মিয়ানমারের বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আরাকান আর্মি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪: ৪৯
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫: ০৭
গত জুনে রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপে একটি সীমান্তরক্ষী পুলিশ ব্যাটালিয়ন ঘাঁটি দখলের পর আরাকান আর্মির সৈন্যরা ছবি তোলে। ছবি: আরাকান আর্মি

বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যকার সীমান্তের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৭০ কিলোমিটার। সীমান্তসংলগ্ন মিয়ানমারের যেসব এলাকা আছে, সেগুলোর পুরো নিয়ন্ত্রণ এখন বিদ্রোহী আরাকান আর্মির (এএ) হাতে। গত রোববার আরাকান আর্মি মংডু টাউনশিপ দখলের পর এ দাবি করেছে। মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

মিয়ানমারের আরাকান অঞ্চল তথা রাখাইনের এই জাতিগত সশস্ত্র বাহিনী জানিয়েছে, কয়েক মাসের লড়াইয়ের পর রোববার সকালে তারা মংডু শহরের বাইরে অবস্থিত মিয়ানমারের জান্তাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন সীমান্তরক্ষী পুলিশের ৫ নম্বর ব্যাটালিয়নের ঘাঁটি দখল করেছে। এটি বাংলাদেশ সীমান্তসংলগ্ন এলাকায় জান্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন সবশেষ ঘাঁটি ছিল।

আরাকান আর্মি জানিয়েছে, তারা এখন জান্তা বাহিনী এবং তাদের মিত্র রোহিঙ্গা মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলো আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি (এআরএ), আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) পলায়নপর সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।

রাখাইনের গণমাধ্যম গতকাল সোমবার জানিয়েছে, মংডু দখলের যুদ্ধের পর আরাকান আর্মি জান্তা বাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনকে আটক করেছে। থুরেইন তুন এই অঞ্চলে জান্তা বাহিনীর মিলিটারি অপারেশন কমান্ড-১৫-এর কমান্ডার। এ ছাড়া আরাকান আর্মি জান্তা বাহিনীর সদস্যসহ প্রায় ৮০ জন রোহিঙ্গা সদস্যকে আটক করেছে।

এর আগে, আরাকান আর্মি গত মে মাসের শেষ দিকে মংডু অভিযান শুরু করে। অর্থাৎ, আরাকান আর্মির ছয় মাস সময় লেগে গেল পুরো মংডু শহর দখল করতে। এএ দাবি করেছে, তারা এখন মিয়ানমারের তিনটি টাউনশিপ—মংডু, বুথিডং (রাখাইন রাজ্যে) এবং চিন রাজ্যের পালেতওয়া (যা ভারতের সঙ্গেও সীমান্ত শেয়ার করে)—পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করছে।

জাতিসংঘ গত মাসে জানিয়েছে, রাখাইনের ২০ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখে রয়েছে। জান্তা সরকার রাজ্যে খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধসহ আন্তর্জাতিক মানবিক সাহায্য সরবরাহ বন্ধ করতে সড়ক ও জলপথ অবরোধ করেছে। রাখাইনে চলমান লড়াই পর্যবেক্ষণকারী এক সামরিক বিশ্লেষক বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য পুনরুদ্ধার রাখাইন রাজ্যের মানুষের দুর্দশা লাঘবে সহায়ক হতে পারে। বিশ্লেষক আরও যোগ করেছেন, রাখাইন রাজ্যে জটিল রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশের উচিত এএর সঙ্গে অর্থবহ আলোচনা করা।

এএ এখন দক্ষিণ রাখাইনের গাওয়া, তাউনগুপ ও আন টাউনশিপের নিয়ন্ত্রণের জন্য লড়াই করছে। এএ সেনারা আন টাউনশিপের বেশির ভাগ অংশ দখল করেছে এবং জান্তা সরকারের পশ্চিমাঞ্চলীয় সামরিক সদর দপ্তর ছাড়া বাকি প্রায় ৩০টি ঘাঁটি ও অবস্থান দখল করেছে। এই সশস্ত্র বাহিনী জানিয়েছে, তারা তাউনগুপ শহরের কার্যত নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। কেবল শহরের বাইরে জান্তা সরকারের মাত্র একটি ঘাঁটি অবশিষ্ট রয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত