সম্পাদকীয়
কতভাবে যে লুটপাটের পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন চলছে, তার হিসাব কোনো জ্যোতিষী হিসাববিজ্ঞানে পারদর্শী ব্যক্তিও করতে পারবেন বলে মনে হয় না। ২৪ ফেব্রুয়ারি আজকের পত্রিকায় ‘২০০ বছরের মাঠ কেটে পুকুর, উজাড় গাছও’ শিরোনামের খবরটি পড়লে বোঝা যায় জনগণের টাকা নয়ছয়ের কত ফিকির দেশের কর্তাব্যক্তিদের জানা আছে! রাজনীতিতে কিছুদিন ধরে যে চমক আসছে, সেসব খবরের ভিড় থেকে এই সংবাদটিকে সম্পাদকীয়তে টেনে আনা জরুরি ছিল।
রংপুরের বদরগঞ্জের ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী পশু মেলার মাঠ কেটে পুকুর খননের ঘটনা আমাদের দেশের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে ঐতিহ্যবিনাশী প্রবণতার একটি করুণ উদাহরণ। ব্রিটিশ আমলে জনহিতৈষী উদ্দেশ্যে জমিদারের দান করা ২৬ একর জমির ঐতিহ্যবাহী এই মাঠ কালের গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে প্রভাবশালী মহলের স্বার্থসিদ্ধির বলিতে। যেখানে একটি জনসম্পদকে সংরক্ষণ ও বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করা যেত, সেখানে তা ধ্বংস করে অবাস্তব, অযৌক্তিক এবং প্রশ্নবিদ্ধ প্রকল্প বাস্তবায়ন উন্নয়নের নামে জনগণের অর্থের অপচয় ছাড়া কিছু নয়।
সরকারি অর্থায়নে মৎস্যজীবীদের মাছ চাষ ও স্থানীয়দের গোসলের সুবিধার কথা বললেও প্রকল্পের বাস্তবতা তা প্রমাণ করছে না। বরং স্পষ্ট হয়েছে, এটি একটি পরিকল্পিত অর্থ লুটপাটের আয়োজন। দীর্ঘদিনের পশু মেলার মাঠ, যা কেবল পশু বেচাকেনার স্থান ছিল না, ছিল স্থানীয় সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রস্থল—তাকে একেবারে ভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা নিঃসন্দেহে জনস্বার্থবিরোধী। বন্যাপ্রবণ এলাকায় পুকুর খনন প্রকল্প কতটা টেকসই হবে, তা ভেবে দেখার প্রয়োজন ছিল। সামান্য বন্যায় যেখানে খাল ডুবে যায়, সেখানে টেকসই মাছ চাষের ধারণা হাস্যকর।
এখানেই শেষ নয়। পুকুর খননের নামে সংখ্যালঘু দুই পরিবারকে উচ্ছেদ এবং ৭০-৮০টি বৃক্ষ কর্তনের ঘটনা এই প্রকল্পকে আরও জঘন্য করে তুলেছে। যেখানে সরকারের নীতিমালায় পরিবেশ সংরক্ষণ এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষার ওপর জোর দেওয়া হয়, সেখানে স্থানীয় প্রশাসন ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের যোগসাজশে এমন বর্বর কর্মকাণ্ড দেশের পরিবেশ ও সামাজিক ভারসাম্যকে বিপন্ন করছে।
উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে শুরু করে ইউএনও, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং এলজিইডির জ্যেষ্ঠ প্রকৌশলীর দায় এড়ানোর প্রবণতাও অত্যন্ত দুঃখজনক। কেউ জানেন না, কেউ দায়িত্ব নিচ্ছেন না—এ যেন প্রশাসনিক উদাসীনতার একটি চিত্র। অথচ ৬৭ লাখ টাকার এ প্রকল্পে সাবেক মেয়র, ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাদের সরাসরি সম্পৃক্ততার অভিযোগ, পরে বিএনপি নেতার খাল দখল এবং ঠিকাদারদের অনুপস্থিতিতে বিষয়টি আরও গুরুতর প্রশ্নের উদ্রেক করছে।
আজকের পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর বদরগঞ্জের পশু মেলা মাঠের খননকাজ বন্ধ রয়েছে, কিন্তু তা জনসাধারণের কাজে আসছে না। উন্নয়ন প্রকল্পের নামে এ ধরনের কর্মকাণ্ড দীর্ঘ মেয়াদে জনগণের আস্থা ও প্রশাসনিক সুশাসনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। শুধু বদরগঞ্জের এই মাঠ নয়, সারা দেশেই কোথাও না কোথাও এমন ঘটনা ঘটছে। দেশজুড়ে এ ধরনের খামখেয়ালিপনা বন্ধে এখনই সরকারের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। যেকোনো পরিকল্পনা হতে হবে সাধারণ মানুষের স্বার্থে।
কতভাবে যে লুটপাটের পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন চলছে, তার হিসাব কোনো জ্যোতিষী হিসাববিজ্ঞানে পারদর্শী ব্যক্তিও করতে পারবেন বলে মনে হয় না। ২৪ ফেব্রুয়ারি আজকের পত্রিকায় ‘২০০ বছরের মাঠ কেটে পুকুর, উজাড় গাছও’ শিরোনামের খবরটি পড়লে বোঝা যায় জনগণের টাকা নয়ছয়ের কত ফিকির দেশের কর্তাব্যক্তিদের জানা আছে! রাজনীতিতে কিছুদিন ধরে যে চমক আসছে, সেসব খবরের ভিড় থেকে এই সংবাদটিকে সম্পাদকীয়তে টেনে আনা জরুরি ছিল।
রংপুরের বদরগঞ্জের ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী পশু মেলার মাঠ কেটে পুকুর খননের ঘটনা আমাদের দেশের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে ঐতিহ্যবিনাশী প্রবণতার একটি করুণ উদাহরণ। ব্রিটিশ আমলে জনহিতৈষী উদ্দেশ্যে জমিদারের দান করা ২৬ একর জমির ঐতিহ্যবাহী এই মাঠ কালের গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে প্রভাবশালী মহলের স্বার্থসিদ্ধির বলিতে। যেখানে একটি জনসম্পদকে সংরক্ষণ ও বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করা যেত, সেখানে তা ধ্বংস করে অবাস্তব, অযৌক্তিক এবং প্রশ্নবিদ্ধ প্রকল্প বাস্তবায়ন উন্নয়নের নামে জনগণের অর্থের অপচয় ছাড়া কিছু নয়।
সরকারি অর্থায়নে মৎস্যজীবীদের মাছ চাষ ও স্থানীয়দের গোসলের সুবিধার কথা বললেও প্রকল্পের বাস্তবতা তা প্রমাণ করছে না। বরং স্পষ্ট হয়েছে, এটি একটি পরিকল্পিত অর্থ লুটপাটের আয়োজন। দীর্ঘদিনের পশু মেলার মাঠ, যা কেবল পশু বেচাকেনার স্থান ছিল না, ছিল স্থানীয় সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রস্থল—তাকে একেবারে ভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা নিঃসন্দেহে জনস্বার্থবিরোধী। বন্যাপ্রবণ এলাকায় পুকুর খনন প্রকল্প কতটা টেকসই হবে, তা ভেবে দেখার প্রয়োজন ছিল। সামান্য বন্যায় যেখানে খাল ডুবে যায়, সেখানে টেকসই মাছ চাষের ধারণা হাস্যকর।
এখানেই শেষ নয়। পুকুর খননের নামে সংখ্যালঘু দুই পরিবারকে উচ্ছেদ এবং ৭০-৮০টি বৃক্ষ কর্তনের ঘটনা এই প্রকল্পকে আরও জঘন্য করে তুলেছে। যেখানে সরকারের নীতিমালায় পরিবেশ সংরক্ষণ এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষার ওপর জোর দেওয়া হয়, সেখানে স্থানীয় প্রশাসন ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের যোগসাজশে এমন বর্বর কর্মকাণ্ড দেশের পরিবেশ ও সামাজিক ভারসাম্যকে বিপন্ন করছে।
উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে শুরু করে ইউএনও, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং এলজিইডির জ্যেষ্ঠ প্রকৌশলীর দায় এড়ানোর প্রবণতাও অত্যন্ত দুঃখজনক। কেউ জানেন না, কেউ দায়িত্ব নিচ্ছেন না—এ যেন প্রশাসনিক উদাসীনতার একটি চিত্র। অথচ ৬৭ লাখ টাকার এ প্রকল্পে সাবেক মেয়র, ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাদের সরাসরি সম্পৃক্ততার অভিযোগ, পরে বিএনপি নেতার খাল দখল এবং ঠিকাদারদের অনুপস্থিতিতে বিষয়টি আরও গুরুতর প্রশ্নের উদ্রেক করছে।
আজকের পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর বদরগঞ্জের পশু মেলা মাঠের খননকাজ বন্ধ রয়েছে, কিন্তু তা জনসাধারণের কাজে আসছে না। উন্নয়ন প্রকল্পের নামে এ ধরনের কর্মকাণ্ড দীর্ঘ মেয়াদে জনগণের আস্থা ও প্রশাসনিক সুশাসনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। শুধু বদরগঞ্জের এই মাঠ নয়, সারা দেশেই কোথাও না কোথাও এমন ঘটনা ঘটছে। দেশজুড়ে এ ধরনের খামখেয়ালিপনা বন্ধে এখনই সরকারের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। যেকোনো পরিকল্পনা হতে হবে সাধারণ মানুষের স্বার্থে।
বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম ও এর প্রাতিষ্ঠানিক বিকাশের ক্ষেত্রে স্বাধীনতার উল্লিখিত ঘোষণাপত্রের এই যে বিশাল ভূমিকা ও অবস্থান, দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, স্বাধীনতা-পরর্বর্তী কোনো সরকারই আজ পর্যন্ত সেটিকে যথেষ্ট গুরুত্ব ও মর্যাদার সাথে তুলে ধরতে আগ্রহ দেখায়নি—এমনকি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকারগুলোও নয়।
৫ ঘণ্টা আগেআমি বেশ কিছুদিন আগে এক ফিলিস্তিনি অভিনেতার সঙ্গে একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছি। ওই অভিনেতা দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে হলিউডেও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। শুনেছি একবার অস্কারে নমিনেশনও পেয়েছিলেন। অত্যন্ত সজ্জন মানুষ। ফিলিস্তিন নিয়ে আমাদের প্রবল কৌতূহল। শুটিংয়ের ফাঁকে ফাঁকে ওই দেশের কথা জানার চেষ্টা করতাম।
১০ ঘণ্টা আগেবাংলা ভাষায় একটি অতি পরিচিত শব্দ হলো খই। কারও কারও মুখের ভাষায় আবার ‘খই ফোটে’। এতে কেউ হয় মুগ্ধ আবার এটি অতিরঞ্জিত হলে কেউ হয় বিরক্ত। কারও আবার কথায় তুবড়ি ছোটে, কারওবা ফুলঝুরি। পরিস্থিতির প্রসঙ্গভেদে কেউবা প্রবচন হিসেবে বলে থাকেন ‘নেই কাজ তো খই ভাজ।’
১০ ঘণ্টা আগেতিরিশোত্তর আধুনিক বাঙালি কবিদের মধ্যে অমিয় চক্রবর্তীর মতো আত্মস্থ কবি আমরা খুব কমই দেখতে পাই। জটিল মার্কিন সমাজে দীর্ঘদিন বসবাস করেও এই উপলব্ধি থেকে তিনি কখনো সরে আসেননি: ‘অপার্থিব কী তা আমার জানা নেই, খোলা চোখের সামনে এই আমার অফুরন্ত দু-দিনের দৃশ্যকাব্য।’ তাঁর একান্ত নিজস্ব চেতনার আদলে নির্মিত এই
১০ ঘণ্টা আগে