রিমন রহমান, রাজশাহী
হাতে থাকা ৫০ টাকার নোটটি মেলে ধরলে দেখা যায় প্রাচীন স্থাপত্যশৈলীর একটি দৃষ্টিনন্দন মসজিদের ছবি। রাজশাহীর বাঘা উপজেলা সদরে অবস্থিত এই মসজিদ জেলা সদর থেকে ৪৮ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত। এর নাম ‘বাঘা শাহী মসজিদ’, যাকে মানুষ বাঘা মসজিদ নামে বেশি চেনে। মসজিদটি জায়গা করে নিয়েছে ১০ টাকার স্মারক ডাকটিকিটেও। এ বছর নির্মাণের ৫০০ বছরে পড়েছে মসজিদটি। এখনো দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা এই মসজিদ দেখতে আসেন। ইতিহাস খুঁজতে আসেন ইতিহাসবিদেরাও। প্রাচীন অন্যতম এই নিদর্শন দেখে মুগ্ধ হন সবাই। ৫০০ বছরের মাইলফলকে আপনিও একবার দেখে আসতে পারেন বাঘা মসজিদ।
মসজিদের ইতিহাস
হাজার বছর আগে এই এলাকা ছিল গহিন অরণ্যে ঘেরা। ঘরসংসার ত্যাগ করে বাগদাদের আব্বাসীয় আমলের খলিফা হারুনুর রশীদের বংশধর হজরত মাওলানা শাহ আব্বাসের পুত্র হজরত মাওলানা শাহ মুয়াজ্জিম উদ্দৌলা ওলি ধর্মপ্রচারে এসে এই এলাকায় আস্তানা গাড়েন। মাওলানা শাহ মুয়াজ্জিম উদ্দৌলা এই জনপদে পরিচিত হয়ে ওঠেন হজরত শাহ দৌলা (র.) নামে। ইসলাম প্রচারের জন্য আধ্যাত্মিক সাধনা করতেন হজরত শাহ দৌলা (র.)। সে সময় একটি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তিনি। পরে ১৫২৩ থেকে ১৫২৪ সালে হুশেন শাহী বংশের প্রতিষ্ঠাতা আলাউদ্দিন শাহীর পুত্র সুলতান নসরত শাহ এ মসজিদ নির্মাণ করেন। বিশাল একটি দিঘি কেটে পাশেই এর মাটি দিয়ে জায়গাটি উঁচু করে মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন তিনি। সমতল ভূমি থেকে মসজিদটি ৮-১০ ফুট উঁচু বেদির ওপর অবস্থিত।
নির্মাণশৈলী
বাংলাদেশে প্রাচীন যে কটি স্থাপনায় টেরাকোটার কারুকাজ দেখা যায়, এগুলোর মধ্যে বাঘা মসজিদ একটি। মসজিদের বেদির ওপরে উঠলেই নিচের স্তম্ভ থেকে চোখ চলে যায় চৌচালা গম্বুজের দিকে। মসজিদের আঙিনা ঘিরে সীমানাপ্রাচীর। উত্তর ও দক্ষিণ দিকে দুটি করে প্রবেশপথ। দুই পাশে রয়েছে বিশাল দুটি ফটক। পুরো মসজিদ টেরাকোটায় খচিত। মসজিদের ১০টি গম্বুজের কয়েকটি দৃশ্যমান। প্রধান ফটক থেকে এসবের নির্মাণশৈলী দর্শনার্থীদের টেনে নিয়ে যায় মসজিদের ভেতরে। ১০ গম্বুজের এই মসজিদের রয়েছে পাঁচটি দরজা। মাঝখানের দরজার ওপরে রয়েছে ফারসি হরফে লেখা একটি শিলালিপি। চার কোনায় চারটি চৌচালা গম্বুজ। ভেতরে ছয়টি স্তম্ভ, চারটি অপূর্ব কারুকাজখচিত মেহরাব রয়েছে মসজিদটির। মসজিদের দেয়ালে দেয়ালে কারুকাজে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই অঞ্চলের আম, গোলাপ ফুলসহ নানা কিছু। মসজিদের দৈর্ঘ্য ৭৫ ফুট, প্রস্থ ৪২ ফুট এবং উচ্চতা ২৪ ফুট ৬ ইঞ্চি। দেয়াল ৮ ফুট চওড়া। গম্বুজের ব্যাস ২৪ ফুট। উচ্চতা ১২ ফুট। সবখানেই টেরাকোটার নকশা আছে। তবে কালের প্রবাহে কিছু কিছু জায়গা নোনা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। ২০০৭ সালে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ অনুরূপ নকশা প্রতিস্থাপন করে সিরাজগঞ্জের কারুশিল্পী মদন পালকে দিয়ে। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে বাঘা শাহী মসজিদের ক্ষতি হয়। ভেঙে পড়ে ওপরের ১০টি গম্বুজ। এরপর থেকে দীর্ঘদিন মসজিদের ভেতরটা পরিত্যক্ত ছিল। পরে গম্বুজগুলো পুনর্নির্মাণ করা হয় ১৯৭৬ সালে।
আউলিয়াদের মাজার
শাহী মসজিদের সামনেই প্রায় ২৫৬ বিঘা জমির ওপর বিশাল দিঘি এলাকাটির নান্দনিকতা বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েক গুণ। মসজিদ ঘিরে রয়েছে আউলিয়াদের মাজার, দরগা শরিফ ও জাদুঘর। মসজিদের উত্তর পাশে রয়েছে হজরত শাহ দৌলা (র.) এবং তাঁর পাঁচজন সঙ্গীর মাজার। মাজারের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে হজরত শাহ (র.)-এর পরিবারের সদস্যদের মাজার। মসজিদ প্রাঙ্গণের বাইরে দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে রয়েছে দুজন বাগদানি দরবেশের মাজার। এ ছাড়া এখানে আসা জহর খাকী পীরসহ আরও অনেক সাধকের মাজার রয়েছে চারপাশে।
যেভাবে যাবেন
বাঘা মসজিদ দেখতে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে যেতে হবে রাজশাহী। সেখান থেকে বাঘা উপজেলা সদর পর্যন্ত বাস চলে। ভাড়া ৫০ টাকার মতো। পুঠিয়া উপজেলা সদর থেকেও যেকোনো যানবাহনে অল্প টাকায় সড়কপথে বাঘা শাহী মসজিদে যাওয়া যায়। এ ছাড়া ট্রেনে এসে আড়ানি স্টেশনে নেমেও বাঘা উপজেলা সদরে যাওয়া যায়।
হাতে থাকা ৫০ টাকার নোটটি মেলে ধরলে দেখা যায় প্রাচীন স্থাপত্যশৈলীর একটি দৃষ্টিনন্দন মসজিদের ছবি। রাজশাহীর বাঘা উপজেলা সদরে অবস্থিত এই মসজিদ জেলা সদর থেকে ৪৮ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত। এর নাম ‘বাঘা শাহী মসজিদ’, যাকে মানুষ বাঘা মসজিদ নামে বেশি চেনে। মসজিদটি জায়গা করে নিয়েছে ১০ টাকার স্মারক ডাকটিকিটেও। এ বছর নির্মাণের ৫০০ বছরে পড়েছে মসজিদটি। এখনো দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা এই মসজিদ দেখতে আসেন। ইতিহাস খুঁজতে আসেন ইতিহাসবিদেরাও। প্রাচীন অন্যতম এই নিদর্শন দেখে মুগ্ধ হন সবাই। ৫০০ বছরের মাইলফলকে আপনিও একবার দেখে আসতে পারেন বাঘা মসজিদ।
মসজিদের ইতিহাস
হাজার বছর আগে এই এলাকা ছিল গহিন অরণ্যে ঘেরা। ঘরসংসার ত্যাগ করে বাগদাদের আব্বাসীয় আমলের খলিফা হারুনুর রশীদের বংশধর হজরত মাওলানা শাহ আব্বাসের পুত্র হজরত মাওলানা শাহ মুয়াজ্জিম উদ্দৌলা ওলি ধর্মপ্রচারে এসে এই এলাকায় আস্তানা গাড়েন। মাওলানা শাহ মুয়াজ্জিম উদ্দৌলা এই জনপদে পরিচিত হয়ে ওঠেন হজরত শাহ দৌলা (র.) নামে। ইসলাম প্রচারের জন্য আধ্যাত্মিক সাধনা করতেন হজরত শাহ দৌলা (র.)। সে সময় একটি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তিনি। পরে ১৫২৩ থেকে ১৫২৪ সালে হুশেন শাহী বংশের প্রতিষ্ঠাতা আলাউদ্দিন শাহীর পুত্র সুলতান নসরত শাহ এ মসজিদ নির্মাণ করেন। বিশাল একটি দিঘি কেটে পাশেই এর মাটি দিয়ে জায়গাটি উঁচু করে মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন তিনি। সমতল ভূমি থেকে মসজিদটি ৮-১০ ফুট উঁচু বেদির ওপর অবস্থিত।
নির্মাণশৈলী
বাংলাদেশে প্রাচীন যে কটি স্থাপনায় টেরাকোটার কারুকাজ দেখা যায়, এগুলোর মধ্যে বাঘা মসজিদ একটি। মসজিদের বেদির ওপরে উঠলেই নিচের স্তম্ভ থেকে চোখ চলে যায় চৌচালা গম্বুজের দিকে। মসজিদের আঙিনা ঘিরে সীমানাপ্রাচীর। উত্তর ও দক্ষিণ দিকে দুটি করে প্রবেশপথ। দুই পাশে রয়েছে বিশাল দুটি ফটক। পুরো মসজিদ টেরাকোটায় খচিত। মসজিদের ১০টি গম্বুজের কয়েকটি দৃশ্যমান। প্রধান ফটক থেকে এসবের নির্মাণশৈলী দর্শনার্থীদের টেনে নিয়ে যায় মসজিদের ভেতরে। ১০ গম্বুজের এই মসজিদের রয়েছে পাঁচটি দরজা। মাঝখানের দরজার ওপরে রয়েছে ফারসি হরফে লেখা একটি শিলালিপি। চার কোনায় চারটি চৌচালা গম্বুজ। ভেতরে ছয়টি স্তম্ভ, চারটি অপূর্ব কারুকাজখচিত মেহরাব রয়েছে মসজিদটির। মসজিদের দেয়ালে দেয়ালে কারুকাজে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই অঞ্চলের আম, গোলাপ ফুলসহ নানা কিছু। মসজিদের দৈর্ঘ্য ৭৫ ফুট, প্রস্থ ৪২ ফুট এবং উচ্চতা ২৪ ফুট ৬ ইঞ্চি। দেয়াল ৮ ফুট চওড়া। গম্বুজের ব্যাস ২৪ ফুট। উচ্চতা ১২ ফুট। সবখানেই টেরাকোটার নকশা আছে। তবে কালের প্রবাহে কিছু কিছু জায়গা নোনা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। ২০০৭ সালে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ অনুরূপ নকশা প্রতিস্থাপন করে সিরাজগঞ্জের কারুশিল্পী মদন পালকে দিয়ে। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে বাঘা শাহী মসজিদের ক্ষতি হয়। ভেঙে পড়ে ওপরের ১০টি গম্বুজ। এরপর থেকে দীর্ঘদিন মসজিদের ভেতরটা পরিত্যক্ত ছিল। পরে গম্বুজগুলো পুনর্নির্মাণ করা হয় ১৯৭৬ সালে।
আউলিয়াদের মাজার
শাহী মসজিদের সামনেই প্রায় ২৫৬ বিঘা জমির ওপর বিশাল দিঘি এলাকাটির নান্দনিকতা বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েক গুণ। মসজিদ ঘিরে রয়েছে আউলিয়াদের মাজার, দরগা শরিফ ও জাদুঘর। মসজিদের উত্তর পাশে রয়েছে হজরত শাহ দৌলা (র.) এবং তাঁর পাঁচজন সঙ্গীর মাজার। মাজারের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে হজরত শাহ (র.)-এর পরিবারের সদস্যদের মাজার। মসজিদ প্রাঙ্গণের বাইরে দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে রয়েছে দুজন বাগদানি দরবেশের মাজার। এ ছাড়া এখানে আসা জহর খাকী পীরসহ আরও অনেক সাধকের মাজার রয়েছে চারপাশে।
যেভাবে যাবেন
বাঘা মসজিদ দেখতে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে যেতে হবে রাজশাহী। সেখান থেকে বাঘা উপজেলা সদর পর্যন্ত বাস চলে। ভাড়া ৫০ টাকার মতো। পুঠিয়া উপজেলা সদর থেকেও যেকোনো যানবাহনে অল্প টাকায় সড়কপথে বাঘা শাহী মসজিদে যাওয়া যায়। এ ছাড়া ট্রেনে এসে আড়ানি স্টেশনে নেমেও বাঘা উপজেলা সদরে যাওয়া যায়।
১৯৫১ সাল। ইরানের রাজা রেজা শাহ পাহলভি এলেন পৃথিমপাশা জমিদারবাড়িতে। সে এক হুলুস্থুল ব্যাপার! এ বাড়ির পূর্বপুরুষেরা ইরান থেকে এসেছিলেন বলে জানা যায়।
১ দিন আগেশীতে কাপড় ভালো রাখতে সেগুলোকে যেমন রোদে মেলে দিতে হয়, সম্পর্ক উন্নয়নে মাঝেমধ্যে তেমনি ভ্রমণেও যেতে হয়। শীত চলে এসেছে। ভ্রমণপ্রেমীরা হয়ে উঠেছেন সরব।
১ দিন আগেপর্যটন বন্ধে কারফিউ! হ্যাঁ, তেমনটিই ঘটেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। গ্রামের নাম বুকচন হ্যানোক। দক্ষিণ কোরিয়ার জংনো জেলায় এর অবস্থান। বুকচন হ্যানোক দেশটির ‘মাস্ট ভিজিট’ পর্যটন গন্তব্য।
১ দিন আগেভ্রমণের স্বাদ একবার রক্তে ঢুকলে, তা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন। এক অদৃশ্য তাড়না কাজ করতে থাকে ভেতরে-ভেতরে।
১ দিন আগে