Ajker Patrika

ঈদে বাড়ি যাওয়া

সম্পাদকীয়
ঈদে বাড়ি যাওয়া

ঈদে ঢাকা ছাড়বে অন্তত এক কোটি মানুষ। বিমান, রেলগাড়ি, লঞ্চ বা স্টিমারে এই যাত্রীদের একটা অংশ ঢাকা ছাড়বেন ঠিকই, কিন্তু মূল চাপটি থাকবে স্থলপথে। প্রতিবারের মতোই ঢাকা থেকে বের হওয়ার পথগুলোয় ভোগান্তিতে পড়তে পারে শিকড়ের টানে বাড়ি ফেরার পথে থাকা মানুষ। এ নিয়ে ২০ মার্চ আজকের পত্রিকায় মূল শিরোনাম হয়েছে।

রাজধানী ঢাকার চতুর্দিক দিয়ে শহরটি থেকে বের হওয়ার অবকাশ আছে। কিন্তু দুটি কারণে যাত্রীরা ঈদের সময় ভুগতে পারেন। একটি হলো, ঢাকা থেকে বের হওয়ার পথটিতেই স্থবির হয়ে যেতে পারে গাড়ির চাকা। দ্বিতীয়টি, পথগুলো এখনো সংস্কার করা হয়নি, ফলে থেমে থেমে এগিয়ে যেতে হতে পারে। আরও একটি বিপদ রয়েছে, যেটির কথা অনুল্লেখ্য থাকা উচিত নয়। আমাদের হাইওয়েগুলো ঘিরে যে বাজার কিংবা হাট বসে, সেগুলো যানবাহনের চলার পথকে সংকীর্ণ করে তোলে। আগেও দেখা গেছে, এই হাট-বাজারের দোকানদার কিংবা ক্রেতারা মহাসড়ককে বিপদমুক্ত করার চেয়ে বিপদে ফেলানোতেই বেশি সফল হয়ে থাকেন। কেন একটি মহাসড়কের ধার ঘেঁষে এ রকম বাজার বসবে, কেন তা সরিয়ে নেওয়া হবে না—এসব প্রশ্নের জবাব দিতে পারেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা, এলাকার সচেতন মানুষেরা। কিন্তু কখনোই মহাসড়কঘেঁষা বাজার সরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের কোনো তৎপরতা দেখা যায় না। এবারের ঈদে বাড়ির পথে রওনা দেওয়া মানুষ সেই বিপদ থেকে রক্ষা পাবে কি না, সেটাই বড় প্রশ্ন।

শুধু ঈদের সময়ই নয়, ঢাকা থেকে বের হওয়ার রাস্তাগুলো মোটেই স্বস্তিকর নয়। গাবতলী-আমিনবাজার, সায়েদাবাদ-পোস্তগোলা-বাবুবাজার, উত্তরা-গাজীপুর অর্থাৎ রাজধানী থেকে বের হওয়ার পথগুলো সাধারণ সময়েই যানজটের কারণে বিড়ম্বনার জন্ম দেয়। কত তাড়াতাড়ি যানবাহন চলাচলের এই স্পটগুলোকে মসৃণ করা যায়, সেটা ভেবে বের করা দরকার। আমাদের প্রতিবেদনেই ঢাকা-উত্তরবঙ্গ মহাসড়ক, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, পদ্মা সেতু হয়ে খুলনা মহাসড়ক, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের অবস্থা নিয়ে বিস্তারিত লেখা হয়েছে। এ কথাও বলা হয়েছে, প্রতিবারই ঈদের আগে মহাসড়ক নির্বিঘ্ন রাখার আশ্বাস পাওয়া যায় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। কিন্তু প্রতিবারই কোনো না কোনো মহাসড়কে কিংবা একাধিক মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে নারী ও শিশুসহ সব যাত্রী বিপদে পড়েন।

ঈদে ঢাকা থেকে বের হওয়ার পথগুলো যদি যানজটমুক্ত রাখা সম্ভব হয়, তাহলে অর্ধেক বিপদ এমনিতেই কেটে যাবে। পথের কোথায় কোথায় সমস্যা আছে, সেগুলো আগে থেকে নির্দিষ্ট করা থাকলে কীভাবে সেই সমস্যা মোকাবিলা করা যায়, তা আগাম ঠিক করে নেওয়া যাবে। রাস্তার ধারের বাজারগুলোকে সরিয়ে নেওয়াটা এ সময় জরুরি।

তবে বলে রাখা ভালো, ঈদ যাঁরা ঢাকার বাইরে গিয়ে উদ্‌যাপন করতে চান, তাঁরা দুর্ভোগের একটা আশঙ্কা এবং সেটা মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়েই রাস্তায় বের হলে ভালো হয়। মসৃণভাবে গন্তব্যে পৌঁছালে বুঝবেন, এটা আপনার জন্য আশীর্বাদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত