জাহাঙ্গীর আলম, ঢাকা

আমরা এক ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ পৃথিবীতে বাস করছি। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ প্রভাব টের পাচ্ছে বৈশ্বিক উষ্ণতায় সরাসরি ভূমিকা রাখা উন্নত দেশগুলোও। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক সংকট কঠিনতর হয়ে উঠছে। সব মিলিয়ে উদ্বেগজনক বৈশ্বিক তাপমাত্রা, দায়িত্বজ্ঞানহীন স্বৈরশাসক, চরমপন্থার উত্থান, অধিকারের নতুন মাত্রা এবং সরকার ও করপোরেটের ধ্বংসাত্মক নীতি ক্রমেই মানবজাতিকে বিশৃঙ্খলার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। মানুষের মধ্যে ক্রোধ, হতাশা এবং বিদ্রোহের দাবানলে ঘি ঢালছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
এক শতাংশের কম নারীযোদ্ধা
এই বিশৃঙ্খল বিক্ষুব্ধ পৃথিবীতে কিন্তু অনেক দৃঢ়চেতা নারীকে প্রতিরোধে এগিয়ে আসতে দেখছি। আমাদের সামনে গ্রেটা থুনবার্গ, নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্নের মতো নারীদের উদাহরণ জ্বলজ্বল করছে। তাঁদের সাহসী পদক্ষেপ আমাদের আপ্লুত করছে। কিন্তু একজন নারী যদি আক্ষরিক অর্থেই একটি সশস্ত্র লড়াইয়ে যুক্ত হওয়ার সুযোগ বেছে নেন? নারীর এমন সাহসিকতা কিন্তু পুরুষশাসিত কর্তৃত্ববাদী সমাজ এখনো উদ্যাপন করার উদারতা অর্জন করতে পারেনি।
বিশ শতকের প্রথম দিকে ইউরোপ থেকে বহু তরুণ যুবক প্রোপাগান্ডায় প্রভাবিত হয়ে যুদ্ধে গেছে। তারা কেউ ভুক্তভোগী, কেউ কঠিন পরিস্থিতির নায়ক অথবা অনুপ্রেরণা।
কিন্তু একজন নারী যদি নিজ ইচ্ছায় কোনো সহিংসতার কাছাকাছিও যান, এমনকি হাতে অস্ত্র তুলে না নিলেও এখনো ব্যাপক সামাজিক অস্থিরতার কারণ হয়ে দাঁড়ান। কঠোর সমালোচনা এবং প্রায়ই শাস্তির মুখোমুখি হতে হয় তাঁকে।
তাহলে নারী ও সহিংসতা, তাঁর সহযোগী ভূমিকা এবং যুদ্ধের মধ্যে অনুমোদিত সীমানা আসলে কী? কখন একজন নারী সজ্ঞানে এবং পরিকল্পিতভাবে এবং পুরুষের মতো সহজাতভাবে নিজের বা তাঁর মূল্যবোধের প্রতিরক্ষায় অস্ত্র তুলে নিতে রাজি হতে পারবেন? নারীরা কি সহজাতভাবে তুলনামূলক বেশি শান্তিপ্রিয়? তারা কি সক্ষম সৈনিক হতে পারে?
যুদ্ধ বা সহিংসতা ও নারী প্রশ্নে এই প্রশ্নগুলো খুবই মোক্ষম।
আমেরিকান ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক জোশুয়া গোল্ডস্টেইন তাঁর ‘ওয়ার অ্যান্ড জেন্ডার’ বইতে যুদ্ধে নারীদের অংশগ্রহণের সঙ্গে আন্তঃসাংস্কৃতিক ঐতিহাসিক প্রমাণগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। তিনি দেখেছেন ‘ইতিহাসের সমস্ত যোদ্ধার ১ শতাংশেরও কম নারী’।
আধুনিক স্থায়ী সেনাবাহিনীতে সৈনিকদের অধিকাংশই পুরুষ। যুদ্ধ একটি সামাজিকভাবে বৈচিত্র্যময় ঘটনা। প্রশ্ন করাই যায়, তাহলে কেন এখানে লিঙ্গ বৈচিত্র্য নেই হয়ে গেল? গোল্ডস্টেইন যুক্তি দিচ্ছেন, ‘যুদ্ধে মানুষ হত্যার ব্যাপারটা লিঙ্গ নির্বিশেষে কোনো স্বাভাবিক প্রবণতা নয়। তবুও যুদ্ধের সম্ভাবনা কিন্তু সর্বজনীন। যুদ্ধের প্রতি সৈন্যদের অনীহার মনোভাব কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করার জন্যই বিভিন্ন সংস্কৃতিতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে লিঙ্গের ভূমিকাকে বড় করে দেখানো হয়। একটি কঠিন পরিস্থিতিতে আরও কঠোরভাবে বুক চিতিয়ে দাঁড়ানোকে “পৌরুষদীপ্ত” কাজ বলা হয়!
আমরা ‘নারী যোদ্ধাকে’ গ্রহণ করতে খুব একটা স্বস্তি বোধ করি না। একটি দেশ এবং তার সামরিক বাহিনীর দায়িত্বে থাকা একজন নারী, বা যুদ্ধরত নারী সেনাপতি, প্রায়ই একটা যৌন অস্বাভাবিকতা হিসেবে দেখা হয়। যেমন ইতিহাসে আমরা অনেক বীরকে দেখি, যুদ্ধক্ষেত্রে নারীর বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরবেন না বলে চেচাচ্ছেন! ইতিহাসে হাতে গোনা যে কজন সফল নারী রাষ্ট্রপ্রধান বা যোদ্ধা, সেনাপতির কথা পাওয়া যায় সেগুলোর বর্ণনা এবং পাঠকদের মধ্যে উচ্ছ্বাসের বাড়াবাড়ি দেখলেই দৃষ্টিভঙ্গির এই অস্বস্তি ও অস্বাভাবিকতা অনুমান করা যায়।
সমাজে বা কর্মক্ষেত্রেও সামনের সারিতে সক্রিয় নারীরা যেন ‘সাপের গলায় ব্যাঙের’ মতো অস্বস্তি তৈরি করে। এই নারীদের সন্তান কত জন তা নিয়ে মিডিয়ার আগ্রহের শেষ নেই, তাঁর মাতৃত্বের বেপরোয়া অভাবকে তিরস্কার করা হয়। আর মৌলবাদের মতো ঘৃণিত মূল্যবোধের সঙ্গে তাঁর সংযোগ থাকলে তো কথাই নেই! ফ্যাসিবাদের সৈনিক হলেও মানা যায়, কিন্তু মৌলবাদী উগ্রপন্থীদের দলে গেলে তো তাকে দেশেই ঢুকতে দেওয়া হবে না!
আজকাল কম্পিউটার গেম, সিনেমা এবং ঢাউস আকৃতির সব বইয়ে ‘নারীশক্তিকে’ খুব মহিমান্বিত করা হয়। কিন্তু সেসব চরিত্রের সঙ্গে বাস্তবতার খুব কমই মিল থাকে।
এই প্রশ্নগুলো শুধু পুরুষত্বের ধারণার সঙ্গেই নয়, নারীবাদের ধারণাগুলোর সঙ্গেও সম্পর্কিত। নারীর যুদ্ধে অংশগ্রহণ কী ‘পুরুষতান্ত্রিক সহিংসতা-বিরোধী’ নারীবাদী নীতিকে ক্ষুণ্ন করে? ইতিহাস বলে, আমেরিকার নারী ভোটাধিকার আন্দোলনের অগ্রভাগের কেউ কেউ কংগ্রেসে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ এবং ট্রাফিক ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটানোর মতো কর্মসূচির পক্ষে ছিলেন। আন্দোলনটি শেষ পর্যন্ত অবশ্য শান্তিপূর্ণই ছিল।
যুদ্ধের সম্ভাব্য সকল ক্ষয়ক্ষতির অংশীদার হয় নারী। এর মধ্যে যুদ্ধের সবচেয়ে মারাত্মক মানবিক বিপর্যয়-পরিকল্পিত হত্যা, সেটিরও প্রথম শিকার হয় নারীরা। নিপীড়ন বা প্রতিশোধ নিতে দুর্বল ও সহজ লক্ষ্য হিসেবে ইতিহাসের বিভিন্ন যুদ্ধে ধর্ষণের ঘটনা পাওয়া যায়। কিন্তু ইতিহাসের পাতায় নারী সৈনিক কই?
নারীর কলমে যুদ্ধসাহিত্য প্রায় অনুপস্থিত
একটা যুদ্ধ পুরো সমাজকে গ্রাস করে, লিঙ্গ নির্বিশেষে যুদ্ধের আঁচ লাগে। কিন্তু নারীদের কলমে যুদ্ধের কথাসাহিত্য যেন অস্বাভাবিক ঘটনা। যেন যুদ্ধ নিয়ে কাল্পনিক কথাসাহিত্য তৈরির কল্পনা করার অধিকারটাও তাঁদের নেই!
মার্কিন ইতিহাসবিদ মার্গারেট ম্যাকমিলন বলেন, ‘সেনাবাহিনী এবং প্রতিষ্ঠান থেকে নারীদের বাদ দেওয়া একটা সাধারণ ঘটনা। ঐতিহাসিক নথি এবং শৈল্পিক প্রতিনিধিত্ব থেকেও তাদের বাদ দেওয়া হয়। সর্বোচ্চ যা ঘটে-নারী যোদ্ধাদের উদাহরণ প্রায়ই অবিশ্বস্ত সূত্রের বরাতে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয় যে সন্দেহ জাগতে বাধ্য।’
সম্মুখ সমরে নারী যোদ্ধাদের অংশীদারত্ব বেশ কমই। কিন্তু যুদ্ধের ঐতিহাসিক প্রবণতা বলছে, বহু নারীই সংঘাতে জড়িয়ে গিয়েছিলেন। তারা যুদ্ধ, প্রযুক্তি এবং কূটনীতিতে বিভিন্ন পর্যায়ে ভূমিকা রেখেছেন, গোয়েন্দা, যুদ্ধাস্ত্র এবং গুপ্তচরবৃত্তিতে কাজ করেছেন। দগদগে ক্ষত হয়ে থাকা দুটি বিশ্বযুদ্ধ তার প্রমাণ।
দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ এক সময় শেষ হয়ে যায়, নারীরা বেঁচে থাকে এবং পরিণতির যন্ত্রণা বয়ে বেড়ায়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে নারীরা যুদ্ধের নির্লিপ্ত ভুক্তভোগী থাকে না। তারা স্বামী, সন্তান, ভাই হারানোর শোক করে, জীবনযুদ্ধে টিকে থাকার লড়াই করে, অনেকে নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করতে বাধ্য হয়, পুরোনো পরিচয় ঝেড়ে ফেলে এবং যুদ্ধ তাদের ভাবনার নতুন আকৃতি দেয়।
এই ব্যাপারগুলো সরাসরি ভুক্তভোগীদের বয়ান থেকে বোঝার জন্য ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক একটি তথ্যচিত্র করেছে। রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটি এই কাজটির পৃষ্ঠপোষকতা দেয়। রেড ক্রস একটি প্রতিবেদনে বলছে, ‘এ ওম্যানস ওয়ার’ নামে তাদের প্রকল্পটি ‘নারী হিসেবে যুদ্ধের শিকার’ এমন গৎবাঁধা (স্টিরিওটাইপ) ধারণা ভেঙে দিয়েছে। নারীদের একাধিক জটিল এবং সংঘাতপূর্ণ ভূমিকা অন্বেষণ করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে নারীরা যোদ্ধা, মানবতাবাদী, মা, কন্যা, শ্রমিক, সম্প্রদায়ের নেতা এবং বেঁচে ফেরা সংগ্রামী সত্তা।
নারী সৈন্যদের কাজগুলোকে কখনোই গুরুত্ব সহকারে নথিবদ্ধ করা হয়নি। এই কারণেই সাহিত্যে নোবেলজয়ী বেলারুশিয়ান সাংবাদিক সোভেৎলানা আলেক্সিভিচের বিবরণে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত নারীদের যে ভূমিকা ও অবদান উঠে এসেছে তা সরকারি বয়ানে অনুপস্থিত। এই একটি কারণেই তাঁর ‘দ্য আনওম্যানলি ফেস অব ওয়ার’ বইটিকে অমূল্য সাহিত্যকর্ম বলা যায়।
ইরাক, ফিলিপাইন এবং দক্ষিণ নাইজেরিয়ার সংঘাত কবলিত এলাকার নারীদের অভিজ্ঞতা ও বয়ান রেকর্ড করেছে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক। অস্ত্র, গোলাবারুদের গর্জন থেমে গেলেও যুদ্ধবিধ্বস্ত গোষ্ঠীর আত্মপরিচয় যুদ্ধের মাধ্যমে নতুন রূপ ধারণ করতে থাকে। এ প্রক্রিয়া বহু দিন পর্যন্ত চলে। পেরুতে দেখা গেছে, স্প্যানিশ আগ্রাসনের বহু পুরোনো ক্ষত এখনো নিরাময় হয়নি।
চলমান ইউক্রেন যুদ্ধের কথাই ধরা যাক:
সূত্র: জাতিসংঘ
ওই সময় যুদ্ধে শ্রমিক হিসেবে সারা দেশ থেকে নিয়োগ দেওয়া হয় প্রায় ১৪ লাখ নারী।
সূত্র: দ্য ওয়ার্ল্ডওয়াল ডটঅর্গ
ইউক্রেন পরিস্থিতি
জাতিসংঘের লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণ এবং নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ক সংস্থা ইউএন উইমেন এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কেয়ারের ‘র্যাপিড জেন্ডার অ্যানালাইসিস ইন ইউক্রেন’ প্রতিবেদন অনুসারে, ইউক্রেনের বাধ্যতামূলক অভিবাসী হওয়া ৯০ শতাংশই নারী ও শিশু। যুদ্ধ যেহেতু চলমান এ সংখ্যা যে ক্রমে বাড়ছে তাতে সন্দেহ নেই।
এখন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট নানামুখী সমস্যা এবং অতিরিক্ত দায় ঘর কন্যার বোঝা টানা ইউক্রেনীয় নারীদের ঘাড়ে চেপেছে। কিন্তু এই ধরনের একটি অস্থির পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্ল্যাটফর্মে নারী কই? পরিস্থিতির উত্তেজনা প্রশমন, সংঘাত নিরসন এবং ইউক্রেন ও এর বাইরের মানুষের শান্তি ও নিরাপত্তা বিধানের বৈশ্বিক প্রক্রিয়ায় নারীদের অংশ তো সেভাবে দৃশ্যমান নয়। এছাড়া লিঙ্গবৈষম্য ও গৃহনির্যাতনের অপরাধ ইউরোপের মধ্যে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি ঘটে ইউক্রেনে। সক্ষম পুরুষেরা যুদ্ধের ময়দানে, একা নারী ভিন দেশে কীভাবে সব সামলাচ্ছেন!
লিঙ্গ ইস্যু নিয়ে কাজ করা এমনিতেই খুব জটিল। কারণ এটি বুঝতে চাইলে ক্ষমতা এবং বিশেষাধিকার, একটি সম্প্রদায়ের আচার এবং প্রত্যাশাকে একত্রে বুঝতে হয়। সংঘাত বিদ্যমান (লিঙ্গ) বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে দেয়। যখন পরিবারের উপার্জনকারী ব্যক্তি-যিনি সাধারণত হোন একজন পুরুষ-যুদ্ধে যায় বা নিহত হয় তখন কী ঘটে? সামাজিক ভূমিকার পরিবর্তন হয়। পুরুষ প্রধান সমাজে তখন নারীদের জন্য এমন সুযোগ উন্মুক্ত হয় যা আগে কখনো ছিল না।
বলা যেতে পারে, যুদ্ধে নারীদের ব্যবহার করা হয়। কিন্তু তাদের কাজকে সম্মানিত বা স্মরণ করা হয় না। এমনকি মানবাধিকার উন্নয়নের এই যুগে এসেও আমরা যুদ্ধে নারী ও শিশুদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার ঘটনা দেখছি।
যুদ্ধ শেষে নারীদের ঘরে ফেরানো হয়, অধস্তন করে রাখা হয়। ফ্রান্স থেকে স্বাধীনতার জন্য লড়াইয়ে ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (এফএলএন) আলজেরীয় নারীদের পুরুষদের সমান বিপজ্জনক ভূমিকায় ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যুদ্ধ ফেরত হিসেবে তার অধিকার এবং পেনশন থেকে তাকে বঞ্চিত করা হয়েছিল।
নারী সৈন্যরা যুদ্ধ থেকে জীবিত ফিরে এলেও কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত থাকেন। তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মধ্যে অঙ্গীভূত করা হয় না। শুধু স্মৃতির সমতা নয়, যুদ্ধের একটি সামগ্রিক ‘চেতনা’, রোল মডেল এবং বিকল্প নায়িকা হয়ে ওঠার সম্ভাবনা এবং মানবীয় অভিজ্ঞতায় নারীর ক্ষমতার আলোকচ্ছটায় উজ্জ্বল হতে পারার একটি দারুণ সুযোগ সমাজ তার গভীরভাবে প্রোথিত সংস্কারের কারণে হাতছাড়া করে।
যুদ্ধ যদি অনিবার্যভাবেই মানবীয় ব্যাপার হয় তাহলে এটি তো নারী ও পুরুষ উভয়ের প্রশ্ন হওয়ার কথা। ভারী অস্ত্র বহনের জন্য পুরুষের কাঁধ বিকশিত হয়েছে, এর সপক্ষে জৈবিক ব্যাখ্যা হাজির করা যেতে পারে কিন্তু হরমোনগত কারণে নারীরা শান্তিপ্রিয় স্নায়ুবিজ্ঞান এই ধারণাকে বাতিল করে দেয়। নারীরা সর্বদা শান্তিপ্রিয় বা শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী, ঘটনার শিকার, পুরুষকে কাপুরুষ বলে তাচ্ছিল্য করা অন্দর বাসিনী বা লাল লিপস্টিকে ঠোঁট রাঙানো মনোবল বৃদ্ধিকারীনি নয়। সহিংসতা দিয়ে সহিংসতার সমাধান হয়তো কখনো হয়। কিন্তু লিঙ্গবৈষম্যের ধারণা কখনো জ্ঞান ও শান্তি বয়ে আনে না।
অবশ্য নানা যুদ্ধে স্পষ্টভাবেই প্রমাণিত নারীরা হলেন স্বাভাবিকতায় ফেরার নির্ভরযোগ্য নেতৃত্ব। তাঁদের কোমল হাত, দুর্বল কাঁধ যুদ্ধের ক্ষত সারিয়ে তুলতে সক্ষম।
তথ্যসূত্র: ইউএন উইমেন, দ্য গার্ডিয়ান, আইসিআরসি, ইউএনএফপিএ, এনপিআর

আমরা এক ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ পৃথিবীতে বাস করছি। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ প্রভাব টের পাচ্ছে বৈশ্বিক উষ্ণতায় সরাসরি ভূমিকা রাখা উন্নত দেশগুলোও। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক সংকট কঠিনতর হয়ে উঠছে। সব মিলিয়ে উদ্বেগজনক বৈশ্বিক তাপমাত্রা, দায়িত্বজ্ঞানহীন স্বৈরশাসক, চরমপন্থার উত্থান, অধিকারের নতুন মাত্রা এবং সরকার ও করপোরেটের ধ্বংসাত্মক নীতি ক্রমেই মানবজাতিকে বিশৃঙ্খলার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। মানুষের মধ্যে ক্রোধ, হতাশা এবং বিদ্রোহের দাবানলে ঘি ঢালছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
এক শতাংশের কম নারীযোদ্ধা
এই বিশৃঙ্খল বিক্ষুব্ধ পৃথিবীতে কিন্তু অনেক দৃঢ়চেতা নারীকে প্রতিরোধে এগিয়ে আসতে দেখছি। আমাদের সামনে গ্রেটা থুনবার্গ, নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্নের মতো নারীদের উদাহরণ জ্বলজ্বল করছে। তাঁদের সাহসী পদক্ষেপ আমাদের আপ্লুত করছে। কিন্তু একজন নারী যদি আক্ষরিক অর্থেই একটি সশস্ত্র লড়াইয়ে যুক্ত হওয়ার সুযোগ বেছে নেন? নারীর এমন সাহসিকতা কিন্তু পুরুষশাসিত কর্তৃত্ববাদী সমাজ এখনো উদ্যাপন করার উদারতা অর্জন করতে পারেনি।
বিশ শতকের প্রথম দিকে ইউরোপ থেকে বহু তরুণ যুবক প্রোপাগান্ডায় প্রভাবিত হয়ে যুদ্ধে গেছে। তারা কেউ ভুক্তভোগী, কেউ কঠিন পরিস্থিতির নায়ক অথবা অনুপ্রেরণা।
কিন্তু একজন নারী যদি নিজ ইচ্ছায় কোনো সহিংসতার কাছাকাছিও যান, এমনকি হাতে অস্ত্র তুলে না নিলেও এখনো ব্যাপক সামাজিক অস্থিরতার কারণ হয়ে দাঁড়ান। কঠোর সমালোচনা এবং প্রায়ই শাস্তির মুখোমুখি হতে হয় তাঁকে।
তাহলে নারী ও সহিংসতা, তাঁর সহযোগী ভূমিকা এবং যুদ্ধের মধ্যে অনুমোদিত সীমানা আসলে কী? কখন একজন নারী সজ্ঞানে এবং পরিকল্পিতভাবে এবং পুরুষের মতো সহজাতভাবে নিজের বা তাঁর মূল্যবোধের প্রতিরক্ষায় অস্ত্র তুলে নিতে রাজি হতে পারবেন? নারীরা কি সহজাতভাবে তুলনামূলক বেশি শান্তিপ্রিয়? তারা কি সক্ষম সৈনিক হতে পারে?
যুদ্ধ বা সহিংসতা ও নারী প্রশ্নে এই প্রশ্নগুলো খুবই মোক্ষম।
আমেরিকান ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক জোশুয়া গোল্ডস্টেইন তাঁর ‘ওয়ার অ্যান্ড জেন্ডার’ বইতে যুদ্ধে নারীদের অংশগ্রহণের সঙ্গে আন্তঃসাংস্কৃতিক ঐতিহাসিক প্রমাণগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। তিনি দেখেছেন ‘ইতিহাসের সমস্ত যোদ্ধার ১ শতাংশেরও কম নারী’।
আধুনিক স্থায়ী সেনাবাহিনীতে সৈনিকদের অধিকাংশই পুরুষ। যুদ্ধ একটি সামাজিকভাবে বৈচিত্র্যময় ঘটনা। প্রশ্ন করাই যায়, তাহলে কেন এখানে লিঙ্গ বৈচিত্র্য নেই হয়ে গেল? গোল্ডস্টেইন যুক্তি দিচ্ছেন, ‘যুদ্ধে মানুষ হত্যার ব্যাপারটা লিঙ্গ নির্বিশেষে কোনো স্বাভাবিক প্রবণতা নয়। তবুও যুদ্ধের সম্ভাবনা কিন্তু সর্বজনীন। যুদ্ধের প্রতি সৈন্যদের অনীহার মনোভাব কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করার জন্যই বিভিন্ন সংস্কৃতিতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে লিঙ্গের ভূমিকাকে বড় করে দেখানো হয়। একটি কঠিন পরিস্থিতিতে আরও কঠোরভাবে বুক চিতিয়ে দাঁড়ানোকে “পৌরুষদীপ্ত” কাজ বলা হয়!
আমরা ‘নারী যোদ্ধাকে’ গ্রহণ করতে খুব একটা স্বস্তি বোধ করি না। একটি দেশ এবং তার সামরিক বাহিনীর দায়িত্বে থাকা একজন নারী, বা যুদ্ধরত নারী সেনাপতি, প্রায়ই একটা যৌন অস্বাভাবিকতা হিসেবে দেখা হয়। যেমন ইতিহাসে আমরা অনেক বীরকে দেখি, যুদ্ধক্ষেত্রে নারীর বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরবেন না বলে চেচাচ্ছেন! ইতিহাসে হাতে গোনা যে কজন সফল নারী রাষ্ট্রপ্রধান বা যোদ্ধা, সেনাপতির কথা পাওয়া যায় সেগুলোর বর্ণনা এবং পাঠকদের মধ্যে উচ্ছ্বাসের বাড়াবাড়ি দেখলেই দৃষ্টিভঙ্গির এই অস্বস্তি ও অস্বাভাবিকতা অনুমান করা যায়।
সমাজে বা কর্মক্ষেত্রেও সামনের সারিতে সক্রিয় নারীরা যেন ‘সাপের গলায় ব্যাঙের’ মতো অস্বস্তি তৈরি করে। এই নারীদের সন্তান কত জন তা নিয়ে মিডিয়ার আগ্রহের শেষ নেই, তাঁর মাতৃত্বের বেপরোয়া অভাবকে তিরস্কার করা হয়। আর মৌলবাদের মতো ঘৃণিত মূল্যবোধের সঙ্গে তাঁর সংযোগ থাকলে তো কথাই নেই! ফ্যাসিবাদের সৈনিক হলেও মানা যায়, কিন্তু মৌলবাদী উগ্রপন্থীদের দলে গেলে তো তাকে দেশেই ঢুকতে দেওয়া হবে না!
আজকাল কম্পিউটার গেম, সিনেমা এবং ঢাউস আকৃতির সব বইয়ে ‘নারীশক্তিকে’ খুব মহিমান্বিত করা হয়। কিন্তু সেসব চরিত্রের সঙ্গে বাস্তবতার খুব কমই মিল থাকে।
এই প্রশ্নগুলো শুধু পুরুষত্বের ধারণার সঙ্গেই নয়, নারীবাদের ধারণাগুলোর সঙ্গেও সম্পর্কিত। নারীর যুদ্ধে অংশগ্রহণ কী ‘পুরুষতান্ত্রিক সহিংসতা-বিরোধী’ নারীবাদী নীতিকে ক্ষুণ্ন করে? ইতিহাস বলে, আমেরিকার নারী ভোটাধিকার আন্দোলনের অগ্রভাগের কেউ কেউ কংগ্রেসে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ এবং ট্রাফিক ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটানোর মতো কর্মসূচির পক্ষে ছিলেন। আন্দোলনটি শেষ পর্যন্ত অবশ্য শান্তিপূর্ণই ছিল।
যুদ্ধের সম্ভাব্য সকল ক্ষয়ক্ষতির অংশীদার হয় নারী। এর মধ্যে যুদ্ধের সবচেয়ে মারাত্মক মানবিক বিপর্যয়-পরিকল্পিত হত্যা, সেটিরও প্রথম শিকার হয় নারীরা। নিপীড়ন বা প্রতিশোধ নিতে দুর্বল ও সহজ লক্ষ্য হিসেবে ইতিহাসের বিভিন্ন যুদ্ধে ধর্ষণের ঘটনা পাওয়া যায়। কিন্তু ইতিহাসের পাতায় নারী সৈনিক কই?
নারীর কলমে যুদ্ধসাহিত্য প্রায় অনুপস্থিত
একটা যুদ্ধ পুরো সমাজকে গ্রাস করে, লিঙ্গ নির্বিশেষে যুদ্ধের আঁচ লাগে। কিন্তু নারীদের কলমে যুদ্ধের কথাসাহিত্য যেন অস্বাভাবিক ঘটনা। যেন যুদ্ধ নিয়ে কাল্পনিক কথাসাহিত্য তৈরির কল্পনা করার অধিকারটাও তাঁদের নেই!
মার্কিন ইতিহাসবিদ মার্গারেট ম্যাকমিলন বলেন, ‘সেনাবাহিনী এবং প্রতিষ্ঠান থেকে নারীদের বাদ দেওয়া একটা সাধারণ ঘটনা। ঐতিহাসিক নথি এবং শৈল্পিক প্রতিনিধিত্ব থেকেও তাদের বাদ দেওয়া হয়। সর্বোচ্চ যা ঘটে-নারী যোদ্ধাদের উদাহরণ প্রায়ই অবিশ্বস্ত সূত্রের বরাতে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয় যে সন্দেহ জাগতে বাধ্য।’
সম্মুখ সমরে নারী যোদ্ধাদের অংশীদারত্ব বেশ কমই। কিন্তু যুদ্ধের ঐতিহাসিক প্রবণতা বলছে, বহু নারীই সংঘাতে জড়িয়ে গিয়েছিলেন। তারা যুদ্ধ, প্রযুক্তি এবং কূটনীতিতে বিভিন্ন পর্যায়ে ভূমিকা রেখেছেন, গোয়েন্দা, যুদ্ধাস্ত্র এবং গুপ্তচরবৃত্তিতে কাজ করেছেন। দগদগে ক্ষত হয়ে থাকা দুটি বিশ্বযুদ্ধ তার প্রমাণ।
দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ এক সময় শেষ হয়ে যায়, নারীরা বেঁচে থাকে এবং পরিণতির যন্ত্রণা বয়ে বেড়ায়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে নারীরা যুদ্ধের নির্লিপ্ত ভুক্তভোগী থাকে না। তারা স্বামী, সন্তান, ভাই হারানোর শোক করে, জীবনযুদ্ধে টিকে থাকার লড়াই করে, অনেকে নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করতে বাধ্য হয়, পুরোনো পরিচয় ঝেড়ে ফেলে এবং যুদ্ধ তাদের ভাবনার নতুন আকৃতি দেয়।
এই ব্যাপারগুলো সরাসরি ভুক্তভোগীদের বয়ান থেকে বোঝার জন্য ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক একটি তথ্যচিত্র করেছে। রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটি এই কাজটির পৃষ্ঠপোষকতা দেয়। রেড ক্রস একটি প্রতিবেদনে বলছে, ‘এ ওম্যানস ওয়ার’ নামে তাদের প্রকল্পটি ‘নারী হিসেবে যুদ্ধের শিকার’ এমন গৎবাঁধা (স্টিরিওটাইপ) ধারণা ভেঙে দিয়েছে। নারীদের একাধিক জটিল এবং সংঘাতপূর্ণ ভূমিকা অন্বেষণ করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে নারীরা যোদ্ধা, মানবতাবাদী, মা, কন্যা, শ্রমিক, সম্প্রদায়ের নেতা এবং বেঁচে ফেরা সংগ্রামী সত্তা।
নারী সৈন্যদের কাজগুলোকে কখনোই গুরুত্ব সহকারে নথিবদ্ধ করা হয়নি। এই কারণেই সাহিত্যে নোবেলজয়ী বেলারুশিয়ান সাংবাদিক সোভেৎলানা আলেক্সিভিচের বিবরণে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত নারীদের যে ভূমিকা ও অবদান উঠে এসেছে তা সরকারি বয়ানে অনুপস্থিত। এই একটি কারণেই তাঁর ‘দ্য আনওম্যানলি ফেস অব ওয়ার’ বইটিকে অমূল্য সাহিত্যকর্ম বলা যায়।
ইরাক, ফিলিপাইন এবং দক্ষিণ নাইজেরিয়ার সংঘাত কবলিত এলাকার নারীদের অভিজ্ঞতা ও বয়ান রেকর্ড করেছে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক। অস্ত্র, গোলাবারুদের গর্জন থেমে গেলেও যুদ্ধবিধ্বস্ত গোষ্ঠীর আত্মপরিচয় যুদ্ধের মাধ্যমে নতুন রূপ ধারণ করতে থাকে। এ প্রক্রিয়া বহু দিন পর্যন্ত চলে। পেরুতে দেখা গেছে, স্প্যানিশ আগ্রাসনের বহু পুরোনো ক্ষত এখনো নিরাময় হয়নি।
চলমান ইউক্রেন যুদ্ধের কথাই ধরা যাক:
সূত্র: জাতিসংঘ
ওই সময় যুদ্ধে শ্রমিক হিসেবে সারা দেশ থেকে নিয়োগ দেওয়া হয় প্রায় ১৪ লাখ নারী।
সূত্র: দ্য ওয়ার্ল্ডওয়াল ডটঅর্গ
ইউক্রেন পরিস্থিতি
জাতিসংঘের লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণ এবং নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ক সংস্থা ইউএন উইমেন এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কেয়ারের ‘র্যাপিড জেন্ডার অ্যানালাইসিস ইন ইউক্রেন’ প্রতিবেদন অনুসারে, ইউক্রেনের বাধ্যতামূলক অভিবাসী হওয়া ৯০ শতাংশই নারী ও শিশু। যুদ্ধ যেহেতু চলমান এ সংখ্যা যে ক্রমে বাড়ছে তাতে সন্দেহ নেই।
এখন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট নানামুখী সমস্যা এবং অতিরিক্ত দায় ঘর কন্যার বোঝা টানা ইউক্রেনীয় নারীদের ঘাড়ে চেপেছে। কিন্তু এই ধরনের একটি অস্থির পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্ল্যাটফর্মে নারী কই? পরিস্থিতির উত্তেজনা প্রশমন, সংঘাত নিরসন এবং ইউক্রেন ও এর বাইরের মানুষের শান্তি ও নিরাপত্তা বিধানের বৈশ্বিক প্রক্রিয়ায় নারীদের অংশ তো সেভাবে দৃশ্যমান নয়। এছাড়া লিঙ্গবৈষম্য ও গৃহনির্যাতনের অপরাধ ইউরোপের মধ্যে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি ঘটে ইউক্রেনে। সক্ষম পুরুষেরা যুদ্ধের ময়দানে, একা নারী ভিন দেশে কীভাবে সব সামলাচ্ছেন!
লিঙ্গ ইস্যু নিয়ে কাজ করা এমনিতেই খুব জটিল। কারণ এটি বুঝতে চাইলে ক্ষমতা এবং বিশেষাধিকার, একটি সম্প্রদায়ের আচার এবং প্রত্যাশাকে একত্রে বুঝতে হয়। সংঘাত বিদ্যমান (লিঙ্গ) বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে দেয়। যখন পরিবারের উপার্জনকারী ব্যক্তি-যিনি সাধারণত হোন একজন পুরুষ-যুদ্ধে যায় বা নিহত হয় তখন কী ঘটে? সামাজিক ভূমিকার পরিবর্তন হয়। পুরুষ প্রধান সমাজে তখন নারীদের জন্য এমন সুযোগ উন্মুক্ত হয় যা আগে কখনো ছিল না।
বলা যেতে পারে, যুদ্ধে নারীদের ব্যবহার করা হয়। কিন্তু তাদের কাজকে সম্মানিত বা স্মরণ করা হয় না। এমনকি মানবাধিকার উন্নয়নের এই যুগে এসেও আমরা যুদ্ধে নারী ও শিশুদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার ঘটনা দেখছি।
যুদ্ধ শেষে নারীদের ঘরে ফেরানো হয়, অধস্তন করে রাখা হয়। ফ্রান্স থেকে স্বাধীনতার জন্য লড়াইয়ে ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (এফএলএন) আলজেরীয় নারীদের পুরুষদের সমান বিপজ্জনক ভূমিকায় ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যুদ্ধ ফেরত হিসেবে তার অধিকার এবং পেনশন থেকে তাকে বঞ্চিত করা হয়েছিল।
নারী সৈন্যরা যুদ্ধ থেকে জীবিত ফিরে এলেও কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত থাকেন। তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মধ্যে অঙ্গীভূত করা হয় না। শুধু স্মৃতির সমতা নয়, যুদ্ধের একটি সামগ্রিক ‘চেতনা’, রোল মডেল এবং বিকল্প নায়িকা হয়ে ওঠার সম্ভাবনা এবং মানবীয় অভিজ্ঞতায় নারীর ক্ষমতার আলোকচ্ছটায় উজ্জ্বল হতে পারার একটি দারুণ সুযোগ সমাজ তার গভীরভাবে প্রোথিত সংস্কারের কারণে হাতছাড়া করে।
যুদ্ধ যদি অনিবার্যভাবেই মানবীয় ব্যাপার হয় তাহলে এটি তো নারী ও পুরুষ উভয়ের প্রশ্ন হওয়ার কথা। ভারী অস্ত্র বহনের জন্য পুরুষের কাঁধ বিকশিত হয়েছে, এর সপক্ষে জৈবিক ব্যাখ্যা হাজির করা যেতে পারে কিন্তু হরমোনগত কারণে নারীরা শান্তিপ্রিয় স্নায়ুবিজ্ঞান এই ধারণাকে বাতিল করে দেয়। নারীরা সর্বদা শান্তিপ্রিয় বা শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী, ঘটনার শিকার, পুরুষকে কাপুরুষ বলে তাচ্ছিল্য করা অন্দর বাসিনী বা লাল লিপস্টিকে ঠোঁট রাঙানো মনোবল বৃদ্ধিকারীনি নয়। সহিংসতা দিয়ে সহিংসতার সমাধান হয়তো কখনো হয়। কিন্তু লিঙ্গবৈষম্যের ধারণা কখনো জ্ঞান ও শান্তি বয়ে আনে না।
অবশ্য নানা যুদ্ধে স্পষ্টভাবেই প্রমাণিত নারীরা হলেন স্বাভাবিকতায় ফেরার নির্ভরযোগ্য নেতৃত্ব। তাঁদের কোমল হাত, দুর্বল কাঁধ যুদ্ধের ক্ষত সারিয়ে তুলতে সক্ষম।
তথ্যসূত্র: ইউএন উইমেন, দ্য গার্ডিয়ান, আইসিআরসি, ইউএনএফপিএ, এনপিআর
জাহাঙ্গীর আলম, ঢাকা

আমরা এক ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ পৃথিবীতে বাস করছি। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ প্রভাব টের পাচ্ছে বৈশ্বিক উষ্ণতায় সরাসরি ভূমিকা রাখা উন্নত দেশগুলোও। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক সংকট কঠিনতর হয়ে উঠছে। সব মিলিয়ে উদ্বেগজনক বৈশ্বিক তাপমাত্রা, দায়িত্বজ্ঞানহীন স্বৈরশাসক, চরমপন্থার উত্থান, অধিকারের নতুন মাত্রা এবং সরকার ও করপোরেটের ধ্বংসাত্মক নীতি ক্রমেই মানবজাতিকে বিশৃঙ্খলার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। মানুষের মধ্যে ক্রোধ, হতাশা এবং বিদ্রোহের দাবানলে ঘি ঢালছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
এক শতাংশের কম নারীযোদ্ধা
এই বিশৃঙ্খল বিক্ষুব্ধ পৃথিবীতে কিন্তু অনেক দৃঢ়চেতা নারীকে প্রতিরোধে এগিয়ে আসতে দেখছি। আমাদের সামনে গ্রেটা থুনবার্গ, নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্নের মতো নারীদের উদাহরণ জ্বলজ্বল করছে। তাঁদের সাহসী পদক্ষেপ আমাদের আপ্লুত করছে। কিন্তু একজন নারী যদি আক্ষরিক অর্থেই একটি সশস্ত্র লড়াইয়ে যুক্ত হওয়ার সুযোগ বেছে নেন? নারীর এমন সাহসিকতা কিন্তু পুরুষশাসিত কর্তৃত্ববাদী সমাজ এখনো উদ্যাপন করার উদারতা অর্জন করতে পারেনি।
বিশ শতকের প্রথম দিকে ইউরোপ থেকে বহু তরুণ যুবক প্রোপাগান্ডায় প্রভাবিত হয়ে যুদ্ধে গেছে। তারা কেউ ভুক্তভোগী, কেউ কঠিন পরিস্থিতির নায়ক অথবা অনুপ্রেরণা।
কিন্তু একজন নারী যদি নিজ ইচ্ছায় কোনো সহিংসতার কাছাকাছিও যান, এমনকি হাতে অস্ত্র তুলে না নিলেও এখনো ব্যাপক সামাজিক অস্থিরতার কারণ হয়ে দাঁড়ান। কঠোর সমালোচনা এবং প্রায়ই শাস্তির মুখোমুখি হতে হয় তাঁকে।
তাহলে নারী ও সহিংসতা, তাঁর সহযোগী ভূমিকা এবং যুদ্ধের মধ্যে অনুমোদিত সীমানা আসলে কী? কখন একজন নারী সজ্ঞানে এবং পরিকল্পিতভাবে এবং পুরুষের মতো সহজাতভাবে নিজের বা তাঁর মূল্যবোধের প্রতিরক্ষায় অস্ত্র তুলে নিতে রাজি হতে পারবেন? নারীরা কি সহজাতভাবে তুলনামূলক বেশি শান্তিপ্রিয়? তারা কি সক্ষম সৈনিক হতে পারে?
যুদ্ধ বা সহিংসতা ও নারী প্রশ্নে এই প্রশ্নগুলো খুবই মোক্ষম।
আমেরিকান ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক জোশুয়া গোল্ডস্টেইন তাঁর ‘ওয়ার অ্যান্ড জেন্ডার’ বইতে যুদ্ধে নারীদের অংশগ্রহণের সঙ্গে আন্তঃসাংস্কৃতিক ঐতিহাসিক প্রমাণগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। তিনি দেখেছেন ‘ইতিহাসের সমস্ত যোদ্ধার ১ শতাংশেরও কম নারী’।
আধুনিক স্থায়ী সেনাবাহিনীতে সৈনিকদের অধিকাংশই পুরুষ। যুদ্ধ একটি সামাজিকভাবে বৈচিত্র্যময় ঘটনা। প্রশ্ন করাই যায়, তাহলে কেন এখানে লিঙ্গ বৈচিত্র্য নেই হয়ে গেল? গোল্ডস্টেইন যুক্তি দিচ্ছেন, ‘যুদ্ধে মানুষ হত্যার ব্যাপারটা লিঙ্গ নির্বিশেষে কোনো স্বাভাবিক প্রবণতা নয়। তবুও যুদ্ধের সম্ভাবনা কিন্তু সর্বজনীন। যুদ্ধের প্রতি সৈন্যদের অনীহার মনোভাব কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করার জন্যই বিভিন্ন সংস্কৃতিতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে লিঙ্গের ভূমিকাকে বড় করে দেখানো হয়। একটি কঠিন পরিস্থিতিতে আরও কঠোরভাবে বুক চিতিয়ে দাঁড়ানোকে “পৌরুষদীপ্ত” কাজ বলা হয়!
আমরা ‘নারী যোদ্ধাকে’ গ্রহণ করতে খুব একটা স্বস্তি বোধ করি না। একটি দেশ এবং তার সামরিক বাহিনীর দায়িত্বে থাকা একজন নারী, বা যুদ্ধরত নারী সেনাপতি, প্রায়ই একটা যৌন অস্বাভাবিকতা হিসেবে দেখা হয়। যেমন ইতিহাসে আমরা অনেক বীরকে দেখি, যুদ্ধক্ষেত্রে নারীর বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরবেন না বলে চেচাচ্ছেন! ইতিহাসে হাতে গোনা যে কজন সফল নারী রাষ্ট্রপ্রধান বা যোদ্ধা, সেনাপতির কথা পাওয়া যায় সেগুলোর বর্ণনা এবং পাঠকদের মধ্যে উচ্ছ্বাসের বাড়াবাড়ি দেখলেই দৃষ্টিভঙ্গির এই অস্বস্তি ও অস্বাভাবিকতা অনুমান করা যায়।
সমাজে বা কর্মক্ষেত্রেও সামনের সারিতে সক্রিয় নারীরা যেন ‘সাপের গলায় ব্যাঙের’ মতো অস্বস্তি তৈরি করে। এই নারীদের সন্তান কত জন তা নিয়ে মিডিয়ার আগ্রহের শেষ নেই, তাঁর মাতৃত্বের বেপরোয়া অভাবকে তিরস্কার করা হয়। আর মৌলবাদের মতো ঘৃণিত মূল্যবোধের সঙ্গে তাঁর সংযোগ থাকলে তো কথাই নেই! ফ্যাসিবাদের সৈনিক হলেও মানা যায়, কিন্তু মৌলবাদী উগ্রপন্থীদের দলে গেলে তো তাকে দেশেই ঢুকতে দেওয়া হবে না!
আজকাল কম্পিউটার গেম, সিনেমা এবং ঢাউস আকৃতির সব বইয়ে ‘নারীশক্তিকে’ খুব মহিমান্বিত করা হয়। কিন্তু সেসব চরিত্রের সঙ্গে বাস্তবতার খুব কমই মিল থাকে।
এই প্রশ্নগুলো শুধু পুরুষত্বের ধারণার সঙ্গেই নয়, নারীবাদের ধারণাগুলোর সঙ্গেও সম্পর্কিত। নারীর যুদ্ধে অংশগ্রহণ কী ‘পুরুষতান্ত্রিক সহিংসতা-বিরোধী’ নারীবাদী নীতিকে ক্ষুণ্ন করে? ইতিহাস বলে, আমেরিকার নারী ভোটাধিকার আন্দোলনের অগ্রভাগের কেউ কেউ কংগ্রেসে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ এবং ট্রাফিক ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটানোর মতো কর্মসূচির পক্ষে ছিলেন। আন্দোলনটি শেষ পর্যন্ত অবশ্য শান্তিপূর্ণই ছিল।
যুদ্ধের সম্ভাব্য সকল ক্ষয়ক্ষতির অংশীদার হয় নারী। এর মধ্যে যুদ্ধের সবচেয়ে মারাত্মক মানবিক বিপর্যয়-পরিকল্পিত হত্যা, সেটিরও প্রথম শিকার হয় নারীরা। নিপীড়ন বা প্রতিশোধ নিতে দুর্বল ও সহজ লক্ষ্য হিসেবে ইতিহাসের বিভিন্ন যুদ্ধে ধর্ষণের ঘটনা পাওয়া যায়। কিন্তু ইতিহাসের পাতায় নারী সৈনিক কই?
নারীর কলমে যুদ্ধসাহিত্য প্রায় অনুপস্থিত
একটা যুদ্ধ পুরো সমাজকে গ্রাস করে, লিঙ্গ নির্বিশেষে যুদ্ধের আঁচ লাগে। কিন্তু নারীদের কলমে যুদ্ধের কথাসাহিত্য যেন অস্বাভাবিক ঘটনা। যেন যুদ্ধ নিয়ে কাল্পনিক কথাসাহিত্য তৈরির কল্পনা করার অধিকারটাও তাঁদের নেই!
মার্কিন ইতিহাসবিদ মার্গারেট ম্যাকমিলন বলেন, ‘সেনাবাহিনী এবং প্রতিষ্ঠান থেকে নারীদের বাদ দেওয়া একটা সাধারণ ঘটনা। ঐতিহাসিক নথি এবং শৈল্পিক প্রতিনিধিত্ব থেকেও তাদের বাদ দেওয়া হয়। সর্বোচ্চ যা ঘটে-নারী যোদ্ধাদের উদাহরণ প্রায়ই অবিশ্বস্ত সূত্রের বরাতে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয় যে সন্দেহ জাগতে বাধ্য।’
সম্মুখ সমরে নারী যোদ্ধাদের অংশীদারত্ব বেশ কমই। কিন্তু যুদ্ধের ঐতিহাসিক প্রবণতা বলছে, বহু নারীই সংঘাতে জড়িয়ে গিয়েছিলেন। তারা যুদ্ধ, প্রযুক্তি এবং কূটনীতিতে বিভিন্ন পর্যায়ে ভূমিকা রেখেছেন, গোয়েন্দা, যুদ্ধাস্ত্র এবং গুপ্তচরবৃত্তিতে কাজ করেছেন। দগদগে ক্ষত হয়ে থাকা দুটি বিশ্বযুদ্ধ তার প্রমাণ।
দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ এক সময় শেষ হয়ে যায়, নারীরা বেঁচে থাকে এবং পরিণতির যন্ত্রণা বয়ে বেড়ায়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে নারীরা যুদ্ধের নির্লিপ্ত ভুক্তভোগী থাকে না। তারা স্বামী, সন্তান, ভাই হারানোর শোক করে, জীবনযুদ্ধে টিকে থাকার লড়াই করে, অনেকে নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করতে বাধ্য হয়, পুরোনো পরিচয় ঝেড়ে ফেলে এবং যুদ্ধ তাদের ভাবনার নতুন আকৃতি দেয়।
এই ব্যাপারগুলো সরাসরি ভুক্তভোগীদের বয়ান থেকে বোঝার জন্য ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক একটি তথ্যচিত্র করেছে। রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটি এই কাজটির পৃষ্ঠপোষকতা দেয়। রেড ক্রস একটি প্রতিবেদনে বলছে, ‘এ ওম্যানস ওয়ার’ নামে তাদের প্রকল্পটি ‘নারী হিসেবে যুদ্ধের শিকার’ এমন গৎবাঁধা (স্টিরিওটাইপ) ধারণা ভেঙে দিয়েছে। নারীদের একাধিক জটিল এবং সংঘাতপূর্ণ ভূমিকা অন্বেষণ করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে নারীরা যোদ্ধা, মানবতাবাদী, মা, কন্যা, শ্রমিক, সম্প্রদায়ের নেতা এবং বেঁচে ফেরা সংগ্রামী সত্তা।
নারী সৈন্যদের কাজগুলোকে কখনোই গুরুত্ব সহকারে নথিবদ্ধ করা হয়নি। এই কারণেই সাহিত্যে নোবেলজয়ী বেলারুশিয়ান সাংবাদিক সোভেৎলানা আলেক্সিভিচের বিবরণে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত নারীদের যে ভূমিকা ও অবদান উঠে এসেছে তা সরকারি বয়ানে অনুপস্থিত। এই একটি কারণেই তাঁর ‘দ্য আনওম্যানলি ফেস অব ওয়ার’ বইটিকে অমূল্য সাহিত্যকর্ম বলা যায়।
ইরাক, ফিলিপাইন এবং দক্ষিণ নাইজেরিয়ার সংঘাত কবলিত এলাকার নারীদের অভিজ্ঞতা ও বয়ান রেকর্ড করেছে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক। অস্ত্র, গোলাবারুদের গর্জন থেমে গেলেও যুদ্ধবিধ্বস্ত গোষ্ঠীর আত্মপরিচয় যুদ্ধের মাধ্যমে নতুন রূপ ধারণ করতে থাকে। এ প্রক্রিয়া বহু দিন পর্যন্ত চলে। পেরুতে দেখা গেছে, স্প্যানিশ আগ্রাসনের বহু পুরোনো ক্ষত এখনো নিরাময় হয়নি।
চলমান ইউক্রেন যুদ্ধের কথাই ধরা যাক:
সূত্র: জাতিসংঘ
ওই সময় যুদ্ধে শ্রমিক হিসেবে সারা দেশ থেকে নিয়োগ দেওয়া হয় প্রায় ১৪ লাখ নারী।
সূত্র: দ্য ওয়ার্ল্ডওয়াল ডটঅর্গ
ইউক্রেন পরিস্থিতি
জাতিসংঘের লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণ এবং নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ক সংস্থা ইউএন উইমেন এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কেয়ারের ‘র্যাপিড জেন্ডার অ্যানালাইসিস ইন ইউক্রেন’ প্রতিবেদন অনুসারে, ইউক্রেনের বাধ্যতামূলক অভিবাসী হওয়া ৯০ শতাংশই নারী ও শিশু। যুদ্ধ যেহেতু চলমান এ সংখ্যা যে ক্রমে বাড়ছে তাতে সন্দেহ নেই।
এখন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট নানামুখী সমস্যা এবং অতিরিক্ত দায় ঘর কন্যার বোঝা টানা ইউক্রেনীয় নারীদের ঘাড়ে চেপেছে। কিন্তু এই ধরনের একটি অস্থির পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্ল্যাটফর্মে নারী কই? পরিস্থিতির উত্তেজনা প্রশমন, সংঘাত নিরসন এবং ইউক্রেন ও এর বাইরের মানুষের শান্তি ও নিরাপত্তা বিধানের বৈশ্বিক প্রক্রিয়ায় নারীদের অংশ তো সেভাবে দৃশ্যমান নয়। এছাড়া লিঙ্গবৈষম্য ও গৃহনির্যাতনের অপরাধ ইউরোপের মধ্যে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি ঘটে ইউক্রেনে। সক্ষম পুরুষেরা যুদ্ধের ময়দানে, একা নারী ভিন দেশে কীভাবে সব সামলাচ্ছেন!
লিঙ্গ ইস্যু নিয়ে কাজ করা এমনিতেই খুব জটিল। কারণ এটি বুঝতে চাইলে ক্ষমতা এবং বিশেষাধিকার, একটি সম্প্রদায়ের আচার এবং প্রত্যাশাকে একত্রে বুঝতে হয়। সংঘাত বিদ্যমান (লিঙ্গ) বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে দেয়। যখন পরিবারের উপার্জনকারী ব্যক্তি-যিনি সাধারণত হোন একজন পুরুষ-যুদ্ধে যায় বা নিহত হয় তখন কী ঘটে? সামাজিক ভূমিকার পরিবর্তন হয়। পুরুষ প্রধান সমাজে তখন নারীদের জন্য এমন সুযোগ উন্মুক্ত হয় যা আগে কখনো ছিল না।
বলা যেতে পারে, যুদ্ধে নারীদের ব্যবহার করা হয়। কিন্তু তাদের কাজকে সম্মানিত বা স্মরণ করা হয় না। এমনকি মানবাধিকার উন্নয়নের এই যুগে এসেও আমরা যুদ্ধে নারী ও শিশুদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার ঘটনা দেখছি।
যুদ্ধ শেষে নারীদের ঘরে ফেরানো হয়, অধস্তন করে রাখা হয়। ফ্রান্স থেকে স্বাধীনতার জন্য লড়াইয়ে ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (এফএলএন) আলজেরীয় নারীদের পুরুষদের সমান বিপজ্জনক ভূমিকায় ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যুদ্ধ ফেরত হিসেবে তার অধিকার এবং পেনশন থেকে তাকে বঞ্চিত করা হয়েছিল।
নারী সৈন্যরা যুদ্ধ থেকে জীবিত ফিরে এলেও কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত থাকেন। তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মধ্যে অঙ্গীভূত করা হয় না। শুধু স্মৃতির সমতা নয়, যুদ্ধের একটি সামগ্রিক ‘চেতনা’, রোল মডেল এবং বিকল্প নায়িকা হয়ে ওঠার সম্ভাবনা এবং মানবীয় অভিজ্ঞতায় নারীর ক্ষমতার আলোকচ্ছটায় উজ্জ্বল হতে পারার একটি দারুণ সুযোগ সমাজ তার গভীরভাবে প্রোথিত সংস্কারের কারণে হাতছাড়া করে।
যুদ্ধ যদি অনিবার্যভাবেই মানবীয় ব্যাপার হয় তাহলে এটি তো নারী ও পুরুষ উভয়ের প্রশ্ন হওয়ার কথা। ভারী অস্ত্র বহনের জন্য পুরুষের কাঁধ বিকশিত হয়েছে, এর সপক্ষে জৈবিক ব্যাখ্যা হাজির করা যেতে পারে কিন্তু হরমোনগত কারণে নারীরা শান্তিপ্রিয় স্নায়ুবিজ্ঞান এই ধারণাকে বাতিল করে দেয়। নারীরা সর্বদা শান্তিপ্রিয় বা শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী, ঘটনার শিকার, পুরুষকে কাপুরুষ বলে তাচ্ছিল্য করা অন্দর বাসিনী বা লাল লিপস্টিকে ঠোঁট রাঙানো মনোবল বৃদ্ধিকারীনি নয়। সহিংসতা দিয়ে সহিংসতার সমাধান হয়তো কখনো হয়। কিন্তু লিঙ্গবৈষম্যের ধারণা কখনো জ্ঞান ও শান্তি বয়ে আনে না।
অবশ্য নানা যুদ্ধে স্পষ্টভাবেই প্রমাণিত নারীরা হলেন স্বাভাবিকতায় ফেরার নির্ভরযোগ্য নেতৃত্ব। তাঁদের কোমল হাত, দুর্বল কাঁধ যুদ্ধের ক্ষত সারিয়ে তুলতে সক্ষম।
তথ্যসূত্র: ইউএন উইমেন, দ্য গার্ডিয়ান, আইসিআরসি, ইউএনএফপিএ, এনপিআর

আমরা এক ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ পৃথিবীতে বাস করছি। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ প্রভাব টের পাচ্ছে বৈশ্বিক উষ্ণতায় সরাসরি ভূমিকা রাখা উন্নত দেশগুলোও। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক সংকট কঠিনতর হয়ে উঠছে। সব মিলিয়ে উদ্বেগজনক বৈশ্বিক তাপমাত্রা, দায়িত্বজ্ঞানহীন স্বৈরশাসক, চরমপন্থার উত্থান, অধিকারের নতুন মাত্রা এবং সরকার ও করপোরেটের ধ্বংসাত্মক নীতি ক্রমেই মানবজাতিকে বিশৃঙ্খলার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। মানুষের মধ্যে ক্রোধ, হতাশা এবং বিদ্রোহের দাবানলে ঘি ঢালছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
এক শতাংশের কম নারীযোদ্ধা
এই বিশৃঙ্খল বিক্ষুব্ধ পৃথিবীতে কিন্তু অনেক দৃঢ়চেতা নারীকে প্রতিরোধে এগিয়ে আসতে দেখছি। আমাদের সামনে গ্রেটা থুনবার্গ, নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্নের মতো নারীদের উদাহরণ জ্বলজ্বল করছে। তাঁদের সাহসী পদক্ষেপ আমাদের আপ্লুত করছে। কিন্তু একজন নারী যদি আক্ষরিক অর্থেই একটি সশস্ত্র লড়াইয়ে যুক্ত হওয়ার সুযোগ বেছে নেন? নারীর এমন সাহসিকতা কিন্তু পুরুষশাসিত কর্তৃত্ববাদী সমাজ এখনো উদ্যাপন করার উদারতা অর্জন করতে পারেনি।
বিশ শতকের প্রথম দিকে ইউরোপ থেকে বহু তরুণ যুবক প্রোপাগান্ডায় প্রভাবিত হয়ে যুদ্ধে গেছে। তারা কেউ ভুক্তভোগী, কেউ কঠিন পরিস্থিতির নায়ক অথবা অনুপ্রেরণা।
কিন্তু একজন নারী যদি নিজ ইচ্ছায় কোনো সহিংসতার কাছাকাছিও যান, এমনকি হাতে অস্ত্র তুলে না নিলেও এখনো ব্যাপক সামাজিক অস্থিরতার কারণ হয়ে দাঁড়ান। কঠোর সমালোচনা এবং প্রায়ই শাস্তির মুখোমুখি হতে হয় তাঁকে।
তাহলে নারী ও সহিংসতা, তাঁর সহযোগী ভূমিকা এবং যুদ্ধের মধ্যে অনুমোদিত সীমানা আসলে কী? কখন একজন নারী সজ্ঞানে এবং পরিকল্পিতভাবে এবং পুরুষের মতো সহজাতভাবে নিজের বা তাঁর মূল্যবোধের প্রতিরক্ষায় অস্ত্র তুলে নিতে রাজি হতে পারবেন? নারীরা কি সহজাতভাবে তুলনামূলক বেশি শান্তিপ্রিয়? তারা কি সক্ষম সৈনিক হতে পারে?
যুদ্ধ বা সহিংসতা ও নারী প্রশ্নে এই প্রশ্নগুলো খুবই মোক্ষম।
আমেরিকান ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক জোশুয়া গোল্ডস্টেইন তাঁর ‘ওয়ার অ্যান্ড জেন্ডার’ বইতে যুদ্ধে নারীদের অংশগ্রহণের সঙ্গে আন্তঃসাংস্কৃতিক ঐতিহাসিক প্রমাণগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। তিনি দেখেছেন ‘ইতিহাসের সমস্ত যোদ্ধার ১ শতাংশেরও কম নারী’।
আধুনিক স্থায়ী সেনাবাহিনীতে সৈনিকদের অধিকাংশই পুরুষ। যুদ্ধ একটি সামাজিকভাবে বৈচিত্র্যময় ঘটনা। প্রশ্ন করাই যায়, তাহলে কেন এখানে লিঙ্গ বৈচিত্র্য নেই হয়ে গেল? গোল্ডস্টেইন যুক্তি দিচ্ছেন, ‘যুদ্ধে মানুষ হত্যার ব্যাপারটা লিঙ্গ নির্বিশেষে কোনো স্বাভাবিক প্রবণতা নয়। তবুও যুদ্ধের সম্ভাবনা কিন্তু সর্বজনীন। যুদ্ধের প্রতি সৈন্যদের অনীহার মনোভাব কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করার জন্যই বিভিন্ন সংস্কৃতিতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে লিঙ্গের ভূমিকাকে বড় করে দেখানো হয়। একটি কঠিন পরিস্থিতিতে আরও কঠোরভাবে বুক চিতিয়ে দাঁড়ানোকে “পৌরুষদীপ্ত” কাজ বলা হয়!
আমরা ‘নারী যোদ্ধাকে’ গ্রহণ করতে খুব একটা স্বস্তি বোধ করি না। একটি দেশ এবং তার সামরিক বাহিনীর দায়িত্বে থাকা একজন নারী, বা যুদ্ধরত নারী সেনাপতি, প্রায়ই একটা যৌন অস্বাভাবিকতা হিসেবে দেখা হয়। যেমন ইতিহাসে আমরা অনেক বীরকে দেখি, যুদ্ধক্ষেত্রে নারীর বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরবেন না বলে চেচাচ্ছেন! ইতিহাসে হাতে গোনা যে কজন সফল নারী রাষ্ট্রপ্রধান বা যোদ্ধা, সেনাপতির কথা পাওয়া যায় সেগুলোর বর্ণনা এবং পাঠকদের মধ্যে উচ্ছ্বাসের বাড়াবাড়ি দেখলেই দৃষ্টিভঙ্গির এই অস্বস্তি ও অস্বাভাবিকতা অনুমান করা যায়।
সমাজে বা কর্মক্ষেত্রেও সামনের সারিতে সক্রিয় নারীরা যেন ‘সাপের গলায় ব্যাঙের’ মতো অস্বস্তি তৈরি করে। এই নারীদের সন্তান কত জন তা নিয়ে মিডিয়ার আগ্রহের শেষ নেই, তাঁর মাতৃত্বের বেপরোয়া অভাবকে তিরস্কার করা হয়। আর মৌলবাদের মতো ঘৃণিত মূল্যবোধের সঙ্গে তাঁর সংযোগ থাকলে তো কথাই নেই! ফ্যাসিবাদের সৈনিক হলেও মানা যায়, কিন্তু মৌলবাদী উগ্রপন্থীদের দলে গেলে তো তাকে দেশেই ঢুকতে দেওয়া হবে না!
আজকাল কম্পিউটার গেম, সিনেমা এবং ঢাউস আকৃতির সব বইয়ে ‘নারীশক্তিকে’ খুব মহিমান্বিত করা হয়। কিন্তু সেসব চরিত্রের সঙ্গে বাস্তবতার খুব কমই মিল থাকে।
এই প্রশ্নগুলো শুধু পুরুষত্বের ধারণার সঙ্গেই নয়, নারীবাদের ধারণাগুলোর সঙ্গেও সম্পর্কিত। নারীর যুদ্ধে অংশগ্রহণ কী ‘পুরুষতান্ত্রিক সহিংসতা-বিরোধী’ নারীবাদী নীতিকে ক্ষুণ্ন করে? ইতিহাস বলে, আমেরিকার নারী ভোটাধিকার আন্দোলনের অগ্রভাগের কেউ কেউ কংগ্রেসে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ এবং ট্রাফিক ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটানোর মতো কর্মসূচির পক্ষে ছিলেন। আন্দোলনটি শেষ পর্যন্ত অবশ্য শান্তিপূর্ণই ছিল।
যুদ্ধের সম্ভাব্য সকল ক্ষয়ক্ষতির অংশীদার হয় নারী। এর মধ্যে যুদ্ধের সবচেয়ে মারাত্মক মানবিক বিপর্যয়-পরিকল্পিত হত্যা, সেটিরও প্রথম শিকার হয় নারীরা। নিপীড়ন বা প্রতিশোধ নিতে দুর্বল ও সহজ লক্ষ্য হিসেবে ইতিহাসের বিভিন্ন যুদ্ধে ধর্ষণের ঘটনা পাওয়া যায়। কিন্তু ইতিহাসের পাতায় নারী সৈনিক কই?
নারীর কলমে যুদ্ধসাহিত্য প্রায় অনুপস্থিত
একটা যুদ্ধ পুরো সমাজকে গ্রাস করে, লিঙ্গ নির্বিশেষে যুদ্ধের আঁচ লাগে। কিন্তু নারীদের কলমে যুদ্ধের কথাসাহিত্য যেন অস্বাভাবিক ঘটনা। যেন যুদ্ধ নিয়ে কাল্পনিক কথাসাহিত্য তৈরির কল্পনা করার অধিকারটাও তাঁদের নেই!
মার্কিন ইতিহাসবিদ মার্গারেট ম্যাকমিলন বলেন, ‘সেনাবাহিনী এবং প্রতিষ্ঠান থেকে নারীদের বাদ দেওয়া একটা সাধারণ ঘটনা। ঐতিহাসিক নথি এবং শৈল্পিক প্রতিনিধিত্ব থেকেও তাদের বাদ দেওয়া হয়। সর্বোচ্চ যা ঘটে-নারী যোদ্ধাদের উদাহরণ প্রায়ই অবিশ্বস্ত সূত্রের বরাতে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয় যে সন্দেহ জাগতে বাধ্য।’
সম্মুখ সমরে নারী যোদ্ধাদের অংশীদারত্ব বেশ কমই। কিন্তু যুদ্ধের ঐতিহাসিক প্রবণতা বলছে, বহু নারীই সংঘাতে জড়িয়ে গিয়েছিলেন। তারা যুদ্ধ, প্রযুক্তি এবং কূটনীতিতে বিভিন্ন পর্যায়ে ভূমিকা রেখেছেন, গোয়েন্দা, যুদ্ধাস্ত্র এবং গুপ্তচরবৃত্তিতে কাজ করেছেন। দগদগে ক্ষত হয়ে থাকা দুটি বিশ্বযুদ্ধ তার প্রমাণ।
দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ এক সময় শেষ হয়ে যায়, নারীরা বেঁচে থাকে এবং পরিণতির যন্ত্রণা বয়ে বেড়ায়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে নারীরা যুদ্ধের নির্লিপ্ত ভুক্তভোগী থাকে না। তারা স্বামী, সন্তান, ভাই হারানোর শোক করে, জীবনযুদ্ধে টিকে থাকার লড়াই করে, অনেকে নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করতে বাধ্য হয়, পুরোনো পরিচয় ঝেড়ে ফেলে এবং যুদ্ধ তাদের ভাবনার নতুন আকৃতি দেয়।
এই ব্যাপারগুলো সরাসরি ভুক্তভোগীদের বয়ান থেকে বোঝার জন্য ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক একটি তথ্যচিত্র করেছে। রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটি এই কাজটির পৃষ্ঠপোষকতা দেয়। রেড ক্রস একটি প্রতিবেদনে বলছে, ‘এ ওম্যানস ওয়ার’ নামে তাদের প্রকল্পটি ‘নারী হিসেবে যুদ্ধের শিকার’ এমন গৎবাঁধা (স্টিরিওটাইপ) ধারণা ভেঙে দিয়েছে। নারীদের একাধিক জটিল এবং সংঘাতপূর্ণ ভূমিকা অন্বেষণ করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে নারীরা যোদ্ধা, মানবতাবাদী, মা, কন্যা, শ্রমিক, সম্প্রদায়ের নেতা এবং বেঁচে ফেরা সংগ্রামী সত্তা।
নারী সৈন্যদের কাজগুলোকে কখনোই গুরুত্ব সহকারে নথিবদ্ধ করা হয়নি। এই কারণেই সাহিত্যে নোবেলজয়ী বেলারুশিয়ান সাংবাদিক সোভেৎলানা আলেক্সিভিচের বিবরণে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত নারীদের যে ভূমিকা ও অবদান উঠে এসেছে তা সরকারি বয়ানে অনুপস্থিত। এই একটি কারণেই তাঁর ‘দ্য আনওম্যানলি ফেস অব ওয়ার’ বইটিকে অমূল্য সাহিত্যকর্ম বলা যায়।
ইরাক, ফিলিপাইন এবং দক্ষিণ নাইজেরিয়ার সংঘাত কবলিত এলাকার নারীদের অভিজ্ঞতা ও বয়ান রেকর্ড করেছে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক। অস্ত্র, গোলাবারুদের গর্জন থেমে গেলেও যুদ্ধবিধ্বস্ত গোষ্ঠীর আত্মপরিচয় যুদ্ধের মাধ্যমে নতুন রূপ ধারণ করতে থাকে। এ প্রক্রিয়া বহু দিন পর্যন্ত চলে। পেরুতে দেখা গেছে, স্প্যানিশ আগ্রাসনের বহু পুরোনো ক্ষত এখনো নিরাময় হয়নি।
চলমান ইউক্রেন যুদ্ধের কথাই ধরা যাক:
সূত্র: জাতিসংঘ
ওই সময় যুদ্ধে শ্রমিক হিসেবে সারা দেশ থেকে নিয়োগ দেওয়া হয় প্রায় ১৪ লাখ নারী।
সূত্র: দ্য ওয়ার্ল্ডওয়াল ডটঅর্গ
ইউক্রেন পরিস্থিতি
জাতিসংঘের লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণ এবং নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ক সংস্থা ইউএন উইমেন এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কেয়ারের ‘র্যাপিড জেন্ডার অ্যানালাইসিস ইন ইউক্রেন’ প্রতিবেদন অনুসারে, ইউক্রেনের বাধ্যতামূলক অভিবাসী হওয়া ৯০ শতাংশই নারী ও শিশু। যুদ্ধ যেহেতু চলমান এ সংখ্যা যে ক্রমে বাড়ছে তাতে সন্দেহ নেই।
এখন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট নানামুখী সমস্যা এবং অতিরিক্ত দায় ঘর কন্যার বোঝা টানা ইউক্রেনীয় নারীদের ঘাড়ে চেপেছে। কিন্তু এই ধরনের একটি অস্থির পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্ল্যাটফর্মে নারী কই? পরিস্থিতির উত্তেজনা প্রশমন, সংঘাত নিরসন এবং ইউক্রেন ও এর বাইরের মানুষের শান্তি ও নিরাপত্তা বিধানের বৈশ্বিক প্রক্রিয়ায় নারীদের অংশ তো সেভাবে দৃশ্যমান নয়। এছাড়া লিঙ্গবৈষম্য ও গৃহনির্যাতনের অপরাধ ইউরোপের মধ্যে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি ঘটে ইউক্রেনে। সক্ষম পুরুষেরা যুদ্ধের ময়দানে, একা নারী ভিন দেশে কীভাবে সব সামলাচ্ছেন!
লিঙ্গ ইস্যু নিয়ে কাজ করা এমনিতেই খুব জটিল। কারণ এটি বুঝতে চাইলে ক্ষমতা এবং বিশেষাধিকার, একটি সম্প্রদায়ের আচার এবং প্রত্যাশাকে একত্রে বুঝতে হয়। সংঘাত বিদ্যমান (লিঙ্গ) বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে দেয়। যখন পরিবারের উপার্জনকারী ব্যক্তি-যিনি সাধারণত হোন একজন পুরুষ-যুদ্ধে যায় বা নিহত হয় তখন কী ঘটে? সামাজিক ভূমিকার পরিবর্তন হয়। পুরুষ প্রধান সমাজে তখন নারীদের জন্য এমন সুযোগ উন্মুক্ত হয় যা আগে কখনো ছিল না।
বলা যেতে পারে, যুদ্ধে নারীদের ব্যবহার করা হয়। কিন্তু তাদের কাজকে সম্মানিত বা স্মরণ করা হয় না। এমনকি মানবাধিকার উন্নয়নের এই যুগে এসেও আমরা যুদ্ধে নারী ও শিশুদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার ঘটনা দেখছি।
যুদ্ধ শেষে নারীদের ঘরে ফেরানো হয়, অধস্তন করে রাখা হয়। ফ্রান্স থেকে স্বাধীনতার জন্য লড়াইয়ে ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (এফএলএন) আলজেরীয় নারীদের পুরুষদের সমান বিপজ্জনক ভূমিকায় ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যুদ্ধ ফেরত হিসেবে তার অধিকার এবং পেনশন থেকে তাকে বঞ্চিত করা হয়েছিল।
নারী সৈন্যরা যুদ্ধ থেকে জীবিত ফিরে এলেও কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত থাকেন। তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মধ্যে অঙ্গীভূত করা হয় না। শুধু স্মৃতির সমতা নয়, যুদ্ধের একটি সামগ্রিক ‘চেতনা’, রোল মডেল এবং বিকল্প নায়িকা হয়ে ওঠার সম্ভাবনা এবং মানবীয় অভিজ্ঞতায় নারীর ক্ষমতার আলোকচ্ছটায় উজ্জ্বল হতে পারার একটি দারুণ সুযোগ সমাজ তার গভীরভাবে প্রোথিত সংস্কারের কারণে হাতছাড়া করে।
যুদ্ধ যদি অনিবার্যভাবেই মানবীয় ব্যাপার হয় তাহলে এটি তো নারী ও পুরুষ উভয়ের প্রশ্ন হওয়ার কথা। ভারী অস্ত্র বহনের জন্য পুরুষের কাঁধ বিকশিত হয়েছে, এর সপক্ষে জৈবিক ব্যাখ্যা হাজির করা যেতে পারে কিন্তু হরমোনগত কারণে নারীরা শান্তিপ্রিয় স্নায়ুবিজ্ঞান এই ধারণাকে বাতিল করে দেয়। নারীরা সর্বদা শান্তিপ্রিয় বা শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী, ঘটনার শিকার, পুরুষকে কাপুরুষ বলে তাচ্ছিল্য করা অন্দর বাসিনী বা লাল লিপস্টিকে ঠোঁট রাঙানো মনোবল বৃদ্ধিকারীনি নয়। সহিংসতা দিয়ে সহিংসতার সমাধান হয়তো কখনো হয়। কিন্তু লিঙ্গবৈষম্যের ধারণা কখনো জ্ঞান ও শান্তি বয়ে আনে না।
অবশ্য নানা যুদ্ধে স্পষ্টভাবেই প্রমাণিত নারীরা হলেন স্বাভাবিকতায় ফেরার নির্ভরযোগ্য নেতৃত্ব। তাঁদের কোমল হাত, দুর্বল কাঁধ যুদ্ধের ক্ষত সারিয়ে তুলতে সক্ষম।
তথ্যসূত্র: ইউএন উইমেন, দ্য গার্ডিয়ান, আইসিআরসি, ইউএনএফপিএ, এনপিআর

আজ আপনার পকেট হঠাৎ করে গরম হতে পারে। জ্যোতিষ বলছে, ‘হঠাৎ অর্থপ্রাপ্তি হতে পারে।’ কিন্তু এই অর্থ হাতে আসার সঙ্গে সঙ্গেই আপনার আশপাশে থাকা ‘নারী বন্ধু’ (বা পুরুষ বন্ধু, লিঙ্গভেদ নেই) আপনাকে কফি, বিরিয়ানি বা নতুন সিরিজের সাবস্ক্রিপশনের জন্য অনুরোধ করতে পারে।
৩৪ মিনিট আগে
চাকরির কারণে প্রতিদিন বাইরে বের হতে হয়। শীতে ধুলোবালির পরিমাণ বেশি। পথের ধারে বিভিন্ন জিনিসপত্র পোড়ানোয় ধোঁয়ার গন্ধও হয়। সব মিলিয়ে চুলের তরতাজা ভাব নষ্ট হয়ে যায়। সে জন্য প্রতিদিন শ্য়াম্পু করি। যদিও তা চুলের জন্য ভালো নয়।
১ ঘণ্টা আগে
সারা বছর সবার ঘরে, ভ্যানিটি ব্যাগে এমনকি অফিসের ডেস্কে যে প্রসাধনী থাকে, তা হলো পেট্রোলিয়াম জেলি। এটি শুধু ঠোঁটের রুক্ষতা দূর করে, তা-ই নয়, রূপচর্চায় আরও নানাভাবে ব্যবহার করা যায়।
২ ঘণ্টা আগে
চুলে রং করতে ভালোবাসলেও সবাই পারলারে গিয়ে চুল রং করান না। রং কিনে এনে বাড়িতেই তাঁরা কাজটি সেরে ফেলেন। কিন্তু বাড়িতে রং করলে প্রতিবার চুল ধোয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু পরিমাণ রংও ধুয়ে যায়।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মেষ
আজ আপনার পকেট হঠাৎ করে গরম হতে পারে। জ্যোতিষ বলছে, ‘হঠাৎ অর্থপ্রাপ্তি হতে পারে।’ কিন্তু এই অর্থ হাতে আসার সঙ্গে সঙ্গেই আপনার আশপাশে থাকা ‘নারী বন্ধু’ (বা পুরুষ বন্ধু, লিঙ্গভেদ নেই) আপনাকে কফি, বিরিয়ানি বা নতুন সিরিজের সাবস্ক্রিপশনের জন্য অনুরোধ করতে পারে। সাবধান! এই অর্থ আপনার একার, মহাজাগতিক ঋণের নয়। সারা দিন জনসেবার ইচ্ছা জাগবে, ভালো কথা। কিন্তু তার আগে নিজের বিলগুলো মেটানো জরুরি। ভাগ্য আজ আপনাকে দেখাবে—টাকা উপার্জন করা যতটা সহজ, সেটা ধরে রাখা তার চেয়েও কঠিন! আজকের মন্ত্র হোক: কফি খাব, তবে বিল দেব না।
বৃষ
সকাল থেকে একটা অদ্ভুত মানসিক ও শারীরিক ক্লান্তি আপনাকে তাড়া করবে। এর কারণ সম্ভবত গভীর রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় কার্টুন দেখা। জ্যোতিষ বলছে, ‘কোনো ঘনিষ্ঠ বন্ধু আপনাকে ঠকানোর চেষ্টা করবেন।’ সেই ঘনিষ্ঠ বন্ধুটি আর কেউ নয়—সে হলো আপনার ফ্রিজের ভেতরে রাখা সেই মিষ্টির বাক্স, যেটি আপনাকে ডায়েট ভাঙতে উৎসাহিত করবে। ধ্যানের মাধ্যমে একাগ্রতা আনার চেষ্টা করুন। বস যদি সকালে কাজে ভুল ধরেন, তখন যোগাভ্যাস শুরু করে দিতে পারেন, হয়তো বস ভয় পাবেন। পেটের সমস্যা এড়াতে আজ অতিরিক্ত মসলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন। কিন্তু যদি দেখেন বন্ধু বিরিয়ানি খাওয়াতে চাচ্ছে, তাহলে এই উপদেশ ভুলে যান। মন খারাপ? মনকে বলুন, ‘বিকেলের পরে সব ঠিক হয়ে যাবে, তার আগে ঘুমাও।’
মিথুন
সকালের দিকে মেজাজ এমন খিটখিটে থাকবে যে, পোষা প্রাণীটাও আপনাকে এড়িয়ে চলবে। তবে চিন্তা নেই, বিকেলের দিকে মুড ফ্রেশ হবে—যদি না কোনো অপ্রত্যাশিত ফোন কল আসে। কর্মক্ষেত্রে সুনাম হতে পারে, যা আপনার অহংবোধকে একধাপ বাড়িয়ে দেবে। আজ কিছু নতুন পোশাক, মোবাইল ফোন ইত্যাদি কেনার যোগ রয়েছে। আপনার সম্মান বৃদ্ধির মূল কারণ হতে পারে নতুন ফোনের ক্যামেরা। তাই নিজেকে প্রমাণ করতে নয়, বরং ভালো সেলফি তোলার জন্য আজ মন দিন। সাবধানে অর্থ ব্যয় করুন। যদি অনলাইনে কোনো অপ্রয়োজনীয় জিনিস চোখে পড়ে, মনে রাখবেন—ওটা কালকেও থাকবে।
কর্কট
আজকের দিনটি আপনার জন্য বেশ ব্যয়বহুল হতে চলেছে। এর মানে এই নয় যে দামি কিছু কিনবেন, বরং মানে হলো—হয়তো অফিসের কলিগদের জন্য চা-কফি কিনে নিজের মাসকাবারি বাজেট শেষ করবেন। বসের কাছে প্রশংসা পাবেন, কারণ আপনি কাজের প্রতি খুবই দায়িত্বশীল। এই দায়িত্বশীলতা আপনাকে আরও বেশি কাজ এনে দেবে, যা ভবিষ্যতে মানসিক ভারসাম্য নষ্টের কারণ হবে। সরকারি কাজে অসুবিধা দেখা দেবে—কারণ সরকারি কাজ সব সময়ই অসুবিধা সৃষ্টি করে। ভদ্র থাকুন, নইলে টাকা শেষ হয়ে গেলে ধার চাওয়ার মুখ থাকবে না।
সিংহ
প্রতিদিনের স্বাভাবিক রুটিন বদলানোর চেষ্টা কেউ একজন করবে। সেই ‘কেউ একজন’ আর কেউ নয়, তিনি হলেন আপনার জীবনসঙ্গী, যিনি আপনাকে দিয়ে ঘরের কাজ করানোর চেষ্টা করবেন। সেদিকে বিশেষ নজর রাখুন। তবে দিনের শেষে রোমান্সের যোগ রয়েছে, যদি আপনি রুটিন বদলের এই চ্যালেঞ্জে হেরে যান এবং বশ্যতা স্বীকার করেন। আজ ব্যবসা বা পেশার জন্য অর্থ সংগ্রহে আপনি সফল হবেন। ঘরের কাজকে প্রেমের খেলা মনে করুন। হারলেও লাভ, জিতলেও!
কন্যা
সারা দিন আপনার কোনো বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ থাকবে না। চেষ্টা করলেও, ভেতরের কণ্ঠস্বর আপনাকে মনে করিয়ে দেবে—কত কাজ বাকি আছে। আজ আপনার স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করা দরকার। সামান্য সর্দি-কাশিকে কঠিন ব্যামো ভেবে সারা দিন গুগল করতে পারেন। অফিসে পদোন্নতির যোগ রয়েছে, তবে এর মানে হলো—আপনার ওপর চাপ আরও বাড়বে। ব্যবসায়ীরা আজ আর্থিক বিষয়ে হতাশ হতে পারেন। সন্তানদের বিষয়ে একটু সতর্ক থাকুন। আজ হয়তো তারা আপনার গোপনে জমানো চকলেট খুঁজে পেতে পারে।
তুলা
ব্যবসায় খুব বেশি লাভ দেখতে পাওয়ার যোগ রয়েছে। এই লাভকে কাজে লাগিয়ে স্বাস্থ্যের আগের থেকে উন্নতি দেখা যাবে। আজকের দিনে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভদ্র থাকবেন এবং মানসিকভাবে ভারসাম্য বজায় রাখবেন। তবে সাবধান, এই ভদ্রতা যেন অতিরিক্ত বিনয়ে রূপ না নেয়। না হলে সবাই আপনাকে দিয়ে নিজের কাজ করিয়ে নেবে। অতিরিক্ত লাভের খবর পেয়ে রাতে ঘুম ভাঙতে পারে। চিন্তা করবেন না, এটা শুধু গ্যাস।
বৃশ্চিক
আজকের দিনটি আপনার জন্য ফলপ্রসূ হতে চলেছে। তবে এই ‘ফল’ হয়তো আপনার ই-মেইল ইনবক্সে জমা হওয়া হাজারো নতুন ই-মেইলের স্তূপ! কর্মজীবনের দিক থেকে নতুন সুযোগ পেতে পারেন। এটি হতে পারে—বসের নতুন প্রজেক্ট, যা আপনি একা সামলাবেন। অর্থের দিক থেকে দিনটি শুভ, কারণ আপনি আজ বুদ্ধি করে একটি অপ্রয়োজনীয় অনলাইন শপিং অর্ডার বাতিল করবেন। অর্থের দিক থেকে শুভ, মানে আপনি আজ অন্তত এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলতে পারবেন।
ধনু
আপনার জন্য আজ একটি শুভ দিন হতে চলেছে। এতটা শুভ যে, হয়তো সকালে উঠে জুতা পরার সময় মোজা পরতে ভুলে যাবেন। ক্যারিয়ারে লক্ষ্য অর্জনের জন্য একটি পরিকল্পনা করুন। দিনের মূল প্ল্যানিং হবে, কীভাবে এই পরিকল্পনাকে আবার পরের দিনের জন্য স্থগিত করা যায়। গাড়ি চালানোর সময় অসতর্কতা থেকে বিরত থাকুন। বিশেষত যখন আপনি ক্যারিয়ার প্ল্যানিংয়ের চিন্তায় মগ্ন থাকবেন। আপনার ভাগ্য আজ ভালো, শুধু নিজেকে বেশি সিরিয়াস না নিলেই হলো।
মকর
জ্যোতিষ বলছে, ‘সব জায়গায় ইতিবাচক মনোভাব দেখালে চলবে না।’ সত্যি কথা! আপনার ইতিবাচকতা দেখে অন্যরা ভয় পেতে পারে। রাস্তায় কারও সঙ্গে ঝামেলা সৃষ্টি হতে পারে। ঝামেলার কারণ—আপনাকে দেখিয়ে কেউ যদি ভুল করে হাসে! বড় কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকুন, যেমন—সকালের নাশতায় কী খাবেন, পাউরুটি নাকি পরোটা? আপনি মানসিক চাপে ভুগতে পারেন। রাগ নিয়ন্ত্রণ করুন। যদি দেখেন কেউ আলু-পেঁয়াজ নিয়ে তর্ক করছে, সেখানে জড়াবেন না।
কুম্ভ
শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের প্রচুর দায়িত্ব বৃদ্ধি পেতে পারে। এর মানে শুধু একটাই—আপনার ছুটি বাতিল। রাজনৈতিক কোনো কাজ করার আগে খুব ভাবনাচিন্তা করার দরকার আছে। সামনে ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ আসবে, কিন্তু আপনি এমন দায়িত্বশীল যে সেই সুযোগ নিতে পারবেন না। যদিও মন চাইবে, ‘যাই হোক, একটু ফাঁকি দেওয়া যাক।’ এই দোটানা মানসিক চাপ বাড়াবে। ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ এলেও, যদি দেখেন বস আপনার দিকে তাকিয়ে হাসছেন, তবে সেই সুযোগ হাতছাড়া করুন।
মীন
আজ সৃজনশীল শক্তিতে পূর্ণ একটি দিন কাটাবেন। আপনার এই সৃজনশীলতা হয়তো কাজে লাগতে পারে—বাড়িতে ভেঙে যাওয়া দামি জিনিসটি মেরামত করার জন্য। অর্থের দিক থেকে ভাগ্যবান প্রমাণিত হতে পারেন। হয়তো পুরোনো কোনো প্যান্টের পকেটে একটি পাঁচশ টাকার নোট খুঁজে পাবেন। কেউ কোনো দায়িত্ব দিলে একেবারেই নেবেন না, কারণ এটা আপনার জন্য একটি ফাঁদ হতে পারে। আজ উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে—কারণ আপনি ওই দায়িত্বটি না নিতে পারার অপরাধবোধে ভুগবেন। দাম্পত্য জীবন শান্ত ও সুখকর থাকবে। কারণ সঙ্গী আজ আপনার সৃজনশীলতা দেখে কথা বলার সাহস পাবেন না।

মেষ
আজ আপনার পকেট হঠাৎ করে গরম হতে পারে। জ্যোতিষ বলছে, ‘হঠাৎ অর্থপ্রাপ্তি হতে পারে।’ কিন্তু এই অর্থ হাতে আসার সঙ্গে সঙ্গেই আপনার আশপাশে থাকা ‘নারী বন্ধু’ (বা পুরুষ বন্ধু, লিঙ্গভেদ নেই) আপনাকে কফি, বিরিয়ানি বা নতুন সিরিজের সাবস্ক্রিপশনের জন্য অনুরোধ করতে পারে। সাবধান! এই অর্থ আপনার একার, মহাজাগতিক ঋণের নয়। সারা দিন জনসেবার ইচ্ছা জাগবে, ভালো কথা। কিন্তু তার আগে নিজের বিলগুলো মেটানো জরুরি। ভাগ্য আজ আপনাকে দেখাবে—টাকা উপার্জন করা যতটা সহজ, সেটা ধরে রাখা তার চেয়েও কঠিন! আজকের মন্ত্র হোক: কফি খাব, তবে বিল দেব না।
বৃষ
সকাল থেকে একটা অদ্ভুত মানসিক ও শারীরিক ক্লান্তি আপনাকে তাড়া করবে। এর কারণ সম্ভবত গভীর রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় কার্টুন দেখা। জ্যোতিষ বলছে, ‘কোনো ঘনিষ্ঠ বন্ধু আপনাকে ঠকানোর চেষ্টা করবেন।’ সেই ঘনিষ্ঠ বন্ধুটি আর কেউ নয়—সে হলো আপনার ফ্রিজের ভেতরে রাখা সেই মিষ্টির বাক্স, যেটি আপনাকে ডায়েট ভাঙতে উৎসাহিত করবে। ধ্যানের মাধ্যমে একাগ্রতা আনার চেষ্টা করুন। বস যদি সকালে কাজে ভুল ধরেন, তখন যোগাভ্যাস শুরু করে দিতে পারেন, হয়তো বস ভয় পাবেন। পেটের সমস্যা এড়াতে আজ অতিরিক্ত মসলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন। কিন্তু যদি দেখেন বন্ধু বিরিয়ানি খাওয়াতে চাচ্ছে, তাহলে এই উপদেশ ভুলে যান। মন খারাপ? মনকে বলুন, ‘বিকেলের পরে সব ঠিক হয়ে যাবে, তার আগে ঘুমাও।’
মিথুন
সকালের দিকে মেজাজ এমন খিটখিটে থাকবে যে, পোষা প্রাণীটাও আপনাকে এড়িয়ে চলবে। তবে চিন্তা নেই, বিকেলের দিকে মুড ফ্রেশ হবে—যদি না কোনো অপ্রত্যাশিত ফোন কল আসে। কর্মক্ষেত্রে সুনাম হতে পারে, যা আপনার অহংবোধকে একধাপ বাড়িয়ে দেবে। আজ কিছু নতুন পোশাক, মোবাইল ফোন ইত্যাদি কেনার যোগ রয়েছে। আপনার সম্মান বৃদ্ধির মূল কারণ হতে পারে নতুন ফোনের ক্যামেরা। তাই নিজেকে প্রমাণ করতে নয়, বরং ভালো সেলফি তোলার জন্য আজ মন দিন। সাবধানে অর্থ ব্যয় করুন। যদি অনলাইনে কোনো অপ্রয়োজনীয় জিনিস চোখে পড়ে, মনে রাখবেন—ওটা কালকেও থাকবে।
কর্কট
আজকের দিনটি আপনার জন্য বেশ ব্যয়বহুল হতে চলেছে। এর মানে এই নয় যে দামি কিছু কিনবেন, বরং মানে হলো—হয়তো অফিসের কলিগদের জন্য চা-কফি কিনে নিজের মাসকাবারি বাজেট শেষ করবেন। বসের কাছে প্রশংসা পাবেন, কারণ আপনি কাজের প্রতি খুবই দায়িত্বশীল। এই দায়িত্বশীলতা আপনাকে আরও বেশি কাজ এনে দেবে, যা ভবিষ্যতে মানসিক ভারসাম্য নষ্টের কারণ হবে। সরকারি কাজে অসুবিধা দেখা দেবে—কারণ সরকারি কাজ সব সময়ই অসুবিধা সৃষ্টি করে। ভদ্র থাকুন, নইলে টাকা শেষ হয়ে গেলে ধার চাওয়ার মুখ থাকবে না।
সিংহ
প্রতিদিনের স্বাভাবিক রুটিন বদলানোর চেষ্টা কেউ একজন করবে। সেই ‘কেউ একজন’ আর কেউ নয়, তিনি হলেন আপনার জীবনসঙ্গী, যিনি আপনাকে দিয়ে ঘরের কাজ করানোর চেষ্টা করবেন। সেদিকে বিশেষ নজর রাখুন। তবে দিনের শেষে রোমান্সের যোগ রয়েছে, যদি আপনি রুটিন বদলের এই চ্যালেঞ্জে হেরে যান এবং বশ্যতা স্বীকার করেন। আজ ব্যবসা বা পেশার জন্য অর্থ সংগ্রহে আপনি সফল হবেন। ঘরের কাজকে প্রেমের খেলা মনে করুন। হারলেও লাভ, জিতলেও!
কন্যা
সারা দিন আপনার কোনো বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ থাকবে না। চেষ্টা করলেও, ভেতরের কণ্ঠস্বর আপনাকে মনে করিয়ে দেবে—কত কাজ বাকি আছে। আজ আপনার স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করা দরকার। সামান্য সর্দি-কাশিকে কঠিন ব্যামো ভেবে সারা দিন গুগল করতে পারেন। অফিসে পদোন্নতির যোগ রয়েছে, তবে এর মানে হলো—আপনার ওপর চাপ আরও বাড়বে। ব্যবসায়ীরা আজ আর্থিক বিষয়ে হতাশ হতে পারেন। সন্তানদের বিষয়ে একটু সতর্ক থাকুন। আজ হয়তো তারা আপনার গোপনে জমানো চকলেট খুঁজে পেতে পারে।
তুলা
ব্যবসায় খুব বেশি লাভ দেখতে পাওয়ার যোগ রয়েছে। এই লাভকে কাজে লাগিয়ে স্বাস্থ্যের আগের থেকে উন্নতি দেখা যাবে। আজকের দিনে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভদ্র থাকবেন এবং মানসিকভাবে ভারসাম্য বজায় রাখবেন। তবে সাবধান, এই ভদ্রতা যেন অতিরিক্ত বিনয়ে রূপ না নেয়। না হলে সবাই আপনাকে দিয়ে নিজের কাজ করিয়ে নেবে। অতিরিক্ত লাভের খবর পেয়ে রাতে ঘুম ভাঙতে পারে। চিন্তা করবেন না, এটা শুধু গ্যাস।
বৃশ্চিক
আজকের দিনটি আপনার জন্য ফলপ্রসূ হতে চলেছে। তবে এই ‘ফল’ হয়তো আপনার ই-মেইল ইনবক্সে জমা হওয়া হাজারো নতুন ই-মেইলের স্তূপ! কর্মজীবনের দিক থেকে নতুন সুযোগ পেতে পারেন। এটি হতে পারে—বসের নতুন প্রজেক্ট, যা আপনি একা সামলাবেন। অর্থের দিক থেকে দিনটি শুভ, কারণ আপনি আজ বুদ্ধি করে একটি অপ্রয়োজনীয় অনলাইন শপিং অর্ডার বাতিল করবেন। অর্থের দিক থেকে শুভ, মানে আপনি আজ অন্তত এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলতে পারবেন।
ধনু
আপনার জন্য আজ একটি শুভ দিন হতে চলেছে। এতটা শুভ যে, হয়তো সকালে উঠে জুতা পরার সময় মোজা পরতে ভুলে যাবেন। ক্যারিয়ারে লক্ষ্য অর্জনের জন্য একটি পরিকল্পনা করুন। দিনের মূল প্ল্যানিং হবে, কীভাবে এই পরিকল্পনাকে আবার পরের দিনের জন্য স্থগিত করা যায়। গাড়ি চালানোর সময় অসতর্কতা থেকে বিরত থাকুন। বিশেষত যখন আপনি ক্যারিয়ার প্ল্যানিংয়ের চিন্তায় মগ্ন থাকবেন। আপনার ভাগ্য আজ ভালো, শুধু নিজেকে বেশি সিরিয়াস না নিলেই হলো।
মকর
জ্যোতিষ বলছে, ‘সব জায়গায় ইতিবাচক মনোভাব দেখালে চলবে না।’ সত্যি কথা! আপনার ইতিবাচকতা দেখে অন্যরা ভয় পেতে পারে। রাস্তায় কারও সঙ্গে ঝামেলা সৃষ্টি হতে পারে। ঝামেলার কারণ—আপনাকে দেখিয়ে কেউ যদি ভুল করে হাসে! বড় কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকুন, যেমন—সকালের নাশতায় কী খাবেন, পাউরুটি নাকি পরোটা? আপনি মানসিক চাপে ভুগতে পারেন। রাগ নিয়ন্ত্রণ করুন। যদি দেখেন কেউ আলু-পেঁয়াজ নিয়ে তর্ক করছে, সেখানে জড়াবেন না।
কুম্ভ
শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের প্রচুর দায়িত্ব বৃদ্ধি পেতে পারে। এর মানে শুধু একটাই—আপনার ছুটি বাতিল। রাজনৈতিক কোনো কাজ করার আগে খুব ভাবনাচিন্তা করার দরকার আছে। সামনে ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ আসবে, কিন্তু আপনি এমন দায়িত্বশীল যে সেই সুযোগ নিতে পারবেন না। যদিও মন চাইবে, ‘যাই হোক, একটু ফাঁকি দেওয়া যাক।’ এই দোটানা মানসিক চাপ বাড়াবে। ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ এলেও, যদি দেখেন বস আপনার দিকে তাকিয়ে হাসছেন, তবে সেই সুযোগ হাতছাড়া করুন।
মীন
আজ সৃজনশীল শক্তিতে পূর্ণ একটি দিন কাটাবেন। আপনার এই সৃজনশীলতা হয়তো কাজে লাগতে পারে—বাড়িতে ভেঙে যাওয়া দামি জিনিসটি মেরামত করার জন্য। অর্থের দিক থেকে ভাগ্যবান প্রমাণিত হতে পারেন। হয়তো পুরোনো কোনো প্যান্টের পকেটে একটি পাঁচশ টাকার নোট খুঁজে পাবেন। কেউ কোনো দায়িত্ব দিলে একেবারেই নেবেন না, কারণ এটা আপনার জন্য একটি ফাঁদ হতে পারে। আজ উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে—কারণ আপনি ওই দায়িত্বটি না নিতে পারার অপরাধবোধে ভুগবেন। দাম্পত্য জীবন শান্ত ও সুখকর থাকবে। কারণ সঙ্গী আজ আপনার সৃজনশীলতা দেখে কথা বলার সাহস পাবেন না।

আমরা এক ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ পৃথিবীতে বাস করছি। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ প্রভাব টের পাচ্ছে বৈশ্বিক উষ্ণতায় সরাসরি ভূমিকা রাখা উন্নত দেশগুলোও। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক সংকট কঠিনতর হয়ে উঠছে।
১৭ আগস্ট ২০২২
চাকরির কারণে প্রতিদিন বাইরে বের হতে হয়। শীতে ধুলোবালির পরিমাণ বেশি। পথের ধারে বিভিন্ন জিনিসপত্র পোড়ানোয় ধোঁয়ার গন্ধও হয়। সব মিলিয়ে চুলের তরতাজা ভাব নষ্ট হয়ে যায়। সে জন্য প্রতিদিন শ্য়াম্পু করি। যদিও তা চুলের জন্য ভালো নয়।
১ ঘণ্টা আগে
সারা বছর সবার ঘরে, ভ্যানিটি ব্যাগে এমনকি অফিসের ডেস্কে যে প্রসাধনী থাকে, তা হলো পেট্রোলিয়াম জেলি। এটি শুধু ঠোঁটের রুক্ষতা দূর করে, তা-ই নয়, রূপচর্চায় আরও নানাভাবে ব্যবহার করা যায়।
২ ঘণ্টা আগে
চুলে রং করতে ভালোবাসলেও সবাই পারলারে গিয়ে চুল রং করান না। রং কিনে এনে বাড়িতেই তাঁরা কাজটি সেরে ফেলেন। কিন্তু বাড়িতে রং করলে প্রতিবার চুল ধোয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু পরিমাণ রংও ধুয়ে যায়।
৩ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

প্রশ্ন: চাকরির কারণে প্রতিদিন বাইরে বের হতে হয়। শীতে ধুলোবালির পরিমাণ বেশি। পথের ধারে বিভিন্ন জিনিসপত্র পোড়ানোয় ধোঁয়ার গন্ধও হয়। সব মিলিয়ে চুলের তরতাজা ভাব নষ্ট হয়ে যায়। সে জন্য প্রতিদিন শ্য়াম্পু করি। যদিও তা চুলের জন্য ভালো নয়। চুলের যত্নে কীভাবে এর তরতাজা ভাব ধরে রাখা যায়?
স্নিগ্ধা বাহার, ঢাকা
উত্তর: হেয়ার ডিটক্স আপনার জন্য ভালো সমাধান। এর মাধ্যমে চুল পুনরুজ্জীবিত হয়। কিন্তু হেয়ার ডিটক্স ট্রিটমেন্ট বাড়িতে শতভাগ সম্ভব নয়। তবে হেয়ার ডিটক্স প্যাক লাগানো যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে, প্রথমে চুলে হট অয়েল ম্যাসাজ করে নিন। এরপর কোনো হারবাল শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিতে হবে। এই শ্যাম্পু তৈরি করে নিতে হবে আপেল সিডার ভিনেগার, নারকেলের দুধ, একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল এবং অল্প পরিমাণে কোনো মাইল্ড শ্যাম্পু ভালো করে মিশিয়ে। এটি ব্যবহারে মাথার ত্বকে জমা হওয়া ধুলোবালি, ময়লা ও অতিরিক্ত তেল ধুয়ে যাবে।
এ ছাড়া এখন বাজারে সি-সল্ট পাওয়া যায়। একটি বাটিতে অ্যালোভেরা জেল, আপেল সিডার ভিনেগার এবং অল্প পরিমাণে সি-সল্ট একসঙ্গে মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন। এরপর এই মিশ্রণ মাথার ত্বকে লাগিয়ে ম্যাসাজ করে রাখতে হবে আধা ঘণ্টা। এরপর যেকোনো প্রোটিন শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে।
প্রশ্ন: চুলের মসৃণ ভাব ফিরে পেতে ঘরে তৈরি হেয়ার রিপেয়ারিং মাস্কের পরামর্শ চাই। উপকরণগুলো সহজলভ্য হলে ভালো হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, দিনাজপুর
উত্তর: বাড়িতে যত্ন নেওয়া গেলে পারলারে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। একটি বাটিতে ডিম ভেঙে নিন। এর সঙ্গে টক দই ও অ্যালোভেরা জেল ভালোভাবে ফেটিয়ে নিন। এই মিশ্রণ শ্যাম্পু করা মাথার ত্বকে ও চুলে লাগিয়ে আধা ঘণ্টা রাখতে হবে। এরপর আবার শ্যাম্পু করে নিতে হবে। এই প্যাক ব্যবহার করলে চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ে এবং চুল সিল্কি হয়।
প্রশ্ন: শীতে পুরুষের ত্বক মসৃণ এবং উজ্জ্বল রাখতে সহজ এবং সাধারণ কিছু টিপস প্রয়োজন। জানালে বিশেষ উপকৃত হব।
নীল মজুমদার, সোনারগাঁ
উত্তর: ত্বক পেলব রাখতে এখন থেকে প্রতিদিন রাতে অলিভ অয়েল ও গোলাপজল ভালোভাবে মিশিয়ে মুখে মেখে নেবেন। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে তুলতে পাকা টমেটোর প্যাক খুবই উপকারী। পাকা টমেটো পেস্টের সঙ্গে ২ চামচ টক দই এবং ১ চামচ মধু মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে রাখুন। আধা শুকনো হয়ে এলে কিছুটা ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।
প্রশ্ন: শীতে সব সময় পা ঢাকা জুতা ব্যবহার করি। এর সঙ্গে মোজা তো পরতেই হয়। কিন্তু এ ধরনের জুতা পরার পর পায়ে গন্ধ হয়। এ ছাড়া শীতে পায়ের আঙুলের ফাঁকে খুব চুলকানি হয়। এর জন্য ট্যালকম পাউডার ও ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করি। পা ফ্রেশ রাখতে ভালো সমাধান দিলে কৃতজ্ঞ থাকব।
পম্পা শেখ, লক্ষ্মীপুর
উত্তর: দীর্ঘক্ষণ পরিধান করার কারণে জুতার ভেতরে পা ঘেমে যেতে পারে। তাই কিছুক্ষণ পরপর জুতা খুলে রাখুন। সুতির মোজা ব্যবহার করুন। এ ধরনের মোজা পায়ের ঘাম শুষে নিতে সহায়তা করে। প্রতিদিন ধোয়া পরিষ্কার মোজা ব্যবহার করুন। অফিসে গিয়ে সম্ভব হলে জুতা-মোজা খুলে খোলা স্যান্ডেল পায়ে দিন। জুতা যদি পায়ে দিতেই হয়, তাহলে চামড়া বা কাপড়ের জুতা ব্যবহার করুন। এতে বাইরের বাতাস জুতার ভেতর যাওয়া-আসা করতে পারবে, এর ফলে পা ঘামবে কম। বাড়ি ফিরে হালকা গরম পানিতে সাবানের ফেনা করে পা ধুয়ে নিন। এতে ত্বকে থাকা জীবাণুর সংখ্যা কমে যাবে।
পরামর্শ দিয়েছেন: শারমিন কচি, রূপবিশেষজ্ঞ এবং স্বত্বাধিকারী বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ কেয়ার

প্রশ্ন: চাকরির কারণে প্রতিদিন বাইরে বের হতে হয়। শীতে ধুলোবালির পরিমাণ বেশি। পথের ধারে বিভিন্ন জিনিসপত্র পোড়ানোয় ধোঁয়ার গন্ধও হয়। সব মিলিয়ে চুলের তরতাজা ভাব নষ্ট হয়ে যায়। সে জন্য প্রতিদিন শ্য়াম্পু করি। যদিও তা চুলের জন্য ভালো নয়। চুলের যত্নে কীভাবে এর তরতাজা ভাব ধরে রাখা যায়?
স্নিগ্ধা বাহার, ঢাকা
উত্তর: হেয়ার ডিটক্স আপনার জন্য ভালো সমাধান। এর মাধ্যমে চুল পুনরুজ্জীবিত হয়। কিন্তু হেয়ার ডিটক্স ট্রিটমেন্ট বাড়িতে শতভাগ সম্ভব নয়। তবে হেয়ার ডিটক্স প্যাক লাগানো যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে, প্রথমে চুলে হট অয়েল ম্যাসাজ করে নিন। এরপর কোনো হারবাল শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিতে হবে। এই শ্যাম্পু তৈরি করে নিতে হবে আপেল সিডার ভিনেগার, নারকেলের দুধ, একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল এবং অল্প পরিমাণে কোনো মাইল্ড শ্যাম্পু ভালো করে মিশিয়ে। এটি ব্যবহারে মাথার ত্বকে জমা হওয়া ধুলোবালি, ময়লা ও অতিরিক্ত তেল ধুয়ে যাবে।
এ ছাড়া এখন বাজারে সি-সল্ট পাওয়া যায়। একটি বাটিতে অ্যালোভেরা জেল, আপেল সিডার ভিনেগার এবং অল্প পরিমাণে সি-সল্ট একসঙ্গে মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন। এরপর এই মিশ্রণ মাথার ত্বকে লাগিয়ে ম্যাসাজ করে রাখতে হবে আধা ঘণ্টা। এরপর যেকোনো প্রোটিন শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে।
প্রশ্ন: চুলের মসৃণ ভাব ফিরে পেতে ঘরে তৈরি হেয়ার রিপেয়ারিং মাস্কের পরামর্শ চাই। উপকরণগুলো সহজলভ্য হলে ভালো হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, দিনাজপুর
উত্তর: বাড়িতে যত্ন নেওয়া গেলে পারলারে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। একটি বাটিতে ডিম ভেঙে নিন। এর সঙ্গে টক দই ও অ্যালোভেরা জেল ভালোভাবে ফেটিয়ে নিন। এই মিশ্রণ শ্যাম্পু করা মাথার ত্বকে ও চুলে লাগিয়ে আধা ঘণ্টা রাখতে হবে। এরপর আবার শ্যাম্পু করে নিতে হবে। এই প্যাক ব্যবহার করলে চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ে এবং চুল সিল্কি হয়।
প্রশ্ন: শীতে পুরুষের ত্বক মসৃণ এবং উজ্জ্বল রাখতে সহজ এবং সাধারণ কিছু টিপস প্রয়োজন। জানালে বিশেষ উপকৃত হব।
নীল মজুমদার, সোনারগাঁ
উত্তর: ত্বক পেলব রাখতে এখন থেকে প্রতিদিন রাতে অলিভ অয়েল ও গোলাপজল ভালোভাবে মিশিয়ে মুখে মেখে নেবেন। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে তুলতে পাকা টমেটোর প্যাক খুবই উপকারী। পাকা টমেটো পেস্টের সঙ্গে ২ চামচ টক দই এবং ১ চামচ মধু মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে রাখুন। আধা শুকনো হয়ে এলে কিছুটা ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।
প্রশ্ন: শীতে সব সময় পা ঢাকা জুতা ব্যবহার করি। এর সঙ্গে মোজা তো পরতেই হয়। কিন্তু এ ধরনের জুতা পরার পর পায়ে গন্ধ হয়। এ ছাড়া শীতে পায়ের আঙুলের ফাঁকে খুব চুলকানি হয়। এর জন্য ট্যালকম পাউডার ও ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করি। পা ফ্রেশ রাখতে ভালো সমাধান দিলে কৃতজ্ঞ থাকব।
পম্পা শেখ, লক্ষ্মীপুর
উত্তর: দীর্ঘক্ষণ পরিধান করার কারণে জুতার ভেতরে পা ঘেমে যেতে পারে। তাই কিছুক্ষণ পরপর জুতা খুলে রাখুন। সুতির মোজা ব্যবহার করুন। এ ধরনের মোজা পায়ের ঘাম শুষে নিতে সহায়তা করে। প্রতিদিন ধোয়া পরিষ্কার মোজা ব্যবহার করুন। অফিসে গিয়ে সম্ভব হলে জুতা-মোজা খুলে খোলা স্যান্ডেল পায়ে দিন। জুতা যদি পায়ে দিতেই হয়, তাহলে চামড়া বা কাপড়ের জুতা ব্যবহার করুন। এতে বাইরের বাতাস জুতার ভেতর যাওয়া-আসা করতে পারবে, এর ফলে পা ঘামবে কম। বাড়ি ফিরে হালকা গরম পানিতে সাবানের ফেনা করে পা ধুয়ে নিন। এতে ত্বকে থাকা জীবাণুর সংখ্যা কমে যাবে।
পরামর্শ দিয়েছেন: শারমিন কচি, রূপবিশেষজ্ঞ এবং স্বত্বাধিকারী বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ কেয়ার

আমরা এক ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ পৃথিবীতে বাস করছি। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ প্রভাব টের পাচ্ছে বৈশ্বিক উষ্ণতায় সরাসরি ভূমিকা রাখা উন্নত দেশগুলোও। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক সংকট কঠিনতর হয়ে উঠছে।
১৭ আগস্ট ২০২২
আজ আপনার পকেট হঠাৎ করে গরম হতে পারে। জ্যোতিষ বলছে, ‘হঠাৎ অর্থপ্রাপ্তি হতে পারে।’ কিন্তু এই অর্থ হাতে আসার সঙ্গে সঙ্গেই আপনার আশপাশে থাকা ‘নারী বন্ধু’ (বা পুরুষ বন্ধু, লিঙ্গভেদ নেই) আপনাকে কফি, বিরিয়ানি বা নতুন সিরিজের সাবস্ক্রিপশনের জন্য অনুরোধ করতে পারে।
৩৪ মিনিট আগে
সারা বছর সবার ঘরে, ভ্যানিটি ব্যাগে এমনকি অফিসের ডেস্কে যে প্রসাধনী থাকে, তা হলো পেট্রোলিয়াম জেলি। এটি শুধু ঠোঁটের রুক্ষতা দূর করে, তা-ই নয়, রূপচর্চায় আরও নানাভাবে ব্যবহার করা যায়।
২ ঘণ্টা আগে
চুলে রং করতে ভালোবাসলেও সবাই পারলারে গিয়ে চুল রং করান না। রং কিনে এনে বাড়িতেই তাঁরা কাজটি সেরে ফেলেন। কিন্তু বাড়িতে রং করলে প্রতিবার চুল ধোয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু পরিমাণ রংও ধুয়ে যায়।
৩ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

সারা বছর সবার ঘরে, ভ্যানিটি ব্যাগে এমনকি অফিসের ডেস্কে যে প্রসাধনী থাকে, তা হলো পেট্রোলিয়াম জেলি। এটি শুধু ঠোঁটের রুক্ষতা দূর করে, তা-ই নয়, রূপচর্চায় আরও নানাভাবে ব্যবহার করা যায়।
বাড়িতে মেকআপ রিমুভার না থাকলে পেট্রোলিয়াম জেলি দিয়ে দারুণভাবে মেকআপ তোলার কাজটি সেরে নিতে পারেন। পেট্রোলিয়াম জেলি নিয়ে পুরো মুখে ম্যাসাজ করুন। এরপর তুলা দিয়ে আলতো করে মুছে নিন। চোখের মতো স্পর্শকাতর ত্বকের মেকআপ তুলতেও এটি ব্যবহার করা যায়।
নখের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এবং ভঙ্গুরতা কমাতে জাদুকরি সমাধান পেট্রোলিয়াম জেলি। এটি ব্যবহারে নখ সুস্থ থাকে।
যেখানে সুগন্ধি দেবেন, সেই জায়গায় আগে কিছুটা পেট্রোলিয়াম জেলি মালিশ করে নিন। এরপর সেখানে সুগন্ধি স্প্রে করুন। এতে দীর্ঘ সময় ত্বকে ঘ্রাণ স্থায়ী হবে।
অনেকের ভ্রু ঝরে পড়ে। এর ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে পেট্রোলিয়াম জেলি। রাতে ঘুমানোর আগে একটা আইব্রো ব্রাশে কিছুটা জেলি নিয়ে ভ্রু যুগলে লাগিয়ে নিন। ধীরে ধীরে ভ্রু ঘন হবে।

মেকআপের পূর্ণতায় এখন প্রায় সবাই হাইলাইটার ব্যবহার করেন। গালে এবং ভ্রুর নিচের ত্বকে কিছুটা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করলে সেটা হাইলাইটার হিসেবে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে।
ত্বকে আঘাত পেলে বা ঘা হলে পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করা যেতে পারে। এটির ব্যবহারে ক্ষত দ্রুততম সময়ে শুকিয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া এটি তেলতেলে হওয়ায় ত্বক আর্দ্র থাকে। তাই ক্ষত শুকিয়ে ফেটে যায় না।
সূত্র: ফেমিনা ও অন্যান্য

সারা বছর সবার ঘরে, ভ্যানিটি ব্যাগে এমনকি অফিসের ডেস্কে যে প্রসাধনী থাকে, তা হলো পেট্রোলিয়াম জেলি। এটি শুধু ঠোঁটের রুক্ষতা দূর করে, তা-ই নয়, রূপচর্চায় আরও নানাভাবে ব্যবহার করা যায়।
বাড়িতে মেকআপ রিমুভার না থাকলে পেট্রোলিয়াম জেলি দিয়ে দারুণভাবে মেকআপ তোলার কাজটি সেরে নিতে পারেন। পেট্রোলিয়াম জেলি নিয়ে পুরো মুখে ম্যাসাজ করুন। এরপর তুলা দিয়ে আলতো করে মুছে নিন। চোখের মতো স্পর্শকাতর ত্বকের মেকআপ তুলতেও এটি ব্যবহার করা যায়।
নখের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এবং ভঙ্গুরতা কমাতে জাদুকরি সমাধান পেট্রোলিয়াম জেলি। এটি ব্যবহারে নখ সুস্থ থাকে।
যেখানে সুগন্ধি দেবেন, সেই জায়গায় আগে কিছুটা পেট্রোলিয়াম জেলি মালিশ করে নিন। এরপর সেখানে সুগন্ধি স্প্রে করুন। এতে দীর্ঘ সময় ত্বকে ঘ্রাণ স্থায়ী হবে।
অনেকের ভ্রু ঝরে পড়ে। এর ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে পেট্রোলিয়াম জেলি। রাতে ঘুমানোর আগে একটা আইব্রো ব্রাশে কিছুটা জেলি নিয়ে ভ্রু যুগলে লাগিয়ে নিন। ধীরে ধীরে ভ্রু ঘন হবে।

মেকআপের পূর্ণতায় এখন প্রায় সবাই হাইলাইটার ব্যবহার করেন। গালে এবং ভ্রুর নিচের ত্বকে কিছুটা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করলে সেটা হাইলাইটার হিসেবে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে।
ত্বকে আঘাত পেলে বা ঘা হলে পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করা যেতে পারে। এটির ব্যবহারে ক্ষত দ্রুততম সময়ে শুকিয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া এটি তেলতেলে হওয়ায় ত্বক আর্দ্র থাকে। তাই ক্ষত শুকিয়ে ফেটে যায় না।
সূত্র: ফেমিনা ও অন্যান্য

আমরা এক ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ পৃথিবীতে বাস করছি। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ প্রভাব টের পাচ্ছে বৈশ্বিক উষ্ণতায় সরাসরি ভূমিকা রাখা উন্নত দেশগুলোও। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক সংকট কঠিনতর হয়ে উঠছে।
১৭ আগস্ট ২০২২
আজ আপনার পকেট হঠাৎ করে গরম হতে পারে। জ্যোতিষ বলছে, ‘হঠাৎ অর্থপ্রাপ্তি হতে পারে।’ কিন্তু এই অর্থ হাতে আসার সঙ্গে সঙ্গেই আপনার আশপাশে থাকা ‘নারী বন্ধু’ (বা পুরুষ বন্ধু, লিঙ্গভেদ নেই) আপনাকে কফি, বিরিয়ানি বা নতুন সিরিজের সাবস্ক্রিপশনের জন্য অনুরোধ করতে পারে।
৩৪ মিনিট আগে
চাকরির কারণে প্রতিদিন বাইরে বের হতে হয়। শীতে ধুলোবালির পরিমাণ বেশি। পথের ধারে বিভিন্ন জিনিসপত্র পোড়ানোয় ধোঁয়ার গন্ধও হয়। সব মিলিয়ে চুলের তরতাজা ভাব নষ্ট হয়ে যায়। সে জন্য প্রতিদিন শ্য়াম্পু করি। যদিও তা চুলের জন্য ভালো নয়।
১ ঘণ্টা আগে
চুলে রং করতে ভালোবাসলেও সবাই পারলারে গিয়ে চুল রং করান না। রং কিনে এনে বাড়িতেই তাঁরা কাজটি সেরে ফেলেন। কিন্তু বাড়িতে রং করলে প্রতিবার চুল ধোয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু পরিমাণ রংও ধুয়ে যায়।
৩ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

চুলে রং করতে ভালোবাসলেও সবাই পারলারে গিয়ে চুল রং করান না। রং কিনে এনে বাড়িতেই তাঁরা কাজটি সেরে ফেলেন। কিন্তু বাড়িতে রং করলে প্রতিবার চুল ধোয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু পরিমাণ রংও ধুয়ে যায়। ফলে রং করা চুল অনেকটাই ফ্যাকাশে হয়ে যায়। যাঁরা বাড়িতেই চুল রাঙান তাঁদের রং করার পর চুল ধোয়া থেকে শুরু করে শুকানোর পদ্ধতিতেও কিছু পরিবর্তন আনা জরুরি।
সঠিক শ্যাম্পু বাছাই
চুলে রং করার পর প্রথমে কালার প্রোটেকটিভ শ্যাম্পু বাছাই করুন। এই শ্যাম্পুগুলো দীর্ঘদিন চুলে রং বজায় রাখতে সহায়তা করে।
চুলে ঘন ঘন শ্যাম্পু নয়
চুলে রং করার পর সপ্তাহে দু-তিনবার শ্যাম্পু করুন। তবে রোজ বাইরে গেলে প্রয়োজনে ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন।
নিয়মিত তেল ব্যবহার
রং করার পর; বিশেষ করে চুলের ডগা ফেটে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। তাই সপ্তাহে অন্তত দুদিন চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত তেল ম্যাসাজ করে নিন।
স্টাইলিং কম করুন
রং করা চুলে স্ট্রেটনার কিংবা কার্লার যত কম ব্যবহার করা যায়, ততই ভালো। কারণ, এর ফলে চুল আরও বেশি রুক্ষ হয়ে যেতে পারে।
নিয়ম করে প্যাক মাখুন
পাকা কলা ও মধু পেস্ট করে সপ্তাহে দুদিন চুলে মেখে রাখুন ২০ মিনিট করে। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে চুল হবে মসৃণ।
সূত্র: ল’রিয়েল প্যারিস ইউকে ও অন্যান্য

চুলে রং করতে ভালোবাসলেও সবাই পারলারে গিয়ে চুল রং করান না। রং কিনে এনে বাড়িতেই তাঁরা কাজটি সেরে ফেলেন। কিন্তু বাড়িতে রং করলে প্রতিবার চুল ধোয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু পরিমাণ রংও ধুয়ে যায়। ফলে রং করা চুল অনেকটাই ফ্যাকাশে হয়ে যায়। যাঁরা বাড়িতেই চুল রাঙান তাঁদের রং করার পর চুল ধোয়া থেকে শুরু করে শুকানোর পদ্ধতিতেও কিছু পরিবর্তন আনা জরুরি।
সঠিক শ্যাম্পু বাছাই
চুলে রং করার পর প্রথমে কালার প্রোটেকটিভ শ্যাম্পু বাছাই করুন। এই শ্যাম্পুগুলো দীর্ঘদিন চুলে রং বজায় রাখতে সহায়তা করে।
চুলে ঘন ঘন শ্যাম্পু নয়
চুলে রং করার পর সপ্তাহে দু-তিনবার শ্যাম্পু করুন। তবে রোজ বাইরে গেলে প্রয়োজনে ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন।
নিয়মিত তেল ব্যবহার
রং করার পর; বিশেষ করে চুলের ডগা ফেটে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। তাই সপ্তাহে অন্তত দুদিন চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত তেল ম্যাসাজ করে নিন।
স্টাইলিং কম করুন
রং করা চুলে স্ট্রেটনার কিংবা কার্লার যত কম ব্যবহার করা যায়, ততই ভালো। কারণ, এর ফলে চুল আরও বেশি রুক্ষ হয়ে যেতে পারে।
নিয়ম করে প্যাক মাখুন
পাকা কলা ও মধু পেস্ট করে সপ্তাহে দুদিন চুলে মেখে রাখুন ২০ মিনিট করে। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে চুল হবে মসৃণ।
সূত্র: ল’রিয়েল প্যারিস ইউকে ও অন্যান্য

আমরা এক ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ পৃথিবীতে বাস করছি। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ প্রভাব টের পাচ্ছে বৈশ্বিক উষ্ণতায় সরাসরি ভূমিকা রাখা উন্নত দেশগুলোও। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক সংকট কঠিনতর হয়ে উঠছে।
১৭ আগস্ট ২০২২
আজ আপনার পকেট হঠাৎ করে গরম হতে পারে। জ্যোতিষ বলছে, ‘হঠাৎ অর্থপ্রাপ্তি হতে পারে।’ কিন্তু এই অর্থ হাতে আসার সঙ্গে সঙ্গেই আপনার আশপাশে থাকা ‘নারী বন্ধু’ (বা পুরুষ বন্ধু, লিঙ্গভেদ নেই) আপনাকে কফি, বিরিয়ানি বা নতুন সিরিজের সাবস্ক্রিপশনের জন্য অনুরোধ করতে পারে।
৩৪ মিনিট আগে
চাকরির কারণে প্রতিদিন বাইরে বের হতে হয়। শীতে ধুলোবালির পরিমাণ বেশি। পথের ধারে বিভিন্ন জিনিসপত্র পোড়ানোয় ধোঁয়ার গন্ধও হয়। সব মিলিয়ে চুলের তরতাজা ভাব নষ্ট হয়ে যায়। সে জন্য প্রতিদিন শ্য়াম্পু করি। যদিও তা চুলের জন্য ভালো নয়।
১ ঘণ্টা আগে
সারা বছর সবার ঘরে, ভ্যানিটি ব্যাগে এমনকি অফিসের ডেস্কে যে প্রসাধনী থাকে, তা হলো পেট্রোলিয়াম জেলি। এটি শুধু ঠোঁটের রুক্ষতা দূর করে, তা-ই নয়, রূপচর্চায় আরও নানাভাবে ব্যবহার করা যায়।
২ ঘণ্টা আগে