আবদুল আযীয কাসেমি
রহমত মানে দয়া ও অনুগ্রহ। সকল রহমতের উৎস আমাদের সবার প্রতিপালক মহান আল্লাহ তাআলা। অপার স্নেহ, অনুগ্রহ ও দয়ার মালিক তিনি। তাঁর দয়ার কোনো সীমা নেই। প্রতিটি বস্তুকে ঘিরে রেখেছে তাঁর রহমত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমার রহমত সবকিছুতে ব্যাপ্ত।’ (সুরা আরাফ: ১৫৬)
আল্লাহ রহমান ও রহিম
আল্লাহ তাআলার একটি গুণবাচক নাম হলো রহমান। আরেকটি গুণবাচক নাম হলো রহিম। রহমান মানে সীমাহীন মেহেরবান। রহিম মানে পরম দয়ালু। দুটো শব্দই ‘অধিক’-এর অর্থ নির্দেশ করে। তবে দুটোর মধ্যে পার্থক্য আছে। রহমান শব্দের মধ্যে ব্যাপকতার ভাব রয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহর রহমত সর্বব্যাপী। আল্লাহর সব সৃষ্টি এ রহমতের আওতাভুক্ত। এ শব্দটি এ অর্থও নির্দেশ করে যে, রহমত ও দয়া আল্লাহ তাআলার সত্তাগত বৈশিষ্ট্য। পক্ষান্তরে রহিম শব্দটি বোঝায়, আল্লাহ তাআলা মুমিনদের প্রতি বিশেষভাবে স্নেহশীল। যেমন পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনি মুমিনদের প্রতি খুবই দয়ালু।’ (সুরা আহজাব)
অর্থের বিবেচনায় রহিম শব্দটি রহমান থেকে বিশিষ্ট। অর্থাৎ ‘রহমান’–এর মধ্যে অর্থগত যে ব্যাপকতা আছে তা ‘রহিম’ শব্দের মধ্যে নেই। অন্যদিকে শব্দের ব্যবহার বিবেচনায় ‘রহমান’ থেকে ‘রহিম’ ব্যাপক। ‘রহিম’ শব্দটি মানুষের জন্য নাম বা গুণবাচক নাম হিসেবে ব্যবহার হতে পারে। তবে ‘রহমান’ শব্দটি একান্তই আল্লাহর বিশেষণমূলক নাম। এটি মানুষের জন্য ব্যবহার করার অনুমতি নেই।
আল্লাহর দয়া সীমাহীন
আল্লাহ তাআলা নিজের জন্য দয়ার গুণটি আবশ্যক করে নিয়েছেন। তিনি যেমন সত্তাগতভাবে দয়ালু, তেমনি তাঁর সব কাজেও রয়েছে রহমতেরই বহিঃপ্রকাশ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমার নিদর্শনসমূহের প্রতি বিশ্বাসীরা যখন আপনার কাছে আসে, তখন আপনি তাদের বলুন, তোমাদের প্রতি সালাম। তোমাদের রব নিজের জন্য দয়ার গুণ আবশ্যক করে নিয়েছেন। তোমাদের মধ্যে যে কেউ নির্বুদ্ধিতাবশত মন্দ কাজ করে ফেলবে, এরপর সে তাওবা করে নিজের সংশোধন করে নেবে, (তার জন্য সুসংবাদ যে) তিনি অতি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।’ (সুরা আনআম: ৫৪)
আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হতে নেই
বান্দা যেন কখনো আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ না হয়, সে জন্য মহানবী (সা.) আমাদের সুসংবাদ শুনিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘মহান আল্লাহ তাআলা যখন সবকিছু সৃষ্টি করে ফেললেন, তখন আরশের ওপর একটি বাক্য লিখে রাখলেন—শাস্তির ওপর আমার রহমত ও দয়া প্রাধান্য লাভ করেছে।’ (বুখারি)
বান্দা যত বড় পাপীই হোক না কেন, সে যখন নিষ্ঠার সঙ্গে নিজের যাবতীয় অপকর্ম থেকে তওবা করে ফিরে আসবে, আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তাকে ক্ষমা করে দেবেন। এমনকি আশি বছর বয়সী কাফেরও যদি কুফর থেকে তওবা করে ইমানের পথে ফিরে আসে, আল্লাহ তাআলা তাকে অবশ্যই ক্ষমা করে দেবেন। আল্লাহর রহমতের প্রতি নৈরাশ্য হারাম। আল্লাহ তাআলা বান্দাদের অভয় দিয়ে বলেন, ‘হে আমার ওই সব বান্দা, যারা কুফর-শিরক করে নিজেদের ওপর জুলুম করেছ, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হইও না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা সব গুনাহ ক্ষমা করে দেন। তিনিই একমাত্র ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।’ (সুরা যুমার: ৫)
আল্লাহ তাআলার রহমতের ব্যাপকতা বোঝাতে মহানবী (সা.) বলেন, ‘মুমিন যদি জানত, আল্লাহ চাইলে কী পরিমাণ শাস্তি দিতে পারেন, তবে কেউই জান্নাতের আশা করত না। আর যদি কোনো কাফের জানত, আল্লাহ কত বড় দয়ালু, তবে আল্লাহর জান্নাত থেকে কেউই নিরাশ হতো না।’ (মুসলিম)
রমজান আল্লাহর রহমতের মাস
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআন নাজিল করেছেন রমজান মাসে। এই পবিত্র মাসটি আল্লাহ তাআলার অফুরন্ত দয়ার নিদর্শন। রমজানে আল্লাহর রহমত বৃষ্টির মতো বর্ষিত হতে থাকে। রমজানে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। সব নেক আমলের বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা অঢেল নেকি দিয়ে ভরে দেন বান্দার আমলনামা। আল্লাহ তাআলা তার রহমতের নিরানব্বই ভাগই নিজের জন্য সংরক্ষণ করে রেখেছেন। মাত্র এক ভাগ দয়া পুরো সৃষ্টিকুলের মধ্যে ভাগ করে দিয়েছেন। এর ফলেই আমরা একে অন্যকে ভালোবাসি, মা তার সন্তানকে স্নেহ করে। তাহলে ভাবুন, আল্লাহর দয়া কত বেশি! আমরা কি কখনো তা গুণে শেষ করতে পারব?
লেখক: শিক্ষক ও হাদিস গবেষক
রহমত মানে দয়া ও অনুগ্রহ। সকল রহমতের উৎস আমাদের সবার প্রতিপালক মহান আল্লাহ তাআলা। অপার স্নেহ, অনুগ্রহ ও দয়ার মালিক তিনি। তাঁর দয়ার কোনো সীমা নেই। প্রতিটি বস্তুকে ঘিরে রেখেছে তাঁর রহমত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমার রহমত সবকিছুতে ব্যাপ্ত।’ (সুরা আরাফ: ১৫৬)
আল্লাহ রহমান ও রহিম
আল্লাহ তাআলার একটি গুণবাচক নাম হলো রহমান। আরেকটি গুণবাচক নাম হলো রহিম। রহমান মানে সীমাহীন মেহেরবান। রহিম মানে পরম দয়ালু। দুটো শব্দই ‘অধিক’-এর অর্থ নির্দেশ করে। তবে দুটোর মধ্যে পার্থক্য আছে। রহমান শব্দের মধ্যে ব্যাপকতার ভাব রয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহর রহমত সর্বব্যাপী। আল্লাহর সব সৃষ্টি এ রহমতের আওতাভুক্ত। এ শব্দটি এ অর্থও নির্দেশ করে যে, রহমত ও দয়া আল্লাহ তাআলার সত্তাগত বৈশিষ্ট্য। পক্ষান্তরে রহিম শব্দটি বোঝায়, আল্লাহ তাআলা মুমিনদের প্রতি বিশেষভাবে স্নেহশীল। যেমন পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনি মুমিনদের প্রতি খুবই দয়ালু।’ (সুরা আহজাব)
অর্থের বিবেচনায় রহিম শব্দটি রহমান থেকে বিশিষ্ট। অর্থাৎ ‘রহমান’–এর মধ্যে অর্থগত যে ব্যাপকতা আছে তা ‘রহিম’ শব্দের মধ্যে নেই। অন্যদিকে শব্দের ব্যবহার বিবেচনায় ‘রহমান’ থেকে ‘রহিম’ ব্যাপক। ‘রহিম’ শব্দটি মানুষের জন্য নাম বা গুণবাচক নাম হিসেবে ব্যবহার হতে পারে। তবে ‘রহমান’ শব্দটি একান্তই আল্লাহর বিশেষণমূলক নাম। এটি মানুষের জন্য ব্যবহার করার অনুমতি নেই।
আল্লাহর দয়া সীমাহীন
আল্লাহ তাআলা নিজের জন্য দয়ার গুণটি আবশ্যক করে নিয়েছেন। তিনি যেমন সত্তাগতভাবে দয়ালু, তেমনি তাঁর সব কাজেও রয়েছে রহমতেরই বহিঃপ্রকাশ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমার নিদর্শনসমূহের প্রতি বিশ্বাসীরা যখন আপনার কাছে আসে, তখন আপনি তাদের বলুন, তোমাদের প্রতি সালাম। তোমাদের রব নিজের জন্য দয়ার গুণ আবশ্যক করে নিয়েছেন। তোমাদের মধ্যে যে কেউ নির্বুদ্ধিতাবশত মন্দ কাজ করে ফেলবে, এরপর সে তাওবা করে নিজের সংশোধন করে নেবে, (তার জন্য সুসংবাদ যে) তিনি অতি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।’ (সুরা আনআম: ৫৪)
আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হতে নেই
বান্দা যেন কখনো আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ না হয়, সে জন্য মহানবী (সা.) আমাদের সুসংবাদ শুনিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘মহান আল্লাহ তাআলা যখন সবকিছু সৃষ্টি করে ফেললেন, তখন আরশের ওপর একটি বাক্য লিখে রাখলেন—শাস্তির ওপর আমার রহমত ও দয়া প্রাধান্য লাভ করেছে।’ (বুখারি)
বান্দা যত বড় পাপীই হোক না কেন, সে যখন নিষ্ঠার সঙ্গে নিজের যাবতীয় অপকর্ম থেকে তওবা করে ফিরে আসবে, আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তাকে ক্ষমা করে দেবেন। এমনকি আশি বছর বয়সী কাফেরও যদি কুফর থেকে তওবা করে ইমানের পথে ফিরে আসে, আল্লাহ তাআলা তাকে অবশ্যই ক্ষমা করে দেবেন। আল্লাহর রহমতের প্রতি নৈরাশ্য হারাম। আল্লাহ তাআলা বান্দাদের অভয় দিয়ে বলেন, ‘হে আমার ওই সব বান্দা, যারা কুফর-শিরক করে নিজেদের ওপর জুলুম করেছ, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হইও না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা সব গুনাহ ক্ষমা করে দেন। তিনিই একমাত্র ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।’ (সুরা যুমার: ৫)
আল্লাহ তাআলার রহমতের ব্যাপকতা বোঝাতে মহানবী (সা.) বলেন, ‘মুমিন যদি জানত, আল্লাহ চাইলে কী পরিমাণ শাস্তি দিতে পারেন, তবে কেউই জান্নাতের আশা করত না। আর যদি কোনো কাফের জানত, আল্লাহ কত বড় দয়ালু, তবে আল্লাহর জান্নাত থেকে কেউই নিরাশ হতো না।’ (মুসলিম)
রমজান আল্লাহর রহমতের মাস
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআন নাজিল করেছেন রমজান মাসে। এই পবিত্র মাসটি আল্লাহ তাআলার অফুরন্ত দয়ার নিদর্শন। রমজানে আল্লাহর রহমত বৃষ্টির মতো বর্ষিত হতে থাকে। রমজানে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। সব নেক আমলের বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা অঢেল নেকি দিয়ে ভরে দেন বান্দার আমলনামা। আল্লাহ তাআলা তার রহমতের নিরানব্বই ভাগই নিজের জন্য সংরক্ষণ করে রেখেছেন। মাত্র এক ভাগ দয়া পুরো সৃষ্টিকুলের মধ্যে ভাগ করে দিয়েছেন। এর ফলেই আমরা একে অন্যকে ভালোবাসি, মা তার সন্তানকে স্নেহ করে। তাহলে ভাবুন, আল্লাহর দয়া কত বেশি! আমরা কি কখনো তা গুণে শেষ করতে পারব?
লেখক: শিক্ষক ও হাদিস গবেষক
প্রত্যেক মুসলমানের চূড়ান্ত লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও একান্ত আশা-আকাঙ্ক্ষা হচ্ছে জান্নাতের মেহমান হওয়া। কেননা জান্নাত অনন্ত সুখ, শান্তি ও অসংখ্য নিয়ামতের জায়গা। আল্লাহ তাআলা নিজেই জান্নাতের দিকে বান্দাদের ডেকেছেন। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ শান্তির ঘরের দিকে ডাকছেন।’ (সুরা ইউনুস: ২৫)
২১ ঘণ্টা আগেসংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) অ্যাস্ট্রোনমি সোসাইটির বরাত দিয়ে গালফ নিউজ জানিয়েছে, ইসলামি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস জমাদিউল আউয়ালের চাঁদ দেখা যাবে আগামী ৩ নভেম্বর। এই চাঁদ দেখার সঙ্গে রমজান শুরুর ব্যাপারে পূর্বাভাস পান জ্যোতির্বিদেরা।
২ দিন আগেপ্রাকৃতিক দুর্যোগ মানুষের জন্য মহান আল্লাহর পরীক্ষা। দুর্যোগের সময় মুমিনের বিভিন্ন করণীয় সম্পর্কে কোরআন-হাদিসে এসেছে। এখানে কয়েকটি করণীয় বিষয় তুলে ধরা হলো—
২ দিন আগেমোহরে নবুয়ত। শাব্দিক অর্থ নবুয়তের সিলমোহর। সিরাত বিশেষজ্ঞদের মতে, মোহরে নবুয়ত হলো হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দুই কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানে ঘাড় মোবারকের নিচে অবস্থিত গোশতের টুকরা, যা তাঁর রিসালাত ও নবুয়তের প্রমাণ।
৩ দিন আগে