ড. মোস্তফা সারওয়ার, যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশ বিপ্লবের তিনটি পর্যায় হলো—ভাষা আন্দোলন, স্বায়ত্তশাসন তথা ছয় দফা ও এগারো দফার গণ-অভ্যুত্থান এবং মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ। এই বিপ্লবকে একটি জৈবিক সত্তার সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। ভাষা আন্দোলন (১৯৪৮–১৯৫২) ছিল জৈবিক ভ্রূণের সঙ্গে তুলনীয় এক প্রাথমিক সত্তা অথবা অস্তিত্ব। বাংলার ইতিহাসের সেই ক্রান্তিকালে আন্দোলন সংগঠিত করা এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব প্রদানে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জ ছিল সংগ্রামের কর্মসূচি ও নীতিমালা জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দেওয়া।
অত্যাচারী অগণতান্ত্রিক সরকারের প্রতিবন্ধকতা ছিল নিদারুণ নিষ্ঠুর। সরকার কঠোর হস্তে জেল-জুলুম দিয়ে মতামত প্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করত। সাধারণত আন্দোলনের অগ্রগামী কর্মীরা পোস্টার, ইশতেহার, দেয়াললিখন এবং গোপন সভার মাধ্যমে তাদের কর্মসূচি জনসাধারণের দুয়ারে পৌঁছে দিত।
সেই সংগ্রামী দিনগুলোতে অত্যাচারী পাকিস্তান সরকারের খড়্গহস্ত সংবাদপত্রের স্বাধীন মতামত ও খবর রুদ্ধ করে দিয়েছিল। হিংসা ও শাস্তির ভয়ে প্রায় সব সংবাদপত্র সরকারের ইচ্ছাকে প্রতিধ্বনিত করে সংবাদ পরিবেশন করত।
ভাষা আন্দোলনের সংগ্রামী দিনগুলোতে শুধু ব্যতিক্রম ছিল দৈনিক আজাদ ও ডেইলি অবজারভার (যার বিক্রি হওয়া কপির সংখ্যা ছিল খুবই কম)। দৈনিক আজাদের পাঠকসংখ্যা ছিল প্রচুর। দৈনিক আজাদের ব্যাপারটা ছিল অদ্ভুত। এই পত্রিকার মালিক মওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ ছিলেন ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগের পূর্ব পাকিস্তান শাখার সভাপতি। তৎকালীন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার ও প্রাদেশিক সরকারে সমাসীন ছিল মুসলিম লীগ। তাদের উদ্দেশ্য ছিল উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দান করা। আর সেই দলের পূর্ব পাকিস্তান শাখার সভাপতির পত্রিকা দৈনিক আজাদ বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দানের জন্য আপসহীন প্রচারণা চালাচ্ছে। এই জটিল ধাঁধার সমাধান পেতে আমাদের যেতে হবে দৈনিক আজাদের সম্পাদনা বিভাগে। তার আগে দেখা যাক ভাষা আন্দোলনের পটভূমি।
পাকিস্তান স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট। এর কিছু সময় পরে পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ এবং পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্র ভাষা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসমাজসহ দেশের যুবক ও বুদ্ধিজীবীরা এর ঘোরতর বিরোধিতা করেছিল। সেই প্রতিবাদ আন্দোলনের অন্যতম নেতা ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৪৮ সালেই তাঁকে বন্দী করা হয়েছিল। ওই প্রতিবাদ ছিল ভাষা আন্দোলনের প্রথম পর্যায়।
ভাষা আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হয়েছিল ১৯৫১ সালের জানুয়ারি মাসে, যখন শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন কারাবন্দী। পাকিস্তানের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীন ১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি ঢাকার পল্টন ময়দানে এক জনসভায় উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার খায়েশ ঘোষণা করেন। এবারে গর্জে উঠল পূর্ব পাকিস্তান।
বাংলাদেশ জাতীয় জ্ঞানকোষ বাংলাপিডিয়ার বর্ণনা অনুযায়ী, ‘৩০ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মঘট পালিত হয়। ৩১ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের সভাপতি মওলানা ভাসানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক দলের প্রতিনিধিদের এক সভায় “সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ” গঠিত হয়...। এ সময় সরকার আরবি হরফে বাংলা লেখার প্রস্তাব পেশ করে। এর বিরুদ্ধেও তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ ২১ ফেব্রুয়ারি (একুশে ফেব্রুয়ারি) সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে হরতাল, জনসভা ও বিক্ষোভ মিছিল আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়।’
একুশে ফেব্রুয়ারির হরতালের প্রস্তুতি হিসেবে ৪, ৮ ও ১২ ফেব্রুয়ারি ধর্মঘট ও পতাকা দিবস পালন করা হলো। শোভাযাত্রা ও সমাবেশ ভন্ডুল করার নিমিত্তে মুসলিম লীগ সরকার ১৪৪ ধারা জারি করেছিল ঢাকায়। এই ধারা অনুযায়ী শোভাযাত্রা ও সমাবেশকে নিষিদ্ধ করা হয়।
এই কর্মসূচিগুলো জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দিতে আন্দোলনের সহায়ক ছিল মাত্র দুটো দৈনিক পত্রিকা। বাকি সব পত্রিকা শুধু সরকারি প্রেস বিজ্ঞপ্তি ছাপাত। ইংরেজিতে ডেইলি অবজারভার ও বাংলায় দৈনিক আজাদ। ১২ ফেব্রুয়ারি ডেইলি অবজারভারকে বন্ধ করা হয়। ব্যতিক্রম রইল একমাত্র দৈনিক আজাদ।
আর দৈনিক আজাদের বার্তা বিভাগে ভাষা আন্দোলনের প্রচার ও লেখনীর ‘লোন রেঞ্জার’ হলেন এক শীর্ণকায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ স্বাধীনচেতা দেশপ্রেমিক বিপ্লবী। কিংবদন্তি সাংবাদিক এবং ডিপ্লোম্যাট কে জি মুস্তফার ভাষায়, ‘তখন বাংলা কাগজ একমাত্র আজাদ ভাষা আন্দোলনের পক্ষে কাজ করে গেছে। আজাদের মালিক মুসলিম লীগের সভাপতি। বার্তা সম্পাদক সিরাজ এই পুরো চাপ উপেক্ষা করে গোটা আন্দোলনের বাহন করে তুলেছেন আজাদকে।’ (কে জি মুস্তফা, সিরাজুদ্দীন হোসেন তৎকালীন রাজনীতি ও সাংবাদিকতা, সিরডাপ মিলনায়তন, ২৬ ডিসেম্বর ২০০১)।
আজাদের মালিক মওলানা আকরম খাঁ তখন তাঁর মুসলিম লীগ দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে সিরাজুদ্দীন হোসেনকে বরখাস্ত করেননি। কিন্তু প্রথম সুযোগেই কিছুকাল পরে সিরাজকে বরখাস্ত করেছিলেন।
নিজের জীবন ও জীবিকাকে বিপন্ন করে অকুতোভয় সিরাজুদ্দীন হোসেন ১৯৫২ সালের সেই অগ্নিঝরা দিনগুলোতে ছিলেন ভাষা আন্দোলনের তূর্য-বাদক। স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন ও স্বাধীনতাসংগ্রামের সহায়ক কলমযুদ্ধের অন্যতম সিপাহসালার সিরাজুদ্দীন হোসেনের কর্মময় জীবনের সবচেয়ে সৃজনশীল সময়টিতে তাঁকে ঘাতকের হাতে প্রাণ দিতে হলো। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বরের মাঝরাত পেরিয়ে ভোররাত ১১ ডিসেম্বর স্বাধীনতাবিরোধী জল্লাদরা তাঁকে রাতের অন্ধকারে অপহরণ করে। এরপর তাঁকে আর পাওয়া যায়নি। শহীদ সিরাজুদ্দীন হোসেনকে তুলনা করা যায় ফরাসি বিপ্লবের কলমযোদ্ধা জন পল মারাতের সঙ্গে। তিনি প্রাণ হারিয়েছিলেন আততায়ীর চাকুর আঘাতে।
লেখক: ইমেরিটাস অধ্যাপক
বাংলাদেশ বিপ্লবের তিনটি পর্যায় হলো—ভাষা আন্দোলন, স্বায়ত্তশাসন তথা ছয় দফা ও এগারো দফার গণ-অভ্যুত্থান এবং মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ। এই বিপ্লবকে একটি জৈবিক সত্তার সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। ভাষা আন্দোলন (১৯৪৮–১৯৫২) ছিল জৈবিক ভ্রূণের সঙ্গে তুলনীয় এক প্রাথমিক সত্তা অথবা অস্তিত্ব। বাংলার ইতিহাসের সেই ক্রান্তিকালে আন্দোলন সংগঠিত করা এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব প্রদানে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জ ছিল সংগ্রামের কর্মসূচি ও নীতিমালা জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দেওয়া।
অত্যাচারী অগণতান্ত্রিক সরকারের প্রতিবন্ধকতা ছিল নিদারুণ নিষ্ঠুর। সরকার কঠোর হস্তে জেল-জুলুম দিয়ে মতামত প্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করত। সাধারণত আন্দোলনের অগ্রগামী কর্মীরা পোস্টার, ইশতেহার, দেয়াললিখন এবং গোপন সভার মাধ্যমে তাদের কর্মসূচি জনসাধারণের দুয়ারে পৌঁছে দিত।
সেই সংগ্রামী দিনগুলোতে অত্যাচারী পাকিস্তান সরকারের খড়্গহস্ত সংবাদপত্রের স্বাধীন মতামত ও খবর রুদ্ধ করে দিয়েছিল। হিংসা ও শাস্তির ভয়ে প্রায় সব সংবাদপত্র সরকারের ইচ্ছাকে প্রতিধ্বনিত করে সংবাদ পরিবেশন করত।
ভাষা আন্দোলনের সংগ্রামী দিনগুলোতে শুধু ব্যতিক্রম ছিল দৈনিক আজাদ ও ডেইলি অবজারভার (যার বিক্রি হওয়া কপির সংখ্যা ছিল খুবই কম)। দৈনিক আজাদের পাঠকসংখ্যা ছিল প্রচুর। দৈনিক আজাদের ব্যাপারটা ছিল অদ্ভুত। এই পত্রিকার মালিক মওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ ছিলেন ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগের পূর্ব পাকিস্তান শাখার সভাপতি। তৎকালীন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার ও প্রাদেশিক সরকারে সমাসীন ছিল মুসলিম লীগ। তাদের উদ্দেশ্য ছিল উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দান করা। আর সেই দলের পূর্ব পাকিস্তান শাখার সভাপতির পত্রিকা দৈনিক আজাদ বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দানের জন্য আপসহীন প্রচারণা চালাচ্ছে। এই জটিল ধাঁধার সমাধান পেতে আমাদের যেতে হবে দৈনিক আজাদের সম্পাদনা বিভাগে। তার আগে দেখা যাক ভাষা আন্দোলনের পটভূমি।
পাকিস্তান স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট। এর কিছু সময় পরে পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ এবং পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্র ভাষা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসমাজসহ দেশের যুবক ও বুদ্ধিজীবীরা এর ঘোরতর বিরোধিতা করেছিল। সেই প্রতিবাদ আন্দোলনের অন্যতম নেতা ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৪৮ সালেই তাঁকে বন্দী করা হয়েছিল। ওই প্রতিবাদ ছিল ভাষা আন্দোলনের প্রথম পর্যায়।
ভাষা আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হয়েছিল ১৯৫১ সালের জানুয়ারি মাসে, যখন শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন কারাবন্দী। পাকিস্তানের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীন ১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি ঢাকার পল্টন ময়দানে এক জনসভায় উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার খায়েশ ঘোষণা করেন। এবারে গর্জে উঠল পূর্ব পাকিস্তান।
বাংলাদেশ জাতীয় জ্ঞানকোষ বাংলাপিডিয়ার বর্ণনা অনুযায়ী, ‘৩০ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মঘট পালিত হয়। ৩১ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের সভাপতি মওলানা ভাসানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক দলের প্রতিনিধিদের এক সভায় “সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ” গঠিত হয়...। এ সময় সরকার আরবি হরফে বাংলা লেখার প্রস্তাব পেশ করে। এর বিরুদ্ধেও তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ ২১ ফেব্রুয়ারি (একুশে ফেব্রুয়ারি) সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে হরতাল, জনসভা ও বিক্ষোভ মিছিল আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়।’
একুশে ফেব্রুয়ারির হরতালের প্রস্তুতি হিসেবে ৪, ৮ ও ১২ ফেব্রুয়ারি ধর্মঘট ও পতাকা দিবস পালন করা হলো। শোভাযাত্রা ও সমাবেশ ভন্ডুল করার নিমিত্তে মুসলিম লীগ সরকার ১৪৪ ধারা জারি করেছিল ঢাকায়। এই ধারা অনুযায়ী শোভাযাত্রা ও সমাবেশকে নিষিদ্ধ করা হয়।
এই কর্মসূচিগুলো জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দিতে আন্দোলনের সহায়ক ছিল মাত্র দুটো দৈনিক পত্রিকা। বাকি সব পত্রিকা শুধু সরকারি প্রেস বিজ্ঞপ্তি ছাপাত। ইংরেজিতে ডেইলি অবজারভার ও বাংলায় দৈনিক আজাদ। ১২ ফেব্রুয়ারি ডেইলি অবজারভারকে বন্ধ করা হয়। ব্যতিক্রম রইল একমাত্র দৈনিক আজাদ।
আর দৈনিক আজাদের বার্তা বিভাগে ভাষা আন্দোলনের প্রচার ও লেখনীর ‘লোন রেঞ্জার’ হলেন এক শীর্ণকায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ স্বাধীনচেতা দেশপ্রেমিক বিপ্লবী। কিংবদন্তি সাংবাদিক এবং ডিপ্লোম্যাট কে জি মুস্তফার ভাষায়, ‘তখন বাংলা কাগজ একমাত্র আজাদ ভাষা আন্দোলনের পক্ষে কাজ করে গেছে। আজাদের মালিক মুসলিম লীগের সভাপতি। বার্তা সম্পাদক সিরাজ এই পুরো চাপ উপেক্ষা করে গোটা আন্দোলনের বাহন করে তুলেছেন আজাদকে।’ (কে জি মুস্তফা, সিরাজুদ্দীন হোসেন তৎকালীন রাজনীতি ও সাংবাদিকতা, সিরডাপ মিলনায়তন, ২৬ ডিসেম্বর ২০০১)।
আজাদের মালিক মওলানা আকরম খাঁ তখন তাঁর মুসলিম লীগ দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে সিরাজুদ্দীন হোসেনকে বরখাস্ত করেননি। কিন্তু প্রথম সুযোগেই কিছুকাল পরে সিরাজকে বরখাস্ত করেছিলেন।
নিজের জীবন ও জীবিকাকে বিপন্ন করে অকুতোভয় সিরাজুদ্দীন হোসেন ১৯৫২ সালের সেই অগ্নিঝরা দিনগুলোতে ছিলেন ভাষা আন্দোলনের তূর্য-বাদক। স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন ও স্বাধীনতাসংগ্রামের সহায়ক কলমযুদ্ধের অন্যতম সিপাহসালার সিরাজুদ্দীন হোসেনের কর্মময় জীবনের সবচেয়ে সৃজনশীল সময়টিতে তাঁকে ঘাতকের হাতে প্রাণ দিতে হলো। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বরের মাঝরাত পেরিয়ে ভোররাত ১১ ডিসেম্বর স্বাধীনতাবিরোধী জল্লাদরা তাঁকে রাতের অন্ধকারে অপহরণ করে। এরপর তাঁকে আর পাওয়া যায়নি। শহীদ সিরাজুদ্দীন হোসেনকে তুলনা করা যায় ফরাসি বিপ্লবের কলমযোদ্ধা জন পল মারাতের সঙ্গে। তিনি প্রাণ হারিয়েছিলেন আততায়ীর চাকুর আঘাতে।
লেখক: ইমেরিটাস অধ্যাপক
৩৬ জুলাই বা ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে সংস্কারের আহ্বান শোনা যাচ্ছে বেশ জোরেশোরেই। সব ক্ষেত্রে। চলচ্চিত্রাঙ্গনেও এই সংস্কারের জোয়ার এসে লেগেছে। জোয়ারের আগে মূলধারার চলচ্চিত্রের লোকজন নানাভাবে জড়িত ছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে। অভ্যুত্থান শুরুর পর তাঁদের মনে হয়েছে ভবিষ্যৎ বুঝি অন্ধকারে প্রবেশ করতে যাচ্
১৫ ঘণ্টা আগেইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক রূপরেখা তৈরি করেছে। ইরানের ওপর সাম্প্রতিক ইসরায়েলি বিমান হামলা ঝুঁকি বাড়ালেও তা পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধের পথে পা বাড়ানোর কোনো ইঙ্গিত দিচ্ছে না। ইসরায়েলের এখনকার লক্ষ্য তার সীমানা সুরক্ষিত করা। অন্যদিকে ইরানের দরকার বর্তমান শাসন-ক্ষমত
১৬ ঘণ্টা আগেবিকেল গড়িয়ে তখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। গ্রামের এক হাটে কৃষকের আনাগোনা, শোরগোল। ভ্যানে তুলে বস্তা বোঝাই আলু এনে আশানুরূপ দাম না পেয়ে হতাশ তাঁরা। বলছিলেন, কৃষিকাজই বাদ দিয়ে দেবেন। তাঁরা যে আলু বিক্রি করেন কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকায়, সেই আলুই ভোক্তার হাতে যায় ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। মাঝের এই মূল্য বৃদ্ধির পথ প
১৬ ঘণ্টা আগেলিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা দিয়েই বাগিয়ে নিতে হয় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের পদগুলো। লিখিত পরীক্ষায় যাঁরা বাকিদের টেক্কা দিতে পারেন, পরবর্তী মওকা তাঁদের জন্য সুরক্ষিত। মৌখিক পরীক্ষায় উতরে গেলেই চাকরি নিজের। কিন্তু এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের সুযোগ পায় কী করে কিছু পরীক্ষার্থী—বিষয়টি শুধু অ
১৭ ঘণ্টা আগে