রজত কান্তি রায়, ঢাকা
‘লোফার’ নামে জুতাগুলো কারা জনপ্রিয় করে তুলেছিল? আপনি বুদ্ধিমান হলে এ প্রশ্ন শুনে বলে দেবেন, আরে, ছাত্ররা। এটা আবার জিজ্ঞেস করতে হয় নাকি। না, জিজ্ঞেস করার দরকার নেই। কিন্তু জানার দরকার আছে।
আধুনিক লোফারের উদ্ভবকাল ধরা হয় ত্রিশের দশক। আনুষ্ঠানিক পোশাকের অংশ হিসেবে ব্যবহার করা জুতার বিকল্প ছিল এগুলো। চকচকে জুতায় বাঁধতে হবে ফিতা। তার আবার আছে হাজারো কেতা। কিছু মানুষ ফ্যাশন আর আরামের মধ্যে চেপে বসা এই নিয়মকে পছন্দ করলেন না। তাঁরা বিকল্প খুঁজতে শুরু করলেন। সেই সময় এল লোফার। দারুণভাবে এটি লুফে নেওয়া হলো। ‘লুফে’ নিলেন বলেই এগুলোর নাম কিন্তু লোফার নয়। এটি সে সময় নারী ও পুরুষ—উভয়ের পছন্দের জিনিস হয়ে উঠল। তবে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত লোফারকে ফ্যাশন জগতে ‘স্টাইল স্টেটমেন্ট’ হয়ে উঠতে অপেক্ষা করতে হলো।
উনিশ শতকের পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে আমেরিকার আইভি লিগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠল আরামদায়ক লোফার জুতা। ফিতা বাঁধার ঝামেলা নেই, সহজে এবং প্রায় সব ধরনের পোশাকের সঙ্গে পরা যায় বলে শিক্ষার্থীরা এগুলো গ্রহণ করলেন সাদরে। তাঁরা জিনস এবং স্পোর্টসওয়্যারের সঙ্গে পরতে শুরু করলেন এগুলো। এ সময়ের সঙ্গে তুলনা করে বলা যায়, আইভি লিগের অসংখ্য শিক্ষার্থী লোফারকে অল্প সময়ে ‘ভাইরাল’ করে ফ্যাশন জগতে তার সাবস্ক্রাইবার বাড়িয়ে ফেললেন। এক দশকের কম সময়ে এটি ফ্যাশন আইকন হয়ে উঠল।
এর আরেকটি কারণ ছিল সম্ভবত। লোফারগুলোকে অনেক সময় ডাকা হতো পেনি লোফার বলে। কারণ, লোফারের জিহ্বার ওপরে ছোট একটি চেরা জায়গা থাকত। সেটি ছিল এক পেনি সমমানের মুদ্রা রাখার নিখুঁত জায়গা। সে সময় চল ছিল পে ফোনের। অনেক শিক্ষার্থী তাঁদের লোফারের সেই চেরা জায়গায় পেনি রেখে দিতেন জরুরি ফোন কল করার জন্য। বিশেষ প্রয়োজনে পেনি রাখার সুবিধা লোফারকে জনপ্রিয় করেছিল, নাকি লোফারের জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জুতার স্লটে পেনি রাখার অভ্যাস জনপ্রিয় প্রবণতা হয়ে ওঠে, সেটা বলা মুশকিল। তা হলেও ধীরে ধীরে জুতার নাম হয়ে যায় পেনি লোফার। এই শৈলী আজও জনপ্রিয়।
সত্তরের দশকে লোফার প্রিপি স্টাইলের আইকনিক প্রতীকে পরিণত হয়েছিল। আইভি লিগের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে হলিউডের সেলিব্রিটি—সবাই পরতেন এটি। ক্ল্যাসিক ও পরিশীলিত চেহারার জন্য জুতাগুলো প্রায়ই খাকি রঙের হতো এবং সাধারণত ব্লেজারের সঙ্গে পরা হতো।
ফ্যাশন এবং সৌন্দর্যচর্চায় রাজনীতি থাকবে না, তা হতে পারে না। মূলত ফ্যাশন বিষয়টিকে ‘যথেষ্ট রাজনৈতিক’ বলে মনে করেন এ বিষয়ে সচেতন মানুষ। এর অনেক উদাহরণ আছে। অনেকে ব্রাদার ম্যালকম এবং জুট স্যুটের কথা জানেন প্রটেস্ট ফ্যাশনের উদাহরণ হিসেবে।
লোফারের উত্থান যে সময় ঘটছে, সেই সত্তরের দশকে, তরুণেরা আরও একটি ফ্যাশন আইকন তৈরি করছিলেন নিজেদের অজান্তে। আমাদের মনে রাখতে হবে, বিশ শতকের ত্রিশ থেকে সত্তরের দশক ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ সময়। বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল বেশ টালমাটাল।
সে সময় বিভিন্ন দেশে, এমনকি খোদ আমেরিকায় তরুণেরা বিদ্রোহ করছেন, অন্যদিকে যুদ্ধ হচ্ছে বিভিন্ন দেশে। তৈরি হচ্ছে হরেক রকম সাংস্কৃতিক ডিসকোর্স। সেই সময় সামনে আসতে শুরু করে স্টেটমেন্ট টি-শার্ট। এ ধরনের টি-শার্টে লেখা থাকত বিভিন্ন ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক স্লোগান। বক্তব্য প্রকাশের জন্য এগুলো দ্রুত জনপ্রিয় ও শক্তিশালী মাধ্যম হয়ে ওঠে। ভিভিয়েন ওয়েস্টউড বা ম্যালকম ম্যাকলারেনের মতো সে সময়ের বরেণ্য ডিজাইনাররাও একে লুফে নেন। তাঁরাও একই রকম বক্তব্যধর্মী বা স্লোগানধর্মী টি-শার্ট তৈরি করতে লাগলেন; যা সাধারণ মানুষ, বিশেষত তরুণদের বিমোহিত করেছিল। ওয়েস্টউডের আইকনিক ‘ডেস্ট্রয়’ টি-শার্ট পাঙ্ক আন্দোলনের প্রতীক হয়ে উঠেছিল সে সময়। আর ম্যাকলারেনের ‘দ্রোহী’ ডিজাইন স্লোগানের উত্তেজনাকে তুলে দিয়েছিল তুঙ্গে, সমকালকে করেছিল দারুণ চ্যালেঞ্জ।
এরপর সম্ভবত স্টেটমেন্ট টি-শার্টকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। বিশ শতক ছাড়িয়ে একুশ শতকে আসতে আসতে এগুলোয় অনেক বদল হয়েছে। দ্রোহের সঙ্গে এতে জায়গা করে নিয়েছে প্রেম। কখনো নিঃসঙ্গতা, কখনো সমকালীন কোনো অভিব্যক্তি।
‘লোফার’ নামে জুতাগুলো কারা জনপ্রিয় করে তুলেছিল? আপনি বুদ্ধিমান হলে এ প্রশ্ন শুনে বলে দেবেন, আরে, ছাত্ররা। এটা আবার জিজ্ঞেস করতে হয় নাকি। না, জিজ্ঞেস করার দরকার নেই। কিন্তু জানার দরকার আছে।
আধুনিক লোফারের উদ্ভবকাল ধরা হয় ত্রিশের দশক। আনুষ্ঠানিক পোশাকের অংশ হিসেবে ব্যবহার করা জুতার বিকল্প ছিল এগুলো। চকচকে জুতায় বাঁধতে হবে ফিতা। তার আবার আছে হাজারো কেতা। কিছু মানুষ ফ্যাশন আর আরামের মধ্যে চেপে বসা এই নিয়মকে পছন্দ করলেন না। তাঁরা বিকল্প খুঁজতে শুরু করলেন। সেই সময় এল লোফার। দারুণভাবে এটি লুফে নেওয়া হলো। ‘লুফে’ নিলেন বলেই এগুলোর নাম কিন্তু লোফার নয়। এটি সে সময় নারী ও পুরুষ—উভয়ের পছন্দের জিনিস হয়ে উঠল। তবে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত লোফারকে ফ্যাশন জগতে ‘স্টাইল স্টেটমেন্ট’ হয়ে উঠতে অপেক্ষা করতে হলো।
উনিশ শতকের পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে আমেরিকার আইভি লিগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠল আরামদায়ক লোফার জুতা। ফিতা বাঁধার ঝামেলা নেই, সহজে এবং প্রায় সব ধরনের পোশাকের সঙ্গে পরা যায় বলে শিক্ষার্থীরা এগুলো গ্রহণ করলেন সাদরে। তাঁরা জিনস এবং স্পোর্টসওয়্যারের সঙ্গে পরতে শুরু করলেন এগুলো। এ সময়ের সঙ্গে তুলনা করে বলা যায়, আইভি লিগের অসংখ্য শিক্ষার্থী লোফারকে অল্প সময়ে ‘ভাইরাল’ করে ফ্যাশন জগতে তার সাবস্ক্রাইবার বাড়িয়ে ফেললেন। এক দশকের কম সময়ে এটি ফ্যাশন আইকন হয়ে উঠল।
এর আরেকটি কারণ ছিল সম্ভবত। লোফারগুলোকে অনেক সময় ডাকা হতো পেনি লোফার বলে। কারণ, লোফারের জিহ্বার ওপরে ছোট একটি চেরা জায়গা থাকত। সেটি ছিল এক পেনি সমমানের মুদ্রা রাখার নিখুঁত জায়গা। সে সময় চল ছিল পে ফোনের। অনেক শিক্ষার্থী তাঁদের লোফারের সেই চেরা জায়গায় পেনি রেখে দিতেন জরুরি ফোন কল করার জন্য। বিশেষ প্রয়োজনে পেনি রাখার সুবিধা লোফারকে জনপ্রিয় করেছিল, নাকি লোফারের জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জুতার স্লটে পেনি রাখার অভ্যাস জনপ্রিয় প্রবণতা হয়ে ওঠে, সেটা বলা মুশকিল। তা হলেও ধীরে ধীরে জুতার নাম হয়ে যায় পেনি লোফার। এই শৈলী আজও জনপ্রিয়।
সত্তরের দশকে লোফার প্রিপি স্টাইলের আইকনিক প্রতীকে পরিণত হয়েছিল। আইভি লিগের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে হলিউডের সেলিব্রিটি—সবাই পরতেন এটি। ক্ল্যাসিক ও পরিশীলিত চেহারার জন্য জুতাগুলো প্রায়ই খাকি রঙের হতো এবং সাধারণত ব্লেজারের সঙ্গে পরা হতো।
ফ্যাশন এবং সৌন্দর্যচর্চায় রাজনীতি থাকবে না, তা হতে পারে না। মূলত ফ্যাশন বিষয়টিকে ‘যথেষ্ট রাজনৈতিক’ বলে মনে করেন এ বিষয়ে সচেতন মানুষ। এর অনেক উদাহরণ আছে। অনেকে ব্রাদার ম্যালকম এবং জুট স্যুটের কথা জানেন প্রটেস্ট ফ্যাশনের উদাহরণ হিসেবে।
লোফারের উত্থান যে সময় ঘটছে, সেই সত্তরের দশকে, তরুণেরা আরও একটি ফ্যাশন আইকন তৈরি করছিলেন নিজেদের অজান্তে। আমাদের মনে রাখতে হবে, বিশ শতকের ত্রিশ থেকে সত্তরের দশক ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ সময়। বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল বেশ টালমাটাল।
সে সময় বিভিন্ন দেশে, এমনকি খোদ আমেরিকায় তরুণেরা বিদ্রোহ করছেন, অন্যদিকে যুদ্ধ হচ্ছে বিভিন্ন দেশে। তৈরি হচ্ছে হরেক রকম সাংস্কৃতিক ডিসকোর্স। সেই সময় সামনে আসতে শুরু করে স্টেটমেন্ট টি-শার্ট। এ ধরনের টি-শার্টে লেখা থাকত বিভিন্ন ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক স্লোগান। বক্তব্য প্রকাশের জন্য এগুলো দ্রুত জনপ্রিয় ও শক্তিশালী মাধ্যম হয়ে ওঠে। ভিভিয়েন ওয়েস্টউড বা ম্যালকম ম্যাকলারেনের মতো সে সময়ের বরেণ্য ডিজাইনাররাও একে লুফে নেন। তাঁরাও একই রকম বক্তব্যধর্মী বা স্লোগানধর্মী টি-শার্ট তৈরি করতে লাগলেন; যা সাধারণ মানুষ, বিশেষত তরুণদের বিমোহিত করেছিল। ওয়েস্টউডের আইকনিক ‘ডেস্ট্রয়’ টি-শার্ট পাঙ্ক আন্দোলনের প্রতীক হয়ে উঠেছিল সে সময়। আর ম্যাকলারেনের ‘দ্রোহী’ ডিজাইন স্লোগানের উত্তেজনাকে তুলে দিয়েছিল তুঙ্গে, সমকালকে করেছিল দারুণ চ্যালেঞ্জ।
এরপর সম্ভবত স্টেটমেন্ট টি-শার্টকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। বিশ শতক ছাড়িয়ে একুশ শতকে আসতে আসতে এগুলোয় অনেক বদল হয়েছে। দ্রোহের সঙ্গে এতে জায়গা করে নিয়েছে প্রেম। কখনো নিঃসঙ্গতা, কখনো সমকালীন কোনো অভিব্যক্তি।
তরুণদের মধ্যে যাদের জন্ম ১৯৯৭ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে তাদের বলা হচ্ছে জেন জি বা জেনারেশন জেড। একাডেমিক পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে করোনা চলাকালীন কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ শুরু করে এই প্রজন্ম। কিন্তু তাদের নিয়ে সবার যে প্রত্যাশা এরই মধ্যে তাতে ধুলো পড়তে শুরু করেছে।
১ দিন আগেআমন্ত্রণ নয়, রাজশাহী আপনাকে নিমন্ত্রণ জানাচ্ছে। ছাতিমের সুগন্ধ ছাড়িয়ে রাজশাহী এখন ম-ম করছে হাঁসের মাংস ভুনার সুগন্ধে। সাদা ভাত আর গরম-গরম মাংস ভুনা। বিকেলে বাটার মোড়ের জিলাপির সঙ্গে নিমকি দিয়ে হালকা নাশতা। আলোর শহর রাজশাহী ঘুরে দেখার পর সন্ধ্যায় সিঅ্যান্ডবি মোড়ে গরম-গরম রসগোল্লার সঙ্গে পুরি।
২ দিন আগেশুধু কলাপাড়া বললে অনেকে হয়তো জায়গাটা চিনবেন না। কিন্তু কুয়াকাটার কথা বললে চিনবেন প্রায় সবাই। কুয়াকাটা সৈকতের জন্য কলাপাড়া এখন সুপরিচিত। এখানে আছে এক বিখ্যাত খাবার। জগার মিষ্টি।
২ দিন আগেঢাকা শহরের গলিগুলো এখন খাবারের ঘ্রাণে উতলা থাকে। এদিক-ওদিক তাকালেই দেখবেন, কোথাও না কোথাও একটি লাইভ বেকারি। এতে বেক করা হচ্ছে পাউরুটি, বিভিন্ন ধরনের কেক-বিস্কুট কিংবা বাটার বান। কৌতূহল নিয়ে এক পিস কিনে মুখে পুরে দিতে পারেন। এগুলোর দামও যে খুব আহামরি, তা কিন্তু নয়।
২ দিন আগে