খায়রুল আলম
উত্তাল একাত্তরের সেই দিনগুলো। যুদ্ধের দামামা সারা দেশে। সেই উত্তাল পৃথিবীতে নতুন মানুষের আগমনে কেউ মিষ্টি খাওয়ার কথা ভাবতেই পারেনি। উপরন্তু হাসপাতাল ও বন্দিশালা উভয় স্থানেই পাকিস্তানি বাহিনীর দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়। শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের ওপর নতুন করে হুমকি-ধমকি। এরই মধ্যে গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর পৈতৃক বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধুর বৃদ্ধ-অসহায় পিতা-মাতা ঢাকায় এসে আরামবাগের একটি বাসায় নাতনি জামাইয়ের বাসায় আশ্রয় নেন। শেখ হাসিনা সন্তানসহ হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়ে অতিগোপনে দাদা-দাদিকে নতুন অতিথিকে দেখিয়ে দোয়া নিয়ে বন্দিশালায় প্রবেশ করেন। বন্দিশালায় আসার পর দেখা দেয় বাচ্চা ও মা উভয়ের জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন। কিন্তু এবারও পাকিস্তানিদের প্রচণ্ড উগ্রতায় চিকিৎসককে বাড়িতে আসতে দেওয়া হয়নি। উপরন্তু ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে দুজন সশস্ত্র প্রহরী দেওয়া হয়। এটিই ছিল জন্মসময়ের পরিস্থিতি।
একদিন নবজাতককে গোসল করিয়ে শরীরে তেল মাখতে মাখতে বেগম মুজিব ছেলে সন্তানের নাম কী হবে, সেটা নিয়ে জল্পনাকল্পনা করছিলেন। শেখ হাসিনা ইতিপূর্বে পিতা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কথোপকথনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আব্বা আমাকে বলেছিলেন, ছেলে হলে জয় বাংলার “জয়” আর মেয়ে হলে “জয়া” নাম রাখতে।’ বেগম মুজিব সঙ্গে সঙ্গেই নবজাতককে কোলে তুলে নিয়ে বলেন, ‘সত্যিই এ আমার জয়। আমার কোনো ভাই নেই, জয় আমার সত্যিই ভাই। তাই মুজিব নামের সঙ্গে মিলিয়ে আসল নাম রাখলাম সজীব।’ সেই থেকে ‘সজীব ওয়াজেদ জয়’ বাংলার বিজয় এবং মুক্তিযুদ্ধের সময়ে দলমত-নির্বিশেষে সবার স্লোগান ‘জয় বাংলা’ একই সূত্রে গাথা এক অচ্ছেদ্য সম্পর্ক।
এই নাম রাখার পর থেকেই বন্দিশালায় পাহারারত সৈন্যসহ অন্য অফিসাররাও ড. ওয়াজেদকে প্রায়শই জিজ্ঞাসা করত—‘জয় নাম কিসলিয়ে রাখা?’ ড. ওয়াজেদ কৌশলে আসল কথা এড়িয়ে গিয়ে বলতেন, ‘নাতিকে পেয়ে আমার শাশুড়ি খুব খুশি হয়েছেন। যেহেতু “জয়” মানে “আনন্দ” তাই আমার শাশুড়ি “জয়” নাম রেখেছেন।’ পরবর্তী সময়ে মুক্তিযুদ্ধ ধীরে ধীরে তীব্র আকার ধারণ করলে পাহারারত সৈন্যসহ অফিসাররাও ড. ওয়াজেদকে কটাক্ষ করে বলত, ‘পশ্চিম পাকিস্তানমে এক নমরুদকো (বঙ্গবন্ধু) পাকড়াও করকে রাখা হুয়া, লেকিন ইধার এক কাফের (সজীব ওয়াজেদ জয়) পয়দা হুয়া।’
বাঙালির জীবনে স্বাধীন বাংলাদেশ পাওয়া হলো পরম পাওয়া। আর সেই পরম পাওয়াটি নিশ্চিত করতে লক্ষ কোটি নিবেদিতপ্রাণ নিজেদের বিলিয়ে দিয়েছেন অকাতরে। কেউ সম্মুখসমরে, আবার কেউ আড়ালে-অন্তরালে ভোগ করেছেন অপরিসীম যাতনা। তবু সবাই যেন মেনে নিয়েছেন সেই কষ্টের কথা, বেদনার কথা।
এটাই তো স্বাভাবিক যে বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী যাঁকে নমরুদ বলে গালি দিয়েছে, সে-ই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর যাঁকে কাফের বলে তিরস্কার করেছে তিনি হলেন আধুনিক বাংলাদেশের অতি আপন মানুষ সজীব ওয়াজেদ জয়।
বঙ্গবন্ধুর নাতি সজীব ওয়াজেদ জয় তথ্যপ্রযুক্তির বরপুত্র। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও রূপকার। আজ ২৭ জুলাই, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার নেপথ্য কারিগর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একমাত্র পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫২তম জন্মদিন।
শেখ হাসিনার স্মৃতিকথা থেকে জানা যায়, ২৩ মার্চ ১৯৭১ বঙ্গবন্ধু তাঁর ধানমন্ডির বাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলনকালে তাঁর সন্তানসম্ভবা কন্যা হাসিনাকে বলেছিলেন ছেলে হলে যেন তাঁর নাম ‘জয়’ রাখা হয়।
১৯৭১-এর ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গ্রেপ্তার করে এবং পাকিস্তানে কারাবন্দী করে রাখে। মুক্তিযুদ্ধের সবচেয়ে উত্তাল সময়ে যখন বঙ্গবন্ধু পাঞ্জাবের মিয়াঁওয়ালি কারাগারে অবরুদ্ধ, সেই সময় ২৭ জুলাই শেখ হাসিনা একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। নবজাতকের নাম রাখা হয় ‘জয়’। খুব বেশি ফুটফুটে হওয়ায় তাঁকে তাঁর মাতামহী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ‘সজীব’ নামেও ডাকতেন।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কম্পিউটার শিক্ষার হাতেখড়ির পাশাপাশি ডিজিটাল শব্দটিও তিনি ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের কাছ থেকেই জেনেছেন। পেশাদার তথ্যপ্রযুক্তিবিদ সজীব ওয়াজেদ জয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা।
শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জয় যখন স্কুলে পড়ত, কম্পিউটার নিয়ে আসত; তখন নাড়াচাড়া করে দেখতাম। সে আমাকে কীভাবে টাইপ করতে হয় একটা প্রোগ্রাম দিয়ে দিত। আমি বসে বসে টাইপ করা প্রথমে শিখলাম। এরপর আমরা অ্যাপল কিনলাম। সেখানে আমাদের অফিসের পার্টির কাজ করার সঙ্গে সঙ্গে নিজেরাও বসে বসে কম্পিউটার শিক্ষা নিতাম। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর জয়ের পরামর্শে তখনকার অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়াকে কম্পিউটারের ওপর থেকে কর তুলে নিতে বলেছিলাম। পরামর্শটা জয়ই আমাকে দিয়েছিল।’
সজীব ওয়াজেদ জয়ের মেধা ও দক্ষতায় আজ ইন্টারনেট সেবা দেশের গ্রামের মানুষের হাতের মুঠোয় এসে পৌঁছেছে। গ্রামের একজন কৃষক মোবাইল ইন্টারনেটের মাধ্যমে এখন কৃষিকাজের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে পারছেন। স্কুলের শিক্ষক আজ কম্পিউটারের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করে তুলছেন।
শিক্ষার্থীরা কম্পিউটারের মাধ্যমে ভর্তি ফরম সংগ্রহ করছেন, পরীক্ষার রেজাল্ট দেখছেন, ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোনে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিল পরিশোধ, স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া—এমন কিছু নেই যা করতে পারছেন না। এমনকি আজ মোবাইল ব্যাংকিং, এটিএম ব্যাংকিং, ইন্টারনেটের মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহের মতো কাজও জনপ্রিয় হয়েছে। কল সেন্টারের মাধ্যমে হাজার হাজার তরুণের চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। গড়ে উঠছে আইটি সিটি, আইটি পার্ক। কানেকটিভিটির মাধ্যমে দেশের পিছিয়ে পড়া প্রত্যন্ত অঞ্চলকে আলোকিত করে তোলা হচ্ছে। এর সবই সম্ভব হচ্ছে একজন আধুনিক শিক্ষায় সুশিক্ষিত সৎ নিষ্ঠাবান সজীব ওয়াজেদ জয়ের কল্যাণে।
বঙ্গবন্ধুতনয়া শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের সব কাজই ছিল নীরবে-নিভৃতে। তিনি ছিলেন রাজনীতি থেকে দূরে। ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার হিসেবে ডিজিটাল বাংলাদেশ তথা দেশের সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নেই তিনি সদা ব্যস্ত থেকেছেন। পীরগঞ্জের এক রাজনৈতিক জনসভার মাধ্যমে নিজের নীরবতা ভাঙেন তিনি। জানান, বাংলাদেশকে ডিজিটাল দেশে পরিণত করার পরিকল্পনা দ্রুতগতিতে বাস্তবায়িত হচ্ছে। যে গতিতে উন্নয়ন ঘটছে, তা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরের চতুর্থ স্তম্ভটি হলো দ্রুত বর্ধমান আইসিটি শিল্প, যা মানুষকে আর্থিক, টেলিযোগাযোগ ও স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবা প্রদান করছে। সজীব ওয়াজেদ জয়ের আদর্শিক প্রতিশ্রুতি আর অদম্য তৎপরতায় ডিজিটাল বাংলাদেশের চারটি স্তম্ভই শক্তিশালী হচ্ছে। আর তাই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নে তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ‘আইসিটি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যাওয়ার্ড-২০১৬’ অর্জন করেন। তাঁর লক্ষ্য ছিল ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত দেশে রূপান্তরিত করা।
গত এক দশকে বাংলাদেশ প্রযুক্তিগত উন্নতিতে বড় অগ্রগতি অর্জন করেছে, যার মধ্যে মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা, জনসেবাতে ডিজিটাল প্রবেশাধিকার, মোবাইল ব্যাংকিং এবং তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক রপ্তানি উল্লেখযোগ্য।
জয় একজন বড় স্বপ্নদ্রষ্টা এবং কীভাবে স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে হয়, তা ভালো করেই জানেন। তিনি একজন দূরদর্শী নেতা ও প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদ। তৃণমূল পর্যায় থেকে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ পাওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই সজীব ওয়াজেদ ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’-এর ধারণা দেন। এর বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন তিনি। এই সেবা আদান-প্রদানে যুক্ত রয়েছে দেশের বিপুলসংখ্যক তরুণ উদ্যোক্তা। এতে আর্থিকভাবে মানুষ যেমন সবদিক থেকে উপকৃত হচ্ছেন, তেমনি সময়ের অপব্যয় কমছে বহু গুণে। পাশাপাশি উন্নততর প্রযুক্তি প্রয়োগ করে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, চাঁদাবাজি বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বহু গুণে দক্ষতা ও সফলতার পরিচয় দিতে সক্ষম হচ্ছে। সজীব ওয়াজেদ জয়ের এই উদ্ভাবনী ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রবর্তন দেশের তরুণদের শক্তিকে কাজে লাগাতে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করছে। তিনি নিজেও এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী।
তাই সজীব ওয়াজেদ জয় তরুণদের বোঝাতে শুরু করলেন যে রাজনীতি কোনো একক ব্যক্তি কিংবা দলের জন্য নয়, রাজনীতি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্যই। তরুণদের সঙ্গে তাঁর প্রথম কোনো আলোচনা সভা হয় তখন, যখন তিনি ‘সুচিন্তা’ নামে একটি সংগঠন তৈরি করেন। পলিসি থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে তরুণদের দেশ পরিচালনায় সম্পৃক্ত করতে তিনি বিভিন্ন কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করেন। এসবের মধ্যে আছে ‘লেটস টক’ ও ‘পলিসি ক্যাফে’। ২০১৫ সালে ‘ইয়ং বাংলা’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরির উদ্যোগ নেন তিনি।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো নিম্ন আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পেরেছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। তাঁর বিভিন্ন দূরদর্শী এবং সময়োপযোগী উদ্যোগের কারণে বাংলাদেশ গত ১০ বছরে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যাপক উন্নতি সাধন করতে সক্ষম হয়েছে। দেশের ৫ হাজারের বেশি ইউনিয়ন পরিষদে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। ডিজিটালাইজেশনের সুফল দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহারে বিপ্লব ঘটানোর কারণে বাংলাদেশকে এখন মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় বিশ্বে রোল মডেল ধরা হচ্ছে। দেশে তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগের ক্ষেত্রে মূলত ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেন ‘রূপকল্প ২০২১’, যার মূল উপজীব্য ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। এসবই সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বগুণে। নোবেল বিজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। বর্তমান প্রশাসনের গৃহীত আইসিটি নীতিমালা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শ ও নির্দেশে সারা বাংলাদেশে বাস্তবায়িত হচ্ছে। সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শ ও নির্দেশে বাস্তবায়নকৃত ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ সারা বিশ্বে রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ সজীব ওয়াজেদ সম্মানজনক ‘আইসিটি ফর ডেভেলপমেন্ট’ পুরস্কার অর্জন করেন। ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড কম্পিটিটিভনেস, প্ল্যান ট্রিফিও, গ্লোবাল ফ্যাশন ফর ডেভেলপমেন্ট এবং কানেকটিকাটের ইউনিভার্সিটি অব নিউ হেভেনের স্কুল অব বিজনেস যৌথভাবে তাঁকে এ পুরস্কার প্রদান করে। বাংলাদেশ থেকে প্রথম কোনো ব্যক্তি হিসেবে ২০০৭ সালে তিনি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম কর্তৃক ‘গ্লোবাল ইয়ং লিডার’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
জয় বাংলাদেশে নিয়ে এসেছেন সিলিকন ভ্যালির মন্ত্র—উচ্চপ্রযুক্তি, উদ্ভাবন, উদ্যোগ পুঁজি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। আমাদের আইসিটি শিল্প তাঁর নেতৃত্বে সমৃদ্ধতর হচ্ছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা হিসেবে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ তারই মানসশিশু, যার লক্ষ্য ছিল ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত দেশে রূপান্তরিত করা।
বর্তমানে বাংলাদেশের ১২০টিরও বেশি কোম্পানি ৩৫টি দেশে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের আইসিটি পণ্য রপ্তানি করছে। আইসিটি শিল্পের এই টেকসই অগ্রগতি ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপান্তরে যথেষ্ট অবদান রাখবে।
সজীব ওয়াজেদ জয় প্রযুক্তির বরপুত্র। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, রূপকার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশকে বিশ্ব মানচিত্রে প্রতিষ্ঠা করেছেন। শেখ হাসিনা প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে। জয় হয়েছেন ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপকল্পের কান্ডারি, যা গত দশক থেকেই গুরুত্বের দিক বিবেচনায় সবার ওপরে অবস্থান করছে।
লেখক: যুগ্ম সম্পাদক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)
উত্তাল একাত্তরের সেই দিনগুলো। যুদ্ধের দামামা সারা দেশে। সেই উত্তাল পৃথিবীতে নতুন মানুষের আগমনে কেউ মিষ্টি খাওয়ার কথা ভাবতেই পারেনি। উপরন্তু হাসপাতাল ও বন্দিশালা উভয় স্থানেই পাকিস্তানি বাহিনীর দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়। শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের ওপর নতুন করে হুমকি-ধমকি। এরই মধ্যে গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর পৈতৃক বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধুর বৃদ্ধ-অসহায় পিতা-মাতা ঢাকায় এসে আরামবাগের একটি বাসায় নাতনি জামাইয়ের বাসায় আশ্রয় নেন। শেখ হাসিনা সন্তানসহ হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়ে অতিগোপনে দাদা-দাদিকে নতুন অতিথিকে দেখিয়ে দোয়া নিয়ে বন্দিশালায় প্রবেশ করেন। বন্দিশালায় আসার পর দেখা দেয় বাচ্চা ও মা উভয়ের জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন। কিন্তু এবারও পাকিস্তানিদের প্রচণ্ড উগ্রতায় চিকিৎসককে বাড়িতে আসতে দেওয়া হয়নি। উপরন্তু ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে দুজন সশস্ত্র প্রহরী দেওয়া হয়। এটিই ছিল জন্মসময়ের পরিস্থিতি।
একদিন নবজাতককে গোসল করিয়ে শরীরে তেল মাখতে মাখতে বেগম মুজিব ছেলে সন্তানের নাম কী হবে, সেটা নিয়ে জল্পনাকল্পনা করছিলেন। শেখ হাসিনা ইতিপূর্বে পিতা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কথোপকথনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আব্বা আমাকে বলেছিলেন, ছেলে হলে জয় বাংলার “জয়” আর মেয়ে হলে “জয়া” নাম রাখতে।’ বেগম মুজিব সঙ্গে সঙ্গেই নবজাতককে কোলে তুলে নিয়ে বলেন, ‘সত্যিই এ আমার জয়। আমার কোনো ভাই নেই, জয় আমার সত্যিই ভাই। তাই মুজিব নামের সঙ্গে মিলিয়ে আসল নাম রাখলাম সজীব।’ সেই থেকে ‘সজীব ওয়াজেদ জয়’ বাংলার বিজয় এবং মুক্তিযুদ্ধের সময়ে দলমত-নির্বিশেষে সবার স্লোগান ‘জয় বাংলা’ একই সূত্রে গাথা এক অচ্ছেদ্য সম্পর্ক।
এই নাম রাখার পর থেকেই বন্দিশালায় পাহারারত সৈন্যসহ অন্য অফিসাররাও ড. ওয়াজেদকে প্রায়শই জিজ্ঞাসা করত—‘জয় নাম কিসলিয়ে রাখা?’ ড. ওয়াজেদ কৌশলে আসল কথা এড়িয়ে গিয়ে বলতেন, ‘নাতিকে পেয়ে আমার শাশুড়ি খুব খুশি হয়েছেন। যেহেতু “জয়” মানে “আনন্দ” তাই আমার শাশুড়ি “জয়” নাম রেখেছেন।’ পরবর্তী সময়ে মুক্তিযুদ্ধ ধীরে ধীরে তীব্র আকার ধারণ করলে পাহারারত সৈন্যসহ অফিসাররাও ড. ওয়াজেদকে কটাক্ষ করে বলত, ‘পশ্চিম পাকিস্তানমে এক নমরুদকো (বঙ্গবন্ধু) পাকড়াও করকে রাখা হুয়া, লেকিন ইধার এক কাফের (সজীব ওয়াজেদ জয়) পয়দা হুয়া।’
বাঙালির জীবনে স্বাধীন বাংলাদেশ পাওয়া হলো পরম পাওয়া। আর সেই পরম পাওয়াটি নিশ্চিত করতে লক্ষ কোটি নিবেদিতপ্রাণ নিজেদের বিলিয়ে দিয়েছেন অকাতরে। কেউ সম্মুখসমরে, আবার কেউ আড়ালে-অন্তরালে ভোগ করেছেন অপরিসীম যাতনা। তবু সবাই যেন মেনে নিয়েছেন সেই কষ্টের কথা, বেদনার কথা।
এটাই তো স্বাভাবিক যে বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী যাঁকে নমরুদ বলে গালি দিয়েছে, সে-ই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর যাঁকে কাফের বলে তিরস্কার করেছে তিনি হলেন আধুনিক বাংলাদেশের অতি আপন মানুষ সজীব ওয়াজেদ জয়।
বঙ্গবন্ধুর নাতি সজীব ওয়াজেদ জয় তথ্যপ্রযুক্তির বরপুত্র। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও রূপকার। আজ ২৭ জুলাই, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার নেপথ্য কারিগর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একমাত্র পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫২তম জন্মদিন।
শেখ হাসিনার স্মৃতিকথা থেকে জানা যায়, ২৩ মার্চ ১৯৭১ বঙ্গবন্ধু তাঁর ধানমন্ডির বাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলনকালে তাঁর সন্তানসম্ভবা কন্যা হাসিনাকে বলেছিলেন ছেলে হলে যেন তাঁর নাম ‘জয়’ রাখা হয়।
১৯৭১-এর ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গ্রেপ্তার করে এবং পাকিস্তানে কারাবন্দী করে রাখে। মুক্তিযুদ্ধের সবচেয়ে উত্তাল সময়ে যখন বঙ্গবন্ধু পাঞ্জাবের মিয়াঁওয়ালি কারাগারে অবরুদ্ধ, সেই সময় ২৭ জুলাই শেখ হাসিনা একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। নবজাতকের নাম রাখা হয় ‘জয়’। খুব বেশি ফুটফুটে হওয়ায় তাঁকে তাঁর মাতামহী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ‘সজীব’ নামেও ডাকতেন।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কম্পিউটার শিক্ষার হাতেখড়ির পাশাপাশি ডিজিটাল শব্দটিও তিনি ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের কাছ থেকেই জেনেছেন। পেশাদার তথ্যপ্রযুক্তিবিদ সজীব ওয়াজেদ জয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা।
শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জয় যখন স্কুলে পড়ত, কম্পিউটার নিয়ে আসত; তখন নাড়াচাড়া করে দেখতাম। সে আমাকে কীভাবে টাইপ করতে হয় একটা প্রোগ্রাম দিয়ে দিত। আমি বসে বসে টাইপ করা প্রথমে শিখলাম। এরপর আমরা অ্যাপল কিনলাম। সেখানে আমাদের অফিসের পার্টির কাজ করার সঙ্গে সঙ্গে নিজেরাও বসে বসে কম্পিউটার শিক্ষা নিতাম। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর জয়ের পরামর্শে তখনকার অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়াকে কম্পিউটারের ওপর থেকে কর তুলে নিতে বলেছিলাম। পরামর্শটা জয়ই আমাকে দিয়েছিল।’
সজীব ওয়াজেদ জয়ের মেধা ও দক্ষতায় আজ ইন্টারনেট সেবা দেশের গ্রামের মানুষের হাতের মুঠোয় এসে পৌঁছেছে। গ্রামের একজন কৃষক মোবাইল ইন্টারনেটের মাধ্যমে এখন কৃষিকাজের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে পারছেন। স্কুলের শিক্ষক আজ কম্পিউটারের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করে তুলছেন।
শিক্ষার্থীরা কম্পিউটারের মাধ্যমে ভর্তি ফরম সংগ্রহ করছেন, পরীক্ষার রেজাল্ট দেখছেন, ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোনে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিল পরিশোধ, স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া—এমন কিছু নেই যা করতে পারছেন না। এমনকি আজ মোবাইল ব্যাংকিং, এটিএম ব্যাংকিং, ইন্টারনেটের মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহের মতো কাজও জনপ্রিয় হয়েছে। কল সেন্টারের মাধ্যমে হাজার হাজার তরুণের চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। গড়ে উঠছে আইটি সিটি, আইটি পার্ক। কানেকটিভিটির মাধ্যমে দেশের পিছিয়ে পড়া প্রত্যন্ত অঞ্চলকে আলোকিত করে তোলা হচ্ছে। এর সবই সম্ভব হচ্ছে একজন আধুনিক শিক্ষায় সুশিক্ষিত সৎ নিষ্ঠাবান সজীব ওয়াজেদ জয়ের কল্যাণে।
বঙ্গবন্ধুতনয়া শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের সব কাজই ছিল নীরবে-নিভৃতে। তিনি ছিলেন রাজনীতি থেকে দূরে। ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার হিসেবে ডিজিটাল বাংলাদেশ তথা দেশের সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নেই তিনি সদা ব্যস্ত থেকেছেন। পীরগঞ্জের এক রাজনৈতিক জনসভার মাধ্যমে নিজের নীরবতা ভাঙেন তিনি। জানান, বাংলাদেশকে ডিজিটাল দেশে পরিণত করার পরিকল্পনা দ্রুতগতিতে বাস্তবায়িত হচ্ছে। যে গতিতে উন্নয়ন ঘটছে, তা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরের চতুর্থ স্তম্ভটি হলো দ্রুত বর্ধমান আইসিটি শিল্প, যা মানুষকে আর্থিক, টেলিযোগাযোগ ও স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবা প্রদান করছে। সজীব ওয়াজেদ জয়ের আদর্শিক প্রতিশ্রুতি আর অদম্য তৎপরতায় ডিজিটাল বাংলাদেশের চারটি স্তম্ভই শক্তিশালী হচ্ছে। আর তাই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নে তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ‘আইসিটি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যাওয়ার্ড-২০১৬’ অর্জন করেন। তাঁর লক্ষ্য ছিল ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত দেশে রূপান্তরিত করা।
গত এক দশকে বাংলাদেশ প্রযুক্তিগত উন্নতিতে বড় অগ্রগতি অর্জন করেছে, যার মধ্যে মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা, জনসেবাতে ডিজিটাল প্রবেশাধিকার, মোবাইল ব্যাংকিং এবং তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক রপ্তানি উল্লেখযোগ্য।
জয় একজন বড় স্বপ্নদ্রষ্টা এবং কীভাবে স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে হয়, তা ভালো করেই জানেন। তিনি একজন দূরদর্শী নেতা ও প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদ। তৃণমূল পর্যায় থেকে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ পাওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই সজীব ওয়াজেদ ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’-এর ধারণা দেন। এর বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন তিনি। এই সেবা আদান-প্রদানে যুক্ত রয়েছে দেশের বিপুলসংখ্যক তরুণ উদ্যোক্তা। এতে আর্থিকভাবে মানুষ যেমন সবদিক থেকে উপকৃত হচ্ছেন, তেমনি সময়ের অপব্যয় কমছে বহু গুণে। পাশাপাশি উন্নততর প্রযুক্তি প্রয়োগ করে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, চাঁদাবাজি বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বহু গুণে দক্ষতা ও সফলতার পরিচয় দিতে সক্ষম হচ্ছে। সজীব ওয়াজেদ জয়ের এই উদ্ভাবনী ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রবর্তন দেশের তরুণদের শক্তিকে কাজে লাগাতে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করছে। তিনি নিজেও এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী।
তাই সজীব ওয়াজেদ জয় তরুণদের বোঝাতে শুরু করলেন যে রাজনীতি কোনো একক ব্যক্তি কিংবা দলের জন্য নয়, রাজনীতি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্যই। তরুণদের সঙ্গে তাঁর প্রথম কোনো আলোচনা সভা হয় তখন, যখন তিনি ‘সুচিন্তা’ নামে একটি সংগঠন তৈরি করেন। পলিসি থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে তরুণদের দেশ পরিচালনায় সম্পৃক্ত করতে তিনি বিভিন্ন কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করেন। এসবের মধ্যে আছে ‘লেটস টক’ ও ‘পলিসি ক্যাফে’। ২০১৫ সালে ‘ইয়ং বাংলা’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরির উদ্যোগ নেন তিনি।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো নিম্ন আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পেরেছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। তাঁর বিভিন্ন দূরদর্শী এবং সময়োপযোগী উদ্যোগের কারণে বাংলাদেশ গত ১০ বছরে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যাপক উন্নতি সাধন করতে সক্ষম হয়েছে। দেশের ৫ হাজারের বেশি ইউনিয়ন পরিষদে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। ডিজিটালাইজেশনের সুফল দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহারে বিপ্লব ঘটানোর কারণে বাংলাদেশকে এখন মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় বিশ্বে রোল মডেল ধরা হচ্ছে। দেশে তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগের ক্ষেত্রে মূলত ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেন ‘রূপকল্প ২০২১’, যার মূল উপজীব্য ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। এসবই সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বগুণে। নোবেল বিজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। বর্তমান প্রশাসনের গৃহীত আইসিটি নীতিমালা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শ ও নির্দেশে সারা বাংলাদেশে বাস্তবায়িত হচ্ছে। সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শ ও নির্দেশে বাস্তবায়নকৃত ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ সারা বিশ্বে রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ সজীব ওয়াজেদ সম্মানজনক ‘আইসিটি ফর ডেভেলপমেন্ট’ পুরস্কার অর্জন করেন। ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড কম্পিটিটিভনেস, প্ল্যান ট্রিফিও, গ্লোবাল ফ্যাশন ফর ডেভেলপমেন্ট এবং কানেকটিকাটের ইউনিভার্সিটি অব নিউ হেভেনের স্কুল অব বিজনেস যৌথভাবে তাঁকে এ পুরস্কার প্রদান করে। বাংলাদেশ থেকে প্রথম কোনো ব্যক্তি হিসেবে ২০০৭ সালে তিনি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম কর্তৃক ‘গ্লোবাল ইয়ং লিডার’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
জয় বাংলাদেশে নিয়ে এসেছেন সিলিকন ভ্যালির মন্ত্র—উচ্চপ্রযুক্তি, উদ্ভাবন, উদ্যোগ পুঁজি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। আমাদের আইসিটি শিল্প তাঁর নেতৃত্বে সমৃদ্ধতর হচ্ছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা হিসেবে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ তারই মানসশিশু, যার লক্ষ্য ছিল ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত দেশে রূপান্তরিত করা।
বর্তমানে বাংলাদেশের ১২০টিরও বেশি কোম্পানি ৩৫টি দেশে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের আইসিটি পণ্য রপ্তানি করছে। আইসিটি শিল্পের এই টেকসই অগ্রগতি ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপান্তরে যথেষ্ট অবদান রাখবে।
সজীব ওয়াজেদ জয় প্রযুক্তির বরপুত্র। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, রূপকার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশকে বিশ্ব মানচিত্রে প্রতিষ্ঠা করেছেন। শেখ হাসিনা প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে। জয় হয়েছেন ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপকল্পের কান্ডারি, যা গত দশক থেকেই গুরুত্বের দিক বিবেচনায় সবার ওপরে অবস্থান করছে।
লেখক: যুগ্ম সম্পাদক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)
৩৬ জুলাই বা ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে সংস্কারের আহ্বান শোনা যাচ্ছে বেশ জোরেশোরেই। সব ক্ষেত্রে। চলচ্চিত্রাঙ্গনেও এই সংস্কারের জোয়ার এসে লেগেছে। জোয়ারের আগে মূলধারার চলচ্চিত্রের লোকজন নানাভাবে জড়িত ছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে। অভ্যুত্থান শুরুর পর তাঁদের মনে হয়েছে ভবিষ্যৎ বুঝি অন্ধকারে প্রবেশ করতে যাচ্
২১ ঘণ্টা আগেইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক রূপরেখা তৈরি করেছে। ইরানের ওপর সাম্প্রতিক ইসরায়েলি বিমান হামলা ঝুঁকি বাড়ালেও তা পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধের পথে পা বাড়ানোর কোনো ইঙ্গিত দিচ্ছে না। ইসরায়েলের এখনকার লক্ষ্য তার সীমানা সুরক্ষিত করা। অন্যদিকে ইরানের দরকার বর্তমান শাসন-ক্ষমত
১ দিন আগেবিকেল গড়িয়ে তখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। গ্রামের এক হাটে কৃষকের আনাগোনা, শোরগোল। ভ্যানে তুলে বস্তা বোঝাই আলু এনে আশানুরূপ দাম না পেয়ে হতাশ তাঁরা। বলছিলেন, কৃষিকাজই বাদ দিয়ে দেবেন। তাঁরা যে আলু বিক্রি করেন কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকায়, সেই আলুই ভোক্তার হাতে যায় ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। মাঝের এই মূল্য বৃদ্ধির পথ প
১ দিন আগেলিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা দিয়েই বাগিয়ে নিতে হয় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের পদগুলো। লিখিত পরীক্ষায় যাঁরা বাকিদের টেক্কা দিতে পারেন, পরবর্তী মওকা তাঁদের জন্য সুরক্ষিত। মৌখিক পরীক্ষায় উতরে গেলেই চাকরি নিজের। কিন্তু এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের সুযোগ পায় কী করে কিছু পরীক্ষার্থী—বিষয়টি শুধু অ
১ দিন আগে