Ajker Patrika

বুঝলাম আমি তিমির মুখের ভেতর, আমাকে গিলে ফেলছে...

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৩ জুন ২০২১, ২১: ১০
বুঝলাম আমি তিমির মুখের ভেতর, আমাকে গিলে ফেলছে...

ঢাকা: পানির নিচে ৪৫ ফুট গভীরে ডুবে যাওয়ার পর হঠাৎ এক বিশাল গদির মতো কিছু অনুভব করলাম। চোখের সামনে সবকিছু অন্ধকার হয়ে এল। আমি খালি বুঝতে পারলাম, নড়ছি, আর মনে হলো যেন, হায় ঈশ্বর, আমি কি হাঙ্গরের মুখে পড়লাম?

যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের প্রভিন্সটাউন উপকূলে তিমির মুখ থেকে বেঁচে আসা ডুবুরি মাইকেল প্যাকার্ড এভাবে তাঁর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। গতকাল শুক্রবারের ঘটনা এটি।

প্যাকার্ড বলেন, কিছুক্ষণ পরই আমার মনে হলো, এটি তো হাঙ্গর নয়, কারণ দাঁতের কামড় টের পাচ্ছি না। সত্যি বলতে, তেমন কোনো ব্যথাও পাচ্ছিলাম না। এর পরক্ষণেই বুঝলাম, ওরে বাবা! আমি তিমির মুখে। আমি একটা তিমির মুখের মধ্যে, আর সেটি আমাকে গিলে ফেলতে চাইছে।

তবে প্যাকার্ড অভিজ্ঞ ডুবুরি। তখনও মনোবল হারাননি, যথেষ্ট সজাগ। তাছাড়া তিমির মুখের মধ্যে তিনি ঢুকে পড়েছিলেন শ্বাস নেওয়ার কৃত্রিম যন্ত্রপাতি–সহই।

প্যাকার্ড বলেন, আমার মাথায় তখন একটাই বিষয় ঘুরছে, হায় ঈশ্বর, এই তিমি যদি আমাকে সত্যিই গিলে ফেলে, আর আমি মুখের মধ্যে এখনো শ্বাস নিতে পারছি, এখানেই অক্সিজেন শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্তত শ্বাস নিতে পারবো। আমি নিজেকে প্রবোধ দিলাম, ঠিক আছে, তাহলে বিষয়টা হলো এই যে, আমি মারা যাচ্ছি। চোখের সামনে ভেসে উঠল আমার স্ত্রী ও সন্তানদের মুখ। এখান থেকে যে আর বের হওয়ার উপায় নেই তা আমি নিশ্চিত।

জলদানবটির মুখের মধ্যে থেকেই প্যাকার্ড হিসাব করে দেখলেন প্রায় ৩০ সেকেন্ড পরই সেটি দ্রুত পানির ওপরের স্তরে উঠে গেল। আর তাৎক্ষণিকভাবে সেটি তাঁকে উগড়ে ফেলে দিল।

প্যাকার্ড বলেন, হঠাৎ করেই নিজেকে পানির ওপর আবিষ্কার কলাম। তিমিটিকেও মাথা ঝাঁকাতে দেখলাম। আক্ষরিক অর্থেই সেটি আমাকে শূন্যে ছুড়ে দিয়েছে। এরপর ঝপ করে পানিতে পড়ে আমি ভাসতে থাকলাম। ব্যাপারটা বিশ্বাসই হচ্ছিল না আমার। আমি বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না যে, ওটি আমাকে এভাবে উগড়ে দেবে।

পুরো ঘটনার ব্যাখ্যায় তিমি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্যাকার্ডকে যেটি গিলে ফেলেছিল সেটি ছিল হামব্যাক তিমি। এ ধরনের তিমি বেশ দ্রুতগামী হয়। এরা বিশাল হা প্রসারিত করে দ্রুত বিপুল পরিমাণ খাবার একবারে মুখে নেওয়ার চেষ্টা করে। ফলে তখন মুখে কী ঢুকে পড়ছে সেটি তাদের খেয়াল করার সুযোগ থাকে না। মুখের মধ্যে সাধারণ খাবারের সঙ্গে মানুষ বা এ ধরনের কিছু ঢুকে পড়া অনেকটা আমাদের খাবারের গ্রাসের সঙ্গে মাছি ঢুকে পড়ার মতো। এটি তাদের জন্য বিরক্তিকর। তাছাড়া হামব্যাক তিমির হা বড় হলেও মানুষের মতো বড় আকারের কিছু গিলে ফেলার জন্য তাদের খাদ্যনালীটি যথেষ্ট বড় নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত