ক স্ক্যানসহ আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে এখন সেগুলো নতুনভাবে অনুসন্ধান করা সম্ভব।
তাঁর মতে, প্রথাগত চিকিৎসা গ্রহণের ক্ষেত্রে থাইল্যান্ড ভালো উদাহরণ। দেশটিতে গবেষকেরা প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতি পর্যবেক্ষণ ও নথিবদ্ধ করছেন এবং ভেষজ চিকিৎসাকে প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন। গত মে মাসে থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পেশির ব্যথা ও কোষ্ঠকাঠিন্যসহ কিছু রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের আধুনিক ওষুধের বদলে প্রথাগত চিকিৎসা ব্যবহারের সুপারিশ করেছে।

আজ ২৮ মে বিশ্ব নিরাপদ মাতৃত্ব দিবসে সেই নারীদের গল্পই বলা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলন শুরুর পরই কেবল তাঁরা আলোচনায় এসেছেন। দুঃখের বিষয় এর আগে খোদ গাইনিবিদ্যার সঙ্গে জড়িতরাও তাঁদের সম্পর্কে কিছুই জানতেন না!
২৮ মে ২০২৩
শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
৩ দিন আগে
তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
৩ দিন আগে
ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
৩ দিন আগেফিচার ডেস্ক

শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এ ছাড়া এটি শরীরে বিভিন্ন উপাদানের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সহায়ক। শীতকালীন ক্লান্তি দূর করতে এবং ঋতু পরিবর্তনের অসুস্থতা থেকে বাঁচতে খিচুড়ি একটি আদর্শ খাবার। এটি সহজে হজম হয়।
পুষ্টিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী, খিচুড়ির প্রতিটি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এতে থাকা চাল থেকে পাওয়া যায় পর্যাপ্ত শর্করা ও শক্তি। ডাল জোগায় প্রোটিন ও আঁশ, যা হজমে বিশেষভাবে সাহায্য করে। ঘি শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখতে এবং পুষ্টি শোষণে সহায়ক। হলুদে থাকা কারকিউমিন ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে এবং আদা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীর উষ্ণ রাখে। খিচুড়িতে সবজি যোগ করলে আঁশের মাত্রা বাড়ে। গোলমরিচ ও জিরার মতো মসলা বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে। এ ছাড়া সাবুদানার খিচুড়ি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়া এটি তাৎক্ষণিক শক্তি জোগাতে কার্যকর।

চাল ও মুগ ডালের মিশেলে তৈরি এই খিচুড়ি যেমন সহজপাচ্য, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। এর বিশেষত্বের চাবিকাঠি লুকিয়ে রয়েছে মসলায়। একেবারে হলুদ, লবণ, জিরা অথবা ধনেগুঁড়ার মতো সাধারণ কিছু মসলা দিয়ে এটি রান্না করা হয়। এটা রান্নার সময় মুগ ডালের সঙ্গে চালও ভেজে নিতে পারেন। এতে মুগ ডালের একটা ভিন্ন গন্ধ পাওয়া যাবে। হলুদের পরিবর্তে এতে ব্যবহার করতে পারেন সবুজ মুগডাল।
উপকারিতা: শরীর উষ্ণ রাখে এবং দীর্ঘক্ষণ শক্তি জোগায়।

গাজর, মটরশুঁটি, ফুলকপি, আলু, টমেটো ইত্যাদি শীতের সবজি দিয়ে তৈরি রান্না করা সবজি খিচুড়ি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এর সঙ্গে শীতে পাওয়া যায় এমন প্রায় সব শাক ও সবজি যোগ করতে হবে। সবজিগুলো ছোট টুকরা করে কেটে নিতে হবে।
যে সবজিগুলো সেদ্ধ হতে বেশি সময় নেয়, সেগুলো আগে ভেজে নিন অথবা প্রেশার কুকারে দিন। এরপর তেল বা ঘিতে জিরা, তেজপাতা ও অন্যান্য মসলা দিয়ে পেঁয়াজ, আদা, রসুন ভাজার পর সবজিগুলো হালকা ভেজে নিন। ভেজে রাখা সবজি, চাল, ডাল ও পানি দিয়ে প্রেশার কুকারে বা হাঁড়িতে রান্না করুন। নরম খিচুড়ি চাইলে পানি বেশি দিতে পারেন। শেষ মুহূর্তে পালংসহ অন্য নরম শাক এতে যোগ করতে পারেন।
উপকারিতা: এটি অন্যান্য উপকারের সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং দ্রুত শক্তি পুনরুদ্ধার করে।

ঠান্ডা পাহাড়ি অঞ্চলে শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে এই খিচুড়ি অত্যন্ত জনপ্রিয়। চাল, মাষকলাইয়ের ডাল এবং তিল এর প্রধান উপকরণ। রান্নার আগে চাল ও ডাল ভিজিয়ে রাখা হয়। তিল হালকা ভেজে গুঁড়া করে নেওয়া হয়। তিল থেকে পাওয়া স্বাস্থ্যকর চর্বি ও খনিজ উপাদান শীতের দিনে শরীরের জন্য খুবই উপকারী। জিরা, হিং, হলুদ এবং লাল মরিচ গুঁড়ার সুগন্ধি মিশ্রণ এতে অনন্য স্বাদ যোগ করে। খাঁটি ঘি অথবা তেল-মসলার ফোড়ন দিয়ে এটি রান্না করা হয়। প্রোটিন, চর্বি এবং মিনারেলসমৃদ্ধ এই খাবার শীত জয়ের এক অমোঘ হাতিয়ার হতে পারে।
উপকারিতা: এটি শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগানোর পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।

সচরাচর খাওয়া হয় এমন কোনো খিচুড়ি খেতে না চাইলে রান্না করতে পারেন আমলকী খিচুড়ি। এটি কোনো সাধারণ খাবার নয়। এ খিচুড়ি রান্না করা হয় চাল, খোসা ছাড়ানো কালো মাষকলাইয়ের ডাল এবং তাজা আমলকী দিয়ে। নরম ধরনের এ খিচুড়ির স্বাদ ও সুগন্ধ বাড়াতে রান্নায় জিরা, হিং, হলুদ ও লাল মরিচের গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো এতে রাজকীয় স্বাদ যোগ করবে। সবশেষে ঘি বা তেলের সুগন্ধি ফোড়ন এই খিচুড়িকে করে তোলে আরও সুস্বাদু। কেউ চাইলে এই খিচুড়ির পুষ্টিমান আরও বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের ঋতুভিত্তিক সবজি যোগ করতে পারেন। শীতের এই উৎসবের দিনগুলোতে শরীর সতেজ রাখতে এবং রসনা তৃপ্তিতে আমলকী খিচুড়ি হতে পারে আপনার সেরা পছন্দ।
উপকারিতা: এটি শরীরে শক্তি জোগানোর পাশাপাশি হজমশক্তি এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া শরীর ডিটক্সে সহায়তা করে, হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়, গ্যাস্ট্রিক কমায়, কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং ওজন কমাতে সহায়ক।

শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এ ছাড়া এটি শরীরে বিভিন্ন উপাদানের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সহায়ক। শীতকালীন ক্লান্তি দূর করতে এবং ঋতু পরিবর্তনের অসুস্থতা থেকে বাঁচতে খিচুড়ি একটি আদর্শ খাবার। এটি সহজে হজম হয়।
পুষ্টিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী, খিচুড়ির প্রতিটি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এতে থাকা চাল থেকে পাওয়া যায় পর্যাপ্ত শর্করা ও শক্তি। ডাল জোগায় প্রোটিন ও আঁশ, যা হজমে বিশেষভাবে সাহায্য করে। ঘি শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখতে এবং পুষ্টি শোষণে সহায়ক। হলুদে থাকা কারকিউমিন ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে এবং আদা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীর উষ্ণ রাখে। খিচুড়িতে সবজি যোগ করলে আঁশের মাত্রা বাড়ে। গোলমরিচ ও জিরার মতো মসলা বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে। এ ছাড়া সাবুদানার খিচুড়ি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়া এটি তাৎক্ষণিক শক্তি জোগাতে কার্যকর।

চাল ও মুগ ডালের মিশেলে তৈরি এই খিচুড়ি যেমন সহজপাচ্য, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। এর বিশেষত্বের চাবিকাঠি লুকিয়ে রয়েছে মসলায়। একেবারে হলুদ, লবণ, জিরা অথবা ধনেগুঁড়ার মতো সাধারণ কিছু মসলা দিয়ে এটি রান্না করা হয়। এটা রান্নার সময় মুগ ডালের সঙ্গে চালও ভেজে নিতে পারেন। এতে মুগ ডালের একটা ভিন্ন গন্ধ পাওয়া যাবে। হলুদের পরিবর্তে এতে ব্যবহার করতে পারেন সবুজ মুগডাল।
উপকারিতা: শরীর উষ্ণ রাখে এবং দীর্ঘক্ষণ শক্তি জোগায়।

গাজর, মটরশুঁটি, ফুলকপি, আলু, টমেটো ইত্যাদি শীতের সবজি দিয়ে তৈরি রান্না করা সবজি খিচুড়ি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এর সঙ্গে শীতে পাওয়া যায় এমন প্রায় সব শাক ও সবজি যোগ করতে হবে। সবজিগুলো ছোট টুকরা করে কেটে নিতে হবে।
যে সবজিগুলো সেদ্ধ হতে বেশি সময় নেয়, সেগুলো আগে ভেজে নিন অথবা প্রেশার কুকারে দিন। এরপর তেল বা ঘিতে জিরা, তেজপাতা ও অন্যান্য মসলা দিয়ে পেঁয়াজ, আদা, রসুন ভাজার পর সবজিগুলো হালকা ভেজে নিন। ভেজে রাখা সবজি, চাল, ডাল ও পানি দিয়ে প্রেশার কুকারে বা হাঁড়িতে রান্না করুন। নরম খিচুড়ি চাইলে পানি বেশি দিতে পারেন। শেষ মুহূর্তে পালংসহ অন্য নরম শাক এতে যোগ করতে পারেন।
উপকারিতা: এটি অন্যান্য উপকারের সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং দ্রুত শক্তি পুনরুদ্ধার করে।

ঠান্ডা পাহাড়ি অঞ্চলে শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে এই খিচুড়ি অত্যন্ত জনপ্রিয়। চাল, মাষকলাইয়ের ডাল এবং তিল এর প্রধান উপকরণ। রান্নার আগে চাল ও ডাল ভিজিয়ে রাখা হয়। তিল হালকা ভেজে গুঁড়া করে নেওয়া হয়। তিল থেকে পাওয়া স্বাস্থ্যকর চর্বি ও খনিজ উপাদান শীতের দিনে শরীরের জন্য খুবই উপকারী। জিরা, হিং, হলুদ এবং লাল মরিচ গুঁড়ার সুগন্ধি মিশ্রণ এতে অনন্য স্বাদ যোগ করে। খাঁটি ঘি অথবা তেল-মসলার ফোড়ন দিয়ে এটি রান্না করা হয়। প্রোটিন, চর্বি এবং মিনারেলসমৃদ্ধ এই খাবার শীত জয়ের এক অমোঘ হাতিয়ার হতে পারে।
উপকারিতা: এটি শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগানোর পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।

সচরাচর খাওয়া হয় এমন কোনো খিচুড়ি খেতে না চাইলে রান্না করতে পারেন আমলকী খিচুড়ি। এটি কোনো সাধারণ খাবার নয়। এ খিচুড়ি রান্না করা হয় চাল, খোসা ছাড়ানো কালো মাষকলাইয়ের ডাল এবং তাজা আমলকী দিয়ে। নরম ধরনের এ খিচুড়ির স্বাদ ও সুগন্ধ বাড়াতে রান্নায় জিরা, হিং, হলুদ ও লাল মরিচের গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো এতে রাজকীয় স্বাদ যোগ করবে। সবশেষে ঘি বা তেলের সুগন্ধি ফোড়ন এই খিচুড়িকে করে তোলে আরও সুস্বাদু। কেউ চাইলে এই খিচুড়ির পুষ্টিমান আরও বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের ঋতুভিত্তিক সবজি যোগ করতে পারেন। শীতের এই উৎসবের দিনগুলোতে শরীর সতেজ রাখতে এবং রসনা তৃপ্তিতে আমলকী খিচুড়ি হতে পারে আপনার সেরা পছন্দ।
উপকারিতা: এটি শরীরে শক্তি জোগানোর পাশাপাশি হজমশক্তি এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া শরীর ডিটক্সে সহায়তা করে, হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়, গ্যাস্ট্রিক কমায়, কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং ওজন কমাতে সহায়ক।

আজ ২৮ মে বিশ্ব নিরাপদ মাতৃত্ব দিবসে সেই নারীদের গল্পই বলা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলন শুরুর পরই কেবল তাঁরা আলোচনায় এসেছেন। দুঃখের বিষয় এর আগে খোদ গাইনিবিদ্যার সঙ্গে জড়িতরাও তাঁদের সম্পর্কে কিছুই জানতেন না!
২৮ মে ২০২৩
প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।
২ দিন আগে
তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
৩ দিন আগে
ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
৩ দিন আগেআলমগীর আলম

তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
১. হজমশক্তি বৃদ্ধিতে: বদহজমের সমস্যায় ভুগলে তেজপাতা দারুণ মুক্তি দিতে পারে। অন্যদিকে, লবঙ্গ এনজাইম নিঃসরণ বাড়িয়ে হজমপ্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত এবং পেটের অস্বস্তি দূর করে।
২. ব্যথা ও প্রদাহ উপশমে: আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে যাঁরা ভোগেন, তাঁদের জন্য এই চা অত্যন্ত উপকারী। ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা কমাতে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের প্রদাহ বা ফোলা ভাব রোধে তেজপাতা ও লবঙ্গ লড়তে সাহায্য করে।
৩. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে: লবঙ্গে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া
ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে। এর সঙ্গে তেজপাতা যুক্ত হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বহুগুণ বেড়ে যায়, যা বিশেষ করে ঠান্ডা ও ফ্লু মৌসুমে সুরক্ষা দেয়।
৪. দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে: এই চা শরীরে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। ফলে হৃদ্রোগ এবং নির্দিষ্ট কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি কমে পায়।
৫. দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়: লবঙ্গ তেল দাঁতের জন্য উপকারী হিসেবে স্বীকৃত। নিয়মিত লবঙ্গ চা পান করলে মাড়ি ও দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
উপকরণ সংগ্রহ করা এবং এই চা তৈরি করার প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ—
উপকরণ: ৩-৪টি শুকনো তেজপাতা, ৫-৬টি আস্ত লবঙ্গ এবং ৪ কাপ পানি। স্বাদ বাড়াতে মধু বা লেবু ব্যবহার করতে পারেন।
প্রণালি: প্রথমে একটি পাত্রে পানি ফুটিয়ে নিতে হবে। তাতে তেজপাতা ও লবঙ্গ দিয়ে চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। ১৫ মিনিট মিশ্রণটি সেদ্ধ করার পর চুলা নিভিয়ে আরও ৫ মিনিট পাত্রটি ঢেকে রেখে দিন। এরপর ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে তেজপাতা ও লবঙ্গ ফেলে দিয়ে পানি আলাদা করে নিন। স্বাদ অনুযায়ী মধু কিংবা লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।
ভালো ফল পেতে প্রতিদিন এক কাপ এই চা-পান করা ভালো; বিশেষ করে খাবারের পর এটি পান করলে হজমশক্তি বাড়াতে সবচেয়ে ভালো কাজ করে।
লেখক: খাদ্য পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র

তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
১. হজমশক্তি বৃদ্ধিতে: বদহজমের সমস্যায় ভুগলে তেজপাতা দারুণ মুক্তি দিতে পারে। অন্যদিকে, লবঙ্গ এনজাইম নিঃসরণ বাড়িয়ে হজমপ্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত এবং পেটের অস্বস্তি দূর করে।
২. ব্যথা ও প্রদাহ উপশমে: আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে যাঁরা ভোগেন, তাঁদের জন্য এই চা অত্যন্ত উপকারী। ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা কমাতে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের প্রদাহ বা ফোলা ভাব রোধে তেজপাতা ও লবঙ্গ লড়তে সাহায্য করে।
৩. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে: লবঙ্গে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া
ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে। এর সঙ্গে তেজপাতা যুক্ত হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বহুগুণ বেড়ে যায়, যা বিশেষ করে ঠান্ডা ও ফ্লু মৌসুমে সুরক্ষা দেয়।
৪. দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে: এই চা শরীরে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। ফলে হৃদ্রোগ এবং নির্দিষ্ট কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি কমে পায়।
৫. দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়: লবঙ্গ তেল দাঁতের জন্য উপকারী হিসেবে স্বীকৃত। নিয়মিত লবঙ্গ চা পান করলে মাড়ি ও দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
উপকরণ সংগ্রহ করা এবং এই চা তৈরি করার প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ—
উপকরণ: ৩-৪টি শুকনো তেজপাতা, ৫-৬টি আস্ত লবঙ্গ এবং ৪ কাপ পানি। স্বাদ বাড়াতে মধু বা লেবু ব্যবহার করতে পারেন।
প্রণালি: প্রথমে একটি পাত্রে পানি ফুটিয়ে নিতে হবে। তাতে তেজপাতা ও লবঙ্গ দিয়ে চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। ১৫ মিনিট মিশ্রণটি সেদ্ধ করার পর চুলা নিভিয়ে আরও ৫ মিনিট পাত্রটি ঢেকে রেখে দিন। এরপর ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে তেজপাতা ও লবঙ্গ ফেলে দিয়ে পানি আলাদা করে নিন। স্বাদ অনুযায়ী মধু কিংবা লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।
ভালো ফল পেতে প্রতিদিন এক কাপ এই চা-পান করা ভালো; বিশেষ করে খাবারের পর এটি পান করলে হজমশক্তি বাড়াতে সবচেয়ে ভালো কাজ করে।
লেখক: খাদ্য পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র

আজ ২৮ মে বিশ্ব নিরাপদ মাতৃত্ব দিবসে সেই নারীদের গল্পই বলা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলন শুরুর পরই কেবল তাঁরা আলোচনায় এসেছেন। দুঃখের বিষয় এর আগে খোদ গাইনিবিদ্যার সঙ্গে জড়িতরাও তাঁদের সম্পর্কে কিছুই জানতেন না!
২৮ মে ২০২৩
প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।
২ দিন আগে
শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
৩ দিন আগে
ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
৩ দিন আগেফিচার ডেস্ক

ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার এমন এক সমস্যা, যেখানে আক্রান্ত ব্যক্তি ঘুমের মধ্যে অবচেতন অবস্থায় রান্নাঘরে চলে যায় এবং খাবার খেতে শুরু করে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, পরদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর তার এই ঘটনা সম্পর্কে বিন্দুমাত্র স্মৃতি থাকে না। সাধারণত এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায় প্রতি রাতেই এমনটা করে। এক রাতে একাধিকবারও ঘুমের ঘোরে খাওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে।
খাদ্যাভ্যাসের বিচিত্র রূপ
এই অবস্থায় আক্রান্ত ব্যক্তির খাওয়ার ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণত ঘুমের ঘোরে খাওয়ার সময় তিন ধরনের ঘটনা ঘটে।
উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া: আক্রান্ত হওয়া মানুষ সাধারণত ক্যান্ডি, চিপস অথবা কেকের মতো প্রক্রিয়াজাত খাবারের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ে।
অস্বাভাবিক সংমিশ্রণের খাবার খাওয়া: অনেক সময় তারা অত্যন্ত অদ্ভুত ও অস্বাস্থ্যকর খাবারের সংমিশ্রণ তৈরি করে। যেমন সিগারেটে মাখন মাখিয়ে খাওয়া কিংবা অন্য কোনো অখাদ্য বস্তু খাওয়া।
দ্রুততম সময়ে খাবার খাওয়া: বিছানা থেকে রান্নাঘর হয়ে পুনরায় বিছানায় ফিরে আসার পুরো প্রক্রিয়াটি মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে শেষ হতে পারে। ফলে তারা খুব দ্রুত খাবার খেয়ে ফেলে।
ঝুঁকি ও স্বাস্থ্যগত প্রভাব
এসআরইডির প্রভাব কেবল ঘুমের ব্যাঘাতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি দীর্ঘ মেয়াদে শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করতে পারে। এসব প্রভাবের মধ্যে আছে—
কেন এমন হয়
এসআরইডির নির্দিষ্ট কোনো একক কারণ না থাকলেও বেশ কিছু বিষয় লক্ষণীয়। যেমন—
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: বিষণ্নতা বা ঘুমের সমস্যার জন্য ব্যবহৃত কিছু নির্দিষ্ট ওষুধের প্রভাবে এটি হতে পারে।
অন্যান্য রোগ: রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম বা অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো সমস্যা এর পেছনে থাকতে পারে।
জীবনযাত্রা: অতিরিক্ত মানসিক চাপ, অনিয়মিত ঘুম এবং অ্যালকোহল অথবা মাদক ত্যাগের পরবর্তী সময়ে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রতিকার ও ব্যবস্থাপনা
এই রহস্যময় সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সচেতনতা এবং সঠিক চিকিৎসা জরুরি। এর প্রতিকারে যা করা যেতে পারে—
সূত্র: সিএনএন হেলথ, এএসএসএম

ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার এমন এক সমস্যা, যেখানে আক্রান্ত ব্যক্তি ঘুমের মধ্যে অবচেতন অবস্থায় রান্নাঘরে চলে যায় এবং খাবার খেতে শুরু করে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, পরদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর তার এই ঘটনা সম্পর্কে বিন্দুমাত্র স্মৃতি থাকে না। সাধারণত এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায় প্রতি রাতেই এমনটা করে। এক রাতে একাধিকবারও ঘুমের ঘোরে খাওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে।
খাদ্যাভ্যাসের বিচিত্র রূপ
এই অবস্থায় আক্রান্ত ব্যক্তির খাওয়ার ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণত ঘুমের ঘোরে খাওয়ার সময় তিন ধরনের ঘটনা ঘটে।
উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া: আক্রান্ত হওয়া মানুষ সাধারণত ক্যান্ডি, চিপস অথবা কেকের মতো প্রক্রিয়াজাত খাবারের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ে।
অস্বাভাবিক সংমিশ্রণের খাবার খাওয়া: অনেক সময় তারা অত্যন্ত অদ্ভুত ও অস্বাস্থ্যকর খাবারের সংমিশ্রণ তৈরি করে। যেমন সিগারেটে মাখন মাখিয়ে খাওয়া কিংবা অন্য কোনো অখাদ্য বস্তু খাওয়া।
দ্রুততম সময়ে খাবার খাওয়া: বিছানা থেকে রান্নাঘর হয়ে পুনরায় বিছানায় ফিরে আসার পুরো প্রক্রিয়াটি মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে শেষ হতে পারে। ফলে তারা খুব দ্রুত খাবার খেয়ে ফেলে।
ঝুঁকি ও স্বাস্থ্যগত প্রভাব
এসআরইডির প্রভাব কেবল ঘুমের ব্যাঘাতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি দীর্ঘ মেয়াদে শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করতে পারে। এসব প্রভাবের মধ্যে আছে—
কেন এমন হয়
এসআরইডির নির্দিষ্ট কোনো একক কারণ না থাকলেও বেশ কিছু বিষয় লক্ষণীয়। যেমন—
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: বিষণ্নতা বা ঘুমের সমস্যার জন্য ব্যবহৃত কিছু নির্দিষ্ট ওষুধের প্রভাবে এটি হতে পারে।
অন্যান্য রোগ: রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম বা অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো সমস্যা এর পেছনে থাকতে পারে।
জীবনযাত্রা: অতিরিক্ত মানসিক চাপ, অনিয়মিত ঘুম এবং অ্যালকোহল অথবা মাদক ত্যাগের পরবর্তী সময়ে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রতিকার ও ব্যবস্থাপনা
এই রহস্যময় সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সচেতনতা এবং সঠিক চিকিৎসা জরুরি। এর প্রতিকারে যা করা যেতে পারে—
সূত্র: সিএনএন হেলথ, এএসএসএম

আজ ২৮ মে বিশ্ব নিরাপদ মাতৃত্ব দিবসে সেই নারীদের গল্পই বলা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলন শুরুর পরই কেবল তাঁরা আলোচনায় এসেছেন। দুঃখের বিষয় এর আগে খোদ গাইনিবিদ্যার সঙ্গে জড়িতরাও তাঁদের সম্পর্কে কিছুই জানতেন না!
২৮ মে ২০২৩
প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।
২ দিন আগে
শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
৩ দিন আগে
তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
৩ দিন আগে