তানিয়া ফেরদৌস
আকাশ মুখ ভার করলেই কেন যে আমরা হেঁশেলে ঢুকে চাল–ডাল মিলিয়ে খিচুড়ি চাপিয়ে দিই, সে এক দুর্ভেদ্য রহস্যই বটে। বাঙালির বৃষ্টিবিলাস মানেই যেন সোনালু রঙের এক থালা গরমাগরম খিচুড়ি ৷ চটজলদি খিচুড়ি চুলায় তুলে এক মগ চা নিয়ে বারান্দায় বসে বা জানালায় দাঁড়িয়ে বৃষ্টি দেখা যাক এমন দিনে। কাক ভেজা হয়ে বাড়ি ফিরে চালে ডালে চাপিয়ে গোসল সেরে শুধু একটু ঘি বা আচারের তেলেই দুই প্লেট ঢ্যাল্কা বা ল্যাটকা খিচুড়ি সাবড়ে দেওয়া যায় অনায়াসে। আবার এই মেঘবাদলার মৌসুমে ছুটির দিনের আলসে দুপুরে ঝুম বৃষ্টির সময়ে কষ্ট করে কাঁথামুড়ি ছাড়িয়ে উঠে খেতে বসে ইলিশ ভাজা, বেগুন ভাজা বা কড়া ঝাল দিয়ে ডিম ভাজার সঙ্গে ঝরঝরে মুগ ডাল খিচুড়ি দেখলে আনন্দাশ্রু আসা খুব অস্বাভাবিক নয় খাদ্য রসিক বাঙালির নয়নে।
নানা রকম খিচুড়ির হরেক অনুষঙ্গ
খিচুড়ির আছে আবার নানা রকমফের। ল্যাটকা বা ঢ্যালকা খিচুড়ি হয় ঢলঢলে। সাধারণত এতে বেশ করে ঝাল দেওয়া হয়। সবজিও দেওয়া হয় অনেক সময়। বহু মানুষের জন্য সহজে সুলভে পুষ্টি নিশ্চিত করেছে এ খিচুড়ি। সাধারণত এতে কয়েক পদ ডাল, সেদ্ধ চাল, মসলাপাতি, সবজি, আর প্রচুর কাঁচামরিচ দেওয়া হয়। কয়েক পদ ডালে স্বাদ যেমন বাড়ে, তেমনি আমিষের মানও বেড়ে যায়। ঘরোয়া আয়োজনে বা অতিথি আপ্যায়নে আবার মুগডাল ভেজে নিয়ে করা সুগন্ধী চালের ভুনা বা মাখা খিচুড়ি অনেকেরই পছন্দের শীর্ষে। এ জন্য ব্যবহার করা হয় চিনিগুঁড়া বা তুলসী মালা চাল। সঙ্গে একটু মাংসের ঝাল ভুনা বা আলু-ঝোলের খুব ঝাল সালুন হলে জীবনটাকে খুব সুন্দর মনে হতে বাধ্য। খিচুড়ির সঙ্গে হাঁস, মুরগি, গরু, খাসির মাংস চলতে পারে। মৌসুমের সবজি খিচুড়ির স্বাদ আরও অনেকটা বাড়িয়ে দেয়—তা সরাসরি খিচুড়িতে মিলিয়েই হোক অথবা ভাজাভুজি অথবা লাবড়ার রূপেই হোক। এদিকে আচারের সঙ্গে খিচুড়ির আছে অবিনাশী প্রেম। রসুন, আম, কাঁচামরিচ, জলপাই, সাতকড়া বা নাগা মরিচের আচারে খিচুড়ির সোনারঙে সোহাগা পড়ে যেন।
বিশেষ দিনের খিচুড়ি
পূজা পার্বণের ভোগের জন্য ভক্তদের মাঝে পরিবেশন করা হয় নিরামিষ পদের সঙ্গে অনন্যসাধারণ এক খিচুড়ি। গোবিন্দভোগ চাল, মুগডাল, আর একরাশ জাদু দিয়ে তৈরি এই খিচুড়ির তুলনা নেই। আবার এদিকে শিখ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব বা যেকোনো দুর্যোগের সময়ে গুরুদুয়ারার লঙ্গরখানায় বহু মানুষের জন্য সযত্নে তৈরি হয় চানা বা ছোলার ডালের খিচুড়ি। আবার আমাদের দেশে মহররমের সময় কোরবানির সংরক্ষিত খোরমা গোশত মিলিয়ে তৈরি হয় এক অত্যন্ত উপাদেয় ল্যাটকা খিচুড়ি। স্থানীয়ভাবে পুরান ঢাকায় কোরবানির ঈদের দ্বিতীয় দিনে মাংস আর কুমড়া মিলিয়ে এক পদের মসলাদার ল্যাটকা খিচুড়ি হয় অনেক বাড়িতে।
অন্যরকম খিচুড়ি
সিলেট অঞ্চলে সব সবজি মিলিয়ে নরম সাদা খিচুড়ি সবার প্রিয়। এ ছাড়া সাবুদানার খিচুড়ি, কালো বা লাল বিন্নী চালের কাউনের খিচুড়ি, এমনকি ওটের খিচুড়িও অত্যন্ত সুস্বাদু। শিশুদের জন্মের ছয় মাস পর প্রথম খাবার হিসেবে চাল, ডাল, মাছ, মাংস, সবজি, তেল দিয়ে রান্না করা খিচুড়িই সবচেয়ে উপযোগী আর পুষ্টিকর। আবার ঢাকার ক্যাফে ঝিল, হীরাঝিল, ঘরোয়া ইত্যাদি অনেক রেস্তোরাঁ তাদের খিচুড়ির জন্যই বিখ্যাত। মজার ব্যাপার হলো, আমাদের এই চিরচেনা খিচুড়ি ব্রিটিশ শাসনামলে বিলেতি সেনাবাহিনীর ভারতীয় দলের হাত ধরে পৌঁছে গেছে খোদ বিলেতেই। সেই ১৭ শতক থেকে ‘কেজিরি’ নামে চাল, ডাল, মাছ আর ডিমের সমন্বয়ে কারি পাউডার দিয়ে রাঁধা এই খিচুড়ির বিলেতি ভাই সে দেশে খুবই জনপ্রিয়। এতে চালে ডালে ঝরঝরে করে রেঁধে ওপরে কাটা বেছে নেওয়া স্মোকড হ্যাডক মাছ আর সেদ্ধ ডিম দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করা হয়।
সব মিলে কেমন গোলমাল পাকিয়ে গেলেই আমরা বলে বসি, সে এক জগাখিচুড়ি হয়ে গেছে। জগা কেমন করে খিচুড়ি রেঁধেছিল তা কেউ না জানলেও খিচুড়ি যে মোটেই গোলমেলে খাবার নয়, তা বাঙালি মাত্রেই সাক্ষ্য দেবে। জানা অজানা যেকোনো কারণেই হোক, খিচুড়ি ছাড়া বৃষ্টিবিলাস একেবারেই অসম্পূর্ণ এই ভরা বাদলার দিনগুলোতে। আবার এদিকে মাঝে মাঝে চুলায় খিচুড়ি চাপালেই মেঘ কেটে গিয়ে রোদ উঠে পুরো আমেজটা ভেস্তে যায়। তবুও মেঘ গুড়গুড় করলেই খিচুড়ি খেতে মন চায় সবারই কেন যেন। মাছ ভাজা, মাংসই হোক আর একটু ডিম ভাজা, বেগুন ভাজা বা আচারই হোক, খিচুড়ির সঙ্গে সবই অমৃত যেন, সকলই মজার।
আকাশ মুখ ভার করলেই কেন যে আমরা হেঁশেলে ঢুকে চাল–ডাল মিলিয়ে খিচুড়ি চাপিয়ে দিই, সে এক দুর্ভেদ্য রহস্যই বটে। বাঙালির বৃষ্টিবিলাস মানেই যেন সোনালু রঙের এক থালা গরমাগরম খিচুড়ি ৷ চটজলদি খিচুড়ি চুলায় তুলে এক মগ চা নিয়ে বারান্দায় বসে বা জানালায় দাঁড়িয়ে বৃষ্টি দেখা যাক এমন দিনে। কাক ভেজা হয়ে বাড়ি ফিরে চালে ডালে চাপিয়ে গোসল সেরে শুধু একটু ঘি বা আচারের তেলেই দুই প্লেট ঢ্যাল্কা বা ল্যাটকা খিচুড়ি সাবড়ে দেওয়া যায় অনায়াসে। আবার এই মেঘবাদলার মৌসুমে ছুটির দিনের আলসে দুপুরে ঝুম বৃষ্টির সময়ে কষ্ট করে কাঁথামুড়ি ছাড়িয়ে উঠে খেতে বসে ইলিশ ভাজা, বেগুন ভাজা বা কড়া ঝাল দিয়ে ডিম ভাজার সঙ্গে ঝরঝরে মুগ ডাল খিচুড়ি দেখলে আনন্দাশ্রু আসা খুব অস্বাভাবিক নয় খাদ্য রসিক বাঙালির নয়নে।
নানা রকম খিচুড়ির হরেক অনুষঙ্গ
খিচুড়ির আছে আবার নানা রকমফের। ল্যাটকা বা ঢ্যালকা খিচুড়ি হয় ঢলঢলে। সাধারণত এতে বেশ করে ঝাল দেওয়া হয়। সবজিও দেওয়া হয় অনেক সময়। বহু মানুষের জন্য সহজে সুলভে পুষ্টি নিশ্চিত করেছে এ খিচুড়ি। সাধারণত এতে কয়েক পদ ডাল, সেদ্ধ চাল, মসলাপাতি, সবজি, আর প্রচুর কাঁচামরিচ দেওয়া হয়। কয়েক পদ ডালে স্বাদ যেমন বাড়ে, তেমনি আমিষের মানও বেড়ে যায়। ঘরোয়া আয়োজনে বা অতিথি আপ্যায়নে আবার মুগডাল ভেজে নিয়ে করা সুগন্ধী চালের ভুনা বা মাখা খিচুড়ি অনেকেরই পছন্দের শীর্ষে। এ জন্য ব্যবহার করা হয় চিনিগুঁড়া বা তুলসী মালা চাল। সঙ্গে একটু মাংসের ঝাল ভুনা বা আলু-ঝোলের খুব ঝাল সালুন হলে জীবনটাকে খুব সুন্দর মনে হতে বাধ্য। খিচুড়ির সঙ্গে হাঁস, মুরগি, গরু, খাসির মাংস চলতে পারে। মৌসুমের সবজি খিচুড়ির স্বাদ আরও অনেকটা বাড়িয়ে দেয়—তা সরাসরি খিচুড়িতে মিলিয়েই হোক অথবা ভাজাভুজি অথবা লাবড়ার রূপেই হোক। এদিকে আচারের সঙ্গে খিচুড়ির আছে অবিনাশী প্রেম। রসুন, আম, কাঁচামরিচ, জলপাই, সাতকড়া বা নাগা মরিচের আচারে খিচুড়ির সোনারঙে সোহাগা পড়ে যেন।
বিশেষ দিনের খিচুড়ি
পূজা পার্বণের ভোগের জন্য ভক্তদের মাঝে পরিবেশন করা হয় নিরামিষ পদের সঙ্গে অনন্যসাধারণ এক খিচুড়ি। গোবিন্দভোগ চাল, মুগডাল, আর একরাশ জাদু দিয়ে তৈরি এই খিচুড়ির তুলনা নেই। আবার এদিকে শিখ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব বা যেকোনো দুর্যোগের সময়ে গুরুদুয়ারার লঙ্গরখানায় বহু মানুষের জন্য সযত্নে তৈরি হয় চানা বা ছোলার ডালের খিচুড়ি। আবার আমাদের দেশে মহররমের সময় কোরবানির সংরক্ষিত খোরমা গোশত মিলিয়ে তৈরি হয় এক অত্যন্ত উপাদেয় ল্যাটকা খিচুড়ি। স্থানীয়ভাবে পুরান ঢাকায় কোরবানির ঈদের দ্বিতীয় দিনে মাংস আর কুমড়া মিলিয়ে এক পদের মসলাদার ল্যাটকা খিচুড়ি হয় অনেক বাড়িতে।
অন্যরকম খিচুড়ি
সিলেট অঞ্চলে সব সবজি মিলিয়ে নরম সাদা খিচুড়ি সবার প্রিয়। এ ছাড়া সাবুদানার খিচুড়ি, কালো বা লাল বিন্নী চালের কাউনের খিচুড়ি, এমনকি ওটের খিচুড়িও অত্যন্ত সুস্বাদু। শিশুদের জন্মের ছয় মাস পর প্রথম খাবার হিসেবে চাল, ডাল, মাছ, মাংস, সবজি, তেল দিয়ে রান্না করা খিচুড়িই সবচেয়ে উপযোগী আর পুষ্টিকর। আবার ঢাকার ক্যাফে ঝিল, হীরাঝিল, ঘরোয়া ইত্যাদি অনেক রেস্তোরাঁ তাদের খিচুড়ির জন্যই বিখ্যাত। মজার ব্যাপার হলো, আমাদের এই চিরচেনা খিচুড়ি ব্রিটিশ শাসনামলে বিলেতি সেনাবাহিনীর ভারতীয় দলের হাত ধরে পৌঁছে গেছে খোদ বিলেতেই। সেই ১৭ শতক থেকে ‘কেজিরি’ নামে চাল, ডাল, মাছ আর ডিমের সমন্বয়ে কারি পাউডার দিয়ে রাঁধা এই খিচুড়ির বিলেতি ভাই সে দেশে খুবই জনপ্রিয়। এতে চালে ডালে ঝরঝরে করে রেঁধে ওপরে কাটা বেছে নেওয়া স্মোকড হ্যাডক মাছ আর সেদ্ধ ডিম দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করা হয়।
সব মিলে কেমন গোলমাল পাকিয়ে গেলেই আমরা বলে বসি, সে এক জগাখিচুড়ি হয়ে গেছে। জগা কেমন করে খিচুড়ি রেঁধেছিল তা কেউ না জানলেও খিচুড়ি যে মোটেই গোলমেলে খাবার নয়, তা বাঙালি মাত্রেই সাক্ষ্য দেবে। জানা অজানা যেকোনো কারণেই হোক, খিচুড়ি ছাড়া বৃষ্টিবিলাস একেবারেই অসম্পূর্ণ এই ভরা বাদলার দিনগুলোতে। আবার এদিকে মাঝে মাঝে চুলায় খিচুড়ি চাপালেই মেঘ কেটে গিয়ে রোদ উঠে পুরো আমেজটা ভেস্তে যায়। তবুও মেঘ গুড়গুড় করলেই খিচুড়ি খেতে মন চায় সবারই কেন যেন। মাছ ভাজা, মাংসই হোক আর একটু ডিম ভাজা, বেগুন ভাজা বা আচারই হোক, খিচুড়ির সঙ্গে সবই অমৃত যেন, সকলই মজার।
১৯৬০ সালের দিকে স্যাম পানাপুলোস এবং তাঁর ভাই ঐতিহ্যবাহী পিৎজায় এক নতুন উপাদান যোগ করার সিদ্ধান্ত নেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী পিৎজার উপাদানের সঙ্গে যুক্ত হলো প্যাকেটজাত আনারস। এর নাম রাখা হয় হাওয়াইয়ান পিৎজা। মাসখানেকের...
২ দিন আগেঅ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের জন্য নেপাল উপযুক্ত জায়গা। উঁচু পাহাড়ে ট্রেকিং থেকে শুরু করে প্যারাগ্লাইডিং কিংবা বাঞ্জি জাম্পিংয়ের মতো দুর্দান্ত সব কর্মকাণ্ডের জন্য এক নামে পরিচিত দেশটি। তবে এসব অ্যাকটিভিটি ছাড়াও সব ধরনের ভ্রমণপিয়াসির জন্য নেপালে কিছু না কিছু কর্মকাণ্ড রয়েছে।
৩ দিন আগেপাহাড় বলতে বান্দরবানই আমাকে বেশি মুগ্ধ করে। এর নৈসর্গিক ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুখে বলে কিংবা ছবিতে দেখিয়ে শেষ করা যাবে না।
৩ দিন আগেপঞ্চাশ হাজার ফুলের বীজ থেকে তৈরি হয়েছে ৩৬০ বর্গমিটার দীর্ঘ একটি কার্পেট। এতে আরও যোগ হয়েছে ঐতিহ্যবাহী জ্যামিতিক নকশা ও মার্বেল পাথর। সেটি দেখতে ভিড় জমেছে পর্যটকের।
৩ দিন আগে