৩৭ বছর পর সরে যাচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আইসবার্গটি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ২০: ৩৮
আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ২১: ১১

দীর্ঘ ৩৭ বছর ধরে সমুদ্রের তলদেশে আটকে থাকা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আইসবার্গটি সরে যেতে শুরু করেছে। এ২৩এ নামের বিপুল এই বরফখন্ডটি ১৯৮৬ সালে অ্যান্টার্কটিকার উপকূল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। পরে এটি ওয়েডেল সাগরে গিয়ে থেমে যায়। মূলত তখন থেকেই এটি একটি বরফ-দ্বীপে পরিণত হয়েছিল। 

আজ শুক্রবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়েডেল সাগরে আটকে থাকা ওই বরফ-দ্বীপের আয়তন প্রায় ৪ হাজার বর্গকিলোমিটার। এ হিসেবে এটির আয়তন বৃহত্তর লন্ডনের দ্বিগুণেরও বেশি। বিশাল বরফের এই খণ্ডটির পুরুত্ব প্রায় ৪০০ মিটার (১ হাজার ৩১২ ফুট)। সেই তুলনায় ইউরোপের সবচেয়ে উঁচু ভবনটি মাত্র ৩১০ মিটার দীর্ঘ। 

অনেক বেশি পুরুত্বের জন্যই অ্যান্টার্কটিকা উপকূলের কাছাকাছি ওয়েডেল সাগরের তলদেশে কাদার মধ্যে আটকে গিয়েছিল আইসবার্গটি। প্রশ্ন হলো—তাহলে দীর্ঘ বছর পর কেন সরে যাচ্ছে এটি। 

এ বিষয়ে অ্যান্টার্কটিকার জরিপ বিষয়ক ব্রিটিশ গবেষক অ্যান্ড্রু ফ্লেমিং জানিয়েছেন, আইসবার্গটি ১৯৮৬ সাল থেকে মাটিতে আটকে ছিল। দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে এটির আকার ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে। ফলে মাটি থেকে আটকে থাকা অংশটি ধীরে ধীরে আলাদা হয়ে যাচ্ছে। ২০২০ সালেই এই বরফ-দ্বীপের নড়াচড়া প্রথমবারের মতো নজরে এসেছিল। 

বাতাস এবং স্রোতের প্রভাবে আইসবার্গটি এখন অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপের উত্তর প্রান্ত অতিক্রম করছে। ওয়েডেল অঞ্চলের বেশির ভাগ আইসবার্গের মতো এই আইসবার্গটিও দক্ষিণ আটলান্টিকের দিকে এমন একটি পথে যাত্রা করবে যা ‘আইসবার্গ অ্যালি’ নামে পরিচিত। 

বর্তমানে বিজ্ঞানীরা আইসবার্গটির গতিবিধি ঘনিষ্ঠভাবে নজরে রাখবেন। যদি এটি দক্ষিণ জর্জিয়া দ্বীপের মাটিতে গিয়ে আটকে যায় তবে ওই দ্বীপে প্রজননকারী লাখ লাখ সিল, পেঙ্গুইন এবং অন্যান্য সামুদ্রিক পাখির জন্য সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া ওই অঞ্চলের বিভিন্ন প্রাণীর স্বাভাবিক চলাচলকেও এটি বাধাগ্রস্ত করতে পারে। 

তবে আইসবার্গগুলোকে শুধু বিপদের কারণ বললে ভুল হবে। এ ধরনের আইসবার্গের কিছু উপকারিতাও আছে। এগুলো গলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লাখো বছর ধরে জমে থাকা খনিজ উপাদান সমুদ্রের পানিতে মিশে যায়। এসব খনিজ উপাদান সমুদ্রের খাদ্য শৃঙ্খলে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে এবং সামুদ্রিক প্রাণীদের মাঝে পুষ্টি সরবরাহ করে। 

উডস হোল ওশানোগ্রাফিক ইনস্টিটিউশনের গবেষক ক্যাথরিন ওয়াকার বলেন, ‘অনেক উপায়ে এই আইসবার্গগুলো জীবনদায়ক। এগুলো অনেক জৈবিক কার্যকলাপের মূল বিন্দু।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত