সানজিদা সামরিন, ঢাকা
কর্মজীবী হোন বা গৃহিণী, পুরো গর্ভকাল হবু মায়েদের কাটে নানা রকম চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে। নির্ঘুম রাত, বিষণ্নতা, শারীরিক ও মানসিক চাপ, ঘন ঘন মুড সুইং ইত্যাদি ব্যাপার গর্ভকালে খুব স্বাভাবিক। এসব থেকে শরীর ও মন সুস্থ রাখার সহজ উপায় যোগব্যায়াম। মানসিক চাপ কমাতে ও সহজ প্রসবের জন্য গর্ভকালে যোগাব্যায়াম করা নিরাপদ।
এভারগ্রিন ইয়োগা সেন্টারের প্রশিক্ষক শামা মাখিং আমাদের জানিয়েছেন যোগব্যায়ামের বিভিন্ন দিক নিয়ে। তিনি বলেন, ‘গর্ভকালের ৯ মাসের যাত্রায় প্রাণায়াম ও যোগব্যায়াম উপকারী ভূমিকা রাখে। তবে মনে রাখতে হবে, এ সময় সব ধরনের আসন করা যাবে না। হালকা ও পেটে চাপ পড়ে না এমন যোগাসন করতে হবে। পাশাপাশি কিছু প্রাণায়াম চলবে।’
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা ও মানসিক চাপ কমাবে প্রাণায়াম
গর্ভকালের পুরো সময়টায় তিনটি প্রাণায়াম সব সময় করা যাবে। গর্ভকালের প্রথম তিন মাস থেকেই তা শুরু করা যাবে।
অনুলোম-বিলোম প্রাণায়াম
অনুলোম-বিলোম হৃৎপিণ্ডের গতি স্বাভাবিক রাখে, মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
যেভাবে করবেন
ধ্যানমুদ্রায় বসুন। মেরুদণ্ড সোজা রাখুন। এবার ধীরে ধীরে চোখ বন্ধ করুন। বাঁ হাত কোলের ওপর আলতো করে রাখুন। ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে ডান নাকের ছিদ্র বন্ধ করুন এবং বাঁ নাক দিয়ে ধীরে ধীরে গভীর শ্বাস নিন। নিজের শ্বাস-প্রশ্বাসের ওপর লক্ষ রাখুন। ডান নাকের ওপর থেকে ধীরে ধীরে বৃদ্ধাঙ্গুল সরিয়ে নিন এবং ডান হাতের অনামিকা দিয়ে বাঁ নাক বন্ধ করুন। এরপর আস্তে আস্তে ডান নাকের ছিদ্র দিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। ঠিক এই পদ্ধতিতেই ডান নাকের ছিদ্র দিয়ে গভীর শ্বাস নিন। এ সময় অনামিকা দিয়ে বাঁ নাকের ছিদ্র বন্ধ করে রাখতে হবে। তারপর বাঁ নাক দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়বেন।
উজ্জয়ী প্রাণায়াম
উজ্জয়ী প্রাণায়াম হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। তা ছাড়া এটি ফুসফুসের জন্য উপকারী।
যেভাবে করবেন
ধ্যানমুদ্রায় বসুন। মেরুদণ্ড সোজা রাখুন। এবার ধীরে ধীরে চোখ বন্ধ করুন। নাকের সাহায্যে বায়ু নিয়ে কিছুক্ষণ ধরে রাখতে হবে। এরপর ধীরে ধীরে বায়ু নিঃসরণ করতে হবে। ৩০ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট পর্যন্ত যদি নিশ্বাস বন্ধ করে রাখা যায়, তাহলে উপকার পাওয়া যাবে।
ভ্রামরী প্রাণায়াম
গর্ভকালে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা থাকে। এ সময় মুড সুইং হয় বেশি। এ সময় ঘুম আসে না এবং দুশ্চিন্তা ভিড় করে। এসব থেকে দূরে থাকতে হবু মায়েদের ভ্রামরী প্রাণায়াম করতে হবে। এই প্রাণায়াম মন শান্ত রাখে এবং ভালো ঘুম হতে সহায়তা করে।
যেভাবে করবেন
শান্ত হয়ে বসে চোখ বন্ধ করুন। দুই হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে দুই কান বন্ধ করুন। বাকি চারটি আঙুল চোখের পাতার ওপর এমনভাবে রাখুন, যাতে আঙুল চোখের পাতা স্পর্শ না করে। এরপর নাক দিয়ে বুকভরে শ্বাস টেনে নিন এবং মুখ বন্ধ রেখে শ্বাস ছাড়ার সময় ভ্রমরের মতো নিরবচ্ছিন্ন আওয়াজ করতে করতে শ্বাস ছাড়ুন। ভ্রামরী প্রাণায়ামের সময় মনোযোগ দুই ভ্রুর মধ্যে স্থির রাখবেন।
প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ট্রাইমেস্টারে যেসব যোগাসন করা যাবে
প্রথম তিন মাস
গর্ভকালের প্রথম তিন মাসকে বলা হয় ক্রান্তিকাল। এ সময় গর্ভপাতের আশঙ্কা থাকে সবয়ে বেশি। তাই এ সময়টায় হবু মায়েদের বেশি সাবধানতা অবলম্বন করতে বলা হয়। শামা মাখিং বলেন, ‘এ সময় যোগাসনের ক্ষেত্রে খুব সাধারণ আসনগুলো করা যাবে। মলাসন, প্রজাপতি আসন, ভুজঙ্গাসন ও বক্রাসন করা যেতে পারে। তবে পেটে চাপ লাগে এমন কোনো আসন করা যাবে না গর্ভকালের কোনো সময়েই।’
মলাসন
প্রথমে ম্যাটের ওপর সোজা হয়ে দুই পায়ের মাঝে কিছুটা ফাঁক রেখে দাঁড়ান। এবার ওই অবস্থায় হাঁটু ভাঁজ করে বসার চেষ্টা করুন। দুটো হাত বুকের কাছে জড়ো করে রাখুন। ঘাড় ও কাঁধ সোজা রাখুন। এ অবস্থায় অন্তত পাঁচবার প্রশ্বাস নিন ও নিশ্বাস ছাড়ুন।
প্রজাপতি আসন
ম্যাটের ওপর দুই পা সামনের দিকে ছড়িয়ে বসুন এবং মেরুদণ্ড সোজা রাখুন। এরপর দুই হাঁটু মুড়িয়ে দুই পায়ের নিচের অংশ জোড়া লাগান। এরপর পা দুটির জয়েন্টে হাত দিয়ে শক্ত করে ধরে রাখুন। এবার হাঁটু ভাঁজ করে প্রজাপতির ডানার মতো উভয় পা ওপরে ও নিচে ওঠানো-নামানো শুরু করুন। এটি করার সময় স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিন।
ভুজঙ্গাসন
প্রথমে উপুড় হয়ে দুই পা জোড় করে সোজা রেখে মাটিতে শুয়ে পড়ুন। মাথাটা বামে কাত করে রাখুন। হাত দুটো শরীরের দুই পাশে এবং হাতের পাতা মাটিতে লেগে থাকবে। এবার হাত দুটো টেনে নিয়ে এসে দুই বাহু বরাবর উপুড় করে রাখুন। হাতের ওপর ভর করে মাথা ওপরে তুলুন। বুক মাটি থেকে ওপরে উঠবে। কোমর থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত পা জোড় অবস্থায় সোজা থাকবে। পেট মেঝেতে লেগে থাকবে। দম থাকবে স্বাভাবিক। এভাবে পূর্ণ ভঙ্গিমায় এসে ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ড অবস্থান করুন।
দ্বিতীয় তিন মাস
দ্বিতীয় তিন মাস বা দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারে গর্ভস্থ সন্তানের বৃদ্ধি ঘটে। তাই সে সময় নির্দিষ্ট কিছু আসন ধীরগতিতে অনুশীলন করার পরামর্শ দেন শামা মাখিং। তিনি বলেন, ‘চতুর্থ ও পঞ্চম মাস থেকে পর্বতাসন, তাড়াসন, বৃক্ষাসন করা যাবে। তবে মনে রাখতে হবে, এই আসনগুলো খুব ধীরগতিতে হালকাভাবে করতে হবে।’
পর্বতাসন
ম্যাটের ওপর বজ্রাসনে বসুন। এবার দুই হাত সামনের দিকে এনে ম্যাটের ওপর রাখুন। শিশুদের আনন্দ দেওয়ার জন্য আমরা যেমন ঘোড়া হই, সেই অবস্থান তৈরি করুন। একে বলে ক্যাট অ্যান্ড কাউ পজিশন। এখন পায়ের পাতা দিয়ে ভারসাম্য রক্ষা করে মাথা নিচে ও নিতম্ব ওপরের দিকে রেখে অবস্থান নিন। এরপর নিশ্বাস নিতে নিতে মাথা ওপরের দিকে তুলুন এবং শরীরের মধ্যভাগ যতটা সম্ভব নিচে নামান। একইভাবে নিশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে মাথা নিচু করুন ও শরীরের মধ্যভাগ ওপরে তুলুন।
তাড়াসন
ম্যাটের ওপর সোজা হয়ে দাঁড়ান। এবার দুই পাশ থেকে দুই হাত ওপরের দিকে তুলে হাতের দুই তালু একসঙ্গে মেলান। চিবুক উঁচিয়ে ওপরে তোলা হাতের তর্জনীর দিকে তাকান। এভাবে ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ড শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে আগের অবস্থানে ফিরে আসুন। এভাবে ১ মিনিট করুন।
বৃক্ষাসন
প্রথমে ইয়োগা ম্যাটের ওপর সোজা হয়ে দাঁড়ান। এবার হাতের তালু একসঙ্গে করে মাথার ওপরে সোজা করে তুলুন। এরপর ডান পা ভাঁজ করে উঠিয়ে বাঁ পায়ের ঊরুতে রাখুন। পায়ের পাতার নিচের দিকটা ঊরুর সঙ্গে লেগে থাকবে। এ অবস্থায় ১০ বার দম নিন ও ছাড়ুন। এরপর ডান পা নামিয়ে একইভাবে বাঁ পা উঠিয়ে আসনটি আবার করুন।
শেষ তিন মাস
গর্ভকালের শেষ তিন মাস ওপরের সব আসনই করা যাবে। সঙ্গে প্রাণায়াম ও মেডিটেশন করতে হবে। মেডিটেশন ও প্রাণায়াম মনঃসংযোগ বাড়ায়। মানসিক চাপ কমাতে আনন্দ বলাসন, মর্কটাসন, মলাসন, প্রজাপতি আসন করা যায়। তবে শামা মাখিং জানান, সবার শরীর সমানভাবে কাজ করে না। ফলে জোর করে কোনো আসনই করা যাবে না। যেটুকু শরীর সায় দেবে, সেটুকুই যথেষ্ট।
লেবার পেইন কমাবে ও স্বাভাবিক প্রসবে সহায়ক হবে যেসব আসন
প্রজাপতি আসন, মলাসন শরীরের নিচের অংশের নমনীয়তা বাড়াতে সহায়তা করে। তা ছাড়া প্রজননতন্ত্রকে সুস্থ রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যোগব্যায়াম শুরুর জন্য ভালো সার্টিফায়েড যোগব্যায়াম প্রশিক্ষকের মাধ্য়মে প্রশিক্ষণ নিন।
কর্মজীবী হোন বা গৃহিণী, পুরো গর্ভকাল হবু মায়েদের কাটে নানা রকম চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে। নির্ঘুম রাত, বিষণ্নতা, শারীরিক ও মানসিক চাপ, ঘন ঘন মুড সুইং ইত্যাদি ব্যাপার গর্ভকালে খুব স্বাভাবিক। এসব থেকে শরীর ও মন সুস্থ রাখার সহজ উপায় যোগব্যায়াম। মানসিক চাপ কমাতে ও সহজ প্রসবের জন্য গর্ভকালে যোগাব্যায়াম করা নিরাপদ।
এভারগ্রিন ইয়োগা সেন্টারের প্রশিক্ষক শামা মাখিং আমাদের জানিয়েছেন যোগব্যায়ামের বিভিন্ন দিক নিয়ে। তিনি বলেন, ‘গর্ভকালের ৯ মাসের যাত্রায় প্রাণায়াম ও যোগব্যায়াম উপকারী ভূমিকা রাখে। তবে মনে রাখতে হবে, এ সময় সব ধরনের আসন করা যাবে না। হালকা ও পেটে চাপ পড়ে না এমন যোগাসন করতে হবে। পাশাপাশি কিছু প্রাণায়াম চলবে।’
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা ও মানসিক চাপ কমাবে প্রাণায়াম
গর্ভকালের পুরো সময়টায় তিনটি প্রাণায়াম সব সময় করা যাবে। গর্ভকালের প্রথম তিন মাস থেকেই তা শুরু করা যাবে।
অনুলোম-বিলোম প্রাণায়াম
অনুলোম-বিলোম হৃৎপিণ্ডের গতি স্বাভাবিক রাখে, মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
যেভাবে করবেন
ধ্যানমুদ্রায় বসুন। মেরুদণ্ড সোজা রাখুন। এবার ধীরে ধীরে চোখ বন্ধ করুন। বাঁ হাত কোলের ওপর আলতো করে রাখুন। ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে ডান নাকের ছিদ্র বন্ধ করুন এবং বাঁ নাক দিয়ে ধীরে ধীরে গভীর শ্বাস নিন। নিজের শ্বাস-প্রশ্বাসের ওপর লক্ষ রাখুন। ডান নাকের ওপর থেকে ধীরে ধীরে বৃদ্ধাঙ্গুল সরিয়ে নিন এবং ডান হাতের অনামিকা দিয়ে বাঁ নাক বন্ধ করুন। এরপর আস্তে আস্তে ডান নাকের ছিদ্র দিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। ঠিক এই পদ্ধতিতেই ডান নাকের ছিদ্র দিয়ে গভীর শ্বাস নিন। এ সময় অনামিকা দিয়ে বাঁ নাকের ছিদ্র বন্ধ করে রাখতে হবে। তারপর বাঁ নাক দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়বেন।
উজ্জয়ী প্রাণায়াম
উজ্জয়ী প্রাণায়াম হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। তা ছাড়া এটি ফুসফুসের জন্য উপকারী।
যেভাবে করবেন
ধ্যানমুদ্রায় বসুন। মেরুদণ্ড সোজা রাখুন। এবার ধীরে ধীরে চোখ বন্ধ করুন। নাকের সাহায্যে বায়ু নিয়ে কিছুক্ষণ ধরে রাখতে হবে। এরপর ধীরে ধীরে বায়ু নিঃসরণ করতে হবে। ৩০ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট পর্যন্ত যদি নিশ্বাস বন্ধ করে রাখা যায়, তাহলে উপকার পাওয়া যাবে।
ভ্রামরী প্রাণায়াম
গর্ভকালে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা থাকে। এ সময় মুড সুইং হয় বেশি। এ সময় ঘুম আসে না এবং দুশ্চিন্তা ভিড় করে। এসব থেকে দূরে থাকতে হবু মায়েদের ভ্রামরী প্রাণায়াম করতে হবে। এই প্রাণায়াম মন শান্ত রাখে এবং ভালো ঘুম হতে সহায়তা করে।
যেভাবে করবেন
শান্ত হয়ে বসে চোখ বন্ধ করুন। দুই হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে দুই কান বন্ধ করুন। বাকি চারটি আঙুল চোখের পাতার ওপর এমনভাবে রাখুন, যাতে আঙুল চোখের পাতা স্পর্শ না করে। এরপর নাক দিয়ে বুকভরে শ্বাস টেনে নিন এবং মুখ বন্ধ রেখে শ্বাস ছাড়ার সময় ভ্রমরের মতো নিরবচ্ছিন্ন আওয়াজ করতে করতে শ্বাস ছাড়ুন। ভ্রামরী প্রাণায়ামের সময় মনোযোগ দুই ভ্রুর মধ্যে স্থির রাখবেন।
প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ট্রাইমেস্টারে যেসব যোগাসন করা যাবে
প্রথম তিন মাস
গর্ভকালের প্রথম তিন মাসকে বলা হয় ক্রান্তিকাল। এ সময় গর্ভপাতের আশঙ্কা থাকে সবয়ে বেশি। তাই এ সময়টায় হবু মায়েদের বেশি সাবধানতা অবলম্বন করতে বলা হয়। শামা মাখিং বলেন, ‘এ সময় যোগাসনের ক্ষেত্রে খুব সাধারণ আসনগুলো করা যাবে। মলাসন, প্রজাপতি আসন, ভুজঙ্গাসন ও বক্রাসন করা যেতে পারে। তবে পেটে চাপ লাগে এমন কোনো আসন করা যাবে না গর্ভকালের কোনো সময়েই।’
মলাসন
প্রথমে ম্যাটের ওপর সোজা হয়ে দুই পায়ের মাঝে কিছুটা ফাঁক রেখে দাঁড়ান। এবার ওই অবস্থায় হাঁটু ভাঁজ করে বসার চেষ্টা করুন। দুটো হাত বুকের কাছে জড়ো করে রাখুন। ঘাড় ও কাঁধ সোজা রাখুন। এ অবস্থায় অন্তত পাঁচবার প্রশ্বাস নিন ও নিশ্বাস ছাড়ুন।
প্রজাপতি আসন
ম্যাটের ওপর দুই পা সামনের দিকে ছড়িয়ে বসুন এবং মেরুদণ্ড সোজা রাখুন। এরপর দুই হাঁটু মুড়িয়ে দুই পায়ের নিচের অংশ জোড়া লাগান। এরপর পা দুটির জয়েন্টে হাত দিয়ে শক্ত করে ধরে রাখুন। এবার হাঁটু ভাঁজ করে প্রজাপতির ডানার মতো উভয় পা ওপরে ও নিচে ওঠানো-নামানো শুরু করুন। এটি করার সময় স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিন।
ভুজঙ্গাসন
প্রথমে উপুড় হয়ে দুই পা জোড় করে সোজা রেখে মাটিতে শুয়ে পড়ুন। মাথাটা বামে কাত করে রাখুন। হাত দুটো শরীরের দুই পাশে এবং হাতের পাতা মাটিতে লেগে থাকবে। এবার হাত দুটো টেনে নিয়ে এসে দুই বাহু বরাবর উপুড় করে রাখুন। হাতের ওপর ভর করে মাথা ওপরে তুলুন। বুক মাটি থেকে ওপরে উঠবে। কোমর থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত পা জোড় অবস্থায় সোজা থাকবে। পেট মেঝেতে লেগে থাকবে। দম থাকবে স্বাভাবিক। এভাবে পূর্ণ ভঙ্গিমায় এসে ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ড অবস্থান করুন।
দ্বিতীয় তিন মাস
দ্বিতীয় তিন মাস বা দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারে গর্ভস্থ সন্তানের বৃদ্ধি ঘটে। তাই সে সময় নির্দিষ্ট কিছু আসন ধীরগতিতে অনুশীলন করার পরামর্শ দেন শামা মাখিং। তিনি বলেন, ‘চতুর্থ ও পঞ্চম মাস থেকে পর্বতাসন, তাড়াসন, বৃক্ষাসন করা যাবে। তবে মনে রাখতে হবে, এই আসনগুলো খুব ধীরগতিতে হালকাভাবে করতে হবে।’
পর্বতাসন
ম্যাটের ওপর বজ্রাসনে বসুন। এবার দুই হাত সামনের দিকে এনে ম্যাটের ওপর রাখুন। শিশুদের আনন্দ দেওয়ার জন্য আমরা যেমন ঘোড়া হই, সেই অবস্থান তৈরি করুন। একে বলে ক্যাট অ্যান্ড কাউ পজিশন। এখন পায়ের পাতা দিয়ে ভারসাম্য রক্ষা করে মাথা নিচে ও নিতম্ব ওপরের দিকে রেখে অবস্থান নিন। এরপর নিশ্বাস নিতে নিতে মাথা ওপরের দিকে তুলুন এবং শরীরের মধ্যভাগ যতটা সম্ভব নিচে নামান। একইভাবে নিশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে মাথা নিচু করুন ও শরীরের মধ্যভাগ ওপরে তুলুন।
তাড়াসন
ম্যাটের ওপর সোজা হয়ে দাঁড়ান। এবার দুই পাশ থেকে দুই হাত ওপরের দিকে তুলে হাতের দুই তালু একসঙ্গে মেলান। চিবুক উঁচিয়ে ওপরে তোলা হাতের তর্জনীর দিকে তাকান। এভাবে ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ড শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে আগের অবস্থানে ফিরে আসুন। এভাবে ১ মিনিট করুন।
বৃক্ষাসন
প্রথমে ইয়োগা ম্যাটের ওপর সোজা হয়ে দাঁড়ান। এবার হাতের তালু একসঙ্গে করে মাথার ওপরে সোজা করে তুলুন। এরপর ডান পা ভাঁজ করে উঠিয়ে বাঁ পায়ের ঊরুতে রাখুন। পায়ের পাতার নিচের দিকটা ঊরুর সঙ্গে লেগে থাকবে। এ অবস্থায় ১০ বার দম নিন ও ছাড়ুন। এরপর ডান পা নামিয়ে একইভাবে বাঁ পা উঠিয়ে আসনটি আবার করুন।
শেষ তিন মাস
গর্ভকালের শেষ তিন মাস ওপরের সব আসনই করা যাবে। সঙ্গে প্রাণায়াম ও মেডিটেশন করতে হবে। মেডিটেশন ও প্রাণায়াম মনঃসংযোগ বাড়ায়। মানসিক চাপ কমাতে আনন্দ বলাসন, মর্কটাসন, মলাসন, প্রজাপতি আসন করা যায়। তবে শামা মাখিং জানান, সবার শরীর সমানভাবে কাজ করে না। ফলে জোর করে কোনো আসনই করা যাবে না। যেটুকু শরীর সায় দেবে, সেটুকুই যথেষ্ট।
লেবার পেইন কমাবে ও স্বাভাবিক প্রসবে সহায়ক হবে যেসব আসন
প্রজাপতি আসন, মলাসন শরীরের নিচের অংশের নমনীয়তা বাড়াতে সহায়তা করে। তা ছাড়া প্রজননতন্ত্রকে সুস্থ রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যোগব্যায়াম শুরুর জন্য ভালো সার্টিফায়েড যোগব্যায়াম প্রশিক্ষকের মাধ্য়মে প্রশিক্ষণ নিন।
তরুণদের মধ্যে যাদের জন্ম ১৯৯৭ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে তাদের বলা হচ্ছে জেন জি বা জেনারেশন জেড। একাডেমিক পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে করোনা চলাকালীন কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ শুরু করে এই প্রজন্ম। কিন্তু তাদের নিয়ে সবার যে প্রত্যাশা এরই মধ্যে তাতে ধুলো পড়তে শুরু করেছে।
১ দিন আগেআমন্ত্রণ নয়, রাজশাহী আপনাকে নিমন্ত্রণ জানাচ্ছে। ছাতিমের সুগন্ধ ছাড়িয়ে রাজশাহী এখন ম-ম করছে হাঁসের মাংস ভুনার সুগন্ধে। সাদা ভাত আর গরম-গরম মাংস ভুনা। বিকেলে বাটার মোড়ের জিলাপির সঙ্গে নিমকি দিয়ে হালকা নাশতা। আলোর শহর রাজশাহী ঘুরে দেখার পর সন্ধ্যায় সিঅ্যান্ডবি মোড়ে গরম-গরম রসগোল্লার সঙ্গে পুরি।
২ দিন আগেশুধু কলাপাড়া বললে অনেকে হয়তো জায়গাটা চিনবেন না। কিন্তু কুয়াকাটার কথা বললে চিনবেন প্রায় সবাই। কুয়াকাটা সৈকতের জন্য কলাপাড়া এখন সুপরিচিত। এখানে আছে এক বিখ্যাত খাবার। জগার মিষ্টি।
২ দিন আগেঢাকা শহরের গলিগুলো এখন খাবারের ঘ্রাণে উতলা থাকে। এদিক-ওদিক তাকালেই দেখবেন, কোথাও না কোথাও একটি লাইভ বেকারি। এতে বেক করা হচ্ছে পাউরুটি, বিভিন্ন ধরনের কেক-বিস্কুট কিংবা বাটার বান। কৌতূহল নিয়ে এক পিস কিনে মুখে পুরে দিতে পারেন। এগুলোর দামও যে খুব আহামরি, তা কিন্তু নয়।
২ দিন আগে