কোভিডের নতুন চিকিৎসা, প্রাণ বাঁচাতে যুগান্তকারী বলছেন বিশেষজ্ঞরা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৭ জুন ২০২১, ১৮: ৪৫
Thumbnail image

ঢাকা: করোনাভাইরাস আক্রান্ত গুরুতর রোগীদের কষ্ট কমাতে এবং জীবন বাঁচাতে সস্তা স্টেরয়েড বেশ কার্যকরী প্রমাণিত হয়েছে। এই আবিষ্কারটি এক বছর আগেই করেছেন চিকিৎসকেরা। এবার গবেষকেরা বলছেন, জীবন রক্ষাকারী আরেকটি থেরাপি খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা। 

অবশ্য এ চিকিৎসাটি বেশ ব্যয়বহুল। করোনাভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করে দিতে শরীরে বিশেষ অ্যান্টিবডি প্রবেশ করানোর মাধ্যমে কোভিড রোগীর জীবন বাঁচানো সম্ভব। এটি শিরায় প্রবেশ করাতে হয়। যেখানে স্টেরয়েড ভাইরাস সংক্রমণের ফলে সৃষ্ট প্রদাহকে প্রশমিত করার মাধ্যমে রোগীকে আরাম দেয় এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যঙ্গের ক্ষতি এড়ানো যায়।

এ পদ্ধতি নিয়ে একটি গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, হাসপাতালে ভর্তি কোভিড আক্রান্ত গুরুতর রোগীর তিনজনের মধ্যে একজনকেই এই থেরাপি দিয়ে বাঁচানো যায়। বিশেষজ্ঞরা হিসাব করে দেখেছেন, প্রতি ১০০ রোগীর মধ্যে এই থেরাপি অন্তত ৬ জনের জীবন বাঁচাতে পারে।

তবে গবেষকেরা বলছেন, এই থেরাপি শুধু তাঁদের ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা যাবে যাঁদের ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হওয়ার পরও শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয় না। এ চিকিৎসায় খরচ পড়বে ১ থেকে ২ হাজার পাউন্ড। বর্তমান বিনিময় হারে বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ১ লাখ ১৮ হাজার থেকে ২ লাখ ৩৬ হাজার টাকার বেশি। 

রিজেনারন দিয়ে তৈরি এই মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি করোনাভাইরাসের সঙ্গে একটি রাসায়নিক বন্ধন তৈরি করে সংক্রমণ থামিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায় ভাইরাসের সংখ্যা বৃদ্ধির প্রক্রিয়াও। একটি অনন্য শ্বেত রক্তকণিকার ক্লোন থেকে তৈরি করা হয় মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি। 

যুক্তরাজ্যের হাসপাতালে ভর্তি প্রায় ১০ হাজার রোগীর ওপর এই অ্যান্টিবডি থেরাপি চালিয়ে দেখা গেছে, এতে মৃত্যুঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসে; হাসপাতালে অবস্থানের সময় গড়ে চার দিন কমিয়ে আনতে পারে; ভ্যান্টিলেটর দেওয়ার প্রয়োজনীয়তাও কমিয়ে আনে। 

গবেষণার যুগ্ম প্রধান স্যার মার্টিন ল্যান্ড্রে বলেন, দুটি অ্যান্টিবডির সংমিশ্রণ শিরায় পুশ করার ফলে রোগীদের মৃত্যুর ঝুঁকি পাঁচ ভাগ কমে গেছে। একই গবেষণায় রোগীদের প্রদাহরোধী স্টেরয়েড ডেক্সামেথাসোনও দেওয়া হয়েছিল। এতে দেখা গেছে, এই চিকিৎসা পদ্ধতিটি গুরুতর রোগীদের মৃত্যুঝুঁকি এক–তৃতীয়াংশ কমিয়ে দেয়। 

গবেষণার প্রধান বিশ্লেষক স্যার পিটার হরবি বলেন, কিছু গবেষণায় দেখা গেছে অ্যান্টিবডি থেরাপিতে আসলে তেমন কোনো ফল মেলে না। ফলে এটিই সঠিক পন্থা কি না, তা নিয়ে তো একটা অনিশ্চয়তা থাকছেই। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় সেরে ওঠা রোগীদের রক্তের প্লাজমা ব্যবহারের কথা। এই প্লাজমাতে অ্যান্টিবডি থাকে, যেটি করোনাভাইরাসকে চিনতে ও লড়াই করতে পারার কথা। কিন্তু কোভিড থেরাপি হিসেবে এটি কার্যকর প্রমাণিত হয়নি। 

কিন্তু এই গবেষণায় অ্যান্টিবডি চিকিৎসায় ল্যাবে তৈরি দুটি বিশেষ অ্যান্টিবডির বড় ডোজ ব্যবহার করা হয়েছে, যা বেশ কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। এটি এই মহামারি নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। 

স্যার পিটার বলেন, এটা একটা দারুণ ব্যাপার যে, কোভিড আক্রান্ত যেসব রোগীর শরীরে অ্যান্টবডি তৈরি হচ্ছে না, তাঁদের মৃত্যুঝুঁকি কমাতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত