যুদ্ধবিরতি চাইলে হামাস নেতাদের গাজা ছাড়তে হবে: মোসাদের প্রধান 

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১৪: ৫৬
আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১৫: ১৬

শর্তসাপেক্ষে গাজায় দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতিতে রাজি ইসরায়েল। তবে সে জন্য গাজার নিয়ন্ত্রক গোষ্ঠী হামাসকে অঞ্চলটি ছেড়ে চলে যেতে হবে। এই প্রস্তাব দিয়েছেন ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান ডেভিড বার্নিয়া। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন পক্ষের সমন্বয়ে আন্তর্জাতিক আলোচনায় জড়িত দুই কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনকে বিষয়টি জানিয়েছেন। 

গাজায় ব্যাপক বেসামরিক প্রাণহানি হলেও ইসরায়েল হামাস দমনে তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। এ ছাড়া গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা নিয়ে ইসরায়েলের ওপর যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক চাপ ক্রমেই বাড়ছে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে বর্তমান জোট সরকারও দেশটিতে ব্যাপক রাজনৈতিক চাপের মুখে রয়েছে। ঠিক এই সময়ে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব এল। 

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) নিজস্ব মূল্যায়ন অনুসারেই, প্রায় চার মাসের কাছাকাছি সময় ধরে চলা যুদ্ধে ইসরায়েল হামাসের তেমন কোনো বড় ধরনের ক্ষতিই করতে পারেনি। গোষ্ঠীটির প্রায় শতভাগ শীর্ষ নেতাই ইসরায়েলের ধরাছোঁয়ার বাইরে। হামাসের সামরিক সক্ষমতাও প্রায় ৭০ শতাংশই অক্ষত রয়েছে। এই অবস্থায় তুলনামূলক সহজ শর্তেই যুদ্ধবিরতিতে রাজি হতে চায় ইসরায়েল—এমনটাই ধারণা সংশ্লিষ্টদের। 

ইসরায়েলের প্রস্তাব অনুসারে, দেশটি হামাসের শীর্ষ নেতাদের গাজার বাইরে চলে যেতে দিলেও অঞ্চলটিতে যেকোনো সময় অভিযান চালানোর অধিকার নিজের কাছেই রাখতে চায়। পাশাপাশি অন্যত্রও হামাসের শীর্ষ নেতাদের দায়মুক্তি দেবে না দেশটি। যেকোনো সময় চাইলে তাদের লক্ষ্যবস্তু করে হামলা চালাতে পারবে দেশটি। 

ইসরায়েলের এই প্রস্তাব নিয়ে অন্তত উচ্চ পর্যায়ে দুই দফা আলোচনা হয়েছে। প্রথমটি গত ডিসেম্বরে পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশতে, যেখানে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান ডেভিড বার্নিয়া বিষয়টি আলোচনা করেছেন। পরে চলতি মাসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন কাতারের রাজধানী দোহা সফরকালে বিষয়টি আলোচিত হয়। 

গাজায় একটি দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পক্ষ নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব প্রয়াসের সঙ্গে একাধিক কর্মকর্তা সিএনএনকে জানিয়েছেন, হামাস ও ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির বিষয়টি নিয়ে যে আলোচনা চলছে তা বেশ ইতিবাচক। কিন্তু আলোচনা এখনো এমন পর্যায়ে পৌঁছায়নি, যা থেকে দ্রুত কোনো ফল বের হয়ে আসবে। 

এর আগে, ফিলিস্তিনের গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার ও হামলা বন্ধের বিনিময়ে সম্প্রতি বাকি বন্দীদের মুক্তির শর্ত দিয়েছিল হামাস। এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, ‘আমি হামাসের দানবদের আত্মসমর্পণের শর্ত সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করছি।’ 

এতে সরকারের ওপর খেপেছেন ইসরায়েলি বন্দীদের স্বজনেরা। গতকাল সোমবার ইসরায়েলের পার্লামেন্টে ঢুকে হট্টগোল করেছেন তাঁরা। স্বজনদের ফিরিয়ে আনতে সরকারকে আরও উদ্যোগী হতে আহ্বান জানানো হয়েছে তাঁদের পক্ষ থেকে। 

উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় হামাস। এতে প্রায় ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হয়, জিম্মি করে ২৫৩ জনকে। এর জেরে ওই দিনই হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গতকাল পর্যন্ত এই যুদ্ধে ২৫ হাজার ২৯৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এরপর গত নভেম্বরে মানবিক কারণ দেখিয়ে শর্ত সাপেক্ষে যুদ্ধবিরতি হয়। সে সময় দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েক দফায় বন্দিবিনিময় হয়। ওই সময় ১০০ জিম্মিকে মুক্তি দেয় হামাস। বাকিরা এখনো তাদের জিম্মায় রয়ে গেছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত