আসিফ
পৃথিবী তার অক্ষকে কেন্দ্র করে যে অভিমুখে ঘুরছে, তার অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রটি ঘুরছে ঠিক তার বিপরীত অভিমুখে। সম্প্রতি নেচার জিয়োসায়েন্সের একটি গবেষণায় বিষয়টিকে এভাবে তুলে ধরা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, কিছুদিন আগেই পৃথিবীর কেন্দ্র ঘোরা থামিয়ে দিয়েছিল। তার পর থেকেই এটি উল্টোমুখে ঘোরা শুরু করেছে। অনেক গণমাধ্যম সংবাদটা এমনভাবে পরিবেশন করেছে, যাতে মনে হয় পৃথিবীর মহাপ্রলয়ের বেড়াজালে ঢুকে পড়েছে—‘হঠাৎ ঘোরা থামাল পৃথিবীর কেন্দ্র, এবার ঘুরছে উল্টো দিকে! কতটা সংকটে জীবজগৎ’; ‘হঠাৎ থেমে গিয়ে পৃথিবীর কেন্দ্র এবার ঘুরছে উল্টো দিকে!’; ‘উল্টো দিকেও ঘুরতে পারে পৃথিবীর কেন্দ্র’ ইত্যাদি। মজার ব্যাপার, এমন হলে পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রেরও পরিবর্তন ঘটবে, উত্তর ও দক্ষিণ মেরুও পাল্টাপাল্টি হয়ে যাবে!
বাস্তব কথাটা হচ্ছে, পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ ঘূর্ণন আগের মতো একই দিকে রয়েছে; সূর্যের চারদিকে এই সজীব গ্রহটি যত দিন আবর্তন করতে থাকবে, তত দিন তা একই থাকবে। অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এক ভূপদার্থবিদ বলেছেন, আগের তুলনায় গতি কমেছে পৃথিবীর কেন্দ্রের। তাঁর মতে, এক দশক আগে পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রে যে গতি ছিল, তা পৃথিবীর অক্ষ ঘূর্ণনের সঙ্গে নয়, অন্য স্তরের তুলনায় তার গতি বেশি ছিল। বর্তমানে তা সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় গতি থেমেছে বলে মনে হচ্ছে। এ কারণে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত করেছেন এই পরিবর্তনে জীবকুলের ওপর কোনো খারাপ প্রভাব পড়বে না।
পৃথিবী সলিড কোনো বল নয়। অনেকগুলো স্তরের সমষ্টি, এক স্তর থেকে আরেক স্তরে গতির ভিন্নতা রয়েছে। পৃথিবীর স্তরগুলো হচ্ছে ক্রাস্ট বা ত্বক, ম্যান্টল বা লাভা এবং কোর বা কেন্দ্র। ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট তরঙ্গের গতি-প্রকৃতি পরীক্ষা করতে গিয়ে ১৯৩৬ সালে প্রথম বিষয়টির আভাস পান বিজ্ঞানীরা। ১৯৯৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত হওয়া সমস্ত ভূমিকম্পের তরঙ্গ, গতি-প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করে পিকিং ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা জানিয়েছেন, ঘূর্ণনের এই পরিবর্তন সম্ভবত দিনের দৈর্ঘ্যের পরিবর্তনের সঙ্গে জড়িত। এটি অক্ষের ওপর পৃথিবীর ঘূর্ণনে ছোট পরিবর্তন আনতে পারে। দিনের দৈর্ঘ্যের পরিবর্তনে পৃথিবীর জীবজগতের ওপর কতটুকু প্রভাব পড়তে পারে, তা বলা মুশকিল। তবে সেটা অবশ্যই তাৎক্ষণিক নয়, দীর্ঘমেয়াদি।
পৃথিবীর কেন্দ্র দুই ভাগে বিভক্ত। একটা হলো আমাদের গ্রহের অভ্যন্তরীণ কেন্দ্র, যা প্রায় ২ হাজার ৪০০ কিলোমিটার চওড়া ব্যাসার্ধের একটি গোলকে মহাকর্ষের বাঁধনে প্রবলভাবে আটকে রয়েছে। এই কঠিন কেন্দ্রটি আবার লোহা ও নিকেলের তরল প্রলেপ দিয়ে ঘেরা তরল বহিঃকেন্দ্র রয়েছে। এই কেন্দ্রটির ঘূর্ণনই পৃথিবীর প্রতিরক্ষামূলক ভূ-চৌম্বকীয় ক্ষেত্র তৈরি করে, যা মহাজাগতিক রশ্মি থেকে পৃথিবীর জীবজগৎকে বাঁচায়। এ ছাড়া লোহা-নিকেলের বাইরে লাভা এবং অবশেষে ভূত্বক রয়েছে। ভূত্বক, যেখানে আমরা বসবাস করি তার ২ হাজার ৮০০ কিলোমিটার নিচে হলো কেন্দ্রটি।
পৃথিবীর অভ্যন্তরের অলিগলি দিয়ে প্রবাহিত হওয়া ভূমিকম্প-তরঙ্গগুলোর মাধ্যমে আমরা জানতে পারছি অনেক তথ্য। গ্রহের অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রটি এক দশক ধরে ত্বক বা পৃষ্ঠ অপেক্ষা যে বেশি ঘুরত, সেটা কমে গেছে। ফলে আমরা দেখতে পাচ্ছি পৃথিবীর পৃষ্ঠ সাপেক্ষে তার কোনো ঘূর্ণন নেই। এখন ঘূর্ণন হার আরও কমে যাওয়ায় অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রটি বিপরীতভাবে ঘূর্ণনের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কয়েক দশকের গবেষণায় ভূমিকম্প জেগে ওঠার সাপেক্ষে গ্রহের অভ্যন্তরে চলাচলকারী ভূমিকম্প তরঙ্গগুলোর আচরণ থেকে কেন্দ্রটির আচরণ অনেকটাই বোঝা সম্ভব হয়েছে।
ভূমিকম্প তরঙ্গসমূহ বিবেচনায় নিয়ে বিজ্ঞানীরা অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যসংক্রান্ত গবেষণা করেছেন। এটা করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা লক্ষ করেছেন, ভূমিকম্পের তরঙ্গগুলো একই অবস্থান থেকে উদ্ভূত হলে তাদের ঠিক একই পথে ভ্রমণ করা উচিত। এইভাবে সিসমোগ্রাফের রেকর্ডে একই ধরন থাকতে হবে। যদি কোনো পার্থক্য থাকে তবে বুঝতে হবে পৃথিবীর অভ্যন্তরে কিছু বদলেছে। বারবার ঘটা শক্তিশালী ভূমিকম্প থেকে পাওয়া ভূমিকম্প তরঙ্গ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে প্রদর্শিত হচ্ছে। ফলে এর সর্বোত্তম ব্যাখ্যাটি হচ্ছে, অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রটির ঘূর্ণন বাইরের স্তরের তুলনায় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হয়। মানে, কেন্দ্রটি সর্বদা একই দিকে ঘোরে, যেদিকে পুরো গ্রহটি ঘোরে (পূর্ব দিকে)। তবে কখনো কখনো এটি বাইরের স্তরগুলোর চেয়ে অনেক দ্রুত ঘোরে, কখনো এটি ধীর হয়ে যায়। এমন সময় আসে যখন বাইরের স্তরের ঘূর্ণনের সঙ্গে মিলে যায়। তাই পৃথিবীর পৃষ্ঠের এক জায়গায় দাঁড়িয়ে কারও কাছে তিনটি দশা পর্যায়ক্রমে উপস্থিত হতে পারে—যেন কেন্দ্র সামনের দিকে ঘুরছে, পেছনের দিকে ঘুরছে অথবা ঘূর্ণনটি বন্ধ হয়ে গেছে।
১৯৬৪ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত চীনের পিকিং ইউনিভার্সিটিতে সিনোপ্রোব ল্যাব থেকে গবেষক ইয়া ইয়াং এবং জিয়াওডং সং অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রের ঘূর্ণনের বিন্যাস সম্পর্কে জানতে গিয়ে এগুলো উন্মোচন করেন। পুনরাবৃত্তি ঘটা ভূমিকম্প তরঙ্গ উৎসের সন্ধান দিতে গিয়েই এই রহস্যের উন্মোচন ঘটে। ২০০৯ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তাদের ফলাফলগুলো থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রটি বাইরের স্তরের সাপেক্ষে ঘূর্ণন বন্ধ করে দিয়েছে। ২০২০ সালের পর এটি পেছন দিকে ঘুরছে বলে মনে হচ্ছে। কেন্দ্র ঘূর্ণনের অনুরূপ ধরন ১৯৬০-এর দশকের শেষে এবং ১৯৭০-এর দশকের শুরুর দিকে পাওয়া গিয়েছিল। এ-ও জানা গেছে, প্রতি ৩৫ থেকে ৭০ বছরের পর্যায়কালে পরিবর্তনের এই পুনরাবৃত্তি ঘটে।
এই ধরনের পরিবর্তনে প্রাণিকুলের অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। পৃথিবীর উপরিতলে এই ঘূর্ণনের প্রভাব টেরও পাওয়া যাবে না। বিভ্রান্তিকর শিরোনাম থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বিজ্ঞানঘনিষ্ঠ সবার প্রতি আহ্বান জানাই।
লেখক: বিজ্ঞান বক্তা ও সম্পাদক, মহাবৃত্ত
পৃথিবী তার অক্ষকে কেন্দ্র করে যে অভিমুখে ঘুরছে, তার অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রটি ঘুরছে ঠিক তার বিপরীত অভিমুখে। সম্প্রতি নেচার জিয়োসায়েন্সের একটি গবেষণায় বিষয়টিকে এভাবে তুলে ধরা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, কিছুদিন আগেই পৃথিবীর কেন্দ্র ঘোরা থামিয়ে দিয়েছিল। তার পর থেকেই এটি উল্টোমুখে ঘোরা শুরু করেছে। অনেক গণমাধ্যম সংবাদটা এমনভাবে পরিবেশন করেছে, যাতে মনে হয় পৃথিবীর মহাপ্রলয়ের বেড়াজালে ঢুকে পড়েছে—‘হঠাৎ ঘোরা থামাল পৃথিবীর কেন্দ্র, এবার ঘুরছে উল্টো দিকে! কতটা সংকটে জীবজগৎ’; ‘হঠাৎ থেমে গিয়ে পৃথিবীর কেন্দ্র এবার ঘুরছে উল্টো দিকে!’; ‘উল্টো দিকেও ঘুরতে পারে পৃথিবীর কেন্দ্র’ ইত্যাদি। মজার ব্যাপার, এমন হলে পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রেরও পরিবর্তন ঘটবে, উত্তর ও দক্ষিণ মেরুও পাল্টাপাল্টি হয়ে যাবে!
বাস্তব কথাটা হচ্ছে, পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ ঘূর্ণন আগের মতো একই দিকে রয়েছে; সূর্যের চারদিকে এই সজীব গ্রহটি যত দিন আবর্তন করতে থাকবে, তত দিন তা একই থাকবে। অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এক ভূপদার্থবিদ বলেছেন, আগের তুলনায় গতি কমেছে পৃথিবীর কেন্দ্রের। তাঁর মতে, এক দশক আগে পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রে যে গতি ছিল, তা পৃথিবীর অক্ষ ঘূর্ণনের সঙ্গে নয়, অন্য স্তরের তুলনায় তার গতি বেশি ছিল। বর্তমানে তা সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় গতি থেমেছে বলে মনে হচ্ছে। এ কারণে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত করেছেন এই পরিবর্তনে জীবকুলের ওপর কোনো খারাপ প্রভাব পড়বে না।
পৃথিবী সলিড কোনো বল নয়। অনেকগুলো স্তরের সমষ্টি, এক স্তর থেকে আরেক স্তরে গতির ভিন্নতা রয়েছে। পৃথিবীর স্তরগুলো হচ্ছে ক্রাস্ট বা ত্বক, ম্যান্টল বা লাভা এবং কোর বা কেন্দ্র। ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট তরঙ্গের গতি-প্রকৃতি পরীক্ষা করতে গিয়ে ১৯৩৬ সালে প্রথম বিষয়টির আভাস পান বিজ্ঞানীরা। ১৯৯৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত হওয়া সমস্ত ভূমিকম্পের তরঙ্গ, গতি-প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করে পিকিং ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা জানিয়েছেন, ঘূর্ণনের এই পরিবর্তন সম্ভবত দিনের দৈর্ঘ্যের পরিবর্তনের সঙ্গে জড়িত। এটি অক্ষের ওপর পৃথিবীর ঘূর্ণনে ছোট পরিবর্তন আনতে পারে। দিনের দৈর্ঘ্যের পরিবর্তনে পৃথিবীর জীবজগতের ওপর কতটুকু প্রভাব পড়তে পারে, তা বলা মুশকিল। তবে সেটা অবশ্যই তাৎক্ষণিক নয়, দীর্ঘমেয়াদি।
পৃথিবীর কেন্দ্র দুই ভাগে বিভক্ত। একটা হলো আমাদের গ্রহের অভ্যন্তরীণ কেন্দ্র, যা প্রায় ২ হাজার ৪০০ কিলোমিটার চওড়া ব্যাসার্ধের একটি গোলকে মহাকর্ষের বাঁধনে প্রবলভাবে আটকে রয়েছে। এই কঠিন কেন্দ্রটি আবার লোহা ও নিকেলের তরল প্রলেপ দিয়ে ঘেরা তরল বহিঃকেন্দ্র রয়েছে। এই কেন্দ্রটির ঘূর্ণনই পৃথিবীর প্রতিরক্ষামূলক ভূ-চৌম্বকীয় ক্ষেত্র তৈরি করে, যা মহাজাগতিক রশ্মি থেকে পৃথিবীর জীবজগৎকে বাঁচায়। এ ছাড়া লোহা-নিকেলের বাইরে লাভা এবং অবশেষে ভূত্বক রয়েছে। ভূত্বক, যেখানে আমরা বসবাস করি তার ২ হাজার ৮০০ কিলোমিটার নিচে হলো কেন্দ্রটি।
পৃথিবীর অভ্যন্তরের অলিগলি দিয়ে প্রবাহিত হওয়া ভূমিকম্প-তরঙ্গগুলোর মাধ্যমে আমরা জানতে পারছি অনেক তথ্য। গ্রহের অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রটি এক দশক ধরে ত্বক বা পৃষ্ঠ অপেক্ষা যে বেশি ঘুরত, সেটা কমে গেছে। ফলে আমরা দেখতে পাচ্ছি পৃথিবীর পৃষ্ঠ সাপেক্ষে তার কোনো ঘূর্ণন নেই। এখন ঘূর্ণন হার আরও কমে যাওয়ায় অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রটি বিপরীতভাবে ঘূর্ণনের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কয়েক দশকের গবেষণায় ভূমিকম্প জেগে ওঠার সাপেক্ষে গ্রহের অভ্যন্তরে চলাচলকারী ভূমিকম্প তরঙ্গগুলোর আচরণ থেকে কেন্দ্রটির আচরণ অনেকটাই বোঝা সম্ভব হয়েছে।
ভূমিকম্প তরঙ্গসমূহ বিবেচনায় নিয়ে বিজ্ঞানীরা অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যসংক্রান্ত গবেষণা করেছেন। এটা করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা লক্ষ করেছেন, ভূমিকম্পের তরঙ্গগুলো একই অবস্থান থেকে উদ্ভূত হলে তাদের ঠিক একই পথে ভ্রমণ করা উচিত। এইভাবে সিসমোগ্রাফের রেকর্ডে একই ধরন থাকতে হবে। যদি কোনো পার্থক্য থাকে তবে বুঝতে হবে পৃথিবীর অভ্যন্তরে কিছু বদলেছে। বারবার ঘটা শক্তিশালী ভূমিকম্প থেকে পাওয়া ভূমিকম্প তরঙ্গ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে প্রদর্শিত হচ্ছে। ফলে এর সর্বোত্তম ব্যাখ্যাটি হচ্ছে, অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রটির ঘূর্ণন বাইরের স্তরের তুলনায় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হয়। মানে, কেন্দ্রটি সর্বদা একই দিকে ঘোরে, যেদিকে পুরো গ্রহটি ঘোরে (পূর্ব দিকে)। তবে কখনো কখনো এটি বাইরের স্তরগুলোর চেয়ে অনেক দ্রুত ঘোরে, কখনো এটি ধীর হয়ে যায়। এমন সময় আসে যখন বাইরের স্তরের ঘূর্ণনের সঙ্গে মিলে যায়। তাই পৃথিবীর পৃষ্ঠের এক জায়গায় দাঁড়িয়ে কারও কাছে তিনটি দশা পর্যায়ক্রমে উপস্থিত হতে পারে—যেন কেন্দ্র সামনের দিকে ঘুরছে, পেছনের দিকে ঘুরছে অথবা ঘূর্ণনটি বন্ধ হয়ে গেছে।
১৯৬৪ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত চীনের পিকিং ইউনিভার্সিটিতে সিনোপ্রোব ল্যাব থেকে গবেষক ইয়া ইয়াং এবং জিয়াওডং সং অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রের ঘূর্ণনের বিন্যাস সম্পর্কে জানতে গিয়ে এগুলো উন্মোচন করেন। পুনরাবৃত্তি ঘটা ভূমিকম্প তরঙ্গ উৎসের সন্ধান দিতে গিয়েই এই রহস্যের উন্মোচন ঘটে। ২০০৯ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তাদের ফলাফলগুলো থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রটি বাইরের স্তরের সাপেক্ষে ঘূর্ণন বন্ধ করে দিয়েছে। ২০২০ সালের পর এটি পেছন দিকে ঘুরছে বলে মনে হচ্ছে। কেন্দ্র ঘূর্ণনের অনুরূপ ধরন ১৯৬০-এর দশকের শেষে এবং ১৯৭০-এর দশকের শুরুর দিকে পাওয়া গিয়েছিল। এ-ও জানা গেছে, প্রতি ৩৫ থেকে ৭০ বছরের পর্যায়কালে পরিবর্তনের এই পুনরাবৃত্তি ঘটে।
এই ধরনের পরিবর্তনে প্রাণিকুলের অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। পৃথিবীর উপরিতলে এই ঘূর্ণনের প্রভাব টেরও পাওয়া যাবে না। বিভ্রান্তিকর শিরোনাম থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বিজ্ঞানঘনিষ্ঠ সবার প্রতি আহ্বান জানাই।
লেখক: বিজ্ঞান বক্তা ও সম্পাদক, মহাবৃত্ত
২০০৫ সালে আমি ভিয়েতনামের কৃষি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে প্রথম ড্রাগন ফলের চিত্র তুলে ধরেছিলাম। তখন দেশের মানুষের কাছে ড্রাগন ফল তেমন পরিচিত ছিল না। তারও ১২-১৩ বছর পর বিদেশি ফল ‘ড্রাগন’ দেশের মানুষের কাছে পরিচিত হতে থাকে। কয়েক বছর আগেও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কাছে অচেনা ফল ছিল ড্রাগন।
৯ ঘণ্টা আগেআমাদের এই অঞ্চলের গ্রামের একটি প্রবাদ বাক্য আছে—পেটে খেলে পিঠে সয়। অর্থাৎ আপনি যদি কাউকে পেট ভরে ভাত দেন, তারপর যদি কোনো কাজ দেন, কোনো কাজের জন্য তাকে চাপ দেন অথবা বকাঝকা করেন, সে নির্দ্বিধায় এই কাজ করতে পারে। এখনো আমাদের দেশ কেমন চলছে, আমরা কেমন আছি, আমাদের সমাজব্যবস্থা কেমন চলছে
৯ ঘণ্টা আগে১৭ জানুয়ারি বিকেলে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের (পিআইবি) আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে ‘ফ্যাসিবাদের জমানায় শিকারি সাংবাদিকতা’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বিষয় আজকের পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে।
৯ ঘণ্টা আগেআওয়ামী লীগ সরকার হয়ে উঠেছিল স্বৈরাচারী সরকার। সেই সরকারকে হটিয়ে দিতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল ছাত্ররা। সেই আন্দোলনে ঢুকে পড়েছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। একসময় প্রকাশ পেল, এই আন্দোলন আসলে অনেক ধরনের দলের সম্মিলিত কিংবা বিচ্ছিন্ন প্রয়াসের সমষ্টি।
১ দিন আগে