Ajker Patrika

চেঙ্গী নদীর তীর ঘেঁষে বৈসু

মন্টি বৈষ্ণব
আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২২, ১৩: ৫০
চেঙ্গী নদীর তীর ঘেঁষে বৈসু

ঘুরতে যেতে কে না ভালোবাসে। বাঙালি হিসেবে আমরা বরাবরই ভ্রমণপিপাসু জাতি। প্রতিদিনের একঘেয়ে জীবনে মানুষ যখন হাঁপিয়ে ওঠে, তখনই মন পালাই পালাই করে। ঠিক সে সময় যদি ছুটি মিলে যায়, তবে সেই সুযোগ হাতছাড়া না করে অনেকেই ঘুরতে চলে যান পাহাড়ে কিংবা সমুদ্রে। আবার ভ্রমণে গেলে যান্ত্রিক জীবন থেকে পাওয়া যায় মুক্তি। পুতুলের মতো টানা কাজ করা থেকে পাওয়া যায় কিছু সময়ের বিরতি। 

ঘড়ির সঙ্গে ঘুরতে থাকা জীবনে কিছুটা বদল তো চাই। স্বাদ হোক আর হাওয়া বদলই হোক, ভ্রমণের চেয়ে ভালো কিছু তো নেই। তাই ভ্রমণই সই। মন নেচে উঠল ভাবতেই। সঙ্গে ঢোলের বাড়ি হয়ে এল বোনের কাছ থেকে পাহাড়ে যাওয়ার আমন্ত্রণ। অফিস থেকে ছুটি নিয়ে চলে গেলাম; গন্তব্য খাগড়াছড়ি। 

আমরা যাত্রা শুরু করেছিলাম ১৩ এপ্রিলের রাতে। আরামবাগ থেকে বাসে করে রওনা দিলাম। যাত্রা অবশ্য ব্যাঘাতহীন ছিল না। পোহাতে হয়েছে ভোগান্তি। না, তেমন বড় কিছু নয়। স্থানে স্থানে সড়কের দশা ও বাহনের শরীর-স্বাস্থ্য মিলিয়ে একটা অবস্থা আরকি। মাঝপথে শ্যামলী পরিবহনের গাড়ির (নন এসি) এঁকেবেঁকে চলতে দেখে মনে মনে গাইলাম ‘তোমার সাপের বেণি নাচে না, নাচে শ্যামলী পরিবহনের গাড়ি’। 

চেঙ্গী নদীর তীরে গঙ্গা পূজাবেহাল সড়ক পেরিয়ে অবশেষে পৌঁছালাম খাগড়াছড়িতে। রাস্তার কারণে ঘুমাতে না পারার সুবিধাটা হলো ভোরের আলো ফুটতে দেখেছি। ভোরের আলোয় অদ্ভুত এক মায়াবী পরশ জড়িয়ে থাকে। গাড়ি থেকে মনে হয় কোনো এক রাজকন্যা আলতো ছোঁয়ায় ভোরকে রাঙিয়ে দিচ্ছে। 

আমরা দলে ভারী ছিলাম। তাই পূজা-পার্বণে কারও বাড়িতে গিয়ে সমস্যায় ফেলতে চাইনি। উঠলাম হোটেল গাইরিংয়ে। গাইরিং মানে হচ্ছে টংঘর। হোটেলের প্রবেশপথেই দেখা হলো মধুমঞ্জুরি ফুলেদের সঙ্গে। তাদের অভ্যর্থনা বেশ ভালোই লাগল। এর কিছুক্ষণ পরই কোকিলের ডাক শুনে মুগ্ধ হলাম। ভালো লাগার বিষয় ছিল, এই কোকিলের ডাক শুনলাম টানা তিন দিন। যেখানে যেতাম, সেখানেই মনে হতো কোকিলেরা আমাদের সঙ্গেই রয়েছে। 
 
কলা পাতায় তৈরি পিঠা।দিনটি ছিল ১৪ এপ্রিল। মানে পয়লা বৈশাখ। হোটেল থেকে হাতমুখ ধুয়ে বেরিয়ে পড়লাম। চলে গেলাম ঠাকুরছড়া গ্রামের ভবতোষ রোয়াজা দাদার বাড়িতে। এ গ্রামের কথা বলার আগে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর পূজা-পার্বণের কথা বলতে চাই। 

পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ত্রিপুরা, মারমা ও চাকমা জনগোষ্ঠীর বর্ষবরণ উৎসব বৈসাবি। ত্রিপুরাদের বৈসু বা বৈসুক, মারমাদের সাংগ্রাই ও চাকমাদের বিজু নামের আদ্যক্ষর দিয়ে বৈসাবি নামের উৎপত্তি। 

ত্রিপুরারা বৈসু উৎসব একটানা তিন দিন ধরে, মানে বাংলা বছরের শেষ দুই দিন এবং নতুন বছরের প্রথম দিন উদ্‌যাপন করে। দিনের পরিক্রমায় এই তিন দিনের অনুষ্ঠানগুলোর নাম হলো প্রথম দিন হারি বৈসু, দ্বিতীয় দিন বৈসু বা বৈসুক মা, আর তৃতীয় দিন বিসিকাতাল। 

নানান রকমের সবজি দিয়ে তৈরি পাচনহারি বৈসু: হারি বৈসু দিয়ে উৎসবের প্রথম দিনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। চৈত্রসংক্রান্তির আগের দিন এই উৎসব পালন করা হয়। এই দিনে খুব ভোরে গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে ফুল সংগ্রহ করে এখানকার কিশোর-কিশোরীরা। এরপর সেই ফুল দিয়ে মালা তৈরি করে ঝোলানো হয় ঘরের দরজায়। ফুলের সঙ্গে দেওয়া হয় নিমপাতা, আমপাতাও। পাশাপাশি গৃহপালিত পশুর গলায়ও ফুলের মালা পরানো হয়। ফুল ঘরকে সুবাসিত করে আর নিমপাতা বাড়িকে রোগবালাই থেকে দূরে রাখে। এই দিনে অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে দেবতা পুকুরে তীর্থ দর্শনে যায়। এ ছাড়া এই দিনে ত্রিপুরাদের ঐতিহ্যবাহী গরিয়া নৃত্যের দল বিভিন্ন পাড়া প্রদক্ষিণ করে বেড়ায়। 

বৈসু/বৈসুক মা: চৈত্র মাসের শেষ দিন, অর্থাৎ চৈত্রসংক্রান্তিতে এই উৎসব পালন করা হয়। এদিন সকালে বাড়ির ছেলেমেয়েরা কুচাই পানি (কুচাই পানিকে ত্রিপুরারা পবিত্র পানি বলে গণ্য করে) দিয়ে স্নান করে। এরপর গ্রামের বিভিন্ন বাড়ির উঠানে গিয়ে গৃহপালিত পশুদের জন্য ধান ছিটিয়ে দেওয়া হয়। এই দিন প্রাণী হত্যা করা হয় না। ঘরে ঘরে রান্না করা হয় হরেক রকমের সবজি দিয়ে নিরামিষ তরকারি। এই জনপ্রিয় তরকারি পাচন নামে পরিচিত। এ ছাড়া এই দিনে ঘরে ঘরে তৈরি করা হয় নানা রকমের পিঠা। আর বিকেল থেকে শুরু হয় এক পাড়া থেকে অন্য পাড়ায় বেড়ানো। 

গাছভর্তি গন্ধরাজ ফুলবিসিকাতাল: বছরের প্রথম দিনে পালন করা হয় বিসিকাতাল বা নববর্ষ। বিসিকাতাল মূলত ত্রিপুরাদের নববর্ষ। এই দিনে নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়া হয়। সকালে বাড়ির ছেলেমেয়েরা বাবা-মাসহ বাড়ির গুরুজনদের স্নান করায়। এতে পারিবারিক বন্ধন হয় দৃঢ়। এ ছাড়া এই দিনে সবাই মন্দিরে গিয়ে প্রণাম করে আসে। সবার মঙ্গল কামনা করে গঙ্গাকে উদ্দেশ্য করে জলপূজা করা হয়। গঙ্গাপূজায় আগামী দিনের সুখ-শান্তির জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা হয়। এ ছাড়া নদীর পাড়ে কলাপাতায় ফুল, টাকা, মোমবাতি, ধূপকাঠি জ্বালিয়ে করা হয় পূজা। গঙ্গাপূজার প্রধান উদ্দেশ্যই থাকে পানি দিয়ে পুরোনো দিনের সব গ্লানি ধুয়ে দেওয়া। এই দিনও আবার অনেকে দেবতা পুকুর দর্শন করতে যায়। এ ছাড়া বিসিকাতাল দিনে আমিষসহ ভালোমন্দ খাবারের আয়োজন করা হয়। এই দিন ভালো খাবার খাওয়াতে পারলে সারা বছর ভালো যাবে বলে বিশ্বাস করা হয়। 

ঘরের দরজায় ফুল আর আম পাতা দিয়ে তৈরি মালাএবার আসি ঠাকুরছড়া গ্রামের আলাপে। ভবতোষ দাদার বাড়িতে ঢুকতেই মাথার সঙ্গে টুক করে লাগল ফুল ও পাতা দিয়ে তৈরি মালা। দরজার ওপরে নানা রঙের ফুলের মালা দেখে মনটা ভরে উঠল। দুপুরে খেতে বসে দেখলাম নানা রকমের খাবারের আয়োজন। খাবারের মধ্যে ছিল বৈসুর বিশেষ খাবার পাচন, তেল ছাড়া বিভিন্ন তরকারি। তবে এসব খাবারে শুঁটকির প্রাধান্য ছিল অনেক বেশি। অবাক করার মতো স্বাদ ছিল শুধু সেদ্ধ করেই তৈরি করা মজাদার সব তরকারির। আমরা খুব তৃপ্তি নিয়ে খেলাম। এরপর গেলাম কাটা ধানের আইল দিয়ে বাড়ির পাশে চেঙ্গি নদীর তীরে। আমাদের সঙ্গে ছিল বাড়ির কুকুর বিল্টু। এ নাম আমরা দিয়েছি। বিল্টু আমাদের সঙ্গে অনেক ছবি তুলল। আর যতক্ষণ না পর্যন্ত আমরা নদীর তীর থেকে বাড়িতে ফিরলাম, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের পথ প্রদর্শক হিসেবেই থাকল। আমাদের চেঙ্গী নদীর তীরের সময়টাও কাটল দারুণ। 

গঙ্গা পূজায় প্রার্থনারত এক ভক্তএরপর বিকেলে রীতি অনুযায়ী এ বাড়ি-ও বাড়ি বেড়াতে বের হলাম। এখানকার মানুষ যে কতটা আন্তরিক, তা পাড়া ঘুরতে বের না হলে বুঝতে পারতাম না। পাড়া ঘুরতে গিয়ে সবার বাড়িতে খেলাম পাচন, বিরিয়ানি (এই বিরিয়ানি মোটর ডাল আর শূকরের মাংস দিয়ে তৈরি), তরমুজ, কলাসহ বিভিন্ন খাবার। পাড়া ঘুরতে গিয়ে দেবাশীষ রোয়াজা দাদার বাড়িতে গিয়ে চোখ আটকে গেল। এই বাড়ির বিশাল জায়গাজুড়ে ছিল ফুলের বাগান। সবচেয়ে অবাক করার মতো বিষয় ছিল গন্ধরাজ ফুলের বাগান। সারা জীবনেও গাছভর্তি এত গন্ধরাজ ফুল দেখিনি। ফুলবাগানের মালিক দেবাশীষ দাদা বললেন, ‘ফুলের সঙ্গে থাকতে আমি খুব পছন্দ করি। যখন ফুলের গাছ মরে যায়, তখন বুকটা হাহাকার করে।’ 

চেঙ্গী নদীর তীরে ফুলসহ কলাপাতার দীর্ঘ লাইনপরদিন ছিল বিসিকাতাল, মানে ত্রিপুরাদের নববর্ষ। কোকিলের ডাকে ভাঙল ঘুম। ঘুম ভাঙার পর শুনলাম খোল-করতালসহকারে নগর কীর্তনের সুর। কীর্তনের সুর শুনতে শুনতে চলে গেলাম চেঙ্গী নদীর তীরে গঙ্গাপূজার স্থানে। সেখানে যাওয়ামাত্রই নামলাম পানিতে। দেখলাম হাঁটুপানিতে সবাই গঙ্গাপূজা করছেন। এদিন সবার মঙ্গল কামনা করে গঙ্গাপূজা করা হয়। পানিতে বাঁশ দিয়ে ভাসমান বেদি তৈরি করা হয়েছে। সেই বেদিতে রয়েছে হরেক রঙের ফুল। সেখানে জ্বলছে মোমবাতি। পানিতে ঘুরতে ঘুরতে দেখলাম তীরে কলাপাতায় ফুল, টাকা আর মোমবাতি জ্বালছে। আর দেখলাম চেঙ্গী নদীর তীর ঘেঁষে অনেক দূর পর্যন্ত কলাপাতা আর ফুলের দীর্ঘ লাইন। 

গঙ্গা পূজার ফুলের বেদিবলে রাখা ভালো, বাংলাদেশের বর্ষপঞ্জি অনুসারে ১৪ এপ্রিল পয়লা বৈশাখ পালন করা হলেও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী এখনো সৌর পঞ্জিকা অনুসারেই বৈসু উৎসব পালন করে। তাই চাকমাদের বিজু উৎসবের সঙ্গে ত্রিপুরাদের বৈসু উৎসবের এক দিনের পার্থক্য থাকে। এই বৈসু উৎসবের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে হাজার বছরের ঐতিহ্য ও ইতিহাস। এই উৎসবের মধ্য দিয়ে মুছে যায় পুরোনো দিনের গ্লানি, দুঃখ, হিংসা, বিদ্বেষ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাংবাদিক আনিস আলমগীর ডিবি হেফাজতে, জিজ্ঞাসাবাদ হবে

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

বন্ডাই বিচে হামলাকারীর অস্ত্র কেড়ে নিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন, কে এই পথচারী

বাড্ডায় যাত্রীবাহী বাসে আগুন

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পেট্রোলিয়াম জেলির যত ব্যবহার

ফিচার ডেস্ক
পেট্রোলিয়াম জেলির যত ব্যবহার

সারা বছর সবার ঘরে, ভ্যানিটি ব্যাগে এমনকি অফিসের ডেস্কে যে প্রসাধনী থাকে, তা হলো পেট্রোলিয়াম জেলি। এটি শুধু ঠোঁটের রুক্ষতা দূর করে, তা-ই নয়, রূপচর্চায় আরও নানাভাবে ব্যবহার করা যায়।

মেকআপ রিমুভার হিসেবে

বাড়িতে মেকআপ রিমুভার না থাকলে পেট্রোলিয়াম জেলি দিয়ে দারুণভাবে মেকআপ তোলার কাজটি সেরে নিতে পারেন। পেট্রোলিয়াম জেলি নিয়ে পুরো মুখে ম্যাসাজ করুন। এরপর তুলা দিয়ে আলতো করে মুছে নিন। চোখের মতো স্পর্শকাতর ত্বকের মেকআপ তুলতেও এটি ব্যবহার করা যায়।

নখের সুস্থতায়

নখের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এবং ভঙ্গুরতা কমাতে জাদুকরি সমাধান পেট্রোলিয়াম জেলি। এটি ব্যবহারে নখ সুস্থ থাকে।

সুগন্ধি দীর্ঘস্থায়ী করতে

যেখানে সুগন্ধি দেবেন, সেই জায়গায় আগে কিছুটা পেট্রোলিয়াম জেলি মালিশ করে নিন। এরপর সেখানে সুগন্ধি স্প্রে করুন। এতে দীর্ঘ সময় ত্বকে ঘ্রাণ স্থায়ী হবে।

ভ্রু ঘন করতে

অনেকের ভ্রু ঝরে পড়ে। এর ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে পেট্রোলিয়াম জেলি। রাতে ঘুমানোর আগে একটা আইব্রো ব্রাশে কিছুটা জেলি নিয়ে ভ্রু যুগলে লাগিয়ে নিন। ধীরে ধীরে ভ্রু ঘন হবে।

জেলি-২

হাইলাইটার হিসেবে

মেকআপের পূর্ণতায় এখন প্রায় সবাই হাইলাইটার ব্যবহার করেন। গালে এবং ভ্রুর নিচের ত্বকে কিছুটা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করলে সেটা হাইলাইটার হিসেবে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে।

ক্ষত শুকাতে সাহায্য করে

ত্বকে আঘাত পেলে বা ঘা হলে পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করা যেতে পারে। এটির ব্যবহারে ক্ষত দ্রুততম সময়ে শুকিয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া এটি তেলতেলে হওয়ায় ত্বক আর্দ্র থাকে। তাই ক্ষত শুকিয়ে ফেটে যায় না।

সূত্র: ফেমিনা ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাংবাদিক আনিস আলমগীর ডিবি হেফাজতে, জিজ্ঞাসাবাদ হবে

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

বন্ডাই বিচে হামলাকারীর অস্ত্র কেড়ে নিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন, কে এই পথচারী

বাড্ডায় যাত্রীবাহী বাসে আগুন

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রঙিন চুলের বিশেষ যত্ন

ফিচার ডেস্ক
রঙিন চুলের বিশেষ যত্ন

চুলে রং করতে ভালোবাসলেও সবাই পারলারে গিয়ে চুল রং করান না। রং কিনে এনে বাড়িতেই তাঁরা কাজটি সেরে ফেলেন। কিন্তু বাড়িতে রং করলে প্রতিবার চুল ধোয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু পরিমাণ রংও ধুয়ে যায়। ফলে রং করা চুল অনেকটাই ফ্যাকাশে হয়ে যায়। যাঁরা বাড়িতেই চুল রাঙান তাঁদের রং করার পর চুল ধোয়া থেকে শুরু করে শুকানোর পদ্ধতিতেও কিছু পরিবর্তন আনা জরুরি।

সঠিক শ্যাম্পু বাছাই

চুলে রং করার পর প্রথমে কালার প্রোটেকটিভ শ্যাম্পু বাছাই করুন। এই শ্যাম্পুগুলো দীর্ঘদিন চুলে রং বজায় রাখতে সহায়তা করে।

চুলে ঘন ঘন শ্যাম্পু নয়

চুলে রং করার পর সপ্তাহে দু-তিনবার শ্যাম্পু করুন। তবে রোজ বাইরে গেলে প্রয়োজনে ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন।

নিয়মিত তেল ব্যবহার

রং করার পর; বিশেষ করে চুলের ডগা ফেটে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। তাই সপ্তাহে অন্তত দুদিন চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত তেল ম্যাসাজ করে নিন।

স্টাইলিং কম করুন

রং করা চুলে স্ট্রেটনার কিংবা কার্লার যত কম ব্যবহার করা যায়, ততই ভালো। কারণ, এর ফলে চুল আরও বেশি রুক্ষ হয়ে যেতে পারে।

নিয়ম করে প্যাক মাখু

পাকা কলা ও মধু পেস্ট করে সপ্তাহে দুদিন চুলে মেখে রাখুন ২০ মিনিট করে। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে চুল হবে মসৃণ।

সূত্র: ল’রিয়েল প্যারিস ইউকে ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাংবাদিক আনিস আলমগীর ডিবি হেফাজতে, জিজ্ঞাসাবাদ হবে

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

বন্ডাই বিচে হামলাকারীর অস্ত্র কেড়ে নিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন, কে এই পথচারী

বাড্ডায় যাত্রীবাহী বাসে আগুন

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কুষ্টিয়ায় শেষ হলো তিন দিনব্যাপী সাইনোটাইপ কর্মশালা

কু‌ষ্টিয়া প্রতি‌নি‌ধি
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ায় সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে তিন দিনব্যাপী সাইনোটাইপ কর্মশালা।

অশ্রু আর্কাইভ ও স্টুডিও শব্দ যৌথ উদ্যোগে এই কর্মশালার আয়োজন ক‌রে। গত শুক্রবার শুরু হওয়া এই সৃজনশীল কর্মযজ্ঞ অনুষ্ঠিত হয় অশ্রু আর্কাইভ এবং স্মরণ মৎস্য বীজ খামার প্রাঙ্গণে। রোববার ছিল‌ তিন দিনব‌্যাপী আয়োজ‌নের শেষ দিন।

অশ্রু আর্কাইভের এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য ছিল কুষ্টিয়ার সমৃদ্ধ ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে সাইনোটাইপ মাধ্যমে নতুনভাবে উপস্থাপন করা এবং স্থানীয় শিল্পচর্চাকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তুলে ধরা। কর্মশালায় দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও জেলা থেকে আসা বর্তমান, সাবেক শিক্ষার্থীসহ দেশবরেণ্য গুণী শিল্পীরা অংশ নেন।

তিন দিনব্যাপী এই নিবিড় কর্মশালায় মেন্টর ও প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন স্টুডিও শব্দর কর্ণধার শিল্পী নাজমুল হোসেন নয়ন। অশ্রু আর্কাইভের প্রতিষ্ঠাতা, বিশিষ্ট শিল্পী ও গবেষক শাওন আকন্দ কর্মশালা কিউরেট করেন।

কর্মশালার প্রথম দিনে সাইনোটাইপ শিল্পের ইতিহাস ও তাত্ত্বিক দিক তুলে ধরা হয়। পরবর্তী দিনগুলোতে ব্যবহারিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা নিজেরাই সাইনোটাইপ প্রিন্ট তৈরি করার সুযোগ পান। আলো, কেমিক্যাল ও নকশার সঠিক ব্যবহার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

শিল্পী নাজমুল হোসেন নয়ন বলেন, ‘সাইনোটাইপ শুধু একটি বিকল্প ফটোগ্রাফিক প্রক্রিয়া নয়; এটি সময়, স্মৃতি ও স্থানকে ধারণ করার একধরনের নীরব ভাষা।

কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী শিল্পী তানজুম নাহার পর্ণা বলেন, ‘তিন দিনব্যাপী কর্মশালাটি আমাদের জন্য শুধু একটি কারিগরি প্রশিক্ষণই ছিল না; বরং এটি ছিল সময়, স্মৃতি এবং স্থানের সঙ্গে এক গভীর শিল্পভাষার সংযোগ। সাইনোটাইপের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কুষ্টিয়ার ইতিহাস, লোকজ সংস্কৃতি ও সামাজিক বাস্তবতাকে নতুনভাবে অনুধাবন করার সুযোগ পেয়েছি; বিশেষ করে রাসায়নিকের অনুপাত নির্ধারণ, কোটিং, এক্সপোজার, ওয়াশিং, টোনিং ও ড্রয়িং—প্রতিটি ধাপ হাতেকলমে শেখার অভিজ্ঞতা আমাদের অ্যানালগ ফটোগ্রাফির প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিকে আরও গভীর করেছে।’

কিউরেটর শাওন আকন্দ ব‌লেন, কুষ্টিয়ার ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে গবেষণার পাশাপাশি এ ধরনের সৃজনশীল এবং ঐতিহ্যবাহী ফটোগ্রাফিক কার্যক্রম নিয়ে ভবিষ্যতেও নিয়মিতভাবে কর্মশালা আয়োজন করার পরিকল্পনা রয়েছে।

১৮৪২ সালে স্যার জন হার্শেল আবিষ্কৃত সাইনোটাইপ বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন ও ক্যামেরাবিহীন ফটোগ্রাফিক মুদ্রণ পদ্ধতি। এই প্রক্রিয়ায় অতিবেগুনি রশ্মি বা সূর্যালোকের সাহায্যে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে কাগজ বা কাপড়ে গাঢ় নীল রঙের (প্রুশিয়ান ব্লু) নান্দনিক ছাপ তৈরি করা হয়

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাংবাদিক আনিস আলমগীর ডিবি হেফাজতে, জিজ্ঞাসাবাদ হবে

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

বন্ডাই বিচে হামলাকারীর অস্ত্র কেড়ে নিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন, কে এই পথচারী

বাড্ডায় যাত্রীবাহী বাসে আগুন

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এই ডিসেম্বরে যা কিছু করতে পারেন

ফারিয়া রহমান খান 
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ২৯
ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

ডিসেম্বর মানেই অন্য রকম অনুভূতি। একদিকে বছর শেষের সব হিসাবনিকাশ, নতুন বছরের আগমনী বার্তা; অন্যদিকে বিজয়ের আনন্দ আর পিঠা-পার্বণের আমেজ। সব মিলিয়ে এই মাসটি যেন সত্যিই বিশেষ। ডিসেম্বরে, বছরের শেষ সময়গুলো কীভাবে একটু অর্থবহ করা যায়, তা জেনে নিন।

উদ্দেশ্য স্থির করুন

নতুন বছরে আপনি কী কী করতে চান, তা এখনই ভেবে ফেলুন। একটু স্থির হয়ে বসে খাতা-কলমে লিখে আপনার নতুন বছরের উদ্দেশ্য স্থির করে নিন। লিখে রাখলে তা বিভিন্নভাবে উদ্দেশ্য পূরণে সহায়তা করবে।

ঘর সাজান

পুরোনো বছরকে সুন্দর করে বিদায় দিতেই হোক বা নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে—ঘর সাজান সুন্দর করে। কিছু ওয়ার্ম লাইট ও জানালা বা টেবিলে কিছু গাছ রেখে ঘরে দিন একটু উষ্ণতার ছোঁয়া। সঙ্গে পুরোনো অপ্রয়োজনীয় জিনিস অন্য কাউকে দিয়ে দিন। দেখবেন বাসায় একটা শান্ত ও পরিচ্ছন্ন ভাব আসবে।

পিঠা-পার্বণের আমেজ ও আড্ডা

পিঠা সংস্কৃতির অংশ। তাই ঐতিহ্য ধরে রাখাতে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে সময় করে একদিন বিভিন্ন রকম পিঠা বানাতে পারেন। বড় আয়োজন নয়, বরং চা-বিস্কুট আর পিঠা নিয়ে একটি ঘরোয়া আড্ডা জমান। পুরোনো দিনের স্মৃতিচারণা করুন। দেখবেন, মন থেকে অনেকখানি ভার নেমে গেছে।

বই পড়ুন

ডিসেম্বরের আবহাওয়া বই পড়ার জন্য উপযুক্ত। ছুটির দিনে দুপুরগুলো কাজে লাগান। গায়ে হালকা কাঁথা জড়িয়ে একটা অলস দুপুর বই পড়ে দেখুন। অথবা একটা ভালো উপন্যাস নিয়ে শীতের মিষ্টি রোদে বসে পড়ুন। সঙ্গে রাখুন এক কাপ চা। দেখবেন, খুব ভালো লাগবে।

নিজেকে সময় দিন

বছরের এই শেষ সময় এসেও নিজের জন্য সময় বের করুন। নিজের যত্ন নিন, নিজেকে নিজেই কিছু উপহার দিন। দেখবেন নিজেকে মূল্যবান ও যোগ্য মনে হবে। তা ছাড়া কাউকে কিছু উপহার দিতে চাইলেও দিতে পারেন। সেটাও কিন্তু নিজেকে সময় দেওয়ার কাজ করবে।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সহায়তা করুন

শীতকালে অনেক জায়গায় পিঠা মেলা বা হস্তশিল্প মেলা বসে। এই মেলাগুলোতে ঘুরে বেড়ান। উৎসবের কেনাকাটায় বড় শপিং মল এড়িয়ে স্থানীয় কারিগরদের কাছ থেকে কিছু কিনুন এবং শীতের খাবার চেখে দেখুন। এতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা উপকৃত হবেন। মনে রাখবেন, উদ্যোক্তাদের সহায়তা না করলে তারা বড় হতে পারবে না। তাদের বড় করতে সহায়তা করাও একটা উদ্যোগ বটে।

সহায়তার হাত বাড়ান

শীতকালে অসহায় মানুষদের কষ্ট কমাতে গরম কাপড় ও কম্বল দান করুন। ছোট ছোট কাজ করে অন্যের মুখে হাসি ফোটান; যেমন কাউকে চা বা কফি খাওয়ান, বাসে বয়স্ক কারও জন্য আসন ছেড়ে দিন, কাউকে রাস্তা পার করিয়ে দিন। ছোট একটি মানবিক কাজ আপনার জীবনকে অর্থবহ করে তুলবে।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

বছরের প্রতিফলন

পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে বসে অথবা একা বসে এই বছর কী কী ভালো ও খারাপ হয়েছে, তা নিয়ে ভাবুন। কী কী ভুল করেছেন, সেগুলো ভেবে দেখুন। সামনের বছরগুলোতে এসব ভুল যেন না হয়, সে জন্য সতর্ক হোন। এই বছর যা কিছু ইতিবাচক হয়েছে, সেগুলো একটি ডায়েরিতে লিখে সৃষ্টিকর্তাকে কৃতজ্ঞতা জানান। কারও সঙ্গে মনোমালিন্য হয়ে থাকলে তা মিটিয়ে নিন। অযথা মনে রাগ পুষে রেখে নিজেকে কষ্ট দেবেন না।

পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করুন

পুরোনো বন্ধুরা আসলে মানুষের ব্রিদিং স্পেস বা নিশ্বাস ফেলার জায়গা। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। সবার সঙ্গে সম্ভব না হলেও যাঁদের বা যাঁর সঙ্গে সম্ভব, তাঁদের বা তাঁর সঙ্গে দেখা করে কিছু সময় কাটিয়ে আসুন। মন খুলে হাসুন। স্মৃতিচারণা করুন। অন্তত এক বেলা একসঙ্গে বসে খেয়ে ফেলুন মনের মতো কোনো খাবার। দেখবেন নতুন বছর অন্য রকমভাবে শুরু হবে।

সূত্র: ক্যামিলিস্টাইল ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাংবাদিক আনিস আলমগীর ডিবি হেফাজতে, জিজ্ঞাসাবাদ হবে

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

বন্ডাই বিচে হামলাকারীর অস্ত্র কেড়ে নিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন, কে এই পথচারী

বাড্ডায় যাত্রীবাহী বাসে আগুন

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত