রজত কান্তি রায়, ঢাকা
সরিষায় সরস সে মহিমা অপার
রজত কান্তি তার অতি মনোহর।
রায় কহে শোনো বাপু,
খাও মন দিয়া।
ভাজা ঝোল মাখো মাখো
কাছাটি খুলিয়া।
বছর দুই আগে একটি লেখার ভূমিকা হিসেবে হঠাৎ করেই লিখেছিলাম ওপরের ছড়াটি। কবিতা লিখতে পারি না বলে মনে ভীষণ খেদ থাকলেও ছড়াটি লিখে বেশ খানিক আত্মতৃপ্তি পেয়েছিলাম।
এবার একটা খুব সহজ প্রশ্ন করি। লাউপাতার সঙ্গে ইলিশের সম্পর্ক কী?
কেন ইলিশ নিয়ে আমাদের এত গর্ব, এত আদিখ্যেতা, এত কাব্য-কবিতা? বিভিন্ন ব্যাখ্যা আছে নিশ্চয়ই। আমার শুধুই মনে হয়, বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্নভাবে ইলিশ খাওয়া যায়। তা ছাড়া, এই একটা মাছ, যাকে খুব অল্প মসলায় ভাজা, ভাপা, ঝোল যেভাবে ইচ্ছা খাওয়া যায়। লবণ, তেল, কাঁচা মরিচ, খানিক সরিষা আর হলুদ হলেই খাওয়া যায় ইলিশ নামের অমৃত।
হেমন্তের দুপুরগুলো বেশ বিষণ্ন হয়। নদীর একঘেয়ে পরিবেশে সে বিষণ্নতা আরও বেশি। কিন্তু নরম আলোয় পিঠ পেতে দিয়ে মাড়ভাতের সঙ্গে ইলিশশিকারি মাঝি যখন ভাপা ইলিশ খায়, তখন বিষণ্নতা দূর হতে বাধ্য। আমার তেমনি মনে হয়। সম্প্রতি মাঝিদের রান্না করা একটি পুরোনো রেসিপির সন্ধান পেয়েছি। খুব সহজ রেসিপি। ইলিশ মাছ পরিষ্কার করে কেটে নিয়ে লবণ-হলুদ আর সরিষার তেল মেখে রেখে দিতে হবে কিছু সময়ের জন্য। ভাত খাওয়ার আগে মাখানো টুকরোগুলো পাতে দিয়ে তার ওপর হাঁড়ি থেকে গরম ভাত তুলে দিতে হবে। ব্যস, আর কিছু না। হাঁড়ি থেকে নামানো ভাতের গরমেই সেদ্ধ হয়ে যাবে ইলিশ। তারপর খেতে হবে। যাঁরা খেয়েছেন তাঁরা জানিয়েছেন, এভাবে ইলিশ খেতে দারুণ লাগে।
আসছে শীত। এখন পাওয়া যাবে লাউশাক। ফরিদপুর অঞ্চলের ইলিশ ভাতুরি খাওয়ার উপযুক্ত সময় সামনে আসছে। রেসিপিটা তাই জানিয়ে রাখি। ইলিশের টুকরো লবণ, হলুদ, কাঁচা মরিচবাটা, সরষেবাটা, সরষের তেল দিয়ে মেখে কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে। এবার পাঁচ-ছয়টা পরিষ্কার লাউপাতা নিয়ে মসলামাখা মাছগুলো বিছিয়ে ওপরে আবার পাতা দিয়ে ঢেকে মুড়িয়ে বেঁধে রাখতে হবে। ভাতের হাঁড়িতে ভাত হয়ে এলে, অর্থাৎ ভাতের পানি গায়ে গায়ে হয়ে এলে ওপর থেকে কিছু ভাত তুলে পাতায় মোড়ানো মাছ হাঁড়িতে দিয়ে দিতে হবে। তার ওপরে তুলে রাখা ভাত দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। ভাতের ভাপেই সেদ্ধ হয়ে যাবে ইলিশ ভাতুরি। খাওয়ার সময় মাছগুলো উঠিয়ে অন্য পাত্রে রেখে পাতাগুলো বেঁটে কাঁচা সরষের তেলে মেখে মাছের সঙ্গে রাখতে হবে। এটা গ্রেভি হিসেবে খাওয়া যাবে। এই রেসিপিতে ভাতের চাল অল্প পরিমাণে নিতে হবে। ভাতের সঙ্গে মসলা তেল মেখে যাওয়ার ফলে ওই ভাতটুকুর স্বাদ হবে স্বর্গীয়। এতক্ষণে নিশ্চয়ই ইলিশের সঙ্গে লাউপাতার সম্পর্ক পেয়ে গেছেন?
শীতে কাবাব খাওয়ার মজাই আলাদা। শীত বিকেলের কনে দেখা চুরিয়ে যাওয়া আলো নিভে গেলে আগুনের কুণ্ডলী বানিয়ে তাতে মাছ বা মাংসের কাবাব বানানোর এক রোমাঞ্চকর আনন্দ আছে। ইলিশেরও কাবার বানানো যায় একটু কষ্ট করলে। আসন্ন শীতে বানিয়ে ফেলতে পারেন ইলিশের কাবাব। রেসিপি?
প্রথমে ইলিশ পরিষ্কার করে লেজ ও মাথা আলাদা করে নিতে হবে। তারপর সামান্য হলুদ ও পরিমাণমতো লবণ দিয়ে সেদ্ধ করে নিতে হবে। সেদ্ধ হয়ে গেলে মাছের কাঁটা বেছে নিন। কাঁটা বাছা মাছ পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ ও সেদ্ধ আলু দিয়ে চটকে নিতে হবে। মাথা ও লেজ দুই দিকে মাখানো মাছ দিয়ে ইলিশের আকার দিয়ে নিন। এরপর বেকিং ট্রেতে তেল ব্রাশ করে নিয়ে বেক করে নিন।
গ্রিল বা মাইক্রো যেকোনো ওভেনেই বেক করা যায়। আবার এটিকে পাউরুটি বানানোর তন্দুরেও বেক করে নিতে পারেন সুযোগ থাকলে। বেক করার সময় ইলিশের সুবাস এলেই ট্রে বের করে নিতে হবে। কাবাব বানানোর জন্য ব্রেড ক্র্যাম্ব ব্যবহার করতে পারেন চাইলে। সে ক্ষেত্রে প্রথমবার বেকিং করার পর বের করে ইলিশের ওপর ব্রেড ক্র্যাম্ব ছড়িয়ে দিয়ে আরও মিনিট পাঁচেক বেক করে নিতে হবে।
কেন ইলিশ সেরা তার উত্তর বাঙালি ছাড়া আর কে জানবে ভালো?
রেসিপি: সৈয়দা সাদিয়া শাহরীন ও নিবেদিতা নার্গিস
সরিষায় সরস সে মহিমা অপার
রজত কান্তি তার অতি মনোহর।
রায় কহে শোনো বাপু,
খাও মন দিয়া।
ভাজা ঝোল মাখো মাখো
কাছাটি খুলিয়া।
বছর দুই আগে একটি লেখার ভূমিকা হিসেবে হঠাৎ করেই লিখেছিলাম ওপরের ছড়াটি। কবিতা লিখতে পারি না বলে মনে ভীষণ খেদ থাকলেও ছড়াটি লিখে বেশ খানিক আত্মতৃপ্তি পেয়েছিলাম।
এবার একটা খুব সহজ প্রশ্ন করি। লাউপাতার সঙ্গে ইলিশের সম্পর্ক কী?
কেন ইলিশ নিয়ে আমাদের এত গর্ব, এত আদিখ্যেতা, এত কাব্য-কবিতা? বিভিন্ন ব্যাখ্যা আছে নিশ্চয়ই। আমার শুধুই মনে হয়, বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্নভাবে ইলিশ খাওয়া যায়। তা ছাড়া, এই একটা মাছ, যাকে খুব অল্প মসলায় ভাজা, ভাপা, ঝোল যেভাবে ইচ্ছা খাওয়া যায়। লবণ, তেল, কাঁচা মরিচ, খানিক সরিষা আর হলুদ হলেই খাওয়া যায় ইলিশ নামের অমৃত।
হেমন্তের দুপুরগুলো বেশ বিষণ্ন হয়। নদীর একঘেয়ে পরিবেশে সে বিষণ্নতা আরও বেশি। কিন্তু নরম আলোয় পিঠ পেতে দিয়ে মাড়ভাতের সঙ্গে ইলিশশিকারি মাঝি যখন ভাপা ইলিশ খায়, তখন বিষণ্নতা দূর হতে বাধ্য। আমার তেমনি মনে হয়। সম্প্রতি মাঝিদের রান্না করা একটি পুরোনো রেসিপির সন্ধান পেয়েছি। খুব সহজ রেসিপি। ইলিশ মাছ পরিষ্কার করে কেটে নিয়ে লবণ-হলুদ আর সরিষার তেল মেখে রেখে দিতে হবে কিছু সময়ের জন্য। ভাত খাওয়ার আগে মাখানো টুকরোগুলো পাতে দিয়ে তার ওপর হাঁড়ি থেকে গরম ভাত তুলে দিতে হবে। ব্যস, আর কিছু না। হাঁড়ি থেকে নামানো ভাতের গরমেই সেদ্ধ হয়ে যাবে ইলিশ। তারপর খেতে হবে। যাঁরা খেয়েছেন তাঁরা জানিয়েছেন, এভাবে ইলিশ খেতে দারুণ লাগে।
আসছে শীত। এখন পাওয়া যাবে লাউশাক। ফরিদপুর অঞ্চলের ইলিশ ভাতুরি খাওয়ার উপযুক্ত সময় সামনে আসছে। রেসিপিটা তাই জানিয়ে রাখি। ইলিশের টুকরো লবণ, হলুদ, কাঁচা মরিচবাটা, সরষেবাটা, সরষের তেল দিয়ে মেখে কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে। এবার পাঁচ-ছয়টা পরিষ্কার লাউপাতা নিয়ে মসলামাখা মাছগুলো বিছিয়ে ওপরে আবার পাতা দিয়ে ঢেকে মুড়িয়ে বেঁধে রাখতে হবে। ভাতের হাঁড়িতে ভাত হয়ে এলে, অর্থাৎ ভাতের পানি গায়ে গায়ে হয়ে এলে ওপর থেকে কিছু ভাত তুলে পাতায় মোড়ানো মাছ হাঁড়িতে দিয়ে দিতে হবে। তার ওপরে তুলে রাখা ভাত দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। ভাতের ভাপেই সেদ্ধ হয়ে যাবে ইলিশ ভাতুরি। খাওয়ার সময় মাছগুলো উঠিয়ে অন্য পাত্রে রেখে পাতাগুলো বেঁটে কাঁচা সরষের তেলে মেখে মাছের সঙ্গে রাখতে হবে। এটা গ্রেভি হিসেবে খাওয়া যাবে। এই রেসিপিতে ভাতের চাল অল্প পরিমাণে নিতে হবে। ভাতের সঙ্গে মসলা তেল মেখে যাওয়ার ফলে ওই ভাতটুকুর স্বাদ হবে স্বর্গীয়। এতক্ষণে নিশ্চয়ই ইলিশের সঙ্গে লাউপাতার সম্পর্ক পেয়ে গেছেন?
শীতে কাবাব খাওয়ার মজাই আলাদা। শীত বিকেলের কনে দেখা চুরিয়ে যাওয়া আলো নিভে গেলে আগুনের কুণ্ডলী বানিয়ে তাতে মাছ বা মাংসের কাবাব বানানোর এক রোমাঞ্চকর আনন্দ আছে। ইলিশেরও কাবার বানানো যায় একটু কষ্ট করলে। আসন্ন শীতে বানিয়ে ফেলতে পারেন ইলিশের কাবাব। রেসিপি?
প্রথমে ইলিশ পরিষ্কার করে লেজ ও মাথা আলাদা করে নিতে হবে। তারপর সামান্য হলুদ ও পরিমাণমতো লবণ দিয়ে সেদ্ধ করে নিতে হবে। সেদ্ধ হয়ে গেলে মাছের কাঁটা বেছে নিন। কাঁটা বাছা মাছ পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ ও সেদ্ধ আলু দিয়ে চটকে নিতে হবে। মাথা ও লেজ দুই দিকে মাখানো মাছ দিয়ে ইলিশের আকার দিয়ে নিন। এরপর বেকিং ট্রেতে তেল ব্রাশ করে নিয়ে বেক করে নিন।
গ্রিল বা মাইক্রো যেকোনো ওভেনেই বেক করা যায়। আবার এটিকে পাউরুটি বানানোর তন্দুরেও বেক করে নিতে পারেন সুযোগ থাকলে। বেক করার সময় ইলিশের সুবাস এলেই ট্রে বের করে নিতে হবে। কাবাব বানানোর জন্য ব্রেড ক্র্যাম্ব ব্যবহার করতে পারেন চাইলে। সে ক্ষেত্রে প্রথমবার বেকিং করার পর বের করে ইলিশের ওপর ব্রেড ক্র্যাম্ব ছড়িয়ে দিয়ে আরও মিনিট পাঁচেক বেক করে নিতে হবে।
কেন ইলিশ সেরা তার উত্তর বাঙালি ছাড়া আর কে জানবে ভালো?
রেসিপি: সৈয়দা সাদিয়া শাহরীন ও নিবেদিতা নার্গিস
খাবার মজাদার করতে আমরা সাধারণভাবে তেল-মসলার খুব বাড়াবাড়ি করে ফেলি। সেখান থেকে বাদ যায় না পেঁয়াজ কিংবা রসুন। পেঁয়াজকে কায়দা করে সরিয়ে রাখলেও খাবার মজাদার হতে পারে। তেমনই কিছু রেসিপি...
১ দিন আগেবাংলা অঞ্চলে মিষ্টিজাতীয় প্রাচীন খাবারগুলোর মধ্যে সন্দেশের নাম আছে একেবারে প্রথম দিকে। সব মিষ্টির কিছু না কিছু বদল হলেও, এর বদল হয়েছে খুবই কম। যশোরের নলেন গুড়ের সন্দেশ, মানিকগঞ্জ বা নাগরপুরের প্যারা সন্দেশ, পাবনার মাছের পেটি সন্দেশ ইত্যাদি কে না খেতে পছন্দ করে!
১ দিন আগেজীবনানন্দ দাশের কবিতায় ঘুরেফিরে এসেছে দারুচিনি দ্বীপের কথা, তার রহস্যময় শ্যামলিমার কথা, সেই সবুজের গহিনে দিকহারা নাবিকের আশ্রয়-আকাঙ্ক্ষার কথা। এই দারুচিনি দ্বীপ কি আসলে কোনো সমুদ্রঘেরা ভূখণ্ড, নাকি বনলতা সেন নিজেই, তা নিয়ে কবিরা বিতর্ক করুক। আমরা বরং এই দ্বীপের তত্ত্বতালাশ করি।
১ দিন আগে‘প্রসেসেস’-এ প্রকাশিত এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ভাতের মাড় ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য একটি হজমযোগ্য স্বাস্থ্যকর পানীয় হিসেবে কাজ করে। এমনকি এটি ওজন কমাতে পারে।
১ দিন আগে