কয়েকজন বিচারপতির বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান চলছে: সুপ্রিম কোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬: ৪৯
Thumbnail image
ফাইল ছবি

বর্তমানে কয়েকজন বিচারপতির আচরণের (কনডাক্ট) বিষয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে প্রাথমিক অনুসন্ধান চলছে বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে এ বিষয়ে যথেষ্ট অগ্রগতিও হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

আজ বুধবার সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে।

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী–বিষয়ক আপিলের রায়ের পর সম্প্রতি সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে এবং কাউন্সিলের বৈঠকও হয়েছে বলে গত ৭ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। কয়েকজন বিচারপতির বিরুদ্ধে ওঠা নানা অনিয়মের অভিযোগ যাচাই–বাছাই হচ্ছে বলেও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

আপাতত হাইকোর্ট বিভাগে ১২ বিচারপতিকে প্রাথমিকভাবে কোনো বেঞ্চ দেওয়া হচ্ছে না বলে গত ১৬ অক্টোবর জানান সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা।

শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে আলোচনা শেষে ওই ১২ জন বিচারপতিকে বেঞ্চ না দেওয়ার ঘোষণা দেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল। তাঁর ওই ঘোষণার পর আন্দোলনকারীরা হাইকোর্ট এলাকা ছাড়েন।

এর আগে বিচারপতিদের অপসারণ–সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় রিভিউ চেয়ে করা আবেদন গত ২০ অক্টোবর পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে দেন আপিল বিভাগ। ওই রায়ের ফলে কোনো বিচারপতির বিরুদ্ধে অসমর্থতা ও পেশাগত অসদাচরণের অভিযোগ উঠলে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে বলে জানান আইনজীবীরা।

১৯৭২ সালের সংবিধানে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে ছিল। ১৯৭৫ সালে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এই ক্ষমতা দেওয়া হয় রাষ্ট্রপতিকে। ১৯৭৭ সালে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে এই ক্ষমতা দেওয়া হয়, যা পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়।

খন্দকার দেলোয়ার হোসেন বনাম ইতালিয়ান মার্বেল ওয়ার্কস মামলায় ২০০৫ সালে হাইকোর্ট সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করেন। ২০১০ সালে আপিল বিভাগ পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের রায় বহাল রাখেন। তবে অধিকতর স্বচ্ছতা ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতার রক্ষাকবচ বিবেচনায় সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধান বলবৎ রাখেন আপিল বিভাগ।

২০১১ সালে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধান অপরিবর্তিত রেখে জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয়। পরবর্তী সময় বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়।

তবে এর বৈধতা নিয়ে রিট করলে চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ৫ মে হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। ২০১৭ সালের ৩ জুলাই তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সর্বসম্মতিতে আপিলটি খারিজ করে রায় দেন। যাতে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ফিরে আসে।

আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয় ২০১৭ সালের ১ আগস্ট। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা তাঁর লেখা রায়ে গণতন্ত্র, রাজনীতি, দুর্নীতি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে পর্যবেক্ষণ দেন। তবে সে সময় ওই পর্যবেক্ষণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ও দলীয় নেতা–কর্মীরা। তাঁরা প্রধান বিচারপতি সিনহার পদত্যাগও দাবি করেন।

অভিযোগ রয়েছে ২০১৭ সালে অসুস্থতার কথা বলে এস কে সিনহাকে সরকার ছুটিতে যেতে বাধ্য করে। যদিও বিদেশ যাওয়ার সময় এস কে সিনহা সাংবাদিকদের বলেন, তিনি অসুস্থ নন, ক্ষমতাসীনদের সমালোচনায় তিনি বিব্রত। পরে বিদেশে থাকা অবস্থায়ই তিনি পদত্যাগ করেন এবং এখন পর্যন্ত আর দেশে ফেরেননি। পরে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর আবেদন করেছিল রাষ্ট্রপক্ষ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শপথ নিয়েই বাইডেনের নীতি বাতিল ও ১০০ নির্বাহী আদেশের ঘোষণা ট্রাম্পের

আয়রন রঙের শার্ট, কালো প্যান্ট পরবে পুলিশ

বিচার বিভাগের সমস্যা তুলে ধরলেন বিচারক, আনিসুল হক বললেন ‘সমস্যা কেটে যাবে’

শাহজালাল বিমানবন্দরে চাকরি নেননি মনোজ কুমার, বিজ্ঞাপনচিত্র নিয়ে বিভ্রান্তি

সিলেটে রিসোর্টে ৮ তরুণ-তরুণীকে জোর করে বিয়ে, কিছু না করেই ফিরে এল পুলিশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত